Ajker Patrika

পরামর্শ: গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা

আনিসুল ইসলাম নাঈম
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ১০
পরামর্শ: গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা একটি আবশ্যক বিষয়। জেনারেল ও টেকনিক্যাল—উভয় ক্যাডারে গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় বরাদ্দ ১০০ নম্বর। গাণিতিক যুক্তিতে ৫০ ও মানসিক দক্ষতায় ৫০ নম্বর। সাধারণত গাণিতিক যুক্তি অংশে ৫ নম্বরের জন্য ১২টি প্রশ্ন থাকে। যেকোনো ১০টি উত্তর করতে হয়। পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। মানসিক দক্ষতা অংশে ৫০টি এমসিকিউ থাকে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মতো প্রতিটির জন্য ১ নম্বর বরাদ্দ থাকে। ভুল হলে কাটা যাবে ০.৫ নম্বর। সাধারণত মানসিক দক্ষতায় সবার একই সেট কোড থাকে।

১. গাণিতিক যুক্তি
এই অংশে মোট ১২টি টপিক রয়েছে। সাধারণত প্রতিবারই এই ১২টি টপিক থেকে প্রশ্ন করা হয়। সরলীকরণ, পাটিগণিত (ঐকিক নিয়ম, গড়, শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, লসাগু, গসাগু, অনুপাত, সমানুপাত, লাভ-ক্ষতি), বীজগাণিতিক সূত্র, বহুপদীর উৎপাদক, একঘাত ও দ্বিঘাত সমীকরণ, অসমতা, দুই বা তিন চলকবিশিষ্ট রৈখিক সমীকরণ পদ্ধতি, সূচক ও লগারিদম, সমান্তর ও গুণোত্তর ধারা ও অনুক্রম, রেখা, কোণ, ত্রিভুজ, বৃত্ত, পিথাগোরাস, ক্ষেত্রফলসংক্রান্ত উপপাদ্য ও অনুসিদ্ধান্ত, পরিমিতি, স্থানাঙ্ক জ্যামিতি, সরলরেখার সমীকরণ, ত্রিকোণমিতির দূরত্ব ও উচ্চতা, সেট ও ভেনচিত্র, বিন্যাস, সমাবেশ, সম্ভাব্যতা ইত্যাদি।

প্রথমে বিগত বিসিএস লিখিত পরীক্ষার গাণিতিক যুক্তির প্রশ্নগুলো দেখে নেবেন, বিশেষ করে ৩৪তম থেকে ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন। এতে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা হবে। গাণিতিক যুক্তি অংশের বেশির ভাগ টপিক মাধ্যমিক গণিত ও উচ্চতর গণিত অংশের সঙ্গে মিলে যায়। এ ছাড়া কিছু বিষয় উচ্চমাধ্যমিক বীজগণিত বই থেকে করতে হয়। মাধ্যমিক গণিত বইয়ের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, অষ্টম, নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ, ত্রয়োদশ, চতুর্দশ, পঞ্চদশ ও ষোড়শ অধ্যায়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। মাধ্যমিক উচ্চতর গণিত বইয়ের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, একাদশ, ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ অধ্যায়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাধ্যমিক বীজগণিত ও ত্রিকোণমিতি বই থেকে বিন্যাস সমাবেশ, সম্ভাব্যতা, সেট, ভেনচিত্র ও ত্রিকোণমিতি বিষয়গুলো করতে পারেন।

ছবি: সংগৃহীত

গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়
বিগত প্রশ্নের আলোকে দেখা গেছে, বিন্যাস ও সমাবেশ, সমান্তর ও গুণোত্তর ধারা ও অনুক্রম, সূচক ও লগারিদম, সম্ভাব্যতা, সের ও ভেনচিত্র, স্থানাঙ্ক জ্যামিতি ও সরলরেখার সমীকরণ, ত্রিকোণোমিতির সাহায্যে দূরত্ব ও উচ্চতা নির্ণয় ইত্যাদি অধ্যায় থেকে প্রায় প্রতিবছরই প্রশ্ন করা হয়।
এতে প্রতিটি অধ্যায় অনুযায়ী সূত্রগুলো লিখে ফেলুন। 

জ্যামিতি
একটু অনুশীলন করলেই জ্যামিতিতে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। এতে শর্টকাট পদ্ধতি পরিহার করে অঙ্ক করবেন। অনেক সময় বিশেষ একটা অঙ্ক মেলানোর জন্য দীর্ঘ সময় ব্যয় করে অনেকেই। আপনার কাছে যেটা সহজ মনে হবে, সেই অঙ্ক দিয়েই শুরু করবেন। কোনোটা না মিললে সেটা নিয়ে বসে না থেকে অন্য অঙ্কগুলো করে ফেলতে হবে।

২. মানসিক দক্ষতা
মানসিক দক্ষতায় শুধু বিগত সালের প্রশ্নগুলো সমাধান করে গেলে উল্লেখযোগ্য নম্বর পাওয়া সম্ভব।
মোট ছয়টি টপিকের ওপর প্রশ্ন করা হয়। এগুলো হলো:

  • ভাষাগত যৌক্তিক বিচার
  • সমস্যার সমাধান
  • স্থানাঙ্ক সম্পর্ক
  • সংখ্যাগত ক্ষমতা
  • বানান ও ভাষা
  • যান্ত্রিক দক্ষতা
    মোট ৫০টি প্রশ্নের জন্য ৫০ নম্বর থাকবে। এতে ৫০ মিনিট সময় পরীক্ষা হয়। এমসিকিউ টাইপের লিখিত পরীক্ষা হলেও আলাদা সেট কোড থাকে না।

প্রস্তুতি যেভাবে
প্রস্তুতি নেওয়ার আগে বিগত বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন দেখতে হবে; বিশেষ করে ২৭ থেকে ৪৪তম লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন। পাশাপাশি প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নগুলোও দেখে নেবেন। কিছু প্রশ্ন আছে, সংখ্যা পরিবর্তন করে পরীক্ষায় আসে। এসব ক্ষেত্রে নিয়ম শিখে রাখলে সহজে নম্বর পাওয়া যায়। এতে ভালো করার জন্য নিয়মিত বাজারে প্রচলিত বইগুলো থেকে বিগত সালের প্রশ্নগুলো হাতেকলমে চর্চা করতে হবে। অনুশীলন ব্যতীত পরীক্ষা হলে সহজ অঙ্ক ভুল হবে।

ভাষাগত যৌক্তিক বিচার
সাধারণত অনুধাবন ক্ষমতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা, মিল ও অমিল, পারসোনালিটি টেস্ট বা ব্যক্তিত্ব পরীক্ষা, রক্তের সম্পর্ক বা সম্পর্ক মূল্যায়ন ইত্যাদি বিষয় থেকে প্রশ্ন থাকে। টপিকস অনুযায়ী অনুশীলন করলে আয়ত্তে আসবে।

সমস্যার সমাধান
এতে সাধারণত চিত্র দেখে উত্তর করা বা চিত্রযুক্ত অভীক্ষা থাকে। এ ক্ষেত্রে চিত্রের মধ্যে মিল খুঁজে বের করতে হয়। এ ছাড়া একটি চিত্রের ভেতর অনেক ছোট চিত্র থাকে, যা খুঁজে বের করতে হয়। ভালোভাবে চর্চা করলে আয়ত্তে চলে আসবে এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উত্তর করা সম্ভব হবে।

স্থানাঙ্ক সম্পর্ক
দূরত্ব ও স্থান নির্ণয় করতে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে দিক সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা জরুরি। পিথাগোরাস উপপাদ্যের যথার্থ প্রয়োগ করতে পারলে নম্বর পাওয়া সহজ।

সংখ্যাগত ক্ষমতা
গণিতে দক্ষতা থাকলে এই অংশে অনায়াসে নম্বর পাওয়া সম্ভব। গণিতের সাধারণ বিষয়, যেমন বিভিন্ন ধারা, বীজগণিত, পাটিগণিত, ঘড়ি ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন হয়। ঘড়িসংক্রান্ত প্রশ্নে ঘণ্টা ও মিনিটের কাঁটার মধ্যবর্তী কোণ নির্ণয় করতে বলা হতে পারে। পরীক্ষা হলে দেয়ালঘড়ি দেওয়া থাকে যা ব্যবহার করা যায়।

বানান ও ভাষা
বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকলে এই অংশে ভালো করা সম্ভব। বাংলা ও ইংরেজি শব্দের সঠিক বানান, অর্থ, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন হয়। বানান সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।

যান্ত্রিক দক্ষতা
এই অংশে আয়না ও পানিতে প্রতিচ্ছবি, বিভিন্ন যন্ত্রের মূলনীতি সম্পর্কে প্রশ্ন হয়। Miror and Water Image সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা জরুরি। 

গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়

  • গাণিতিক যুক্তি অংশে সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যায়। কিন্তু মানসিক দক্ষতা অংশে ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ। 
  • একটি সাধারণ ভুল ধারণা হলো গণিত ও মানসিক দক্ষতায় আলাদাভাবে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। আসলে দুই অংশ মিলে ৩০ শতাংশ নম্বর পেলেই মোট নম্বরের সঙ্গে যুক্ত হবে।

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত