তাসনিফ আবীদ
বিয়ে মানবজীবনের এক মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিয়ে দুটি প্রাণের মিলন। দুটি পরিবারের সামাজিক বন্ধন। একটি নতুন জীবনের সূচনা। ইসলাম বিয়েকে ইমানের অর্ধেক হিসেবে আখ্যায়িত করে এর গুরুত্বকে বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
জীবনের এ দীর্ঘ সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযাত্রী, অর্থাৎ জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাই প্রয়োজন গভীর বিচক্ষণতা ও সতর্কতা। কারণ, এই একটি সিদ্ধান্তই পারে জীবনকে শান্তিময় জান্নাতের বাগানে পরিণত করতে অথবা অশান্তির এক অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করতে।
ইসলামে বিয়ে একদিকে যেমন জৈবিক প্রয়োজন মেটানোর মাধ্যম, অন্যদিকে আত্মার প্রশান্তি, ভালোবাসা ও প্রণয়ের উৎস। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হলো—তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে জীবনসঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন—যাতে তোমরা তাদের মাঝে প্রশান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম: ২১)
এই আয়াতে ‘প্রশান্তি’ শব্দটিই দাম্পত্যজীবনের মূল লক্ষ্যকে নির্দেশ করে। তাই স্বপ্নের জীবনসঙ্গী তিনিই, যাঁর সান্নিধ্যে মন প্রশান্ত হয়, আত্মা স্থিরতা লাভ করে এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় হৃদয় নুয়ে আসে।
কিন্তু এ প্রশান্তির ভিত্তি কী? আধুনিক সমাজে অনেকে জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সম্পদ, সামাজিক মর্যাদা, পেশা বা বাহ্যিক সৌন্দর্যকে চূড়ান্ত মাপকাঠি হিসেবে গণ্য করেন। ইসলাম এসব বিষয়কে অস্বীকার করে না, তবে সেগুলোকে মূল ভিত্তি হিসেবেও গ্রহণ করে না। কারণ, সম্পদ অস্থায়ী, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী আর সামাজিক মর্যাদা পরিবর্তনশীল। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ বিষয়কে একটি কালজয়ী নীতির মাধ্যমে সহজ করে দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘নারীদের চারটি বিষয়ের ভিত্তিতে বিয়ে করা হয়—তাদের অর্থ-সম্পদ, বংশ, সৌন্দর্য ও দ্বীনদারের জন্য। তুমি দ্বীনদার নারীকে বেছে নাও, অন্যথায় তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
হাদিসটি কেবল নারীর ক্ষেত্রে নয়, পুরুষের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। অভিভাবকদের উদ্দেশে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমাদের নিকট যখন এমন ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীন ও চরিত্র তোমরা পছন্দ করো, তার সঙ্গে বিয়ে দাও। তা না করলে পৃথিবীতে ফিতনা ও বড় ধরনের অনাচার সৃষ্টি হবে।’ (জামে তিরমিজি: ১০৮৪)
এখানে ‘দ্বীনদার ও চরিত্র’—এ দুটি গুণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কারণ, একজন আল্লাহভীরু, সৎ ও চরিত্রবান সঙ্গীই কেবল পারে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর বিধানকে সম্মান করতে, সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করতে। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় রয়েছে, সে কখনো তার সঙ্গীর ওপর জুলুম করতে পারে না।
তবে ইসলাম বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে না। দাম্পত্যজীবনে পারস্পরিক আকর্ষণ ও ভালোবাসার জন্য বাহ্যিক সৌন্দর্যেরও একটি ভূমিকা রয়েছে। তাই বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীকে শরিয়াহসম্মত উপায়ে একনজর দেখে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যাতে পরে এ নিয়ে কোনো অতৃপ্তি বা মনোমালিন্য তৈরি না হয়।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তখন সম্ভব হলে তার এমন কিছু যেন দেখে নেয়, যা তাকে বিয়েতে উৎসাহিত করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২০৮২)
তবে মূল বিষয় হলো, সৌন্দর্যকে প্রাথমিক আকর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা গেলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্বীনদারকে কেন্দ্র করে।
স্বপ্নের জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের অর্থ কোনো নিখুঁত বা ত্রুটিহীন মানুষ খুঁজে বের করা নয়, বরং এমন একজনকে খুঁজে বের করা, যার সঙ্গে জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মিলে যায়। যে হবে দুনিয়ার জীবনের বন্ধু ও আখিরাতের পথের সহযাত্রী। যে আপনাকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেবে, ভুলের সময় শুধরে দেবে এবং জান্নাতের পথে চলতে একে অপরকে সহযোগিতা করবে।
বিয়ে মানবজীবনের এক মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিয়ে দুটি প্রাণের মিলন। দুটি পরিবারের সামাজিক বন্ধন। একটি নতুন জীবনের সূচনা। ইসলাম বিয়েকে ইমানের অর্ধেক হিসেবে আখ্যায়িত করে এর গুরুত্বকে বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
জীবনের এ দীর্ঘ সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযাত্রী, অর্থাৎ জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাই প্রয়োজন গভীর বিচক্ষণতা ও সতর্কতা। কারণ, এই একটি সিদ্ধান্তই পারে জীবনকে শান্তিময় জান্নাতের বাগানে পরিণত করতে অথবা অশান্তির এক অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করতে।
ইসলামে বিয়ে একদিকে যেমন জৈবিক প্রয়োজন মেটানোর মাধ্যম, অন্যদিকে আত্মার প্রশান্তি, ভালোবাসা ও প্রণয়ের উৎস। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হলো—তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে জীবনসঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন—যাতে তোমরা তাদের মাঝে প্রশান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম: ২১)
এই আয়াতে ‘প্রশান্তি’ শব্দটিই দাম্পত্যজীবনের মূল লক্ষ্যকে নির্দেশ করে। তাই স্বপ্নের জীবনসঙ্গী তিনিই, যাঁর সান্নিধ্যে মন প্রশান্ত হয়, আত্মা স্থিরতা লাভ করে এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় হৃদয় নুয়ে আসে।
কিন্তু এ প্রশান্তির ভিত্তি কী? আধুনিক সমাজে অনেকে জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সম্পদ, সামাজিক মর্যাদা, পেশা বা বাহ্যিক সৌন্দর্যকে চূড়ান্ত মাপকাঠি হিসেবে গণ্য করেন। ইসলাম এসব বিষয়কে অস্বীকার করে না, তবে সেগুলোকে মূল ভিত্তি হিসেবেও গ্রহণ করে না। কারণ, সম্পদ অস্থায়ী, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী আর সামাজিক মর্যাদা পরিবর্তনশীল। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ বিষয়কে একটি কালজয়ী নীতির মাধ্যমে সহজ করে দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘নারীদের চারটি বিষয়ের ভিত্তিতে বিয়ে করা হয়—তাদের অর্থ-সম্পদ, বংশ, সৌন্দর্য ও দ্বীনদারের জন্য। তুমি দ্বীনদার নারীকে বেছে নাও, অন্যথায় তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
হাদিসটি কেবল নারীর ক্ষেত্রে নয়, পুরুষের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। অভিভাবকদের উদ্দেশে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমাদের নিকট যখন এমন ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীন ও চরিত্র তোমরা পছন্দ করো, তার সঙ্গে বিয়ে দাও। তা না করলে পৃথিবীতে ফিতনা ও বড় ধরনের অনাচার সৃষ্টি হবে।’ (জামে তিরমিজি: ১০৮৪)
এখানে ‘দ্বীনদার ও চরিত্র’—এ দুটি গুণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কারণ, একজন আল্লাহভীরু, সৎ ও চরিত্রবান সঙ্গীই কেবল পারে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর বিধানকে সম্মান করতে, সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করতে। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় রয়েছে, সে কখনো তার সঙ্গীর ওপর জুলুম করতে পারে না।
তবে ইসলাম বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে না। দাম্পত্যজীবনে পারস্পরিক আকর্ষণ ও ভালোবাসার জন্য বাহ্যিক সৌন্দর্যেরও একটি ভূমিকা রয়েছে। তাই বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীকে শরিয়াহসম্মত উপায়ে একনজর দেখে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যাতে পরে এ নিয়ে কোনো অতৃপ্তি বা মনোমালিন্য তৈরি না হয়।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তখন সম্ভব হলে তার এমন কিছু যেন দেখে নেয়, যা তাকে বিয়েতে উৎসাহিত করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২০৮২)
তবে মূল বিষয় হলো, সৌন্দর্যকে প্রাথমিক আকর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা গেলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্বীনদারকে কেন্দ্র করে।
স্বপ্নের জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের অর্থ কোনো নিখুঁত বা ত্রুটিহীন মানুষ খুঁজে বের করা নয়, বরং এমন একজনকে খুঁজে বের করা, যার সঙ্গে জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মিলে যায়। যে হবে দুনিয়ার জীবনের বন্ধু ও আখিরাতের পথের সহযাত্রী। যে আপনাকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেবে, ভুলের সময় শুধরে দেবে এবং জান্নাতের পথে চলতে একে অপরকে সহযোগিতা করবে।
ইসলামে মাতা-পিতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য যেমন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তেমনি সন্তানের প্রতিও মাতা-পিতার দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। সন্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই মাতা-পিতার প্রতি তাদের প্রাথমিক পর্যায়ের কর্তব্য ও দায়িত্ব কার্যকর হতে শুরু করে এবং তখন থেকেই সে হক অনুযায়ী আমল করা মাতা-পিতার...
৬ ঘণ্টা আগেমানবজীবনে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের আকাঙ্ক্ষা সবারই থাকে। কিন্তু কোন গুণাবলি একজন মানুষকে প্রকৃত শ্রেষ্ঠত্ব দান করে? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে আমরা হাদিসে এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেখতে পাই।
১৫ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআন মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ। এটি শুধু একটি ধর্মগ্রন্থ নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পথনির্দেশিকা। এই কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে একজন মুমিনের জীবনে আসে অফুরন্ত প্রশান্তি ও আত্মিক তৃপ্তি।
২ দিন আগেইসলামি ইতিহাসে জুমার দিনকে বলা হয় ‘সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন’। হাদিসে এসেছে, এ দিনেই হজরত আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এ দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন এবং এ দিনেই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আবার কিয়ামতও সংঘটিত হবে জুমার দিনেই। তাই এ দিনের মাহাত্ম্য কেবল ইবাদতকেন্দ্রিক নয়, বরং মানবজাতির সৃষ্টিজীবনের এক...
৩ দিন আগে