Ajker Patrika

আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের জ্যোতির্ময় জ্ঞানদ্যুতি

ওমর আল হুসাইন, মিসর থেকে
প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের জ্যোতির্ময় জ্ঞানদ্যুতি

আল-আজহার নয়, আজহার সম্বোধন করেই বলব। এটা আমাদের মুখের ভাষা হয়ে গেছে যে! প্রথমেই আপনাকে আমি আজহারে নিমন্ত্রণ করব। পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীনতম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাসঙ্গিকতা তো আছেই নানা ক্ষেত্রে। এই বিশ্ববিদ্যালয় দর্শনীয়ও। আজহার তো কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, হাজার বছর পরে এসেও নববি সিলসিলা জারি রাখা এক দেদীপ্যমান আলোক রশ্মি। ইসলামি শিক্ষার চির আধুনিক নয় শুধু, অত্যাধুনিক বাতিঘর। একই সঙ্গে আজহারে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি জাগতিক শিক্ষাও সমান প্রাসঙ্গিক। মানে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কোনো কিছুই, কোনো শিক্ষাই অনুপস্থিত না থাকে, আজহার তার সর্বশ্রেষ্ঠ উপমা বা উদাহরণ!

প্রতিষ্ঠা-পট

৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ। ফাতিমি শাসন তখন। চতুর্থ প্রধান খেলাফত। কায়রোতে তার রাজধানী। ওই বছরই কায়রো শহর প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন ফাতিমি শাসক ও ইমাম আল-মুইজ লিদ্বীনিল্লাহর আদেশে প্রতিষ্ঠা করা হয় আল-আজহার মসজিদ। এই মসজিদই আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণতা নেয়। আল-মুইজ লিদ্বীনিল্লাহ ছিলেন ফাতিমি খেলাফতের চতুর্থ ইমাম বা খলিফা। বলে রাখা ভালো, ফাতিমি খেলাফত ছিল শিয়া ইসমাইলিয়া প্রভাবের খেলাফত। (এই খেলাফতের নামকরণ ছিল সাইয়েদা ফাতিমা (রা.)-এর নামে)। ইমাম বা খলিফা মুইজও ইসমাইলি শিয়াই ছিলেন। ফলে আজহার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল শিয়া মতবাদ প্রচারের জন্যই।

মতবাদ পরিবর্তন

১১৭১ খ্রিষ্টাব্দে মিসরের ক্ষমতায় আসেন মহান মুজাহিদ সালাহউদ্দিন আইয়ুবী। তিনি তখন আজহারের কার্যক্রম ও শিক্ষাদান সীমিত করে দেন। ধীরে ধীরে শিয়া ইমামদের প্রভাব কমিয়ে আনেন। তখন প্রায় ১০-১২ বছর আজহারের শিক্ষা কার্যক্রম অতি সীমিত হয়ে আসে, এমনকি বন্ধই ছিল বলা চলে। পরবর্তী সময়ে তিনি সুন্নি আলেমদের নিয়োগ দেন এবং যথাক্রমে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম ও সামাজিক কার্যক্রম অগ্রগতির দিকে যেতে থাকে। এবং আজহারের সকল কার্যক্রমই এগোতে থাকে মাজহাবভিত্তিক। মানে প্রসিদ্ধ চার মাজহাবের রূপরেখায়—শাফেয়ি, হানাফি, মালিকি ও হাম্বলি।

আল-আজহারের নাম অপরিবর্তিতই আছে শুরু থেকে। কেননা শিয়ারা এই নামটি নির্বাচন করেছেন সাইয়েদা ফাতিমাতু আল-জাহরা (রা.)-এর নাম থেকে। তাই আজহারের এই নামকরণকে ফাতিমি খেলাফতের প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।

আল-আজহারের প্রাচীন ও আধুনিক স্থাপত্য

আজহারের স্থাপত্য একদিকে যেমন ইসলামি শিল্প ও স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন, তেমনি এটি ইতিহাসের নানা পর্বের সাক্ষী। প্রাচীন অংশে মুঘলীয় মিনার, মার্বেল পাথরের মেঝে ও মাঠ, আরবি ক্যালিগ্রাফি এবং কুব্বা (গম্বুজ) চোখে পড়ে, যা উসমানীয় এবং ফাতিমি স্থাপত্যের ছাপ বহন করে।

আধুনিক ভবনগুলো—গবেষণাকেন্দ্র, লাইব্রেরি, অডিটরিয়াম, আইটি ল্যাব, মেডিকেল ফ্যাকাল্টিসহ সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন। এই যুগলতা আল-আজহারকে একাধারে অতীত ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধনে পরিণত করেছে। এমনকি আধুনিক ভবনগুলোতেও ইসলামি বিভিন্ন খেলাফতের বিভিন্ন ছাপ পরিলক্ষিত।

mosjid-1

শিক্ষা ও পাঠক্রম

আজহার তো বহুমুখী। আজহারের ফ্যাকাল্টি পরিচিতি ও শিক্ষার বিষয়াদি নিয়ে বলতে গেলে আলাদা নিবন্ধের প্রয়োজন। তবু কিছু নোক্তা দিয়ে রাখছি। আজহারের ফ্যাকাল্টিগুলো সাধারণত তিন স্তরের। এর মাধ্যমে ফ্যাকাল্টিগুলোর বিন্যাস করা হয়—

১. শরয়ি তথা ইসলামি শরিয়াভিত্তিক বিভাগগুলো। যেমন, কোরআন ও হাদিস, ফিকহ, উসুলুল ফিকহ, আকিদা ও কালামশাস্ত্র, ইসলামিক ইতিহাস ও দাওয়া এবং অন্যান্য।

২. ইলমি তথা বিজ্ঞানভিত্তিক (সায়েন্স) বিভাগগুলো। যেমন, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, গণিত, কম্পিউটার, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি।

৩. নজরি তথা মানবিক বিভাগ বা থিওরেটিক্যাল/সামাজিক বিজ্ঞানভিত্তিক। যেমন, ইতিহাস, ভূগোল, সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ভাষাতত্ত্ব (আরবি সাহিত্য, ইংরেজি, ফরাসি ইত্যাদি)।

miner

বাংলাদেশ থেকে পড়তে যাবেন যেভাবে

বাংলাদেশ থেকে আল-আজহারে পড়তে যাওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়, যদিও বর্তমানে লিগ্যাল ভিসা বন্ধ আছে। তবু পুরোনো ধাপগুলো আওড়ানো—

যোগ্যতা: দাওরায়ে হাদিস, কামিল অথবা উচ্চমাধ্যমিক পাস শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে আরবি ভাষায় দক্ষতা অপরিহার্য।

আবেদন: সরাসরি অনলাইনে বা আল-আজহারের বিভিন্ন বিদেশি ছাত্র সংস্থার মাধ্যমে অথবা পরিচিত কারও মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করে নিতে হয়।

ভিসা ও কাগজপত্র: শিক্ষার্থী ভিসার জন্য বাংলাদেশের মিসরীয় দূতাবাসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়—পাসপোর্ট, সার্টিফিকেট, অফার লেটার, মেডিকেল রিপোর্ট, স্টুডেন্ট বিমা ইত্যাদি। (যদিও স্বীকৃত এই পদ্ধতিতে এখন ভিসা দেওয়া বন্ধ আছে)

স্টাডি-হল

অর্থায়ন: সাধারণত এখানে নিজ খরচে পড়তে হয়, কেউ কেউ সরাসরি আজহারের অথবা মিসর সরকারের বৃত্তিও (স্কলারশিপ) পায়। সেটার নানা প্রক্রিয়া আছে। সরাসরি স্কলারশিপেও আসা যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময় তাদের ওয়েবসাইট ও পত্রিকায় জানিয়ে দেয়। তবে সেটার দৌড়ঝাঁপ অনেক এবং কোটাও খুবই সামান্য।

এখানে আসার পর প্রথমেই ভাষা পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। তারপর ধীরে ধীরে সামনে এগোতে হয়। অবশ্য কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা দেশে থেকেই ভাষা পরীক্ষায় অংশ নেন। কেননা ওসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আজহারের মুআদালা বা সনদ সমতার চুক্তি আছে।

