অর্চি হক, ঢাকা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আরিফ সোহেল। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অর্চি হক।
প্রশ্ন: বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আরিফ সোহেল: বৃহত্তর রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন নিয়েই প্রস্তুত হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন কীভাবে হবে, পিআর হবে কি হবে না—এসব বিষয়ে ঐকমত্যের অভাব দেখেছি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এটা হওয়ার কথা ছিল কি না? প্রথমত, এ রকম হওয়াটা আমার কাছে মনে হয় খুব একটা স্বাভাবিক নয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশের রাজনীতির দুইটা বিকল্প ছিল। একটা হচ্ছে গঠনমূলক বিপ্লবী ধারা, নতুন একটা রাষ্ট্র তৈরি করা। আরেকটা হচ্ছে শুধু নির্বাচন করে নতুন একটা শাসক নিয়ে আসা। প্রথমটা হয়নি, ওদিকে বাংলাদেশের রাজনীতি যায়নি। এখন দেশের রাজনীতি দ্বিতীয় বিকল্পের দিকে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: প্রথম বিকল্পের দিকে নেওয়া যায়নি কেন?
আরিফ সোহেল: ওই সময় আমরা শক্ত অবস্থান নিইনি একটা ভুল হিসাব-নিকাশের কারণে। যখন বড় রাজনৈতিক দলগুলো, পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বললেন যে আমরাও তো গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের কথা শুনতে হবে। তখন আমরা মনে করেছি যে, এটা যৌক্তিক। তাদের কথা শোনা উচিত। তাদের কথা শুনেই আমরা জাতীয় সরকার করিনি। জাতীয় সরকার মানে বিপ্লবী সরকার। তাহলে দেশের রাজনীতি আজকে নতুন একটা রাষ্ট্র গঠনের দিকে থাকত। যখন বিএনপি থেকে শুরু করে বড় দলগুলো জাতীয় সরকার করতে রাজি হলো না, তখন আমরা তাদের সেই মতামতকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। যদিও সেই সময়ে সম্ভব ছিল নিজেরাই বিপ্লবী সরকার ঘোষণা করার। তাহলে তখনই একটা জাতীয় সরকার করে গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে জাতি এগিয়ে যেত এবং হয়তো ইতিমধ্যেই গণপরিষদ নির্বাচন হয়ে যেত। তারপর এত দিনে নতুন সংবিধানের কাজ অনেক দূর এগোত।
প্রশ্ন: আপনারা গণপরিষদ নির্বাচন আগে চাইছেন, কিন্তু নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, সেখানে গণপরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে কিছু বলা নেই। সার্বিক বিষয়টা নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন?
আরিফ সোহেল: রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে আমরা ব্যাপক সমন্বয়হীনতা লক্ষ করছি। যেমন নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে গণপরিষদের কোনো কথা নেই। জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, এটা নিয়ে কোনো কথা নেই। তারা শুধু একটা সংসদ নির্বাচনের কথা বলছে, যেন দেশে কিছুই হয়নি। চব্বিশে দেশে দুই হাজার মানুষ রক্ত দিয়েছে। অসংখ্য মানুষ হাত, পা, চোখ হারিয়েছে। তাদের এই আত্মত্যাগ, সেটা যেন কিছুই না। আবার ঐকমত্য কমিশনে আমরা দেখছি, সেখানে গণপরিষদের কথা আছে, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। গণপরিষদের কথা ঐকমত্য কমিশনে আছে, আবার ইসিতে নেই। এমন একটা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে আমরা বলেছি, ঐকমত্য কমিশনকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ, ঐকমত্য কমিশনকে প্রাধান্য না দিলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কোনো অর্থ থাকে না।
প্রশ্ন: গণপরিষদ যদি না হয়, আপনাদের পদক্ষেপ কী হবে?
আরিফ সোহেল: আমাদের কর্মসূচি একটাই হতে পারে, সেটা হচ্ছে, যে আকাঙ্ক্ষা থেকে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে, যে রাষ্ট্র পাওয়ার জন্য, যে দেশ পাওয়ার জন্য এতগুলো মানুষ প্রাণ দিয়েছে, আত্মত্যাগ করেছে, সেই দেশ তৈরির জন্য রাজপথে আমরা সংগ্রাম জারি রাখব। গণপরিষদ আদায় করা ও একটা নতুন সংবিধান তৈরির জন্য শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, পেশাজীবী, চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে যাব।
প্রশ্ন: আবারও যদি আপনারা রাস্তায় নামেন, তাহলে এক বছর আগে যে পরিমাণ মানুষের সমর্থন পেয়েছিলেন, এখনো তা পাবেন বলে মনে করেন?
আরিফ সোহেল: না, এ মুহূর্তে আমরা সে রকমটা পাব না। এর বেশ কিছু কারণ আছে। কিছু কিছু কাজ আসলে অভ্যুত্থান বা বিপ্লব-পরবর্তী সময়েই করে ফেলতে হয়। এরপর যত দেরি করবেন, মানুষকে তত কম সঙ্গে পাবেন। বেশ কিছু জায়গায় আমরা ভুল করেছি। এ ছাড়া আমাদের ঘিরে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমাদের ছোটখাটো ভুল অনেক বড় করে দেখা হয়েছে। মিডিয়া অনেক মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে। এটার একটা প্রভাব জনগণের ওপর খুব স্বাভাবিকভাবেই পড়েছে। জনগণকে যেহেতু নির্বাচনী আমেজে, মানে সংসদীয় নির্বাচনী আমেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তারা বিভিন্ন দল ও মতের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আরিফ সোহেল। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অর্চি হক।
প্রশ্ন: বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আরিফ সোহেল: বৃহত্তর রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন নিয়েই প্রস্তুত হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন কীভাবে হবে, পিআর হবে কি হবে না—এসব বিষয়ে ঐকমত্যের অভাব দেখেছি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এটা হওয়ার কথা ছিল কি না? প্রথমত, এ রকম হওয়াটা আমার কাছে মনে হয় খুব একটা স্বাভাবিক নয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশের রাজনীতির দুইটা বিকল্প ছিল। একটা হচ্ছে গঠনমূলক বিপ্লবী ধারা, নতুন একটা রাষ্ট্র তৈরি করা। আরেকটা হচ্ছে শুধু নির্বাচন করে নতুন একটা শাসক নিয়ে আসা। প্রথমটা হয়নি, ওদিকে বাংলাদেশের রাজনীতি যায়নি। এখন দেশের রাজনীতি দ্বিতীয় বিকল্পের দিকে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: প্রথম বিকল্পের দিকে নেওয়া যায়নি কেন?
আরিফ সোহেল: ওই সময় আমরা শক্ত অবস্থান নিইনি একটা ভুল হিসাব-নিকাশের কারণে। যখন বড় রাজনৈতিক দলগুলো, পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বললেন যে আমরাও তো গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের কথা শুনতে হবে। তখন আমরা মনে করেছি যে, এটা যৌক্তিক। তাদের কথা শোনা উচিত। তাদের কথা শুনেই আমরা জাতীয় সরকার করিনি। জাতীয় সরকার মানে বিপ্লবী সরকার। তাহলে দেশের রাজনীতি আজকে নতুন একটা রাষ্ট্র গঠনের দিকে থাকত। যখন বিএনপি থেকে শুরু করে বড় দলগুলো জাতীয় সরকার করতে রাজি হলো না, তখন আমরা তাদের সেই মতামতকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। যদিও সেই সময়ে সম্ভব ছিল নিজেরাই বিপ্লবী সরকার ঘোষণা করার। তাহলে তখনই একটা জাতীয় সরকার করে গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে জাতি এগিয়ে যেত এবং হয়তো ইতিমধ্যেই গণপরিষদ নির্বাচন হয়ে যেত। তারপর এত দিনে নতুন সংবিধানের কাজ অনেক দূর এগোত।
প্রশ্ন: আপনারা গণপরিষদ নির্বাচন আগে চাইছেন, কিন্তু নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, সেখানে গণপরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে কিছু বলা নেই। সার্বিক বিষয়টা নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন?
আরিফ সোহেল: রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে আমরা ব্যাপক সমন্বয়হীনতা লক্ষ করছি। যেমন নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে গণপরিষদের কোনো কথা নেই। জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, এটা নিয়ে কোনো কথা নেই। তারা শুধু একটা সংসদ নির্বাচনের কথা বলছে, যেন দেশে কিছুই হয়নি। চব্বিশে দেশে দুই হাজার মানুষ রক্ত দিয়েছে। অসংখ্য মানুষ হাত, পা, চোখ হারিয়েছে। তাদের এই আত্মত্যাগ, সেটা যেন কিছুই না। আবার ঐকমত্য কমিশনে আমরা দেখছি, সেখানে গণপরিষদের কথা আছে, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। গণপরিষদের কথা ঐকমত্য কমিশনে আছে, আবার ইসিতে নেই। এমন একটা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে আমরা বলেছি, ঐকমত্য কমিশনকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ, ঐকমত্য কমিশনকে প্রাধান্য না দিলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কোনো অর্থ থাকে না।
প্রশ্ন: গণপরিষদ যদি না হয়, আপনাদের পদক্ষেপ কী হবে?
আরিফ সোহেল: আমাদের কর্মসূচি একটাই হতে পারে, সেটা হচ্ছে, যে আকাঙ্ক্ষা থেকে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে, যে রাষ্ট্র পাওয়ার জন্য, যে দেশ পাওয়ার জন্য এতগুলো মানুষ প্রাণ দিয়েছে, আত্মত্যাগ করেছে, সেই দেশ তৈরির জন্য রাজপথে আমরা সংগ্রাম জারি রাখব। গণপরিষদ আদায় করা ও একটা নতুন সংবিধান তৈরির জন্য শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, পেশাজীবী, চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে যাব।
প্রশ্ন: আবারও যদি আপনারা রাস্তায় নামেন, তাহলে এক বছর আগে যে পরিমাণ মানুষের সমর্থন পেয়েছিলেন, এখনো তা পাবেন বলে মনে করেন?
আরিফ সোহেল: না, এ মুহূর্তে আমরা সে রকমটা পাব না। এর বেশ কিছু কারণ আছে। কিছু কিছু কাজ আসলে অভ্যুত্থান বা বিপ্লব-পরবর্তী সময়েই করে ফেলতে হয়। এরপর যত দেরি করবেন, মানুষকে তত কম সঙ্গে পাবেন। বেশ কিছু জায়গায় আমরা ভুল করেছি। এ ছাড়া আমাদের ঘিরে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমাদের ছোটখাটো ভুল অনেক বড় করে দেখা হয়েছে। মিডিয়া অনেক মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে। এটার একটা প্রভাব জনগণের ওপর খুব স্বাভাবিকভাবেই পড়েছে। জনগণকে যেহেতু নির্বাচনী আমেজে, মানে সংসদীয় নির্বাচনী আমেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তারা বিভিন্ন দল ও মতের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে।
ডাকসু ও জাকসুর ভোটে বড় জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির। বিপরীতে কেন্দ্রীয় একটি পদেও জিততে পারেনি ছাত্রদল। ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
১২ দিন আগেডাকসু ও জাকসুর ভোটে বড় জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির। বিপরীতে কেন্দ্রীয় একটি পদেও জিততে পারেনি ছাত্রদল। এ নিয়ে কথা বলেছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ।
১২ দিন আগেআলতাফ পারভেজ লেখক ও গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। ‘মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী: ইতিহাসের পুনঃপাঠ’, ‘বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক’, ‘শ্রীলঙ্কার তামিল ইলম’, ‘গ্রামসি ও তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা’ প্রভৃতি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই।
৩০ আগস্ট ২০২৫সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। দীর্ঘ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে বিভাগটির ইমেরিটাস অধ্যাপক। মার্কসবাদী চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ অধ্যাপক চৌধুরী নতুন দিগন্ত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
২২ জুন ২০২৫