ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
ঈদ মুসলিম উম্মাহর এক আনন্দঘন, স্বতন্ত্র, তাৎপর্যপূর্ণ ও স্বমহিমায় উদ্ভাসিত উৎসব। এই উৎসবে একদিকে রয়েছে আনন্দ ও খুশির সমারোহ, অন্যদিকে রয়েছে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ ইবাদত-বন্দেগি ও আবেগের সংমিশ্রণ। এই সমন্বয়ই ঈদ উৎসবের মূল স্বকীয়তা। ঈদ নিছক আনন্দ-উল্লাসের দিন নয়, আবার নীরস গাম্ভীর্যপূর্ণ আধ্যাত্মিকতাও নয়। ঈদ যেমন আনন্দ ও খুশির দিন, তেমনি ঈদ আল্লাহর স্মরণ, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। এই অনুপ্রেরণা নিয়েই মুসলিম উম্মাহর কাছে বারবার ফিরে আসে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। ঈদের সময় পুরো মুসলমান সমাজের হৃদয়ে যে সুখের ছোঁয়া বয়ে যায়, তা আপনজনদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়।
সর্বজনীন শুভেচ্ছাবাক্য—ঈদ মোবারক
ঈদ মোবারক একটি ঐতিহ্যবাহী আরবি শুভেচ্ছাবাক্য। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে সারা বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে এটির বহুল ব্যবহার দেখা যায়। ‘ঈদ মোবারক’-এর আভিধানিক অর্থ ঈদ উৎসব কল্যাণময় হোক।
বিভিন্ন ভাষায় প্রচলিত শুভেচ্ছাবাক্য
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে সাধারণত ‘ঈদ মোবারক’ বলে। ইংরেজিতে বলা হয়—হ্যাভ আ ব্লেসড ঈদ। আরব সমাজে ‘ঈদ মোবারক’-এর পাশাপাশি ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের আরও কয়েকটি বাক্য চালু আছে। যেমন ‘কুল্লু আম ওয়া আনতুম বিখাইর’, যার অর্থ ‘আপনাদের প্রতিটি অতিবাহিত বছর ভালো যাক’।
উপসাগরীয় দেশগুলোতে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বলা হয় ‘মিনাল আয়িদিন ওয়াল ফায়িযিন’, যার অর্থ ‘আমরা যেন আরও একবার পবিত্র হতে পারি এবং আমরা যেন (আমাদের রোজায়) সফল হতে পারি’। এর জবাবে বলা হয় ‘মিনাল মাকবুলিন ওয়াল গানিমিন’, যার অর্থ ‘আমাদের সৎকর্ম (আল্লাহর কাছে) গ্রহণ হোক এবং আমরা যেন (জান্নাত পেয়ে) সফল হতে পারি’।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যেমন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাইতে মালয় ভাষাভাষীদের ঈদে জনপ্রিয় শুভেচ্ছাবাক্য হলো ‘সেলামাত হারি রায়া’ বা ‘সেলামাত ঈদুল ফিতরি’। তুরস্কের মানুষ তাদের ভাষায় বলে ‘বায়রামিনাইজ কুত্লু ওলসান’।
নিজের ভাষায় শুভেচ্ছা বিনিময়ের বিধান
নিজ নিজ ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে সুন্নতসম্মত পদ্ধতি বাদ দিয়ে সেগুলোকেই আত্মস্থ করা অনুচিত। এ ছাড়া সালাম বিনিময় ছাড়া বা সালামের আগেই কেবল ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা সঠিক নয়। অন্যান্য সময়ের মতো পরস্পর সালাম বিনিময়ের পর নিজ নিজ ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যেতে পারে।
হাদিসের আলোকে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার সুন্নতসম্মত পদ্ধতি হলো, একে অপরকে ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ বলে দোয়া করা। এর অর্থ হলো ‘আল্লাহ আমাদের এবং তোমাদের পক্ষ থেকে কবুল করুন।’ অর্থাৎ ঈদুল ফিতরে রোজা আর ঈদুল আজহায় হজ ও কোরবানি আল্লাহ যেন কবুল করেন।
হাবিব ইবনে ওমর আল-আনসারি বলেন, আমাকে আমার পিতা বলেছেন, আমি ওয়াসিলা ইবনুল আসকা (রা.)-এর সঙ্গে ঈদের দিন সাক্ষাৎ করে বললাম, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’। তিনিও বললেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা।’ (মাজমাউজ যাওয়াইদ: ৩২৫৫)
ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-এর মুক্ত করা দাস আদহাম (রহ.) বলেন, আমরা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-কে উভয় ঈদে বলতাম, ‘হে আমিরুল মুমিনিন, তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’। তিনি আমাদের অনুরূপ বলে জবাব দিতেন এবং আমাদের এরূপ বলায় কোনো প্রকার অস্বীকৃতি জানাতেন না। (শুআবুল ইমান: ৩৭২০)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ঈদ মুসলিম উম্মাহর এক আনন্দঘন, স্বতন্ত্র, তাৎপর্যপূর্ণ ও স্বমহিমায় উদ্ভাসিত উৎসব। এই উৎসবে একদিকে রয়েছে আনন্দ ও খুশির সমারোহ, অন্যদিকে রয়েছে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ ইবাদত-বন্দেগি ও আবেগের সংমিশ্রণ। এই সমন্বয়ই ঈদ উৎসবের মূল স্বকীয়তা। ঈদ নিছক আনন্দ-উল্লাসের দিন নয়, আবার নীরস গাম্ভীর্যপূর্ণ আধ্যাত্মিকতাও নয়। ঈদ যেমন আনন্দ ও খুশির দিন, তেমনি ঈদ আল্লাহর স্মরণ, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। এই অনুপ্রেরণা নিয়েই মুসলিম উম্মাহর কাছে বারবার ফিরে আসে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। ঈদের সময় পুরো মুসলমান সমাজের হৃদয়ে যে সুখের ছোঁয়া বয়ে যায়, তা আপনজনদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়।
সর্বজনীন শুভেচ্ছাবাক্য—ঈদ মোবারক
ঈদ মোবারক একটি ঐতিহ্যবাহী আরবি শুভেচ্ছাবাক্য। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে সারা বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে এটির বহুল ব্যবহার দেখা যায়। ‘ঈদ মোবারক’-এর আভিধানিক অর্থ ঈদ উৎসব কল্যাণময় হোক।
বিভিন্ন ভাষায় প্রচলিত শুভেচ্ছাবাক্য
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে সাধারণত ‘ঈদ মোবারক’ বলে। ইংরেজিতে বলা হয়—হ্যাভ আ ব্লেসড ঈদ। আরব সমাজে ‘ঈদ মোবারক’-এর পাশাপাশি ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের আরও কয়েকটি বাক্য চালু আছে। যেমন ‘কুল্লু আম ওয়া আনতুম বিখাইর’, যার অর্থ ‘আপনাদের প্রতিটি অতিবাহিত বছর ভালো যাক’।
উপসাগরীয় দেশগুলোতে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বলা হয় ‘মিনাল আয়িদিন ওয়াল ফায়িযিন’, যার অর্থ ‘আমরা যেন আরও একবার পবিত্র হতে পারি এবং আমরা যেন (আমাদের রোজায়) সফল হতে পারি’। এর জবাবে বলা হয় ‘মিনাল মাকবুলিন ওয়াল গানিমিন’, যার অর্থ ‘আমাদের সৎকর্ম (আল্লাহর কাছে) গ্রহণ হোক এবং আমরা যেন (জান্নাত পেয়ে) সফল হতে পারি’।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যেমন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাইতে মালয় ভাষাভাষীদের ঈদে জনপ্রিয় শুভেচ্ছাবাক্য হলো ‘সেলামাত হারি রায়া’ বা ‘সেলামাত ঈদুল ফিতরি’। তুরস্কের মানুষ তাদের ভাষায় বলে ‘বায়রামিনাইজ কুত্লু ওলসান’।
নিজের ভাষায় শুভেচ্ছা বিনিময়ের বিধান
নিজ নিজ ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে সুন্নতসম্মত পদ্ধতি বাদ দিয়ে সেগুলোকেই আত্মস্থ করা অনুচিত। এ ছাড়া সালাম বিনিময় ছাড়া বা সালামের আগেই কেবল ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা সঠিক নয়। অন্যান্য সময়ের মতো পরস্পর সালাম বিনিময়ের পর নিজ নিজ ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যেতে পারে।
হাদিসের আলোকে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার সুন্নতসম্মত পদ্ধতি হলো, একে অপরকে ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ বলে দোয়া করা। এর অর্থ হলো ‘আল্লাহ আমাদের এবং তোমাদের পক্ষ থেকে কবুল করুন।’ অর্থাৎ ঈদুল ফিতরে রোজা আর ঈদুল আজহায় হজ ও কোরবানি আল্লাহ যেন কবুল করেন।
হাবিব ইবনে ওমর আল-আনসারি বলেন, আমাকে আমার পিতা বলেছেন, আমি ওয়াসিলা ইবনুল আসকা (রা.)-এর সঙ্গে ঈদের দিন সাক্ষাৎ করে বললাম, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’। তিনিও বললেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা।’ (মাজমাউজ যাওয়াইদ: ৩২৫৫)
ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-এর মুক্ত করা দাস আদহাম (রহ.) বলেন, আমরা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-কে উভয় ঈদে বলতাম, ‘হে আমিরুল মুমিনিন, তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’। তিনি আমাদের অনুরূপ বলে জবাব দিতেন এবং আমাদের এরূপ বলায় কোনো প্রকার অস্বীকৃতি জানাতেন না। (শুআবুল ইমান: ৩৭২০)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
৩ ঘণ্টা আগেআত্মীয়তার বন্ধন আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। পারস্পরিক সম্পর্কের এ বন্ধন না থাকলে হয়তো পৃথিবীর রূপ ভিন্ন থাকত। মা তার সন্তানের প্রতি, ভাই তার ভাইয়ের প্রতি, স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার যে রূপ আমরা দেখতে পাই—তা হয়তো থাকত না। কোরআন ও হাদিসে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেজুলুম আরবি শব্দ। জুলুমের অর্থ ব্যাপক এবং অনেক বিস্তৃত। সাধারণত জুলুম অর্থ নির্যাতন, নিপীড়ন। শরিয়তের পরিভাষায় জুলুম বলা হয়—কোনো উপযুক্ত জিনিসকে উপযুক্ত স্থানে না রেখে অনুপযুক্ত স্থানে রাখা। যে জুলুম করে তাকে জালিম বলা হয়। মানুষ বিভিন্ন পদ্ধতিতে একজন অন্যজনের ওপর জুলুম করে।
১৯ ঘণ্টা আগেমা-বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তাঁদের আদর-সোহাগে আমাদের জীবনের ভিত্তি রচিত হয়। তাঁদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে গড়ে ওঠে সুন্দর ভবিষ্যৎ। তাঁদের ভরসায় আমরা শক্তি পাই এবং তাঁদের দোয়ায় জীবন সার্থক হয়। ইসলাম তাই মা-বাবাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে এবং তাঁদের প্রতি সদাচরণকে আল্লাহ তাআলার ইবাদতের
১ দিন আগে