Ajker Patrika

যোগ্য নেতা বাছাইয়ে জনগণের প্রতি ইসলামের নির্দেশনা

আব্দুল্লাহ আফফান
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি

একটি সমাজ, দেশ বা জাতি এগিয়ে যাওয়ার জন্য যোগ্য নেতার বিকল্প নেই। যোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। যোগ্য নেতা (অধিকাংশ সময়) নিজ থেকে উঠে আসেন না; জনগণের সচেতনতা, বিচক্ষণতা ও দায়িত্বশীলতার মাধ্যমেই প্রকৃত নেতা নির্বাচিত হন। যোগ্য নেতা বাছাই করে নেওয়া জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এ দায়িত্ব যথাযথ পালন করা জরুরি।

ভোট সাধারণ কোনো ব্যাপার নয়। ভোট মানে সাক্ষ্য দেওয়া ও সত্যায়ন করা। কাউকে ভোট দেওয়ার অর্থ হলো, তাঁর ব্যাপারে এই মর্মে সাক্ষ্য দেওয়া, তিনি সৎ ও যোগ্য। দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা এবং জনগণের অধিকার আদায়ে তিনিই সবচেয়ে উপযুক্ত।

প্রার্থী সম্পর্কে জানার পরেও অসৎ ও অযোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার কারণে তিনি যদি নির্বাচিত হন এবং এর কারণে পরবর্তী সময়ে তিনি যত অসৎ কর্মকাণ্ড সম্পাদন করবেন, সেই পাপের অংশে ভোটাররাও শরিক হবেন।

কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে লোক সৎকাজের জন্য কোনো সুপারিশ করবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, সে তার পাপের একটি অংশ পাবে।’ (সুরা নিসা: ৮৫)

রাসুল (সা.) উম্মতকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া থেকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাবধান, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ।’ অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘হে লোক সকল, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া আর আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা একই রকম।’ (জামে তিরমিজি: ২২৯৯)

নেতার গুণাবলি কেমন হবে এ বিষয়ে একাধিক আয়াত ও হাদিস রয়েছে। যার সারসংক্ষেপ এই—নেতা কঠিন হবে না, স্নেহশীল হবে। নেতা ধৈর্যশীল ও হিতাকাঙ্ক্ষী হবে। নেতা নিজের মতামত অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেবে না, বরং পরামর্শ করে চলবে। সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অসৎকাজে নিষেধ করবে। আল্লাহভীরু হৃদয় থাকবে তার, প্রতিটি কাজের নিয়ত হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবে। জনগণের প্রয়োজন ও নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেবে। সবচেয়ে বড় গুণ—তার মনে নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা থাকবে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম, আমরা এসব বিষয়ে এমন কোনো ব্যক্তিকেই নেতা বানাব না, যে নেতা হতে চায় অথবা তার খায়েশ রাখে।’ (সহিহ মুসলিম: ৪৭১৭)

টাকার বিনিময়ে বা আত্মীয়তা ও সম্পর্কের কারণে অযোগ্য ব্যক্তিদের নেতা নির্বাচন করা জঘন্যতম খারাপ কাজ। এ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো এবং ন্যায়সংগত সাক্ষ্য দাও, তাতে তোমাদের নিজের কিংবা পিতামাতার অথবা নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও।’ (সুরা নিসা: ১৩৫)

একজন সৎ নাগরিকের দায়িত্ব, যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা। অন্যথায় আমানতের খেয়ানত করার কারণে পরকালে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। পাশাপাশি দুনিয়াতেও তার অপকর্মের ফল ভোগ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত