ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং কোরবানির পশু মহান আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন। কোরবানির বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পর থেকে রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো কোরবানি বাদ দেননি। সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি আদায় না করা ব্যক্তিদের ঈদগাহে আসাই উচিত নয় মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) সতর্ক করেছেন। কোরবানির দিন পশু কোরবানি করার চেয়ে বড় কোনো আমল আর নেই। কাজেই কোরবানির পশুর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর সঙ্গে সদাচার করা একান্ত কাম্য।
কোরবানির পশুর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন ও দয়াশীল আচরণ করতে হবে। কোনো পশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। পশুর খাবার-পানীয় ঠিকঠাকমতো পরিবেশন করতে হবে। পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করিয়ে আল্লাহর ক্ষমালাভের বিষয়টি হাদিসে এসেছে। সে ক্ষেত্রে কোরবানির পশু আরও অধিক যত্ন পাওয়ার দাবি রাখে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘একদিন এক ব্যক্তি রাস্তায় চলার পথে অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত হলো। তারপর একটি কূপ দেখতে পেয়ে তাতে সে নেমে পড়ল এবং পানি পান করল। ওপরে উঠে সে দেখতে পেল একটা কুকুর হাঁপাচ্ছে আর পিপাসার কারণে জিহ্বা দিয়ে মাটি চেটে খাচ্ছে। লোকটি (মনে মনে) বলল, কুকুরটির তেমনই পিপাসা পেয়েছে, যেমন আমার পিপাসা পেয়েছিল। তারপর সে কূপের মধ্যে নামল এবং নিজের মোজাভর্তি পানি এনে কুকুরকে পান করাল। আল্লাহ তার এ কাজ কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন।’ সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, পশুদের ব্যাপারেও কি আমাদের জন্য পুণ্য রয়েছে?’ তিনি বললেন, ‘প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীর জন্যই পুরস্কার রয়েছে।’ (বুখারি: ৬০০৯)
পশু জবাইকালে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বনের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যাতে পশুর কোনো কষ্ট না হয়। যেমন—জবাই করার সময় ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নিতে হবে এবং জবাইয়ের পর চামড়া ছিলে নেওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবে পশুর প্রাণ বের হওয়া পর্যন্ত সময় দিতে হবে। শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব জিনিস উত্তম পদ্ধতিতে করার বিধান দিয়েছেন। সুতরাং যখন তুমি হত্যা করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করবে আর যখন তুমি জবাই করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। জবাইয়ের বস্তু ভালোভাবে ধার দিয়ে নেবে আর পশুটিকে স্বাভাবিকভাবে প্রাণ বের হওয়ার সুযোগ দেবে।’ (মুসলিম: ১৯৫৫)
নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবাই করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বহস্তে কোরবানির পশু জবাই করেছেন। নিজের পশু নিজে জবাই করলে পশুর প্রতি মমত্ববোধের কারণে জবাইকালে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বন করা সহজ হয়। নিজে জবাই করতে না পারলে কমপক্ষে জবাইয়ের স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত। এতেও পশুর প্রতি মমত্ববোধের প্রকাশ ঘটে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) শিংবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন দুটি ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং নিজ হাতে সেগুলো জবাই করলেন। (বুখারি: ৫২৩৪) অন্য হাদিসে এসেছে, ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে ফাতেমা, ওঠো, তোমার কোরবানির পশুর কাছে যাও। কেননা, তার রক্তের প্রথম ফোঁটা প্রবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তোমার কৃত সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সুনানুল কুবরা: ১৯১৬২; মাজমাউজ জাওয়াইদ: ৫৯৩৫)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং কোরবানির পশু মহান আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন। কোরবানির বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পর থেকে রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো কোরবানি বাদ দেননি। সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি আদায় না করা ব্যক্তিদের ঈদগাহে আসাই উচিত নয় মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) সতর্ক করেছেন। কোরবানির দিন পশু কোরবানি করার চেয়ে বড় কোনো আমল আর নেই। কাজেই কোরবানির পশুর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর সঙ্গে সদাচার করা একান্ত কাম্য।
কোরবানির পশুর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন ও দয়াশীল আচরণ করতে হবে। কোনো পশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। পশুর খাবার-পানীয় ঠিকঠাকমতো পরিবেশন করতে হবে। পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করিয়ে আল্লাহর ক্ষমালাভের বিষয়টি হাদিসে এসেছে। সে ক্ষেত্রে কোরবানির পশু আরও অধিক যত্ন পাওয়ার দাবি রাখে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘একদিন এক ব্যক্তি রাস্তায় চলার পথে অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত হলো। তারপর একটি কূপ দেখতে পেয়ে তাতে সে নেমে পড়ল এবং পানি পান করল। ওপরে উঠে সে দেখতে পেল একটা কুকুর হাঁপাচ্ছে আর পিপাসার কারণে জিহ্বা দিয়ে মাটি চেটে খাচ্ছে। লোকটি (মনে মনে) বলল, কুকুরটির তেমনই পিপাসা পেয়েছে, যেমন আমার পিপাসা পেয়েছিল। তারপর সে কূপের মধ্যে নামল এবং নিজের মোজাভর্তি পানি এনে কুকুরকে পান করাল। আল্লাহ তার এ কাজ কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন।’ সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, পশুদের ব্যাপারেও কি আমাদের জন্য পুণ্য রয়েছে?’ তিনি বললেন, ‘প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীর জন্যই পুরস্কার রয়েছে।’ (বুখারি: ৬০০৯)
পশু জবাইকালে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বনের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যাতে পশুর কোনো কষ্ট না হয়। যেমন—জবাই করার সময় ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নিতে হবে এবং জবাইয়ের পর চামড়া ছিলে নেওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবে পশুর প্রাণ বের হওয়া পর্যন্ত সময় দিতে হবে। শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব জিনিস উত্তম পদ্ধতিতে করার বিধান দিয়েছেন। সুতরাং যখন তুমি হত্যা করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করবে আর যখন তুমি জবাই করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। জবাইয়ের বস্তু ভালোভাবে ধার দিয়ে নেবে আর পশুটিকে স্বাভাবিকভাবে প্রাণ বের হওয়ার সুযোগ দেবে।’ (মুসলিম: ১৯৫৫)
নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবাই করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বহস্তে কোরবানির পশু জবাই করেছেন। নিজের পশু নিজে জবাই করলে পশুর প্রতি মমত্ববোধের কারণে জবাইকালে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বন করা সহজ হয়। নিজে জবাই করতে না পারলে কমপক্ষে জবাইয়ের স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত। এতেও পশুর প্রতি মমত্ববোধের প্রকাশ ঘটে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) শিংবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন দুটি ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং নিজ হাতে সেগুলো জবাই করলেন। (বুখারি: ৫২৩৪) অন্য হাদিসে এসেছে, ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে ফাতেমা, ওঠো, তোমার কোরবানির পশুর কাছে যাও। কেননা, তার রক্তের প্রথম ফোঁটা প্রবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তোমার কৃত সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সুনানুল কুবরা: ১৯১৬২; মাজমাউজ জাওয়াইদ: ৫৯৩৫)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
৪ ঘণ্টা আগেআত্মীয়তার বন্ধন আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। পারস্পরিক সম্পর্কের এ বন্ধন না থাকলে হয়তো পৃথিবীর রূপ ভিন্ন থাকত। মা তার সন্তানের প্রতি, ভাই তার ভাইয়ের প্রতি, স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার যে রূপ আমরা দেখতে পাই—তা হয়তো থাকত না। কোরআন ও হাদিসে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেজুলুম আরবি শব্দ। জুলুমের অর্থ ব্যাপক এবং অনেক বিস্তৃত। সাধারণত জুলুম অর্থ নির্যাতন, নিপীড়ন। শরিয়তের পরিভাষায় জুলুম বলা হয়—কোনো উপযুক্ত জিনিসকে উপযুক্ত স্থানে না রেখে অনুপযুক্ত স্থানে রাখা। যে জুলুম করে তাকে জালিম বলা হয়। মানুষ বিভিন্ন পদ্ধতিতে একজন অন্যজনের ওপর জুলুম করে।
১৯ ঘণ্টা আগেমা-বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তাঁদের আদর-সোহাগে আমাদের জীবনের ভিত্তি রচিত হয়। তাঁদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে গড়ে ওঠে সুন্দর ভবিষ্যৎ। তাঁদের ভরসায় আমরা শক্তি পাই এবং তাঁদের দোয়ায় জীবন সার্থক হয়। ইসলাম তাই মা-বাবাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে এবং তাঁদের প্রতি সদাচরণকে আল্লাহ তাআলার ইবাদতের
১ দিন আগে