প্রিয় পাঠক, আপনাকে পিরামিডের শহরে দাওয়াত করছি। দাওয়াত করছি ঐতিহাসিক আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহরে। আজহার তো শুধু কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই নয়, বরং আজহার ইতিহাস আগলে আছে। আজহার একটি ঐতিহ্য, আলোক ও দিগ্‌দর্শন। এর ইতিহাস যেমন দীপ্তিময়, ভবিষ্যৎও তেমনি সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম যুবসমাজ যদি এখান থেকে সত্যিকারের জ্ঞান ও নৈতিকতা অর্জন করে, তবে পরবর্তী শতাব্দীর ধর্মীয় নেতৃত্বের প্রভাব ভিন্ন হতে পারে। ১৮ শুরফা সড়ক, জাহের, কায়রো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১১ মিনিট
ফজর০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩২ মিনিট
জোহর১১: ৫৪ মিনিট০৩: ৩৭ মিনিট
আসর০৩: ৩৮ মিনিট০৫: ১৩ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৫ মিনিট০৬: ৩৪ মিনিট
এশা০৬: ৩৫ মিনিট০৫: ১১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনের কারণে এগিয়ে এল কওমি মাদ্রাসার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর কেন্দ্রীয় বোর্ড পরীক্ষা এগিয়ে আনা হয়েছে। কওমি সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) ও বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার পূর্বঘোষিত তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

নতুন সূচি অনুযায়ী, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। এ ছাড়া ২০২৬ সালের দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়।

আল-হাইআতুল উলয়ার অফিস ব্যবস্থাপক মু. অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ৬৬ নম্বর সভার সিদ্ধান্ত ও ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মনিটরিং সেলের সভার সিদ্ধান্তক্রমে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। টানা ১০ দিন পরীক্ষা চলার পর ৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষা শেষ হবে।

প্রথম দিনের পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং শেষ হবে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে। অবশিষ্ট ৯ দিন পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৯টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে।

প্রথম দিন তিরমিজি শরিফ প্রথম খণ্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর শেষ দিন পরীক্ষা হবে মুওয়াত্তায়ে ইমাম মালিক ও মুওয়াত্তায়ে ইমাম মুহাম্মদ কিতাবের।

এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের প্রধান পরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী জানান, বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। শুক্রবারসহ চলবে ২৪ জানুয়ারি (শনিবার) পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুরু হচ্ছে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ কোরআন প্রতিযোগিতা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ‘টি কে গ্রুপ’-এর উদ্যোগে এই ‘ইসলামিক রিয়্যালিটি শো’টি দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিজনেস ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোফাচ্ছেল হক দেশবরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ, আলেম ও শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেধাবী কিশোর-কিশোরী হাফেজদের জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরা এবং তাদের মূল্যায়ন করার উদ্দেশ্যে পুষ্টি পবিত্র কোরআন চর্চার যে যাত্রা শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। আমাদের বিশ্বাস, দ্বিতীয় এই আসরে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট আরও জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, টি কে গ্রুপের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ইসলামের খেদমতে এই আয়োজন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে টি কে গ্রুপের পরিচালক (এইচআর) আলমাস রাইসুল গনিও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারি এবং ‘পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট’-এর প্রধান বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। তিনি বলেন, ‘কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে পবিত্র কোরআনের প্রতি অনুরাগী করতে এই আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। সমাজে ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় টি কে গ্রুপের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুদে প্রতিভাবান হাফেজগণ প্রাথমিক অডিশন রাউন্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। অভিজ্ঞ বিচারক এবং আলেমগণের বিবেচনায় সেরা প্রতিযোগীরা মূল পর্বে অংশগ্রহণ করবে। রিজিওনাল অডিশনে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরা পুষ্টির পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় উপহার পাবে।

২২ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী অডিশন পর্ব শুরু হবে। চূড়ান্ত পর্ব পবিত্র রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন বিকেল ৫টা হতে মাগরিবের আজানের আগে দেশের অন্যতম চ্যানেল ‘নাইন’-এ প্রচারিত হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বিজয়ীরা পাবেন লক্ষাধিক টাকাসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিভিন্ন ইউনিটের হেড অব সেলস, হেড অব বিজনেসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রবীণ সুফি পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি আর নেই

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত