ইসলাম ডেস্ক
মহানবী (সা.)-এর যুগে অভাব-অনটন ও খাদ্যসংকটের সময় তিনি সাহাবিদের অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। এখানে কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
১. অপচয়-অপব্যয় রোধ
অভাব-অনটনের সময় সংযত ব্যয়ের নির্দেশ দিয়েছেন মহানবী (সা.)। জাবালা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা মদিনায় কিছুসংখ্যক ইরাকি লোকজনের সঙ্গে ছিলাম। একবার আমরা দুর্ভিক্ষের কবলে পতিত হই। তখন ইবনে জুবাইর (রা.) আমাদের খেজুর খেতে দিতেন। ইবনে ওমর (রা.) আমাদের কাছ দিয়ে যেতেন এবং বলতেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কাউকে তার ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া একসঙ্গে দুটো করে খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন।’ (বুখারি: ২৪৫৫)
২. গুনাহ ছেড়ে দেওয়া
হাদিসের ভাষ্যমতে, বিভিন্ন কারণে খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়। সুদ, ব্যভিচার, ব্যবসায় প্রতারণা ইত্যাদি সেই সব কারণের মধ্যে উল্লেখেযাগ্য। তাই অভাবের সময় মুসলমানদের অধিক সতর্ক হতে হবে এবং পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। কারণ মহানবী (সা.) বলেন, ‘সৎকর্ম ছাড়া অন্য কিছু আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ছাড়া অন্য কিছুতে ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। মানুষ তার পাপের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ: ৪০২২)
৩.আল্লাহর ওপর ভরসা করা
আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস, তাঁর শাস্তির ভয় এবং বিপদে ধৈর্য ধরাই ইসলামের শিক্ষা। হাদিসে এসেছে, মহান আল্লাহ তাঁর উম্মতকে দুর্ভিক্ষ দিয়ে সমূলে ধ্বংস করবেন না। কারণ রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে তাঁর উম্মতের জন্য দোয়া করেছেন। (মুসলিম: ৭১৫০) তাই তাঁর প্রতি ভরসা করে, হতাশ না হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
সৎকর্ম ছাড়া অন্য কিছু আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ছাড়া অন্য কিছুতে ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। মানুষ তার পাপের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।
৪. দারিদ্র্য থেকে বাঁচার দোয়া
অভাব-অনটন ও দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম আমল হলো দোয়া। মহানবী (সা.) দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছিলেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, অভাব ও দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) এভাবে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধা থেকে আশ্রয় চাই, কারণ তা নিকৃষ্ট শয্যাসঙ্গী। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই খিয়ানত করা থেকে। কেননা, তা খুবই নিকৃষ্ট বন্ধু।’ (আবু দাউদ: ১৫৪৭)
৫. অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো
অভাবের সময় সামর্থ্যবানদের উচিত অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো এবং সবাই মিলেমিশে উত্তমভাবে বেঁচে থাকা। কোনো অভাবী মানুষ যেন ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট না পায়, তাই ভাগাভাগি করে খাবার খাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন মহানবী (সা.)। যেমন মুসলিমের হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াকিদ (রা.) বলেন, তিন দিনের বেশি কোরবানির গোশত খেতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন। অবশ্য এটি ছিল অভাবের দিনে। পরে সচ্ছলতা এলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।
৬. কৃষিকাজে মনোনিবেশ করা
পাশাপাশি অভাব রোধে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করাও মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা। তিনি সাহাবিদের নিজের হাতে কামাই করে খেতে উৎসাহ দিয়েছেন। রোজগার করাকে তিনি মুমিনের জীবনের অন্যতম ফরজ কাজ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। জুমার নামাজের পর আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধানে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার শিক্ষা দিয়েছেন। এ কারণেই দেখা যায়, মহানবী (সা.)-এর যুগে তিনি সাহাবিদের কৃষিকাজে উৎসাহ জুগিয়েছেন। ফলে খলিফা ওমরের আমলে কঠিন দুর্ভিক্ষের সময়ও মুসলমানগণ তেমন ক্ষতির মুখে পড়েননি। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সেই দুর্ভিক্ষের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘বছরটি ছিল ভীষণ দুর্বিপাক ও কষ্টের। ওমর (রা.) গ্রামাঞ্চল থেকে উট, খাদ্যশস্য, তেল ইত্যাদি সাহায্যসামগ্রী নিয়ে আসেন। গ্রামাঞ্চলের একখণ্ড জমিও অনাবাদি পড়ে থাকতে দেননি এবং তাঁর চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়। ...’ (আদাবুল মুফরাদ: ৫৬৪)
মহানবী (সা.)-এর যুগে অভাব-অনটন ও খাদ্যসংকটের সময় তিনি সাহাবিদের অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। এখানে কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
১. অপচয়-অপব্যয় রোধ
অভাব-অনটনের সময় সংযত ব্যয়ের নির্দেশ দিয়েছেন মহানবী (সা.)। জাবালা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা মদিনায় কিছুসংখ্যক ইরাকি লোকজনের সঙ্গে ছিলাম। একবার আমরা দুর্ভিক্ষের কবলে পতিত হই। তখন ইবনে জুবাইর (রা.) আমাদের খেজুর খেতে দিতেন। ইবনে ওমর (রা.) আমাদের কাছ দিয়ে যেতেন এবং বলতেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কাউকে তার ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া একসঙ্গে দুটো করে খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন।’ (বুখারি: ২৪৫৫)
২. গুনাহ ছেড়ে দেওয়া
হাদিসের ভাষ্যমতে, বিভিন্ন কারণে খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়। সুদ, ব্যভিচার, ব্যবসায় প্রতারণা ইত্যাদি সেই সব কারণের মধ্যে উল্লেখেযাগ্য। তাই অভাবের সময় মুসলমানদের অধিক সতর্ক হতে হবে এবং পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। কারণ মহানবী (সা.) বলেন, ‘সৎকর্ম ছাড়া অন্য কিছু আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ছাড়া অন্য কিছুতে ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। মানুষ তার পাপের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ: ৪০২২)
৩.আল্লাহর ওপর ভরসা করা
আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস, তাঁর শাস্তির ভয় এবং বিপদে ধৈর্য ধরাই ইসলামের শিক্ষা। হাদিসে এসেছে, মহান আল্লাহ তাঁর উম্মতকে দুর্ভিক্ষ দিয়ে সমূলে ধ্বংস করবেন না। কারণ রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে তাঁর উম্মতের জন্য দোয়া করেছেন। (মুসলিম: ৭১৫০) তাই তাঁর প্রতি ভরসা করে, হতাশ না হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
সৎকর্ম ছাড়া অন্য কিছু আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ছাড়া অন্য কিছুতে ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। মানুষ তার পাপের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।
৪. দারিদ্র্য থেকে বাঁচার দোয়া
অভাব-অনটন ও দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম আমল হলো দোয়া। মহানবী (সা.) দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছিলেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, অভাব ও দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) এভাবে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধা থেকে আশ্রয় চাই, কারণ তা নিকৃষ্ট শয্যাসঙ্গী। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই খিয়ানত করা থেকে। কেননা, তা খুবই নিকৃষ্ট বন্ধু।’ (আবু দাউদ: ১৫৪৭)
৫. অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো
অভাবের সময় সামর্থ্যবানদের উচিত অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো এবং সবাই মিলেমিশে উত্তমভাবে বেঁচে থাকা। কোনো অভাবী মানুষ যেন ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট না পায়, তাই ভাগাভাগি করে খাবার খাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন মহানবী (সা.)। যেমন মুসলিমের হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াকিদ (রা.) বলেন, তিন দিনের বেশি কোরবানির গোশত খেতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন। অবশ্য এটি ছিল অভাবের দিনে। পরে সচ্ছলতা এলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।
৬. কৃষিকাজে মনোনিবেশ করা
পাশাপাশি অভাব রোধে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করাও মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা। তিনি সাহাবিদের নিজের হাতে কামাই করে খেতে উৎসাহ দিয়েছেন। রোজগার করাকে তিনি মুমিনের জীবনের অন্যতম ফরজ কাজ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। জুমার নামাজের পর আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধানে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার শিক্ষা দিয়েছেন। এ কারণেই দেখা যায়, মহানবী (সা.)-এর যুগে তিনি সাহাবিদের কৃষিকাজে উৎসাহ জুগিয়েছেন। ফলে খলিফা ওমরের আমলে কঠিন দুর্ভিক্ষের সময়ও মুসলমানগণ তেমন ক্ষতির মুখে পড়েননি। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সেই দুর্ভিক্ষের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘বছরটি ছিল ভীষণ দুর্বিপাক ও কষ্টের। ওমর (রা.) গ্রামাঞ্চল থেকে উট, খাদ্যশস্য, তেল ইত্যাদি সাহায্যসামগ্রী নিয়ে আসেন। গ্রামাঞ্চলের একখণ্ড জমিও অনাবাদি পড়ে থাকতে দেননি এবং তাঁর চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়। ...’ (আদাবুল মুফরাদ: ৫৬৪)
হিজরি সনের তৃতীয় মাস হলো রবিউল আউয়াল। ‘রবিউন’ শব্দের অর্থ বসন্ত। এ মাসে আরবের প্রকৃতিতে বসন্ত আসত, তাই এর নাম ‘রবিউল আউয়াল’ বা বসন্তের প্রথম মাস। মুসলিম উম্মাহর কাছে মাসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
২ ঘণ্টা আগেপ্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা...
৮ ঘণ্টা আগেসৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জানা-অজানা, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব বিষয় সম্পর্কে অবগত। তিনি জানেন, মানুষ ভুল করবে এবং পাপকাজে লিপ্ত হবে। তবে এ পাপ হয়ে যাওয়ার পর বান্দা যখন অনুতপ্ত হয়ে তাঁর কাছে ফিরে আসে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ অত্যন্ত খুশি হন।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলামে মাতা-পিতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য যেমন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তেমনি সন্তানের প্রতিও মাতা-পিতার দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। সন্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই মাতা-পিতার প্রতি তাদের প্রাথমিক পর্যায়ের কর্তব্য ও দায়িত্ব কার্যকর হতে শুরু করে এবং তখন থেকেই সে হক অনুযায়ী আমল করা মাতা-পিতার...
১ দিন আগে