মাহমুদ হাসান ফাহিম
মূলত মানুষের কর্মের কারণেই তার অধঃপতনের সূচনা হয়। পৃথিবীর সব জাতিই নিজেদের উন্নতি চায়। তারপরও অনেকে অধঃপতনের শিকার। অপরাধ যখন ব্যক্তি পর্যায়ে থাকে তখন অধঃপতন ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। আবার যখনই ব্যাপক হারে কোনো দেশ বা জাতি অপরাধে লিপ্ত হয়, তখন সে অপরাধের দায় সবার ওপর বর্তায় এবং শুরু হয় দেশ ও জাতির অধঃপতন।
সুনানে ইবনে মাজাহ’র এক হাদিসের ভাষ্য হলো—কোনো দেশে পাঁচ ধরনের অপরাধ চলমান থাকলে, তারা কখনই উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারবে না। তাদের অধঃপতন সুনিশ্চিত।
এক. অশ্লীলতা
শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। তার কাজই হলো, অন্যায় ও অশ্লীলতার আদেশ দেওয়া। ইসলাম কিন্তু সব সময়ই অশ্লীলতাকে নিষেধ করে। (সুরা বাকারা: ১৬৮-১৬৯) হাদিসের ভাষায়, ‘যখনই কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, (যেমন সুদ, ঘুষ, জিনা ইত্যাদি) তখন তাদের মধ্যে মহামারির আকারে প্লেগ ও এমন সব ব্যাধির জন্ম হয়, যা পূর্বেকার লোকেদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।’
দুই. মাপে কমবেশ করা
বেচাকেনায় ওজন করার সময় সঠিকভাবে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওজনে কারচুপি করার অপরাধে পূর্বে এক জাতি ধ্বংসও হয়েছে। (সুরা বনি ইসরাইল: ৩৫) হাদিসের ভাষায়, ‘যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে, তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ ও কঠিন বিপদ-মসিবত। আর তাদের ওপর শুরু হয় জালেম শাসক গোষ্ঠীর নিপীড়ন।’
তিন. জাকাত না দেওয়া
জাকাত হলো ধনীর সম্পদে গরিবের অধিকার। জাকাত না দিয়ে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখা গরিব-দুঃখীর সম্পদ আত্মসাৎ করারই নামান্তর। (সুরা জারিয়াত: ১৯) হাদিসের ভাষায়, ‘কোনো জাতি যখন সম্পদের জাকাত আদায় করা থেকে বিরত থাকে, তখন আসমান তাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়। যদি ভূ-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু-জানোয়ার (গরু, ছাগল, ভেড়া, কুকুর, ঘোড়া ইত্যাদি) না থাকত তাহলে আর কখনো জমিনে বৃষ্টিপাত হতো না।’
চার. অঙ্গীকার ভঙ্গ করা
পবিত্র কোরআনে অঙ্গীকার পূরণের জোরালো তাগিদ এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এখানে অঙ্গীকার বলতে, আল্লাহ তাআলা বান্দার কাছ থেকে ইমান ও ইবাদত সম্পর্কিত যেসব অঙ্গীকার নিয়েছেন অথবা তাঁর নাজিলকৃত বিধি-বিধান হালাল ও হারাম সম্পর্কিত যেসব অঙ্গীকার নিয়েছেন, আয়াতে সেগুলোই উদ্দেশ্য। (তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন, সুরা মায়েদাহ: ১ নম্বর আয়াতের তাফসির দ্রষ্টব্য) হাদিসের ভাষায়, ‘যে জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) এর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, আল্লাহ তাদের ওপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করে দেন। সে তাদের ধন-সম্পদসহ সবকিছু কেড়ে নেয়।
পাঁচ. শরিয়া বহির্ভূত বিচার ব্যবস্থা
জমিন আল্লাহ তাআলার। বিচার বিভাগ চলবে তারই নির্দেশিত পন্থায়। নিজেদের মনগড়া আইন বানিয়ে আল্লাহর জমিনে বিচারকার্য চলতে পারে না। (সুরা আনআম: ৫৭) হাদিসের ভাষায়, ‘শাসকবর্গ যখন আল্লাহর কিতাব মোতাবেক ফয়সালা করে না এবং বিচার বিভাগে আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান অগ্রাহ্য করে, তখন তিনি তাদের পরস্পরের মধ্যে (যুদ্ধ) দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেন।’ (সুনানে ইবনে মাজা: ৪০১৯)
লেখক: শিক্ষক বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স টঙ্গী, গাজীপুর
মূলত মানুষের কর্মের কারণেই তার অধঃপতনের সূচনা হয়। পৃথিবীর সব জাতিই নিজেদের উন্নতি চায়। তারপরও অনেকে অধঃপতনের শিকার। অপরাধ যখন ব্যক্তি পর্যায়ে থাকে তখন অধঃপতন ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। আবার যখনই ব্যাপক হারে কোনো দেশ বা জাতি অপরাধে লিপ্ত হয়, তখন সে অপরাধের দায় সবার ওপর বর্তায় এবং শুরু হয় দেশ ও জাতির অধঃপতন।
সুনানে ইবনে মাজাহ’র এক হাদিসের ভাষ্য হলো—কোনো দেশে পাঁচ ধরনের অপরাধ চলমান থাকলে, তারা কখনই উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারবে না। তাদের অধঃপতন সুনিশ্চিত।
এক. অশ্লীলতা
শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। তার কাজই হলো, অন্যায় ও অশ্লীলতার আদেশ দেওয়া। ইসলাম কিন্তু সব সময়ই অশ্লীলতাকে নিষেধ করে। (সুরা বাকারা: ১৬৮-১৬৯) হাদিসের ভাষায়, ‘যখনই কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, (যেমন সুদ, ঘুষ, জিনা ইত্যাদি) তখন তাদের মধ্যে মহামারির আকারে প্লেগ ও এমন সব ব্যাধির জন্ম হয়, যা পূর্বেকার লোকেদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।’
দুই. মাপে কমবেশ করা
বেচাকেনায় ওজন করার সময় সঠিকভাবে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওজনে কারচুপি করার অপরাধে পূর্বে এক জাতি ধ্বংসও হয়েছে। (সুরা বনি ইসরাইল: ৩৫) হাদিসের ভাষায়, ‘যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে, তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ ও কঠিন বিপদ-মসিবত। আর তাদের ওপর শুরু হয় জালেম শাসক গোষ্ঠীর নিপীড়ন।’
তিন. জাকাত না দেওয়া
জাকাত হলো ধনীর সম্পদে গরিবের অধিকার। জাকাত না দিয়ে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখা গরিব-দুঃখীর সম্পদ আত্মসাৎ করারই নামান্তর। (সুরা জারিয়াত: ১৯) হাদিসের ভাষায়, ‘কোনো জাতি যখন সম্পদের জাকাত আদায় করা থেকে বিরত থাকে, তখন আসমান তাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়। যদি ভূ-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু-জানোয়ার (গরু, ছাগল, ভেড়া, কুকুর, ঘোড়া ইত্যাদি) না থাকত তাহলে আর কখনো জমিনে বৃষ্টিপাত হতো না।’
চার. অঙ্গীকার ভঙ্গ করা
পবিত্র কোরআনে অঙ্গীকার পূরণের জোরালো তাগিদ এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এখানে অঙ্গীকার বলতে, আল্লাহ তাআলা বান্দার কাছ থেকে ইমান ও ইবাদত সম্পর্কিত যেসব অঙ্গীকার নিয়েছেন অথবা তাঁর নাজিলকৃত বিধি-বিধান হালাল ও হারাম সম্পর্কিত যেসব অঙ্গীকার নিয়েছেন, আয়াতে সেগুলোই উদ্দেশ্য। (তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন, সুরা মায়েদাহ: ১ নম্বর আয়াতের তাফসির দ্রষ্টব্য) হাদিসের ভাষায়, ‘যে জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) এর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, আল্লাহ তাদের ওপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করে দেন। সে তাদের ধন-সম্পদসহ সবকিছু কেড়ে নেয়।
পাঁচ. শরিয়া বহির্ভূত বিচার ব্যবস্থা
জমিন আল্লাহ তাআলার। বিচার বিভাগ চলবে তারই নির্দেশিত পন্থায়। নিজেদের মনগড়া আইন বানিয়ে আল্লাহর জমিনে বিচারকার্য চলতে পারে না। (সুরা আনআম: ৫৭) হাদিসের ভাষায়, ‘শাসকবর্গ যখন আল্লাহর কিতাব মোতাবেক ফয়সালা করে না এবং বিচার বিভাগে আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান অগ্রাহ্য করে, তখন তিনি তাদের পরস্পরের মধ্যে (যুদ্ধ) দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেন।’ (সুনানে ইবনে মাজা: ৪০১৯)
লেখক: শিক্ষক বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স টঙ্গী, গাজীপুর
মুমিনের বহুল প্রত্যাশিত ইবাদত হজে মাবরুর। ‘হজে মাবরুর’ হজের একটি পরিভাষা। সহজে বললে, হজে মাবরুর হলো সেই হজ, যা আল্লাহর কাছে কবুল হয়। হজ পালনের সময় বিশুদ্ধ নিয়ত থাকা...
৭ ঘণ্টা আগেপ্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখার মধ্যে বেশ ফজিলত রয়েছে। হাদিসের ভাষায় এই তিনটি রোজাকে বলায় হয় আইয়ামে বিজের রোজা। এই রোজা প্রতি আরবি মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে রাখতে হয়।
১ দিন আগেএক মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি হক রয়েছে, যা সম্পর্কের সৌহার্দ্য ও সমাজের দৃঢ়তা বজায় রাখে। হাদিসে বর্ণিত সেই হকগুলো পালন করলে পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং দ্বীনি ভ্রাতৃত্ব মজবুত হয়।
১ দিন আগেআমরা সবাই চাই, আমাদের প্রতিটি দিন ভালো কাটুক; সুন্দরভাবে অতিবাহিত হোক। এ জন্য দরকার ইবাদত, জিকির আর তিলাওয়াতে দিন শুরু করা। এর জন্য মহানবী (সা.) হতে পারেন আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। নবীজির আদর্শ আমাদের জীবনের আলো, যা অন্ধকারে পথ দেখায় এবং পরকালের মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়।
২ দিন আগে