ইসলাম ডেস্ক
রবিউল আউয়াল মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসে এক চিরস্মরণীয়, মহাপবিত্র ও মাহাত্ম্যময় মাস। এ মাসেই পৃথিবীর বুকে আগমন ঘটে মহানবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-এর। ১২ রবিউল আউয়াল কেবল একটি দিন নয়, বরং তা সমগ্র মানবতার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী আলোর ঝরনাধারা।
বসন্তের বার্তা
‘রবিউল’ শব্দের অর্থ বসন্ত, আর ‘আউয়াল’ অর্থ প্রথম। অর্থাৎ, ‘প্রথম বসন্ত’। মরুর দেশের কঠিন আবহাওয়ার মাঝে বসন্ত যেমন এক স্বস্তির আবাহন, তেমনি এই মাস মুসলমানদের হৃদয়ে নিয়ে আসে এক আধ্যাত্মিক প্রশান্তি। আর এই প্রশান্তির মূল উৎসই হলো মহানবীর আগমন।
নবীজির জন্মকালে বিশ্ব ছিল বিভ্রান্তির অন্ধকারে নিমজ্জিত। অন্যায়, অবিচার, নারী নির্যাতন, অসত্য ও অশ্লীলতায় ভরা এক পাপময় সমাজে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন—আলোর দিশারি হয়ে। তাঁর আবির্ভাবের মাধ্যমে নতুন এক সভ্যতা, ন্যায়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এক সমাজের সূচনা হয়।
মিলাদ নয়, অনুকরণ হোক মুখ্য
রবিউল আউয়াল এলেই অনেক জায়গায় মিছিল-মাহফিল, আলোচনা সভা, খাবার বিতরণ, নসিহত অনুষ্ঠান ইত্যাদির আয়োজন হয়। ভালো কাজ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়, তবে প্রশ্ন থেকে যায় আমরা কি শুধু আনুষ্ঠানিকতা পালনেই সন্তুষ্ট, নাকি সত্যিকার অর্থে নবীজির আদর্শ ধারণে আন্তরিক?
মহানবী (সা.) ছিলেন দয়ার সাগর, সত্যের বাতিঘর এবং ন্যায়বিচারের প্রতীক। তাঁর জীবন ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে আলোর চেরাগ। তিনি মানুষের মাঝে ভালোবাসা, ধৈর্য, সহনশীলতা, দয়া ও ক্ষমার শিক্ষা প্রচার করেছেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়েই ছিল মানবতার শিক্ষা।
সমকালীন প্রেক্ষাপটে রবিউল আউয়াল
আজকের সমাজেও আমরা অনেক ক্ষেত্রে সেই অন্ধকার যুগের ছায়া দেখতে পাই—বিচারহীনতা, ঘৃণা, হিংসা, পারস্পরিক সহনশীলতার অভাব, মিথ্যাচার, লোভ, ঈর্ষা ইত্যাদি। এসবই সমাজকে নষ্ট করছে। এমন একসময়েই রবিউল আউয়াল আমাদের সামনে উপস্থিত হয়, যেন একটি আয়নার মতো, যেখানে আমরা আমাদের আত্মাকে/ প্রতিফলিত দেখতে পারি।
এই মাস যেন আমাদের আত্মশুদ্ধির মাস হয়। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, মহানবীর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে ও সমাজকে বদলে ফেলা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র ছিল জীবন্ত কোরআনের প্রতিফলন। তাঁর জীবনের ছোট ছোট ঘটনা আমাদের নৈতিকতার পাঠশালা হয়ে উঠতে পারে, যদি আমরা তাতে মনোযোগ দিই।
নবীজির প্রেম মানে তাঁর পথ অনুসরণ
রাসুলের প্রতি ভালোবাসা মানে শুধু তাঁর প্রশংসা করা নয়, বরং তাঁর দেখানো পথে চলাই সেই ভালোবাসার প্রকৃত নিদর্শন। তিনি ছিলেন বিনয়ী, নম্র ও সদয়। তিনি ক্ষমা করতে জানতেন, এমনকি তাঁর ওপর যারা জুলুম করেছে, তাদেরও তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যার চরিত্র উত্তম।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৫৫৯)
এই বাণী আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে চিরন্তন পথনির্দেশক। যদি আমরা সত্যিই তাঁর প্রেমে বিভোর হই, তবে আমাদের জীবনেও তাঁর চরিত্রের প্রতিফলন ঘটতে হবে।
রবিউল আউয়াল কেবল এক আনন্দময় স্মৃতির মাস নয়, বরং তা একটি উপলক্ষ নিজেকে জিজ্ঞাসা করার, আমরা কি সত্যিই সেই রাসুলকে ভালোবাসি? আমরা কি তাঁর সুন্নত অনুসরণ করি, তাঁর শিক্ষাগুলো সমাজে ছড়িয়ে দিই? নাকি এই মাস কেবল কিছু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে?
আসুন, এ রবিউল আউয়ালে আমরা প্রতিজ্ঞা করি—আমরা সত্য, ন্যায় ও দয়ার পথে হাঁটব। নবীজির আদর্শকে অন্তরে ধারণ করে, সমাজে শান্তি ও ভালোবাসার বাতি জ্বালাব। তবেই রবিউল আউয়াল হবে আমাদের জীবনে এক সত্যিকারের বসন্ত।
লেখক: আনওয়ার হুসাইন, শিক্ষক, মা’হাদুল মাদীনাহ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
রবিউল আউয়াল মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসে এক চিরস্মরণীয়, মহাপবিত্র ও মাহাত্ম্যময় মাস। এ মাসেই পৃথিবীর বুকে আগমন ঘটে মহানবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-এর। ১২ রবিউল আউয়াল কেবল একটি দিন নয়, বরং তা সমগ্র মানবতার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী আলোর ঝরনাধারা।
বসন্তের বার্তা
‘রবিউল’ শব্দের অর্থ বসন্ত, আর ‘আউয়াল’ অর্থ প্রথম। অর্থাৎ, ‘প্রথম বসন্ত’। মরুর দেশের কঠিন আবহাওয়ার মাঝে বসন্ত যেমন এক স্বস্তির আবাহন, তেমনি এই মাস মুসলমানদের হৃদয়ে নিয়ে আসে এক আধ্যাত্মিক প্রশান্তি। আর এই প্রশান্তির মূল উৎসই হলো মহানবীর আগমন।
নবীজির জন্মকালে বিশ্ব ছিল বিভ্রান্তির অন্ধকারে নিমজ্জিত। অন্যায়, অবিচার, নারী নির্যাতন, অসত্য ও অশ্লীলতায় ভরা এক পাপময় সমাজে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন—আলোর দিশারি হয়ে। তাঁর আবির্ভাবের মাধ্যমে নতুন এক সভ্যতা, ন্যায়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এক সমাজের সূচনা হয়।
মিলাদ নয়, অনুকরণ হোক মুখ্য
রবিউল আউয়াল এলেই অনেক জায়গায় মিছিল-মাহফিল, আলোচনা সভা, খাবার বিতরণ, নসিহত অনুষ্ঠান ইত্যাদির আয়োজন হয়। ভালো কাজ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়, তবে প্রশ্ন থেকে যায় আমরা কি শুধু আনুষ্ঠানিকতা পালনেই সন্তুষ্ট, নাকি সত্যিকার অর্থে নবীজির আদর্শ ধারণে আন্তরিক?
মহানবী (সা.) ছিলেন দয়ার সাগর, সত্যের বাতিঘর এবং ন্যায়বিচারের প্রতীক। তাঁর জীবন ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে আলোর চেরাগ। তিনি মানুষের মাঝে ভালোবাসা, ধৈর্য, সহনশীলতা, দয়া ও ক্ষমার শিক্ষা প্রচার করেছেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়েই ছিল মানবতার শিক্ষা।
সমকালীন প্রেক্ষাপটে রবিউল আউয়াল
আজকের সমাজেও আমরা অনেক ক্ষেত্রে সেই অন্ধকার যুগের ছায়া দেখতে পাই—বিচারহীনতা, ঘৃণা, হিংসা, পারস্পরিক সহনশীলতার অভাব, মিথ্যাচার, লোভ, ঈর্ষা ইত্যাদি। এসবই সমাজকে নষ্ট করছে। এমন একসময়েই রবিউল আউয়াল আমাদের সামনে উপস্থিত হয়, যেন একটি আয়নার মতো, যেখানে আমরা আমাদের আত্মাকে/ প্রতিফলিত দেখতে পারি।
এই মাস যেন আমাদের আত্মশুদ্ধির মাস হয়। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, মহানবীর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে ও সমাজকে বদলে ফেলা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র ছিল জীবন্ত কোরআনের প্রতিফলন। তাঁর জীবনের ছোট ছোট ঘটনা আমাদের নৈতিকতার পাঠশালা হয়ে উঠতে পারে, যদি আমরা তাতে মনোযোগ দিই।
নবীজির প্রেম মানে তাঁর পথ অনুসরণ
রাসুলের প্রতি ভালোবাসা মানে শুধু তাঁর প্রশংসা করা নয়, বরং তাঁর দেখানো পথে চলাই সেই ভালোবাসার প্রকৃত নিদর্শন। তিনি ছিলেন বিনয়ী, নম্র ও সদয়। তিনি ক্ষমা করতে জানতেন, এমনকি তাঁর ওপর যারা জুলুম করেছে, তাদেরও তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যার চরিত্র উত্তম।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৫৫৯)
এই বাণী আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে চিরন্তন পথনির্দেশক। যদি আমরা সত্যিই তাঁর প্রেমে বিভোর হই, তবে আমাদের জীবনেও তাঁর চরিত্রের প্রতিফলন ঘটতে হবে।
রবিউল আউয়াল কেবল এক আনন্দময় স্মৃতির মাস নয়, বরং তা একটি উপলক্ষ নিজেকে জিজ্ঞাসা করার, আমরা কি সত্যিই সেই রাসুলকে ভালোবাসি? আমরা কি তাঁর সুন্নত অনুসরণ করি, তাঁর শিক্ষাগুলো সমাজে ছড়িয়ে দিই? নাকি এই মাস কেবল কিছু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে?
আসুন, এ রবিউল আউয়ালে আমরা প্রতিজ্ঞা করি—আমরা সত্য, ন্যায় ও দয়ার পথে হাঁটব। নবীজির আদর্শকে অন্তরে ধারণ করে, সমাজে শান্তি ও ভালোবাসার বাতি জ্বালাব। তবেই রবিউল আউয়াল হবে আমাদের জীবনে এক সত্যিকারের বসন্ত।
লেখক: আনওয়ার হুসাইন, শিক্ষক, মা’হাদুল মাদীনাহ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
ইসলাম আমাদের জন্য মহান আল্লাহর এক অপরিমেয় নিয়ামত, যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। মানবজাতির হেদায়েতের জন্য তিনি অসংখ্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন এবং আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ পবিত্র কোরআন।
২ ঘণ্টা আগেইসলামের সত্য বাণী দ্রুতই পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। সত্যান্বেষী মানুষেরা দলে দলে আশ্রয় নিতে থাকে ইসলামের পতাকাতলে। অন্ধকার বিদূরিত হয়ে জ্বলে ওঠে সত্যের আলো। সমাজ থেকে দূর হয়ে যায় যাবতীয় পাপ, অন্যায় আর অসাধুতা। রাসুলের সংস্পর্শ লাভে একসময়ের পাষণ্ড, নির্দয় মানুষগুলোও পরিণত হয় সোনার মানুষে।
২ ঘণ্টা আগেমুমিনের জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত হলো প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করা। এটি এমন এক আমল, যা সরাসরি কোরআনের নির্দেশ এবং অসংখ্য সহিহ হাদিসে এর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর ওপর দরুদ পাঠ করেন।
১৪ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২১ ঘণ্টা আগে