Ajker Patrika

আজকের নামাজের সময়সূচি: ৩১ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪৬ মিনিট
ফজর০৪: ৪৭ মিনিট০৬: ০৩ মিনিট
জোহর১১: ৪৩ মিনিট০৩: ৪৩ মিনিট
আসর০৩: ৪৪ মিনিট০৫: ১৯ মিনিট
মাগরিব০৫: ২১ মিনিট০৬: ৩৬ মিনিট
এশা০৬: ৩৭ মিনিট০৪: ৪৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—

চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট

সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—

খুলনা: ০৩ মিনিট

রাজশাহী: ০৭ মিনিট

রংপুর: ০৮ মিনিট

বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব নেই জুলাই সনদে, ক্ষোভ বিএনপির

বদলি-পদায়ন নিয়ে জটিলতার পর জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি বাতিল

মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব জাতির জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে, বিএনপির হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্তান দত্তক নেওয়ার বিষয়ে ইসলামের বিধান

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।

আলমগীর দেওয়ান, সিলেট

আপনার ২৫ বছরের দাম্পত্যজীবনে সন্তান লাভের আকাঙ্ক্ষা এবং সন্তানহীনতার শূন্যতা পূরণে একটি শিশুকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত মানবিক ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ইসলাম আপনার এই মহৎ সিদ্ধান্তকে শুধু অনুমোদনই করে না, বরং এতিম, গৃহহীন বা অসহায় শিশুর অভিভাবকত্ব নিয়ে তাকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে অত্যন্ত সওয়াবের কাজ হিসেবে উৎসাহিত করে। তবে শরিয়তের কিছু মৌলিক নীতিমালা মেনে এটি করতে হবে, যা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

দত্তক নিলে মানতে হবে যেসব বিধান

ইসলামে অন্য কারও সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ, মমতা, অন্ন, বস্ত্র ও শিক্ষা দিয়ে লালন-পালন করাকে কাফালাহ বা অভিভাবকত্ব গ্রহণ বলা হয়। এটি বৈধ, বলা যায় এটি একটি মহৎ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এতিম বা অসহায় শিশুর দায়িত্ব নেওয়াকে বিপুল সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছেন। (সহিহ বুখারি: ৬০০৫)

তবে সাধারণ অর্থে প্রচলিত দত্তক প্রথা ইসলাম সমর্থন করে না, যেখানে সন্তানের আসল পিতামাতার পরিচয় মুছে ফেলা হয় এবং তাকে জৈবিক সন্তানের মতো সকল আইনি অধিকার (উত্তরাধিকার ও পর্দা) দেওয়া হয়। বরং ইসলাম অনুমোদন করে কাফালাহ, যার মূল শর্ত হলো শিশুর আসল পিতৃপরিচয় বহাল রাখা।

ইসলামে কোনো স্বাধীন মানুষের প্রকৃত পিতৃপরিচয় ছিন্ন করা সম্পূর্ণভাবে হারাম ও কবিরা গুনাহ। দত্তক নেওয়ার কারণে শিশুর আসল মা-বাবা ও বংশের সম্পর্ক কোনোভাবেই বিলুপ্ত হবে না। তাই শিশুর জন্মসনদ, শিক্ষাসনদ, ভোটার আইডি বা অন্য যেকোনো দাপ্তরিক দলিলে তার আসল পিতার নাম উল্লেখ করা আবশ্যক।

দত্তক নেওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো পর্দার বিষয়টি। লালন-পালনকারীর সঙ্গে পালিত সন্তানের রক্তের সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। ফলে পালক নেওয়া শিশুটি ছেলে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাকে পালক মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে হলে পালক বাবার সঙ্গে শরিয়তের পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। পর্দার এই কঠোরতা এড়ানোর জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো—শিশুটিকে দুগ্ধপোষ্য অবস্থায় (জন্মের পর প্রথম দুই বছরের মধ্যে) পালক নেওয়া মায়ের কোনো বোন বা মেয়ে দ্বারা এমনভাবে দুধ পান করানো, যাতে সে দুগ্ধ-সম্পর্কীয় মাহরাম হয়ে যায়। দুগ্ধ-সম্পর্ক তৈরি হলে তাদের মধ্যে পর্দা আর আবশ্যক থাকবে না। (সহিহ বুখারি: ২৬৪৫)

পালক সন্তান লালন-পালনকারীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী (ওয়ারিশ) হিসেবে তাঁর সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। কারণ রক্তের সম্পর্ক না থাকায় সে মিরাসের হকদার হয় না। তবে, লালন-পালনকারী তাঁর জীবদ্দশায় স্নেহবশত পালক সন্তানকে সম্পত্তি দান বা হেবা করতে পারবেন। অথবা, তিনি তাঁর মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ থেকে পালক সন্তানের জন্য অসিয়ত (উইল) করে যেতে পারবেন।

পোষ্য সন্তানের তার লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাবশত মা-বাবা বলে ডাকা জায়েজ। একইভাবে তাঁরাও সন্তানকে স্নেহ করে ছেলেমেয়ে ডাকতে পারবেন।

উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব নেই জুলাই সনদে, ক্ষোভ বিএনপির

বদলি-পদায়ন নিয়ে জটিলতার পর জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি বাতিল

মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব জাতির জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে, বিএনপির হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিভেদ নয়, ভ্রাতৃত্বই মুমিনের শক্তি

কাউসার লাবীব
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৪৫
বিভেদ নয়, ভ্রাতৃত্বই মুমিনের শক্তি

সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত: এক. আল্লাহ, দুই. রাসুলুল্লাহ ও তিন. কিতাবুল্লাহ। যার অর্থ—এক আল্লাহর প্রতি অবিচল ইমান, তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্পূর্ণ আনুগত্য এবং আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনের পরিপূর্ণ অনুসরণ। এই ভিত্তিই মুসলমানদের জাতি, বর্ণ ও ভাষার ঊর্ধ্বে এক অভিন্ন জাতিসত্তায় পরিণত করে।

মহানবী (সা.) মুমিনের পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, ‘যারা আমাদের নামাজ মানে, আমাদের কিবলা মানে এবং আমাদের জবাই করা হালাল পশুকে হালাল মনে করে; তারা মুসলিম। তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল জিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জিম্মাদারি খিয়ানত কোরো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮৪-৩৮৫)।

ঐক্যবদ্ধ থাকার সুফল

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ঐক্য ও সংহতির বিষয়ে বারবার জোর দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরগুলোয় প্রীতি দিয়েছেন, ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃরূপ লাভ করেছ।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)। এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে বোঝানো হয়েছে, যা একাধারে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক এবং মুসলমানদের পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যম।

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং পরস্পর কলহ কোরো না (ঐক্যবদ্ধ থাকো)। অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধরো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনফাল: ৪৬)। এই আয়াত পরিষ্কারভাবে বোঝায় যে অনৈক্য কেবল গুনাহের কাজ নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, প্রতিপত্তি ও সুনাম নষ্টের প্রধান কারণ।

ইসলামে মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনেরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ১০)। এই সম্পর্কের নিদর্শন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতা।

মহানবী (সা.) এই সম্পর্কের গভীরতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসী মুমিনগণ সম্প্রীতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতায় যেন এক দেহ এক প্রাণ—যেমন শরীরের একটি অঙ্গে আঘাত পেলে সারা অঙ্গ ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটায় ও জ্বরে ঘর্মাক্ত হয়।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মুসলিমের বিপদ বা দুঃখকে অপর মুসলিম তার নিজের কষ্ট হিসেবে অনুভব করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.)-এর ভাষায়, প্রকৃত মুমিন তো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।’ (সহিহ বুখারি)।

বিভেদ ও মতানৈক্য নিরসনের পথ

মুসলমানদের মধ্যে মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্ব-বিবাদ থাকা স্বাভাবিক। তবে ইসলামে এই মতানৈক্য বহাল রেখে বিচ্ছিন্ন থাকার কোনো সুযোগ নেই। মতবিরোধের সৃষ্টি হলে এর সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যর্পণ করো, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।’ (সুরা নিসা: ৫৯)। এ ছাড়া, বিবাদ দেখা দিলে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার কথা।

অনৈক্যের পরিণাম ও বর্তমান প্রেক্ষাপট

বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ অনৈক্য, বিভেদ-বিসংবাদ ও কলহে জর্জরিত। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিভাজন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বে মুসলমানেরা নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং তাদের রক্ত ঝরছে। এই বিভেদ জিইয়ে রাখা শয়তানের কাজ, যা উম্মাহর মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করছে।

ইতিহাস সাক্ষী, ঐক্যই শক্তি। পশ্চিমা শক্তিগুলো যখন তাদের ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে নিজেদের স্বার্থে একই প্ল্যাটফর্মে সমবেত হয়, তখন মুসলিম দেশগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভাজনে ডুবে থাকে। মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ না থাকার কারণেই বহির্বিশ্বে আজ মুসলিমরা তাদের ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছে, নিজ ভূখণ্ডে দাসে পরিণত হচ্ছে এবং মজলুমদের কান্না থামছে না।

আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়ায় সফলতার জন্য পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। সকল ভেদাভেদ, বিভেদ-বিভাজন ভুলে এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। বিভেদ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে সহিষ্ণুতা ও কল্যাণকামিতার ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করতে পারলেই আমরা আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হতে পারব এবং বহিঃশত্রুর সামনে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হতে পারব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব নেই জুলাই সনদে, ক্ষোভ বিএনপির

বদলি-পদায়ন নিয়ে জটিলতার পর জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি বাতিল

মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব জাতির জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে, বিএনপির হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা: আত্মার জাগরণের সুযোগ

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
জুম্মা মসজিদ, মাপুতো, মোজাম্বিক। ছবি: সংগৃহীত
জুম্মা মসজিদ, মাপুতো, মোজাম্বিক। ছবি: সংগৃহীত

হিজরি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। এ মাসের নামেই রয়েছে গভীর এক ইঙ্গিত। জমাদাহ অর্থ শুষ্কতা, আর আউয়াল মানে প্রথম। যেমন প্রকৃতি শুষ্ক হয়ে বৃষ্টি পেলে সজীব হয়, তেমনি মানুষের হৃদয়ও অনেক সময় আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে গিয়ে শুকিয়ে যায়।

এ মাসের দ্বিতীয় জুমা সেই শুষ্ক হৃদয়কে নরম করার, আত্মাকে জাগ্রত করার সময়।

জুমা-রহমত ও বরকতের দিন

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন আল্লাহর স্মরণের দিকে ছুটে যাও এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করো।’ (সুরা জুমা: ৯)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯৩৫)। অতএব, জুমা কেবল নামাজের দিন নয়—এটি আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও দোয়া কবুলের বিশেষ সময়।

পরিশেষে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর দিকে আন্তরিক তওবা করো। (সুরা তাহরিম: ৮)

জমাদিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আমাদের শেখায়—জীবনের প্রতিটি জুমা হতে পারে একটি নতুন শুরু, যদি আমরা অন্তর দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করি। তাই এই জুমা হোক আত্মার জাগরণের সূচনা। পাপমুক্ত জীবনের শপথ, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রেরণা।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগীকল্যাণ সোসাইটি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব নেই জুলাই সনদে, ক্ষোভ বিএনপির

বদলি-পদায়ন নিয়ে জটিলতার পর জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি বাতিল

মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব জাতির জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে, বিএনপির হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শতাব্দী পেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কাজির মসজিদ

মোখতারুল ইসলাম মিলন
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুড়িগ্রাম জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন—প্রাচীন কাজির মসজিদ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই মসজিদটি এ অঞ্চলের ইসলামিক ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং স্থানীয় মুসলিমদের ধর্মীয় কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

কাজির মসজিদ কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার অন্তর্গত দলদলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। উলিপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে এই প্রাচীন মসজিদটির অবস্থান। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত। রংপুর বিভাগের এই অঞ্চলে ইসলামিক স্থাপত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এই মসজিদের রয়েছে অনন্য মর্যাদা।

কাজির মসজিদের নির্মাণকাল নিয়ে ইতিহাসবিদদের বিভিন্ন মত রয়েছে। তবে স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য ও স্থানীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে এই মসজিদ মধ্যযুগীয় সুলতানি বা প্রাক্‌-মোগল আমলে নির্মিত হয়েছিল। মসজিদের নামকরণ থেকেই বোঝা যায় এটি সম্ভবত কোনো স্থানীয় কাজির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। মধ্যযুগে কাজিরা ছিলেন ইসলামিক আইনের বিচারক এবং ধর্মীয় নেতা। তাঁরা তাঁদের এলাকায় ইসলামিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। এই অঞ্চলে ইসলামের প্রসার ঘটেছিল প্রধানত সুফি সাধকদের প্রচেষ্টায়। সুলতানি আমলে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে যেমন মসজিদ ও খানকাহ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তেমনি উত্তরবঙ্গেও ইসলামিক স্থাপত্যের নিদর্শন গড়ে উঠেছিল। কাজির মসজিদ সেই ঐতিহ্যেরই একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

যদিও কালের আবর্তনে মসজিদের মূল কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন এসেছে, তবু এর প্রাচীন স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের চিহ্ন দৃশ্যমান। বাংলার সুলতানি আমলের মসজিদগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিল রেখে এই মসজিদেও পুরু দেয়াল, খিলানাকৃতির দরজা ও জানালা এবং টেরাকোটার অলংকরণের নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করে নির্মিত এই মসজিদে বাংলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যরীতির প্রভাব স্পষ্ট। মসজিদের মিহরাব ও মিম্বরের কাজে শিল্পকুশলতার পরিচয় মেলে। দেয়ালের গাঁথুনিতে ব্যবহৃত ইট ও চুন-সুরকির মিশ্রণ সেকালের নির্মাণকৌশলের প্রমাণ বহন করে। মসজিদের চারপাশে একসময় যে প্রাচীর ও অন্যান্য স্থাপনা ছিল, তার অবশেষ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়।

কুড়িগ্রামের প্রাচীন কাজির মসজিদ বাংলাদেশের ইসলামিক ঐতিহ্যের একটি অমূল্য নিদর্শন। এটি কেবল প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা নয়, বরং জীবন্ত ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যা আজও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই মসজিদের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মধ্যযুগীয় ইসলামিক সভ্যতা ও স্থাপত্যের এক অনন্য দিক সম্পর্কে জানতে পারি। আজকের যুগে যখন আধুনিকতার ঢেউয়ে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন হারিয়ে যাচ্ছে, তখন কাজির মসজিদের মতো প্রাচীন স্থাপনা আমাদের অতীতের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতে সাহায্য করছে। এই মসজিদ সংরক্ষণ ও এর ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পৌঁছে দিতে পারি। প্রাচীন কাজির মসজিদ তাই শুধু কুড়িগ্রামের নয়, সমগ্র বাংলাদেশের একটি গর্বের সম্পদ। এর যথাযথ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা সম্ভব।

লেখক: শিক্ষার্থী, শরীফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা, ধামরাই, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব নেই জুলাই সনদে, ক্ষোভ বিএনপির

বদলি-পদায়ন নিয়ে জটিলতার পর জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি বাতিল

মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব জাতির জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে, বিএনপির হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত