ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

সময় এক অদৃশ্য নদীর মতো—নিঃশব্দে বয়ে যায়, কিন্তু আর কখনো ফিরে আসে না। প্রতিটি দিন, প্রতিটি জুমা সেই সময়-নদীর একেকটি ঢেউ, যা আমাদের হয়তো আল্লাহর আরও কাছে টেনে নেয়, আবার গাফিলতিতে দূরেও সরিয়ে দেয়।
আজ আমরা এসে পৌঁছেছি জমাদিউল আউয়াল মাসের চতুর্থ জুমায়। এই সময় যেন আমাদের অন্তরে ধ্বনি তোলে—‘এখনই জাগো, এখনই ফিরে এসো তোমার রবের দিকে।’
জুমা: এক সাপ্তাহিক নবজাগরণ
জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)। অর্থাৎ জুমার দিন আমাদের জীবনের জন্য নতুন আশার প্রতীক। প্রতিটি জুমা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এখনো সময় আছে, আল্লাহর দিকে ফিরে আসা যায়, জীবন বদলানো যায়।
জমাদিউল আউয়ালের শিক্ষা: দৃঢ়তা ও ধৈর্য
ইসলামের ইতিহাসে জমাদিউল আউয়াল মাস নানা ত্যাগ ও সংগ্রামের সাক্ষী। এই মাসে নবীজির সাহাবারা বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছেন ধৈর্য ও ইমানের দৃঢ়তায়। তাঁদের জীবন শেখায়—বিপদে ধৈর্য ধরতে হয়, সংকটে দৃঢ় থাকতে হয়, আর সফলতায় কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)। তাই এই মাসের চতুর্থ জুমা আমাদের জন্য হতে পারে আত্মজাগরণের এক নতুন সূচনা—অন্তর পরিশুদ্ধ করার, নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সময়।
সময়ের আয়নায় আত্মসমালোচনা
জমাদিউল আউয়ালের শেষ ভাগে এসে আমাদের ভাবা দরকার—এই সময়টুকু কেমন গেল? আমরা কি নিয়মিত নামাজ পড়েছি? অন্যের প্রতি ন্যায্য থেকেছি? নাকি জাগতিক ব্যস্ততায় ভুলে গেছি আমাদের আসল পরিচয়—আমরা আল্লাহর বান্দা?
হজরত আলী (রা.) বলেছেন—‘যে ব্যক্তি নিজের আত্মার হিসাব নেয়, সে মুক্তি পায়; আর যে হিসাব নেয় না, সে ধ্বংস হয়।’
জুমা আমাদের শেখায় আত্মসমালোচনার গুরুত্ব। নিজের ভেতর তাকানোই ইমানের সৌন্দর্য। কারণ, পরিবর্তন শুরু হয় নিজের মধ্যেই।
জুমার আলোয় অন্তরের পরিশুদ্ধি
জুমার নামাজ শুধু শরীরের ইবাদত নয়, এটি আত্মারও পরিচ্ছন্নতা। আমরা যখন এক কাতারে দাঁড়াই, তখন ধনী-গরিব, নেতা-জনতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সব বিভেদ মুছে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ভালোভাবে অজু করে, তারপর জুমার নামাজে আসে, খুতবা শোনে ও নীরব থাকে; তার এক জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)।
জুমা আমাদের শেখায় ঐক্য, বিনয় ও ভালোবাসা। হয়তো আজকের জুমায় কারও চোখে অশ্রু ঝরবে, কারও অন্তর নরম হয়ে যাবে, আবার কেউ হয়তো বলবে—‘আজ থেকে আমি বদলে যাব।’ এই পরিবর্তনের শুরু হোক আজকের এই চতুর্থ জুমায়।
তওবার আহ্বান
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তওবা করো, যেন তোমরা সফল হও।’ (সুরা নুর: ৩১)। তওবা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং সাহসের প্রকাশ। যে নিজের ভুল বুঝে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, সে প্রকৃত সাহসী। এই জুমা হোক সেই সাহস অর্জনের দিন—পুরোনো গাফিলতি ভেঙে নতুন জীবনের শুরু করার সময়।
সমাজে কল্যাণের বার্তা
জুমা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদতের দিন নয়, এটি সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। খুতবার মাধ্যমে মানুষ সঠিক পথের দিকনির্দেশনা পায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সচেতন হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন ইমাম খুতবা দেন, তখন তোমরা নীরবে শোনো।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯৩৪)। যদি প্রতিটি জুমা আমাদের চিন্তায় ও চরিত্রে সামান্য পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে সমাজ বদলে যাবে।
এই চতুর্থ জুমায় আমাদের প্রার্থনা—যেন আমাদের মসজিদগুলো হয়ে ওঠে সত্য, ন্যায় ও মানবতার নবজাগরণের কেন্দ্র।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

সময় এক অদৃশ্য নদীর মতো—নিঃশব্দে বয়ে যায়, কিন্তু আর কখনো ফিরে আসে না। প্রতিটি দিন, প্রতিটি জুমা সেই সময়-নদীর একেকটি ঢেউ, যা আমাদের হয়তো আল্লাহর আরও কাছে টেনে নেয়, আবার গাফিলতিতে দূরেও সরিয়ে দেয়।
আজ আমরা এসে পৌঁছেছি জমাদিউল আউয়াল মাসের চতুর্থ জুমায়। এই সময় যেন আমাদের অন্তরে ধ্বনি তোলে—‘এখনই জাগো, এখনই ফিরে এসো তোমার রবের দিকে।’
জুমা: এক সাপ্তাহিক নবজাগরণ
জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)। অর্থাৎ জুমার দিন আমাদের জীবনের জন্য নতুন আশার প্রতীক। প্রতিটি জুমা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এখনো সময় আছে, আল্লাহর দিকে ফিরে আসা যায়, জীবন বদলানো যায়।
জমাদিউল আউয়ালের শিক্ষা: দৃঢ়তা ও ধৈর্য
ইসলামের ইতিহাসে জমাদিউল আউয়াল মাস নানা ত্যাগ ও সংগ্রামের সাক্ষী। এই মাসে নবীজির সাহাবারা বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছেন ধৈর্য ও ইমানের দৃঢ়তায়। তাঁদের জীবন শেখায়—বিপদে ধৈর্য ধরতে হয়, সংকটে দৃঢ় থাকতে হয়, আর সফলতায় কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)। তাই এই মাসের চতুর্থ জুমা আমাদের জন্য হতে পারে আত্মজাগরণের এক নতুন সূচনা—অন্তর পরিশুদ্ধ করার, নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সময়।
সময়ের আয়নায় আত্মসমালোচনা
জমাদিউল আউয়ালের শেষ ভাগে এসে আমাদের ভাবা দরকার—এই সময়টুকু কেমন গেল? আমরা কি নিয়মিত নামাজ পড়েছি? অন্যের প্রতি ন্যায্য থেকেছি? নাকি জাগতিক ব্যস্ততায় ভুলে গেছি আমাদের আসল পরিচয়—আমরা আল্লাহর বান্দা?
হজরত আলী (রা.) বলেছেন—‘যে ব্যক্তি নিজের আত্মার হিসাব নেয়, সে মুক্তি পায়; আর যে হিসাব নেয় না, সে ধ্বংস হয়।’
জুমা আমাদের শেখায় আত্মসমালোচনার গুরুত্ব। নিজের ভেতর তাকানোই ইমানের সৌন্দর্য। কারণ, পরিবর্তন শুরু হয় নিজের মধ্যেই।
জুমার আলোয় অন্তরের পরিশুদ্ধি
জুমার নামাজ শুধু শরীরের ইবাদত নয়, এটি আত্মারও পরিচ্ছন্নতা। আমরা যখন এক কাতারে দাঁড়াই, তখন ধনী-গরিব, নেতা-জনতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সব বিভেদ মুছে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ভালোভাবে অজু করে, তারপর জুমার নামাজে আসে, খুতবা শোনে ও নীরব থাকে; তার এক জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)।
জুমা আমাদের শেখায় ঐক্য, বিনয় ও ভালোবাসা। হয়তো আজকের জুমায় কারও চোখে অশ্রু ঝরবে, কারও অন্তর নরম হয়ে যাবে, আবার কেউ হয়তো বলবে—‘আজ থেকে আমি বদলে যাব।’ এই পরিবর্তনের শুরু হোক আজকের এই চতুর্থ জুমায়।
তওবার আহ্বান
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তওবা করো, যেন তোমরা সফল হও।’ (সুরা নুর: ৩১)। তওবা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং সাহসের প্রকাশ। যে নিজের ভুল বুঝে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, সে প্রকৃত সাহসী। এই জুমা হোক সেই সাহস অর্জনের দিন—পুরোনো গাফিলতি ভেঙে নতুন জীবনের শুরু করার সময়।
সমাজে কল্যাণের বার্তা
জুমা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদতের দিন নয়, এটি সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। খুতবার মাধ্যমে মানুষ সঠিক পথের দিকনির্দেশনা পায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সচেতন হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন ইমাম খুতবা দেন, তখন তোমরা নীরবে শোনো।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯৩৪)। যদি প্রতিটি জুমা আমাদের চিন্তায় ও চরিত্রে সামান্য পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে সমাজ বদলে যাবে।
এই চতুর্থ জুমায় আমাদের প্রার্থনা—যেন আমাদের মসজিদগুলো হয়ে ওঠে সত্য, ন্যায় ও মানবতার নবজাগরণের কেন্দ্র।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

সময় এক অদৃশ্য নদীর মতো—নিঃশব্দে বয়ে যায়, কিন্তু আর কখনো ফিরে আসে না। প্রতিটি দিন, প্রতিটি জুমা সেই সময়-নদীর একেকটি ঢেউ, যা আমাদের হয়তো আল্লাহর আরও কাছে টেনে নেয়, আবার গাফিলতিতে দূরেও সরিয়ে দেয়।
আজ আমরা এসে পৌঁছেছি জমাদিউল আউয়াল মাসের চতুর্থ জুমায়। এই সময় যেন আমাদের অন্তরে ধ্বনি তোলে—‘এখনই জাগো, এখনই ফিরে এসো তোমার রবের দিকে।’
জুমা: এক সাপ্তাহিক নবজাগরণ
জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)। অর্থাৎ জুমার দিন আমাদের জীবনের জন্য নতুন আশার প্রতীক। প্রতিটি জুমা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এখনো সময় আছে, আল্লাহর দিকে ফিরে আসা যায়, জীবন বদলানো যায়।
জমাদিউল আউয়ালের শিক্ষা: দৃঢ়তা ও ধৈর্য
ইসলামের ইতিহাসে জমাদিউল আউয়াল মাস নানা ত্যাগ ও সংগ্রামের সাক্ষী। এই মাসে নবীজির সাহাবারা বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছেন ধৈর্য ও ইমানের দৃঢ়তায়। তাঁদের জীবন শেখায়—বিপদে ধৈর্য ধরতে হয়, সংকটে দৃঢ় থাকতে হয়, আর সফলতায় কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)। তাই এই মাসের চতুর্থ জুমা আমাদের জন্য হতে পারে আত্মজাগরণের এক নতুন সূচনা—অন্তর পরিশুদ্ধ করার, নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সময়।
সময়ের আয়নায় আত্মসমালোচনা
জমাদিউল আউয়ালের শেষ ভাগে এসে আমাদের ভাবা দরকার—এই সময়টুকু কেমন গেল? আমরা কি নিয়মিত নামাজ পড়েছি? অন্যের প্রতি ন্যায্য থেকেছি? নাকি জাগতিক ব্যস্ততায় ভুলে গেছি আমাদের আসল পরিচয়—আমরা আল্লাহর বান্দা?
হজরত আলী (রা.) বলেছেন—‘যে ব্যক্তি নিজের আত্মার হিসাব নেয়, সে মুক্তি পায়; আর যে হিসাব নেয় না, সে ধ্বংস হয়।’
জুমা আমাদের শেখায় আত্মসমালোচনার গুরুত্ব। নিজের ভেতর তাকানোই ইমানের সৌন্দর্য। কারণ, পরিবর্তন শুরু হয় নিজের মধ্যেই।
জুমার আলোয় অন্তরের পরিশুদ্ধি
জুমার নামাজ শুধু শরীরের ইবাদত নয়, এটি আত্মারও পরিচ্ছন্নতা। আমরা যখন এক কাতারে দাঁড়াই, তখন ধনী-গরিব, নেতা-জনতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সব বিভেদ মুছে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ভালোভাবে অজু করে, তারপর জুমার নামাজে আসে, খুতবা শোনে ও নীরব থাকে; তার এক জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)।
জুমা আমাদের শেখায় ঐক্য, বিনয় ও ভালোবাসা। হয়তো আজকের জুমায় কারও চোখে অশ্রু ঝরবে, কারও অন্তর নরম হয়ে যাবে, আবার কেউ হয়তো বলবে—‘আজ থেকে আমি বদলে যাব।’ এই পরিবর্তনের শুরু হোক আজকের এই চতুর্থ জুমায়।
তওবার আহ্বান
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তওবা করো, যেন তোমরা সফল হও।’ (সুরা নুর: ৩১)। তওবা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং সাহসের প্রকাশ। যে নিজের ভুল বুঝে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, সে প্রকৃত সাহসী। এই জুমা হোক সেই সাহস অর্জনের দিন—পুরোনো গাফিলতি ভেঙে নতুন জীবনের শুরু করার সময়।
সমাজে কল্যাণের বার্তা
জুমা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদতের দিন নয়, এটি সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। খুতবার মাধ্যমে মানুষ সঠিক পথের দিকনির্দেশনা পায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সচেতন হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন ইমাম খুতবা দেন, তখন তোমরা নীরবে শোনো।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯৩৪)। যদি প্রতিটি জুমা আমাদের চিন্তায় ও চরিত্রে সামান্য পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে সমাজ বদলে যাবে।
এই চতুর্থ জুমায় আমাদের প্রার্থনা—যেন আমাদের মসজিদগুলো হয়ে ওঠে সত্য, ন্যায় ও মানবতার নবজাগরণের কেন্দ্র।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

সময় এক অদৃশ্য নদীর মতো—নিঃশব্দে বয়ে যায়, কিন্তু আর কখনো ফিরে আসে না। প্রতিটি দিন, প্রতিটি জুমা সেই সময়-নদীর একেকটি ঢেউ, যা আমাদের হয়তো আল্লাহর আরও কাছে টেনে নেয়, আবার গাফিলতিতে দূরেও সরিয়ে দেয়।
আজ আমরা এসে পৌঁছেছি জমাদিউল আউয়াল মাসের চতুর্থ জুমায়। এই সময় যেন আমাদের অন্তরে ধ্বনি তোলে—‘এখনই জাগো, এখনই ফিরে এসো তোমার রবের দিকে।’
জুমা: এক সাপ্তাহিক নবজাগরণ
জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)। অর্থাৎ জুমার দিন আমাদের জীবনের জন্য নতুন আশার প্রতীক। প্রতিটি জুমা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এখনো সময় আছে, আল্লাহর দিকে ফিরে আসা যায়, জীবন বদলানো যায়।
জমাদিউল আউয়ালের শিক্ষা: দৃঢ়তা ও ধৈর্য
ইসলামের ইতিহাসে জমাদিউল আউয়াল মাস নানা ত্যাগ ও সংগ্রামের সাক্ষী। এই মাসে নবীজির সাহাবারা বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছেন ধৈর্য ও ইমানের দৃঢ়তায়। তাঁদের জীবন শেখায়—বিপদে ধৈর্য ধরতে হয়, সংকটে দৃঢ় থাকতে হয়, আর সফলতায় কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)। তাই এই মাসের চতুর্থ জুমা আমাদের জন্য হতে পারে আত্মজাগরণের এক নতুন সূচনা—অন্তর পরিশুদ্ধ করার, নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সময়।
সময়ের আয়নায় আত্মসমালোচনা
জমাদিউল আউয়ালের শেষ ভাগে এসে আমাদের ভাবা দরকার—এই সময়টুকু কেমন গেল? আমরা কি নিয়মিত নামাজ পড়েছি? অন্যের প্রতি ন্যায্য থেকেছি? নাকি জাগতিক ব্যস্ততায় ভুলে গেছি আমাদের আসল পরিচয়—আমরা আল্লাহর বান্দা?
হজরত আলী (রা.) বলেছেন—‘যে ব্যক্তি নিজের আত্মার হিসাব নেয়, সে মুক্তি পায়; আর যে হিসাব নেয় না, সে ধ্বংস হয়।’
জুমা আমাদের শেখায় আত্মসমালোচনার গুরুত্ব। নিজের ভেতর তাকানোই ইমানের সৌন্দর্য। কারণ, পরিবর্তন শুরু হয় নিজের মধ্যেই।
জুমার আলোয় অন্তরের পরিশুদ্ধি
জুমার নামাজ শুধু শরীরের ইবাদত নয়, এটি আত্মারও পরিচ্ছন্নতা। আমরা যখন এক কাতারে দাঁড়াই, তখন ধনী-গরিব, নেতা-জনতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সব বিভেদ মুছে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ভালোভাবে অজু করে, তারপর জুমার নামাজে আসে, খুতবা শোনে ও নীরব থাকে; তার এক জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)।
জুমা আমাদের শেখায় ঐক্য, বিনয় ও ভালোবাসা। হয়তো আজকের জুমায় কারও চোখে অশ্রু ঝরবে, কারও অন্তর নরম হয়ে যাবে, আবার কেউ হয়তো বলবে—‘আজ থেকে আমি বদলে যাব।’ এই পরিবর্তনের শুরু হোক আজকের এই চতুর্থ জুমায়।
তওবার আহ্বান
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তওবা করো, যেন তোমরা সফল হও।’ (সুরা নুর: ৩১)। তওবা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং সাহসের প্রকাশ। যে নিজের ভুল বুঝে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, সে প্রকৃত সাহসী। এই জুমা হোক সেই সাহস অর্জনের দিন—পুরোনো গাফিলতি ভেঙে নতুন জীবনের শুরু করার সময়।
সমাজে কল্যাণের বার্তা
জুমা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদতের দিন নয়, এটি সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। খুতবার মাধ্যমে মানুষ সঠিক পথের দিকনির্দেশনা পায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সচেতন হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন ইমাম খুতবা দেন, তখন তোমরা নীরবে শোনো।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯৩৪)। যদি প্রতিটি জুমা আমাদের চিন্তায় ও চরিত্রে সামান্য পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে সমাজ বদলে যাবে।
এই চতুর্থ জুমায় আমাদের প্রার্থনা—যেন আমাদের মসজিদগুলো হয়ে ওঠে সত্য, ন্যায় ও মানবতার নবজাগরণের কেন্দ্র।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) শুরু হওয়া মেলাটির আয়োজন করেছে ‘সীরাতকেন্দ্র’। কয়েক বছর ধরে সীরাতকেন্দ্রের এই আয়োজন এই এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শুধু বই নয়, মেলার কল্যাণে প্রসারিত হচ্ছে ইসলামি সংস্কৃতিও। সেই সঙ্গে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে নৈতিক, মানবিক ও আদর্শ মানুষ হওয়ার উপাদান—সর্বোপরি ইসলামি জ্ঞান।
৭ ঘণ্টা আগে
আমাদের দেশের কিছু মানুষের ধারণা, বাড়ির আশপাশে তালগাছ, তুলাগাছ ও বাঁশগাছ লাগালে সেগুলোর মাধ্যমে বাড়িতে খারাপ জিনের প্রভাব পড়তে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই ধারণার কি কোনো ভিত্তি আছে?
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
১০ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
১০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

প্রতিবছরের মতো এবারও ময়মনসিংহে শুরু হয়েছে ইসলামি বইমেলা। নগরীর টাউন হল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই মেলা চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) শুরু হওয়া মেলাটির আয়োজন করেছে ‘সীরাতকেন্দ্র’। কয়েক বছর ধরে সীরাতকেন্দ্রের এই আয়োজন এই এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শুধু বই নয়, মেলার কল্যাণে প্রসারিত হচ্ছে ইসলামি সংস্কৃতিও। সেই সঙ্গে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে নৈতিক, মানবিক ও আদর্শ মানুষ হওয়ার উপাদান—সর্বোপরি ইসলামি জ্ঞান।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে মেলা। মেলার বিভিন্ন পর্বে উপস্থিত থাকবেন দেশের শীর্ষ আলেম, লেখক ও গবেষকেরা।
ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর পৃষ্ঠপোষকতায় এবারের মেলার সার্বিক সহযোগিতায় থাকছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। দেশের ৬০টির অধিক অভিজাত প্রকাশনীর অংশগ্রহণের পাশাপাশি মিসর, বৈরুত ও পাকিস্তানের স্বনামধন্য কয়েকটি প্রকাশনীর আরবি এবং উর্দু বইও পাওয়া যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠাগার ও ব্যক্তিগত সংগ্রহের জন্য বইমেলায় পাওয়া যাবে বইয়ের বিশাল সমাহার।
জানা যায়, নানা আয়োজনে সমৃদ্ধ এই মেলায় নারীদের জন্য থাকছে পৃথক একটি পর্ব। নারীরা যেন নির্বিঘ্নে বইমেলায় আসতে পারেন এবং নিজেদের পছন্দের বই স্বাচ্ছন্দ্যে ক্রয় করতে পারেন, সে জন্য রাখা হয়েছে ‘নারীপ্রহর’। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় শুধু নারীদের জন্য নির্দিষ্ট থাকবে। এ ছাড়া বাকি সময়টা সাধারণভাবে সব শ্রেণির পাঠক মেলায় আসতে পারবেন।

প্রতিবছরের মতো এবারও ময়মনসিংহে শুরু হয়েছে ইসলামি বইমেলা। নগরীর টাউন হল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই মেলা চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) শুরু হওয়া মেলাটির আয়োজন করেছে ‘সীরাতকেন্দ্র’। কয়েক বছর ধরে সীরাতকেন্দ্রের এই আয়োজন এই এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শুধু বই নয়, মেলার কল্যাণে প্রসারিত হচ্ছে ইসলামি সংস্কৃতিও। সেই সঙ্গে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে নৈতিক, মানবিক ও আদর্শ মানুষ হওয়ার উপাদান—সর্বোপরি ইসলামি জ্ঞান।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে মেলা। মেলার বিভিন্ন পর্বে উপস্থিত থাকবেন দেশের শীর্ষ আলেম, লেখক ও গবেষকেরা।
ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর পৃষ্ঠপোষকতায় এবারের মেলার সার্বিক সহযোগিতায় থাকছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। দেশের ৬০টির অধিক অভিজাত প্রকাশনীর অংশগ্রহণের পাশাপাশি মিসর, বৈরুত ও পাকিস্তানের স্বনামধন্য কয়েকটি প্রকাশনীর আরবি এবং উর্দু বইও পাওয়া যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠাগার ও ব্যক্তিগত সংগ্রহের জন্য বইমেলায় পাওয়া যাবে বইয়ের বিশাল সমাহার।
জানা যায়, নানা আয়োজনে সমৃদ্ধ এই মেলায় নারীদের জন্য থাকছে পৃথক একটি পর্ব। নারীরা যেন নির্বিঘ্নে বইমেলায় আসতে পারেন এবং নিজেদের পছন্দের বই স্বাচ্ছন্দ্যে ক্রয় করতে পারেন, সে জন্য রাখা হয়েছে ‘নারীপ্রহর’। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় শুধু নারীদের জন্য নির্দিষ্ট থাকবে। এ ছাড়া বাকি সময়টা সাধারণভাবে সব শ্রেণির পাঠক মেলায় আসতে পারবেন।

জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
৭ ঘণ্টা আগে
আমাদের দেশের কিছু মানুষের ধারণা, বাড়ির আশপাশে তালগাছ, তুলাগাছ ও বাঁশগাছ লাগালে সেগুলোর মাধ্যমে বাড়িতে খারাপ জিনের প্রভাব পড়তে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই ধারণার কি কোনো ভিত্তি আছে?
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
১০ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
১০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

আমাদের দেশের কিছু মানুষের ধারণা, বাড়ির আশপাশে তালগাছ, তুলাগাছ ও বাঁশগাছ লাগালে সেগুলোর মাধ্যমে বাড়িতে খারাপ জিনের প্রভাব পড়তে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই ধারণার কি কোনো ভিত্তি আছে?
আশিকুর রহমান, বাগিচাগাঁও, কুমিল্লা
কোরআন মাজিদ, হাদিস শরিফ ও ইসলামি আইনশাস্ত্র অধ্যয়নে প্রতীয়মান হয় যে তালগাছ, তুলাগাছ, বাঁশগাছের সঙ্গে জিন বসবাসের কোনো সম্পর্ক নেই; এটি একটি কুসংস্কার। কোরআন ও হাদিসে জিনদের বসবাসের নির্দিষ্ট কোনো গাছ বা স্থান উল্লেখ করা হয়নি। জিনেরা সাধারণত মানুষের বসতি থেকে দূরে থাকে। তাই এসব কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকাই বাঞ্ছনীয়।
কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই
নির্দিষ্ট কোনো গাছ বা যেকোনো বস্তুকে অলক্ষুনে বা অশুভ মনে করা একটি অবান্তর ও ভিত্তিহীন চিন্তা। ইসলাম এ জাতীয় ভিত্তিহীন চিন্তা বা বিশ্বাসকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে। ভালো-মন্দ সবকিছু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়। কোনো গাছ বা বস্তুর মধ্যে সত্তাগতভাবে ভালো-মন্দের প্রভাব সৃষ্টির কোনো ক্ষমতা নেই। নবীজি (সা.) এ জাতীয় অমূলক ভিত্তিহীন আকিদা বা বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোগে সংক্রমণ নেই; শুভ-অশুভ আলামত বলে কিছু নেই। পেঁচায় অশুভ আলামত নেই এবং সফর মাসে অকল্যাণ নেই।’ (সহিহ বুখারি: ৫৭৫৭)
কোনো জিনিসকে কুলক্ষুনে বা অশুভ মনে করা শিরক। হাদিস শরিফে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে। তাই কোনো গাছ বা বস্তুকে কুলক্ষুনে বা অশুভ মনে করার কোনো সুযোগ নেই। এ জাতীয় ভ্রান্ত ও অমূলক চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য বিষয়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো বস্তুকে কুলক্ষণ মনে করা শিরক, কোনো বস্তুকে কুলক্ষণ ভাবা শিরক। আমাদের কারও মনে কিছু জাগা স্বাভাবিক; তবে আল্লাহর ওপর ভরসা করলে তিনি তা দূর করে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৯১০)
বৃক্ষরোপণ সওয়াবের কাজ
তালগাছ, তুলাগাছ তথা যেকোনো গাছই প্রকৃতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত। মহানবী (সা.) নিজেও একাধিক হাদিসে বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। বৃক্ষরোপণের ফজিলত বর্ণনা করেছেন। যেমন হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যেকোনো মুসলমান ফলবান গাছ রোপণ করে কিংবা কোনো ফসল ফলায়, আর তা থেকে পাখি, মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু আহার গ্রহণ করে, তবে তা তার পক্ষ থেকে সদকা বলে গণ্য হবে।’ (সহিহ বুখারি: ২৩২০)
এ ছাড়া হাদিসের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদের ২৩৫২০ নম্বর হাদিসেও বৃক্ষরোপণের ফজিলত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা রয়েছে। যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণের প্রতি উৎসাহিত করে বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন গাছ লাগায়, ওই গাছে যত ফল হবে, তার আমলনামায় সেই ফল পরিমাণ সওয়াব লিপিবদ্ধ হবে।’
প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে বৃক্ষরোপণের তাৎপর্য অত্যধিক। কেননা দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি প্রাণীর বেঁচে থাকতে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে বৃক্ষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ জন্য নবী (সা.) বিনা কারণে বৃক্ষনিধনে নিষেধ করেছেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি (অপ্রয়োজনে) কোনো বরইগাছ কাটবে, আল্লাহ তাকে মাথা উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫২৩৯)
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন আশরাফী, মুফতি ও মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম, টঙ্গী, গাজীপুর।

আমাদের দেশের কিছু মানুষের ধারণা, বাড়ির আশপাশে তালগাছ, তুলাগাছ ও বাঁশগাছ লাগালে সেগুলোর মাধ্যমে বাড়িতে খারাপ জিনের প্রভাব পড়তে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই ধারণার কি কোনো ভিত্তি আছে?
আশিকুর রহমান, বাগিচাগাঁও, কুমিল্লা
কোরআন মাজিদ, হাদিস শরিফ ও ইসলামি আইনশাস্ত্র অধ্যয়নে প্রতীয়মান হয় যে তালগাছ, তুলাগাছ, বাঁশগাছের সঙ্গে জিন বসবাসের কোনো সম্পর্ক নেই; এটি একটি কুসংস্কার। কোরআন ও হাদিসে জিনদের বসবাসের নির্দিষ্ট কোনো গাছ বা স্থান উল্লেখ করা হয়নি। জিনেরা সাধারণত মানুষের বসতি থেকে দূরে থাকে। তাই এসব কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকাই বাঞ্ছনীয়।
কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই
নির্দিষ্ট কোনো গাছ বা যেকোনো বস্তুকে অলক্ষুনে বা অশুভ মনে করা একটি অবান্তর ও ভিত্তিহীন চিন্তা। ইসলাম এ জাতীয় ভিত্তিহীন চিন্তা বা বিশ্বাসকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে। ভালো-মন্দ সবকিছু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়। কোনো গাছ বা বস্তুর মধ্যে সত্তাগতভাবে ভালো-মন্দের প্রভাব সৃষ্টির কোনো ক্ষমতা নেই। নবীজি (সা.) এ জাতীয় অমূলক ভিত্তিহীন আকিদা বা বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোগে সংক্রমণ নেই; শুভ-অশুভ আলামত বলে কিছু নেই। পেঁচায় অশুভ আলামত নেই এবং সফর মাসে অকল্যাণ নেই।’ (সহিহ বুখারি: ৫৭৫৭)
কোনো জিনিসকে কুলক্ষুনে বা অশুভ মনে করা শিরক। হাদিস শরিফে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে। তাই কোনো গাছ বা বস্তুকে কুলক্ষুনে বা অশুভ মনে করার কোনো সুযোগ নেই। এ জাতীয় ভ্রান্ত ও অমূলক চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য বিষয়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো বস্তুকে কুলক্ষণ মনে করা শিরক, কোনো বস্তুকে কুলক্ষণ ভাবা শিরক। আমাদের কারও মনে কিছু জাগা স্বাভাবিক; তবে আল্লাহর ওপর ভরসা করলে তিনি তা দূর করে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৯১০)
বৃক্ষরোপণ সওয়াবের কাজ
তালগাছ, তুলাগাছ তথা যেকোনো গাছই প্রকৃতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত। মহানবী (সা.) নিজেও একাধিক হাদিসে বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। বৃক্ষরোপণের ফজিলত বর্ণনা করেছেন। যেমন হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যেকোনো মুসলমান ফলবান গাছ রোপণ করে কিংবা কোনো ফসল ফলায়, আর তা থেকে পাখি, মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু আহার গ্রহণ করে, তবে তা তার পক্ষ থেকে সদকা বলে গণ্য হবে।’ (সহিহ বুখারি: ২৩২০)
এ ছাড়া হাদিসের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদের ২৩৫২০ নম্বর হাদিসেও বৃক্ষরোপণের ফজিলত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা রয়েছে। যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণের প্রতি উৎসাহিত করে বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন গাছ লাগায়, ওই গাছে যত ফল হবে, তার আমলনামায় সেই ফল পরিমাণ সওয়াব লিপিবদ্ধ হবে।’
প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে বৃক্ষরোপণের তাৎপর্য অত্যধিক। কেননা দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি প্রাণীর বেঁচে থাকতে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে বৃক্ষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এ জন্য নবী (সা.) বিনা কারণে বৃক্ষনিধনে নিষেধ করেছেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি (অপ্রয়োজনে) কোনো বরইগাছ কাটবে, আল্লাহ তাকে মাথা উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫২৩৯)
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন আশরাফী, মুফতি ও মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম, টঙ্গী, গাজীপুর।

জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
৭ ঘণ্টা আগে
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) শুরু হওয়া মেলাটির আয়োজন করেছে ‘সীরাতকেন্দ্র’। কয়েক বছর ধরে সীরাতকেন্দ্রের এই আয়োজন এই এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শুধু বই নয়, মেলার কল্যাণে প্রসারিত হচ্ছে ইসলামি সংস্কৃতিও। সেই সঙ্গে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে নৈতিক, মানবিক ও আদর্শ মানুষ হওয়ার উপাদান—সর্বোপরি ইসলামি জ্ঞান।
৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
১০ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
১০ ঘণ্টা আগেআব্দুল্লাহ আফফান

নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়, হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়। এসব আমল সংক্ষিপ্ত হলেও বরকত অসীম।
ফরজ নামাজের পর আমল
» এক. রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি ফরজ নামাজ শেষে তিনবার বলতেন, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাই।’ এরপর তিনি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরাম।’ অর্থ, ‘হে আল্লাহ, আপনি শান্তির উৎস এবং আপনার থেকেই শান্তি আসে। আপনি মহিমান্বিত ও বরকতময়।’ এই আমলের বর্ণনা সহিহ মুসলিমের ১২১২ নম্বর হাদিসে পাওয়া যায়।
» দুই. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে এবং শেষে বলবে—‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’, তার গুনাহ সাগরের ফেনারাশির মতো হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ মুসলিম: ৪৯০৬)
» তিন. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’ (সুনানে নাসায়ি: ৯৯২৮)
ফজর ও মাগরিবের পর দোয়া
রাসুলুল্লাহ (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন—ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর সাতবার পড়তে হবে, ‘আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ২৩৯৬)। যদিও হাদিসটি সনদের দিক থেকে দুর্বল, তবু আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছেন ইসলামবিষয়ক গবেষকগণ।
কোরআন তিলাওয়াতের আমল
নামাজের পর পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত অন্যতম শ্রেষ্ঠ জিকির। সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন নামাজের পর বিভিন্ন সুরা পাঠ করতেন—ফজরের পর সুরা ইয়াসিন, জোহরের পর সুরা ফাতহ, আসরের পর সুরা নাবা, মাগরিবের পর সুরা ওয়াকিয়া, এশার পর সুরা মুলক।
রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও প্রতি রাতে সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক পাঠ না করে ঘুমাতেন না। (জামে তিরমিজি: ২৮৯২)
ফরজ নামাজ শেষে এই সংক্ষিপ্ত আমলগুলো আমাদের আত্মাকে করে তুলবে প্রশান্ত, মনকে দেবে শান্তি, আর জীবনকে করে দেবে বরকতময়। নামাজ শেষ হওয়া মানেই ইবাদতের শেষ নয়; বরং সেটাই আল্লাহর স্মরণে নতুন করে ডুবে যাওয়ার সময়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর কিছুক্ষণ যদি আমরা এসব দোয়া ও তিলাওয়াতে ব্যয় করি, তাহলে আমাদের প্রতিটি দিন হবে আলোকিত, আর হৃদয় ভরে উঠবে ইমানের মাধুর্যে।

নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়, হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়। এসব আমল সংক্ষিপ্ত হলেও বরকত অসীম।
ফরজ নামাজের পর আমল
» এক. রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি ফরজ নামাজ শেষে তিনবার বলতেন, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাই।’ এরপর তিনি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরাম।’ অর্থ, ‘হে আল্লাহ, আপনি শান্তির উৎস এবং আপনার থেকেই শান্তি আসে। আপনি মহিমান্বিত ও বরকতময়।’ এই আমলের বর্ণনা সহিহ মুসলিমের ১২১২ নম্বর হাদিসে পাওয়া যায়।
» দুই. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে এবং শেষে বলবে—‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’, তার গুনাহ সাগরের ফেনারাশির মতো হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ মুসলিম: ৪৯০৬)
» তিন. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’ (সুনানে নাসায়ি: ৯৯২৮)
ফজর ও মাগরিবের পর দোয়া
রাসুলুল্লাহ (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন—ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর সাতবার পড়তে হবে, ‘আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ২৩৯৬)। যদিও হাদিসটি সনদের দিক থেকে দুর্বল, তবু আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছেন ইসলামবিষয়ক গবেষকগণ।
কোরআন তিলাওয়াতের আমল
নামাজের পর পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত অন্যতম শ্রেষ্ঠ জিকির। সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন নামাজের পর বিভিন্ন সুরা পাঠ করতেন—ফজরের পর সুরা ইয়াসিন, জোহরের পর সুরা ফাতহ, আসরের পর সুরা নাবা, মাগরিবের পর সুরা ওয়াকিয়া, এশার পর সুরা মুলক।
রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও প্রতি রাতে সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক পাঠ না করে ঘুমাতেন না। (জামে তিরমিজি: ২৮৯২)
ফরজ নামাজ শেষে এই সংক্ষিপ্ত আমলগুলো আমাদের আত্মাকে করে তুলবে প্রশান্ত, মনকে দেবে শান্তি, আর জীবনকে করে দেবে বরকতময়। নামাজ শেষ হওয়া মানেই ইবাদতের শেষ নয়; বরং সেটাই আল্লাহর স্মরণে নতুন করে ডুবে যাওয়ার সময়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর কিছুক্ষণ যদি আমরা এসব দোয়া ও তিলাওয়াতে ব্যয় করি, তাহলে আমাদের প্রতিটি দিন হবে আলোকিত, আর হৃদয় ভরে উঠবে ইমানের মাধুর্যে।

জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
৭ ঘণ্টা আগে
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) শুরু হওয়া মেলাটির আয়োজন করেছে ‘সীরাতকেন্দ্র’। কয়েক বছর ধরে সীরাতকেন্দ্রের এই আয়োজন এই এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শুধু বই নয়, মেলার কল্যাণে প্রসারিত হচ্ছে ইসলামি সংস্কৃতিও। সেই সঙ্গে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে নৈতিক, মানবিক ও আদর্শ মানুষ হওয়ার উপাদান—সর্বোপরি ইসলামি জ্ঞান।
৭ ঘণ্টা আগে
আমাদের দেশের কিছু মানুষের ধারণা, বাড়ির আশপাশে তালগাছ, তুলাগাছ ও বাঁশগাছ লাগালে সেগুলোর মাধ্যমে বাড়িতে খারাপ জিনের প্রভাব পড়তে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই ধারণার কি কোনো ভিত্তি আছে?
৮ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
১০ ঘণ্টা আগেতাসনিফ আবীদ

ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া। যুগে যুগে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বহু নবী-রাসুলকে এই শান্তি ও ন্যায়ের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যেন তাঁরা অন্ধকারজগতের বাসিন্দাদের আলোর পথে ফিরিয়ে এনে দিশাহীনদের সঠিক পথ দেখাতে পারেন। কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী, মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান রক্ষা করা ইসলামের মৌলিক কর্তব্য। এ জন্য ইসলামে নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং সমাজের শৃঙ্খলা নষ্টকারী সব ধরনের কার্যকলাপকে ঘৃণিত পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
হত্যা ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর হুঁশিয়ারি
নৈরাজ্য ও অরাজকতার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হলো অন্যায়ভাবে মানুষের রক্তপাত ঘটানো বা হত্যা করা। ইসলামে এটিকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে। অন্যায়ভাবে বিচারবহির্ভূত মানুষ হত্যা, পৃথিবীতে রক্তপাত, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন—যে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করল, সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। (সুরা মায়েদা: ৩২)। অন্যত্র হত্যার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভয়ংকর শাস্তি।’ (সুরা নিসা: ৯৩)
এমনকি, কিয়ামতের দিবসে সর্বপ্রথম রক্তপাত তথা হত্যার বিচার হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসলিম রাষ্ট্রের অমুসলিম নাগরিক (জিম্মি) হত্যা সম্পর্কেও কঠোরভাবে সতর্ক করে বলেছেন, হত্যাকারী জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। এই নির্দেশনাসমূহ প্রমাণ করে, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িতরা পথভ্রষ্ট, তাদের কোনো ধর্ম নেই।
ফিতনা (বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টি: হত্যা অপেক্ষাও মারাত্মক অপরাধ
ইসলামে অরাজকতা, অস্থিরতা, হানাহানি, মতবিরোধ এবং গুজব ছড়িয়ে সমাজে ফিতনা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাকে অত্যন্ত গুরুতর পাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোরআনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, ‘ফেতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা: ১৯১)। এ ছাড়া আল্লাহ তাআলা বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অপছন্দ করেন—‘পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস: ৭৭)
ইসলাম এসব কর্ম পরিহার করে সর্বদা ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়। নবীজি (সা.) উম্মতকে শেষ জামানায় আগত ফিতনা থেকে বাঁচতে বারবার সতর্ক করেছেন এবং ফিতনার সময় নেক আমলের দিকে অগ্রসর হতে ও মুসলিম জামাত আঁকড়ে ধরে থাকার গুরুত্ব দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য
শান্তি ও শৃঙ্খলার প্রধান শত্রু কেবল বোমাবাজি বা সন্ত্রাস নয়, অর্থনৈতিক নৈরাজ্যও সমাজকে গ্রাস করে। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকা, নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে যাওয়া এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফালিপ্সা এর বড় প্রমাণ। সরবরাহের ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীরা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে, যার ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ভোক্তাকে উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। এটিও একধরনের সামাজিক নৈরাজ্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের অর্থনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—‘যে ব্যক্তি মূল্যবৃদ্ধির অসদুদ্দেশে মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপ করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে আগুনের হাঁড়িতে বসিয়ে শাস্তি দেবেন।’ (তাবরানি: ৮ / ২১০)
নৈরাজ্য রোধে কার্যকর হাতিয়ার: খোদাভীতি ও জবাবদিহির মানসিকতা
নৈরাজ্য ও অরাজকতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার প্রধান উপায় হলো মানুষের মধ্যে খোদাভীতি (তাকওয়া) এবং পরকালীন জবাবদিহির মানসিকতা সৃষ্টি করা। যাদের অন্তরে আল্লাহভীতি এবং আখিরাতে হিসাব দেওয়ার পরোয়া নেই, তাদের মধ্যেই অরাজকতার স্বভাব সহজে প্রবেশ করে। জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে যে দুনিয়ায় মানুষের চোখকে ফাঁকি দেওয়া গেলেও আখিরাতে আল্লাহর দরবারে সব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। এমনকি কিয়ামতের দিন হাত-পা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গও কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহ তাআলার ঘোষণা—‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা ইয়াসিন: ৬৫)
যাদের মধ্যে তাকওয়া থাকবে, তারা কখনো অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, যখন কোনো এলাকার মানুষ ইমান আনবে এবং তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করবে, তখন তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দেওয়া হবে।
ইসলামি শরিয়তের দুই মূল উৎস কোরআন ও সুন্নাহর বিধানকে নিজেদের জীবনের জন্য অপরিহার্য করে তোলাই হলো সব ধরনের নৈরাজ্য ও অরাজকতা থেকে বাঁচার কার্যকর উপায়। রাষ্ট্রীয় আইন যেমন অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি খোদাভীতি হলো অপরাধ দমনের অভ্যন্তরীণ ঢাল। আমাদের কর্তব্য হলো সত্যিকারের ইসলামি জীবনচর্চার মাধ্যমে সমাজকে ফিতনা ও অরাজকতা থেকে রক্ষা করে পরিবার ও রাষ্ট্রের সর্বত্র শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া। যুগে যুগে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বহু নবী-রাসুলকে এই শান্তি ও ন্যায়ের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যেন তাঁরা অন্ধকারজগতের বাসিন্দাদের আলোর পথে ফিরিয়ে এনে দিশাহীনদের সঠিক পথ দেখাতে পারেন। কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী, মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান রক্ষা করা ইসলামের মৌলিক কর্তব্য। এ জন্য ইসলামে নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং সমাজের শৃঙ্খলা নষ্টকারী সব ধরনের কার্যকলাপকে ঘৃণিত পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
হত্যা ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর হুঁশিয়ারি
নৈরাজ্য ও অরাজকতার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হলো অন্যায়ভাবে মানুষের রক্তপাত ঘটানো বা হত্যা করা। ইসলামে এটিকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে। অন্যায়ভাবে বিচারবহির্ভূত মানুষ হত্যা, পৃথিবীতে রক্তপাত, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন—যে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করল, সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। (সুরা মায়েদা: ৩২)। অন্যত্র হত্যার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভয়ংকর শাস্তি।’ (সুরা নিসা: ৯৩)
এমনকি, কিয়ামতের দিবসে সর্বপ্রথম রক্তপাত তথা হত্যার বিচার হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসলিম রাষ্ট্রের অমুসলিম নাগরিক (জিম্মি) হত্যা সম্পর্কেও কঠোরভাবে সতর্ক করে বলেছেন, হত্যাকারী জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। এই নির্দেশনাসমূহ প্রমাণ করে, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িতরা পথভ্রষ্ট, তাদের কোনো ধর্ম নেই।
ফিতনা (বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টি: হত্যা অপেক্ষাও মারাত্মক অপরাধ
ইসলামে অরাজকতা, অস্থিরতা, হানাহানি, মতবিরোধ এবং গুজব ছড়িয়ে সমাজে ফিতনা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাকে অত্যন্ত গুরুতর পাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোরআনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, ‘ফেতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা: ১৯১)। এ ছাড়া আল্লাহ তাআলা বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অপছন্দ করেন—‘পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস: ৭৭)
ইসলাম এসব কর্ম পরিহার করে সর্বদা ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়। নবীজি (সা.) উম্মতকে শেষ জামানায় আগত ফিতনা থেকে বাঁচতে বারবার সতর্ক করেছেন এবং ফিতনার সময় নেক আমলের দিকে অগ্রসর হতে ও মুসলিম জামাত আঁকড়ে ধরে থাকার গুরুত্ব দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য
শান্তি ও শৃঙ্খলার প্রধান শত্রু কেবল বোমাবাজি বা সন্ত্রাস নয়, অর্থনৈতিক নৈরাজ্যও সমাজকে গ্রাস করে। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকা, নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে যাওয়া এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফালিপ্সা এর বড় প্রমাণ। সরবরাহের ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীরা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে, যার ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ভোক্তাকে উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। এটিও একধরনের সামাজিক নৈরাজ্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের অর্থনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—‘যে ব্যক্তি মূল্যবৃদ্ধির অসদুদ্দেশে মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপ করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে আগুনের হাঁড়িতে বসিয়ে শাস্তি দেবেন।’ (তাবরানি: ৮ / ২১০)
নৈরাজ্য রোধে কার্যকর হাতিয়ার: খোদাভীতি ও জবাবদিহির মানসিকতা
নৈরাজ্য ও অরাজকতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার প্রধান উপায় হলো মানুষের মধ্যে খোদাভীতি (তাকওয়া) এবং পরকালীন জবাবদিহির মানসিকতা সৃষ্টি করা। যাদের অন্তরে আল্লাহভীতি এবং আখিরাতে হিসাব দেওয়ার পরোয়া নেই, তাদের মধ্যেই অরাজকতার স্বভাব সহজে প্রবেশ করে। জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে যে দুনিয়ায় মানুষের চোখকে ফাঁকি দেওয়া গেলেও আখিরাতে আল্লাহর দরবারে সব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। এমনকি কিয়ামতের দিন হাত-পা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গও কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহ তাআলার ঘোষণা—‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা ইয়াসিন: ৬৫)
যাদের মধ্যে তাকওয়া থাকবে, তারা কখনো অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, যখন কোনো এলাকার মানুষ ইমান আনবে এবং তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করবে, তখন তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দেওয়া হবে।
ইসলামি শরিয়তের দুই মূল উৎস কোরআন ও সুন্নাহর বিধানকে নিজেদের জীবনের জন্য অপরিহার্য করে তোলাই হলো সব ধরনের নৈরাজ্য ও অরাজকতা থেকে বাঁচার কার্যকর উপায়। রাষ্ট্রীয় আইন যেমন অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি খোদাভীতি হলো অপরাধ দমনের অভ্যন্তরীণ ঢাল। আমাদের কর্তব্য হলো সত্যিকারের ইসলামি জীবনচর্চার মাধ্যমে সমাজকে ফিতনা ও অরাজকতা থেকে রক্ষা করে পরিবার ও রাষ্ট্রের সর্বত্র শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

জুমা শুধু সপ্তাহের একটি দিন নয়; এটি আত্মার এক নতুন সূচনা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের সেরা দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে নামানো হয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
৭ ঘণ্টা আগে
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) শুরু হওয়া মেলাটির আয়োজন করেছে ‘সীরাতকেন্দ্র’। কয়েক বছর ধরে সীরাতকেন্দ্রের এই আয়োজন এই এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শুধু বই নয়, মেলার কল্যাণে প্রসারিত হচ্ছে ইসলামি সংস্কৃতিও। সেই সঙ্গে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে নৈতিক, মানবিক ও আদর্শ মানুষ হওয়ার উপাদান—সর্বোপরি ইসলামি জ্ঞান।
৭ ঘণ্টা আগে
আমাদের দেশের কিছু মানুষের ধারণা, বাড়ির আশপাশে তালগাছ, তুলাগাছ ও বাঁশগাছ লাগালে সেগুলোর মাধ্যমে বাড়িতে খারাপ জিনের প্রভাব পড়তে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই ধারণার কি কোনো ভিত্তি আছে?
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
১০ ঘণ্টা আগে