ফারুক মেহেদী
জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি দেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলছে? মূল্যস্ফীতিতে এর চাপ কেমন? সরকারের নীতি-কৌশলে দুর্বলতাগুলো কী? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক, উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারপারসন ও অর্থনীতিবিদ ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। অর্থনীতিতে এর প্রভাব কী?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: কয়েক বছর ধরে আমরা দেখছি, জ্বালানি তেলের দাম কখনো ৫০ ডলার, ৩০ ডলার বা তার চেয়েও নিচে ২৫ ডলার পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল। এখন তা আবার ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে। তার মানে, আমাদের আমদানিব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। এটা তখন আমাদের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে চাপের জন্য একটা মাধ্যম তৈরি করবে। এটা হতো না, যদি আমাদের একই হারে রপ্তানি বাড়ত। অথচ রপ্তানি সেই হারে বাড়ছে না; বরং নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি গত অর্থবছরে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বাড়লেও কয়েক মাস ধরে তাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। তার মানে, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দুটো উৎসের একটি কমছে।
আজকের পত্রিকা: এটা ব্যয় বাড়াচ্ছে কি না? মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব কেমন?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমছে, অন্যদিকে খাদ্য আমদানি বাড়ছে। এরই মধ্যে ১০ টনের মতো আমদানি হয়েছে। সামনে আরও হবে। এ ছাড়া মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্তের বিরাট একটা অংশ আমদানিনির্ভর। খাদ্য এবং খাদ্যবহির্ভূত এ দুটো জায়গায় আমদানি বেড়ে যাচ্ছে। মানে হলো, রপ্তানি সেই হারে বাড়ছে না, রেমিট্যান্সের আয় নেতিবাচক, সঙ্গে যোগ হয়েছে আমদানিব্যয়। এতে চলতি হিসাবের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। এখন দ্রুত অর্থনীতিটা সাজাতে হবে। ব্যয়ের চাপ বাড়ার ফলে আমরা লক্ষ করছি, ইতিমধ্যেই টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ছে। এর একটা প্রভাব পড়ছে পণ্যের দামের ওপর। তার মানে, মূল্যস্ফীতি দেখা যাবে। এটা তো অর্থনীতির একটা চক্র। মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব দেখা যাবে।
আজকের পত্রিকা: করোনার মধ্যে তা দরিদ্র মানুষকে কতটা ভোগাবে? অর্থনীতিতে এটি চাপ তৈরি করবে কি না?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: আমরা জানি, করোনার কারণে দারিদ্র্য বেড়ে গিয়েছিল। যেটা আমাদের অর্জন ম্লান করেছে। এখন মুদ্রাস্ফীতি যদি বেড়ে যায় এবং নতুন দারিদ্র্য হয়, তাহলে বিরাট একটা অংশের মানুষের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি করবে। অন্যদিকে করোনার কারণে অন্যদের প্রকৃত মজুরি বাড়েনি। তাহলে একদিকে দারিদ্র্য এবং প্রকৃত মজুরি না বাড়ার ফলে মূল্যস্ফীতির চাপটা অর্থনীতিতে আরও একটি বড় চাপ তৈরি করবে। মূল বিষয় হচ্ছে, চাপটা কোনো রকমেই ধরে রাখা যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এ ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় কী?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: চাপটা বেড়ে যাওয়ার আগেই নীতি-কাঠামো সাজানো দরকার। অর্থাৎ আমরা যেন ঘটনাগুলোর শিকার না হই। যেমন শিকার হয়েছি চাল বা খাদ্য আমদানির ক্ষেত্রে। কয়েক বছর ধরেই আমরা জানতাম, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পরে হঠাৎ করে দেখা যায় সংকট আছে। তার মানে, এটা আগে থেকে পরিকল্পনা করা হয়নি। তখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সব সময়ই সরকার ঘটনা ঘটার পর সাড়া দেয়। অথচ এগুলো যদি আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়, তাহলে এমনটি হয় না। এটা হচ্ছে আমাদের বড় দুর্বলতা।
আজকের পত্রিকা: কিসের দুর্বলতায় এটা হয় বলে আপনি মনে করেন?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: নীতি-কাঠামোয় আমাদের একটা বড় মিসিং এলিমেন্ট হচ্ছে আমরা রিঅ্যাক্ট করি; কিন্তু আগে থেকে অনুমান করে প্রস্তুতি নিই না। সরকার ঘটনা ঘটার পর রিঅ্যাকটিভ হয়। সে জন্য প্রথম থেকেই আমাদের যে জিনিসগুলো ছিল, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারিনি। মানে কোভিডের পরের যে পুনরুদ্ধার, মানে যাঁরা চাকরি বা কর্মসংস্থান হারিয়েছেন, ওই জায়গায় তো পুনরুদ্ধার হয়নি। অনানুষ্ঠানিক খাতে পুনরুদ্ধারটা হচ্ছে না। কারণ, ওখানে ঋণই যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এটা কি সরকারের প্রস্তুতির অভাবে?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: সরকার বিরাট একটা প্রণোদনা দিয়েছে। সেটা অধিকাংশ মানুষের কাছে যাওয়ার জন্য যে প্রক্রিয়া সেটা নেই। এ ছাড়া সবাই বলছে, দারিদ্য মানুষের তথ্যভান্ডার করা হবে। সেটা হচ্ছে না। তার মানে, সরকারের প্রস্তুতি থাকে না। আবার রিঅ্যাকটিভ। আর যেখানে সরকার করার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী; কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো করতে পারছে না। যেমন হচ্ছে অতিদরিদ্রদের টাকা দেওয়ায়। সরকার বলছে, আমি ৫০ লাখ লোককে টাকা দিতে চাই, প্রতিষ্ঠান ৩৫ লাখের বেশি দিতে পারছে না। কারণ, সেখানে তথ্যভান্ডার নেই। এখানে দারিদ্র্য কমানো হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে
দেওয়া হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি দেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলছে? মূল্যস্ফীতিতে এর চাপ কেমন? সরকারের নীতি-কৌশলে দুর্বলতাগুলো কী? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক, উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারপারসন ও অর্থনীতিবিদ ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। অর্থনীতিতে এর প্রভাব কী?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: কয়েক বছর ধরে আমরা দেখছি, জ্বালানি তেলের দাম কখনো ৫০ ডলার, ৩০ ডলার বা তার চেয়েও নিচে ২৫ ডলার পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল। এখন তা আবার ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে। তার মানে, আমাদের আমদানিব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। এটা তখন আমাদের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে চাপের জন্য একটা মাধ্যম তৈরি করবে। এটা হতো না, যদি আমাদের একই হারে রপ্তানি বাড়ত। অথচ রপ্তানি সেই হারে বাড়ছে না; বরং নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি গত অর্থবছরে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বাড়লেও কয়েক মাস ধরে তাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। তার মানে, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দুটো উৎসের একটি কমছে।
আজকের পত্রিকা: এটা ব্যয় বাড়াচ্ছে কি না? মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব কেমন?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমছে, অন্যদিকে খাদ্য আমদানি বাড়ছে। এরই মধ্যে ১০ টনের মতো আমদানি হয়েছে। সামনে আরও হবে। এ ছাড়া মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্তের বিরাট একটা অংশ আমদানিনির্ভর। খাদ্য এবং খাদ্যবহির্ভূত এ দুটো জায়গায় আমদানি বেড়ে যাচ্ছে। মানে হলো, রপ্তানি সেই হারে বাড়ছে না, রেমিট্যান্সের আয় নেতিবাচক, সঙ্গে যোগ হয়েছে আমদানিব্যয়। এতে চলতি হিসাবের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। এখন দ্রুত অর্থনীতিটা সাজাতে হবে। ব্যয়ের চাপ বাড়ার ফলে আমরা লক্ষ করছি, ইতিমধ্যেই টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ছে। এর একটা প্রভাব পড়ছে পণ্যের দামের ওপর। তার মানে, মূল্যস্ফীতি দেখা যাবে। এটা তো অর্থনীতির একটা চক্র। মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব দেখা যাবে।
আজকের পত্রিকা: করোনার মধ্যে তা দরিদ্র মানুষকে কতটা ভোগাবে? অর্থনীতিতে এটি চাপ তৈরি করবে কি না?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: আমরা জানি, করোনার কারণে দারিদ্র্য বেড়ে গিয়েছিল। যেটা আমাদের অর্জন ম্লান করেছে। এখন মুদ্রাস্ফীতি যদি বেড়ে যায় এবং নতুন দারিদ্র্য হয়, তাহলে বিরাট একটা অংশের মানুষের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি করবে। অন্যদিকে করোনার কারণে অন্যদের প্রকৃত মজুরি বাড়েনি। তাহলে একদিকে দারিদ্র্য এবং প্রকৃত মজুরি না বাড়ার ফলে মূল্যস্ফীতির চাপটা অর্থনীতিতে আরও একটি বড় চাপ তৈরি করবে। মূল বিষয় হচ্ছে, চাপটা কোনো রকমেই ধরে রাখা যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এ ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় কী?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: চাপটা বেড়ে যাওয়ার আগেই নীতি-কাঠামো সাজানো দরকার। অর্থাৎ আমরা যেন ঘটনাগুলোর শিকার না হই। যেমন শিকার হয়েছি চাল বা খাদ্য আমদানির ক্ষেত্রে। কয়েক বছর ধরেই আমরা জানতাম, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পরে হঠাৎ করে দেখা যায় সংকট আছে। তার মানে, এটা আগে থেকে পরিকল্পনা করা হয়নি। তখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সব সময়ই সরকার ঘটনা ঘটার পর সাড়া দেয়। অথচ এগুলো যদি আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়, তাহলে এমনটি হয় না। এটা হচ্ছে আমাদের বড় দুর্বলতা।
আজকের পত্রিকা: কিসের দুর্বলতায় এটা হয় বলে আপনি মনে করেন?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: নীতি-কাঠামোয় আমাদের একটা বড় মিসিং এলিমেন্ট হচ্ছে আমরা রিঅ্যাক্ট করি; কিন্তু আগে থেকে অনুমান করে প্রস্তুতি নিই না। সরকার ঘটনা ঘটার পর রিঅ্যাকটিভ হয়। সে জন্য প্রথম থেকেই আমাদের যে জিনিসগুলো ছিল, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারিনি। মানে কোভিডের পরের যে পুনরুদ্ধার, মানে যাঁরা চাকরি বা কর্মসংস্থান হারিয়েছেন, ওই জায়গায় তো পুনরুদ্ধার হয়নি। অনানুষ্ঠানিক খাতে পুনরুদ্ধারটা হচ্ছে না। কারণ, ওখানে ঋণই যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এটা কি সরকারের প্রস্তুতির অভাবে?
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: সরকার বিরাট একটা প্রণোদনা দিয়েছে। সেটা অধিকাংশ মানুষের কাছে যাওয়ার জন্য যে প্রক্রিয়া সেটা নেই। এ ছাড়া সবাই বলছে, দারিদ্য মানুষের তথ্যভান্ডার করা হবে। সেটা হচ্ছে না। তার মানে, সরকারের প্রস্তুতি থাকে না। আবার রিঅ্যাকটিভ। আর যেখানে সরকার করার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী; কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো করতে পারছে না। যেমন হচ্ছে অতিদরিদ্রদের টাকা দেওয়ায়। সরকার বলছে, আমি ৫০ লাখ লোককে টাকা দিতে চাই, প্রতিষ্ঠান ৩৫ লাখের বেশি দিতে পারছে না। কারণ, সেখানে তথ্যভান্ডার নেই। এখানে দারিদ্র্য কমানো হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে
দেওয়া হচ্ছে।
অধ্যাপক এম এম আকাশ—বাংলাদেশের বামপন্থী আন্দোলনের এক সুপরিচিত নাম। তিনি শুধু অর্থনীতিবিদ হিসেবেই নন, একজন প্রগতিশীল চিন্তক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) অন্যতম নেতৃত্বদানকারী হিসেবেও পরিচিত। আজকের অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যখন একদিকে গণতন্ত্র সংকুচিত হচ্ছে আর অন্যদিকে বৈষম্য বাড়ছে...
২ দিন আগেমিয়ানমারের সংকটকবলিত রাখাইনে খাদ্যসহ জরুরি রসদ সরবরাহে মানবিক করিডর দিতে নীতিগত সম্মতির কথা বলছে সরকার। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসবিষয়ক গবেষক আলতাফ পারভেজ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিভুরঞ্জন সরকার ও মাসুদ রানা।
৫ দিন আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক পক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নীতি নির্ধারণে অন্যতম ভূমিকা পালন করছেন যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। দলের গঠনতন্ত্র প্রণয়নে গঠিত কমিটিতেও রয়েছেন তিনি।
১৩ দিন আগেবাংলাদেশি তরুণ ওমর আহমেদ বর্তমানে বেলজিয়ামের ইএএসপিডি ব্রাসেলসের ইইউ প্রজেক্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত। বেলজিয়ামে উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কাজ, বাংলাদেশিদের সুযোগ ও প্রস্তুতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন নাদিম মজিদ।
২২ মার্চ ২০২৫