Ajker Patrika

ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের যা করতে হবে

ওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়। এখানে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের প্রতি কিছু পরামর্শমূলক প্রস্তাব দিয়েছেন খ্যাতিমান ইসলামি আলোচক ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ

শায়খ আহমাদুল্লাহ
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ২৬
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি

ওয়াজ মাহফিলের উদ্দেশ্য

ওয়াজ মাহফিলের উদ্দেশ্য হওয়া চাই কোরআন-হাদিসের আলোকে এবং সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে সর্বসাধারণের কাছে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা, সামাজিক অসংগতি এবং ত্রুটিবিচ্যুতি জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা দিয়ে দূর করার প্রয়াস চালানো, নীতিনৈতিকতায় সমৃদ্ধ দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করা এবং সর্বোপরি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। এর বিপরীতে অন্য কোনো পার্থিব স্বার্থ যেন আয়োজনের সঙ্গে জড়িত না থাকে, তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

ওয়াজের উত্তম সময়

ওয়াজ মাহফিলের জন্য আদর্শ সময় হওয়া উচিত বাদ আসর থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত। তারপর মাহফিলস্থলে এশার সালাত আদায়ের মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত হলে সেটা হবে সব দিক থেকে সুন্নাহসম্মত ও যথার্থ। কারণ রাসুলুল্লাহ (সা.) রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে যাওয়া পছন্দ করতেন এবং এশার পর আলাপচারিতা অপছন্দ করতেন। তাহাজ্জুদ ও ফজরের সালাত আদায়ের জন্য রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া সবচেয়ে বেশি সহায়ক ভূমিকা রাখে।

প্রশাসনের অনুমোদন ও স্বচ্ছতা

ওয়াজ মাহফিলের লক্ষ্যই যেখানে নৈতিকতার দীক্ষা দেওয়া, সেখানে মাহফিল করতে গিয়ে যেন কোনো প্রকার অসততা বা অনৈতিকতার আশ্রয় নেওয়া না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা অবশ্যকর্তব্য। স্থানীয় প্রশাসনের সম্মতি বা অনুমোদন নেওয়ার বিধান থাকলে তা নিয়েই মাহফিল আয়োজন করা সুশৃঙ্খল মাহফিলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গোঁজামিল করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মাহফিল করার চেষ্টা ইসলাম অনুমোদন করে না।

বিদ্যুৎ ও মাইকের ব্যবহার

অবৈধ বিদ্যুৎ-সংযোগ দিয়ে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা মোটেও ঠিক হবে না। নিজস্ব ব্যবস্থা না থাকলে প্রয়োজনে আশপাশের কোনো বাসা কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে নিরাপত্তা ও ধারণক্ষমতা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্টদের অনুমতি ও বিল পরিশোধ সাপেক্ষে বিদ্যুৎ নেওয়া যেতে পারে। তেমনিভাবে মাহফিলের মাইক অনেক বেশি দূর-দূরান্ত পর্যন্ত স্থাপন করার কারণে যদি অন্য ধর্মের মানুষের বিরক্তি কিংবা কোনো রোগী বা কারও কষ্টের কারণ হয়, তাহলে তা কোনো অবস্থাতেই জায়েজ নয়। কারণ কাউকে ওয়াজ শুনতে বাধ্য করা কিংবা সাধারণ জীবনযাত্রা ব্যাহত করা ও কষ্ট দেওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ।

আলোচক কেমন হবেন

শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের কল্যাণ ও দায়িত্ববোধ থেকে ওয়াজ করতে চান এবং কোরআন-হাদিসের পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন, বিনম্রভাবে সুন্দর ও শুদ্ধ ভাষায় আলোচনা ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন—এমন দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ আলেমদেরই দাওয়াত দেওয়া উচিত। ওয়াজের নামে বিভিন্ন শ্রেণি ও গোষ্ঠীর অযাচিত সমালোচনা, দৃষ্টিকটু আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি করা, অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি, বানোয়াট-ভিত্তিহীন উক্তি ও মন্তব্য মাহফিলের গাম্ভীর্য এবং সৌন্দর্য বিনষ্ট করে। আলোচনা হওয়া উচিত গঠনমূলক এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ে।

প্রশ্নোত্তর পর্ব ও কুইজ

ওয়াজ মাহফিলে শুধু বক্তা বক্তব্য দিলেন আর শ্রোতারা শুনলেন বা সায় দিলেন, এতে শ্রোতাদের অংশগ্রহণ পুরোপুরি নিশ্চিত হয় না। সে জন্য আলোচনা শেষে শ্রোতাদের মনের জিজ্ঞাসাগুলো তুলে আনতে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকলে মাহফিল অনেক বেশি প্রাণবন্ত হয়। অবশ্য প্রশ্নগুলো আগে থেকে সংগ্রহ করে উত্তরদাতা দেখে প্রস্তুতি নিয়ে নিলে সেটা হবে অনেক বেশি অর্থবহ ও নির্ভুল। আর সবশেষে শ্রোতারা কতটা শিখতে বা জানতে পারলেন, সেটা পরখ করার জন্য উপস্থাপিত বক্তব্য থেকে শ্রোতাদের প্রশ্ন করে সঠিক উত্তরদাতাকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে।

মাহফিল চলাকালীন করণীয়

মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষা ও আগত শ্রোতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আয়োজকদের দায়িত্ব। প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। ওয়াজ মাহফিলে যেন ইসলামের সুমহান দাওয়াতের আবহ থাকে এবং তা যেন প্রদর্শনপ্রিয়তা, লৌকিকতা ও এ-জাতীয় কোনো মন্দ কাজের প্ল্যাটফর্ম না হয়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিংবা গাড়ি থামিয়ে ডোনেশন কালেকশন করা অপমানজনক ও বিরক্তিকর কাজ, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে যথাসম্ভব হালাল উপার্জনকারীদের ডোনেশন নেওয়া উচিত।

মাহফিলের প্রচারনীতি

মাহফিলের প্রচারণার জন্য তৈরি করা ব্যানার-পোস্টার ইত্যাদির ভাষা যেন শুদ্ধ ও নির্ভুল হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। পোস্টার বা ব্যানারে কোনো আলোচকের পরিচয়-পদবি লিখতে গিয়ে ভুল ও অতিরঞ্জন করা চরম অন্যায়। উপস্থাপনার সময় কোনো আলোচকের পরিচয় উল্লেখ করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি ও অত্যুক্তি করা বেমানান। মাহফিলের আলোচনার অডিও-ভিডিও ধারণ করা এবং তা অনলাইনে প্রচার করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা কাম্য। এ কাজটি আয়োজকদের তত্ত্বাবধানে এবং বক্তার পূর্ণ সম্মতি নিয়ে করা আবশ্যক। অন্য কাউকে অনুমতি দিলেও তা প্রকাশের আগে পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। যারা বিভিন্ন মাহফিলের ভিডিও ধারণ করে ইউটিউব-ফেসবুকে দর্শক বাড়ানোর জন্য দৃষ্টিকটু, মিথ্যা ও আপত্তিকর থাম্বনেইল কিংবা শিরোনাম দেয়, কোনো অবস্থাতেই তাদের রেকর্ডের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।

আলোচকদের সম্মানী

আলোচকদের উচিত, দ্বীন প্রচারের মানসিকতা নিয়ে ওয়াজ করা। ওয়াজকে যদি অন্য দশটা পেশার মতো একটা পেশা বানানো হয়, তাহলে সেই ওয়াজ থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের খুব বেশি উপকার হবে না। তবে যেসব দ্বীনি কাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে প্রায় পুরো সময় সে কাজে আত্মনিয়োগ করতে হয় এবং দ্বীনের জন্য তা অতীব গুরুত্বপূর্ণ, সেসব কাজ করে পারিশ্রমিক নেওয়াকে বিশ্বের প্রায় সব ইসলামিক স্কলারই জায়েজ মনে করেন। তাই আয়োজকদের উচিত, আলোচকের গাড়িভাড়া, পথখরচ এবং অন্যান্য খরচের পাশাপাশি সম্মানজনক হাদিয়া পেশ করা। তবে এ বিষয়ে দর-কষাকষি করা ও চড়া মূল্য হাঁকানো কখনোই প্রকৃত আলেমের কাজ হতে পারে না।

হিসাব-নিকাশে স্বচ্ছতা

মাহফিল উপলক্ষে উত্তোলন করা আয়-ব্যয়ের হিসাবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি খুবই জরুরি। অনেক সময় আয়োজকেরা মাহফিলের জন্য বিস্তর টাকা তুলে আলোচকদের যৎসামান্য হাদিয়া দিয়ে অবশিষ্ট টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বণ্টন করে নেন, কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে মাহফিলের কথা বলে টাকা তুলে মাহফিলে কম খরচ করে সেটা দিয়ে অন্য কোনো কল্যাণমূলক কাজ করেন—এগুলো গর্হিত কাজ। তবে সবকিছু যথাযথভাবে সম্পন্ন করার পরও যদি টাকা উদ্বৃত্ত থাকে, তাহলে দানকারীদের মৌন সম্মতি বিবেচনায় তা কোনো ভালো কাজে ব্যয় করা যাবে।

ওয়াজ মাহফিলের উদ্দেশ্য হওয়া চাই কোরআন-হাদিসের আলোকে এবং সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে সর্বসাধারণের কাছে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা, সামাজিক অসংগতি এবং ত্রুটিবিচ্যুতি জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা দিয়ে দূর করার প্রয়াস চালানো, নীতিনৈতিকতায় সমৃদ্ধ দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করা এবং সর্বোপরি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। এর বিপরীতে অন্য কোনো পার্থিব স্বার্থ যেন আয়োজনের সঙ্গে জড়িত না থাকে, তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

ওয়াজের উত্তম সময়

ওয়াজ মাহফিলের জন্য আদর্শ সময় হওয়া উচিত বাদ আসর থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত। তারপর মাহফিলস্থলে এশার সালাত আদায়ের মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত হলে সেটা হবে সব দিক থেকে সুন্নাহসম্মত ও যথার্থ। কারণ রাসুলুল্লাহ (সা.) রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে যাওয়া পছন্দ করতেন এবং এশার পর আলাপচারিতা অপছন্দ করতেন। তাহাজ্জুদ ও ফজরের সালাত আদায়ের জন্য রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া সবচেয়ে বেশি সহায়ক ভূমিকা রাখে।

প্রশাসনের অনুমোদন ও স্বচ্ছতা

ওয়াজ মাহফিলের লক্ষ্যই যেখানে নৈতিকতার দীক্ষা দেওয়া, সেখানে মাহফিল করতে গিয়ে যেন কোনো প্রকার অসততা বা অনৈতিকতার আশ্রয় নেওয়া না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা অবশ্যকর্তব্য। স্থানীয় প্রশাসনের সম্মতি বা অনুমোদন নেওয়ার বিধান থাকলে তা নিয়েই মাহফিল আয়োজন করা সুশৃঙ্খল মাহফিলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গোঁজামিল করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মাহফিল করার চেষ্টা ইসলাম অনুমোদন করে না।

বিদ্যুৎ ও মাইকের ব্যবহার

অবৈধ বিদ্যুৎ-সংযোগ দিয়ে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা মোটেও ঠিক হবে না। নিজস্ব ব্যবস্থা না থাকলে প্রয়োজনে আশপাশের কোনো বাসা কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে নিরাপত্তা ও ধারণক্ষমতা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্টদের অনুমতি ও বিল পরিশোধ সাপেক্ষে বিদ্যুৎ নেওয়া যেতে পারে। তেমনিভাবে মাহফিলের মাইক অনেক বেশি দূর-দূরান্ত পর্যন্ত স্থাপন করার কারণে যদি অন্য ধর্মের মানুষের বিরক্তি কিংবা কোনো রোগী বা কারও কষ্টের কারণ হয়, তাহলে তা কোনো অবস্থাতেই জায়েজ নয়। কারণ কাউকে ওয়াজ শুনতে বাধ্য করা কিংবা সাধারণ জীবনযাত্রা ব্যাহত করা ও কষ্ট দেওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ।

আলোচক কেমন হবেন

শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের কল্যাণ ও দায়িত্ববোধ থেকে ওয়াজ করতে চান এবং কোরআন-হাদিসের পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন, বিনম্রভাবে সুন্দর ও শুদ্ধ ভাষায় আলোচনা ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন—এমন দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ আলেমদেরই দাওয়াত দেওয়া উচিত। ওয়াজের নামে বিভিন্ন শ্রেণি ও গোষ্ঠীর অযাচিত সমালোচনা, দৃষ্টিকটু আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি করা, অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি, বানোয়াট-ভিত্তিহীন উক্তি ও মন্তব্য মাহফিলের গাম্ভীর্য এবং সৌন্দর্য বিনষ্ট করে। আলোচনা হওয়া উচিত গঠনমূলক এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ে।

প্রশ্নোত্তর পর্ব ও কুইজ

ওয়াজ মাহফিলে শুধু বক্তা বক্তব্য দিলেন আর শ্রোতারা শুনলেন বা সায় দিলেন, এতে শ্রোতাদের অংশগ্রহণ পুরোপুরি নিশ্চিত হয় না। সে জন্য আলোচনা শেষে শ্রোতাদের মনের জিজ্ঞাসাগুলো তুলে আনতে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকলে মাহফিল অনেক বেশি প্রাণবন্ত হয়। অবশ্য প্রশ্নগুলো আগে থেকে সংগ্রহ করে উত্তরদাতা দেখে প্রস্তুতি নিয়ে নিলে সেটা হবে অনেক বেশি অর্থবহ ও নির্ভুল। আর সবশেষে শ্রোতারা কতটা শিখতে বা জানতে পারলেন, সেটা পরখ করার জন্য উপস্থাপিত বক্তব্য থেকে শ্রোতাদের প্রশ্ন করে সঠিক উত্তরদাতাকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে।

মাহফিল চলাকালীন করণীয়

মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষা ও আগত শ্রোতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আয়োজকদের দায়িত্ব। প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। ওয়াজ মাহফিলে যেন ইসলামের সুমহান দাওয়াতের আবহ থাকে এবং তা যেন প্রদর্শনপ্রিয়তা, লৌকিকতা ও এ-জাতীয় কোনো মন্দ কাজের প্ল্যাটফর্ম না হয়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিংবা গাড়ি থামিয়ে ডোনেশন কালেকশন করা অপমানজনক ও বিরক্তিকর কাজ, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে যথাসম্ভব হালাল উপার্জনকারীদের ডোনেশন নেওয়া উচিত।

মাহফিলের প্রচারনীতি

মাহফিলের প্রচারণার জন্য তৈরি করা ব্যানার-পোস্টার ইত্যাদির ভাষা যেন শুদ্ধ ও নির্ভুল হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। পোস্টার বা ব্যানারে কোনো আলোচকের পরিচয়-পদবি লিখতে গিয়ে ভুল ও অতিরঞ্জন করা চরম অন্যায়। উপস্থাপনার সময় কোনো আলোচকের পরিচয় উল্লেখ করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি ও অত্যুক্তি করা বেমানান। মাহফিলের আলোচনার অডিও-ভিডিও ধারণ করা এবং তা অনলাইনে প্রচার করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা কাম্য। এ কাজটি আয়োজকদের তত্ত্বাবধানে এবং বক্তার পূর্ণ সম্মতি নিয়ে করা আবশ্যক। অন্য কাউকে অনুমতি দিলেও তা প্রকাশের আগে পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। যারা বিভিন্ন মাহফিলের ভিডিও ধারণ করে ইউটিউব-ফেসবুকে দর্শক বাড়ানোর জন্য দৃষ্টিকটু, মিথ্যা ও আপত্তিকর থাম্বনেইল কিংবা শিরোনাম দেয়, কোনো অবস্থাতেই তাদের রেকর্ডের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।

আলোচকদের সম্মানী

আলোচকদের উচিত, দ্বীন প্রচারের মানসিকতা নিয়ে ওয়াজ করা। ওয়াজকে যদি অন্য দশটা পেশার মতো একটা পেশা বানানো হয়, তাহলে সেই ওয়াজ থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের খুব বেশি উপকার হবে না। তবে যেসব দ্বীনি কাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে প্রায় পুরো সময় সে কাজে আত্মনিয়োগ করতে হয় এবং দ্বীনের জন্য তা অতীব গুরুত্বপূর্ণ, সেসব কাজ করে পারিশ্রমিক নেওয়াকে বিশ্বের প্রায় সব ইসলামিক স্কলারই জায়েজ মনে করেন। তাই আয়োজকদের উচিত, আলোচকের গাড়িভাড়া, পথখরচ এবং অন্যান্য খরচের পাশাপাশি সম্মানজনক হাদিয়া পেশ করা। তবে এ বিষয়ে দর-কষাকষি করা ও চড়া মূল্য হাঁকানো কখনোই প্রকৃত আলেমের কাজ হতে পারে না।

হিসাব-নিকাশে স্বচ্ছতা

মাহফিল উপলক্ষে উত্তোলন করা আয়-ব্যয়ের হিসাবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি খুবই জরুরি। অনেক সময় আয়োজকেরা মাহফিলের জন্য বিস্তর টাকা তুলে আলোচকদের যৎসামান্য হাদিয়া দিয়ে অবশিষ্ট টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বণ্টন করে নেন, কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে মাহফিলের কথা বলে টাকা তুলে মাহফিলে কম খরচ করে সেটা দিয়ে অন্য কোনো কল্যাণমূলক কাজ করেন—এগুলো গর্হিত কাজ। তবে সবকিছু যথাযথভাবে সম্পন্ন করার পরও যদি টাকা উদ্বৃত্ত থাকে, তাহলে দানকারীদের মৌন সম্মতি বিবেচনায় তা কোনো ভালো কাজে ব্যয় করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রবীণ সুফি পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি আর নেই

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)

মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।

দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১১ মিনিট
ফজর০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
জোহর১১: ৫৪ মিনিট০৩: ৩৭ মিনিট
আসর০৩: ৩৮ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যেভাবে অন্যদের ভুল শুধরে দিতেন নবীজি

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।

ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।

মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।

রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত