Ajker Patrika

শুধু একটি কারণেই নোবেল পেতে চান ট্রাম্প—কী সেটা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ৫২
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ছবি: সংগৃহীত

নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতার স্বপ্ন আবারও অধরা রইল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এ বছর নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি শান্তি পুরস্কার দিয়েছে ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে। ফলে বারাক ওবামাকে ছাড়িয়ে যেতে ট্রাম্পের বহু বছরের আকাঙ্ক্ষা আবারও ব্যর্থ হলো।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার জন্য প্রকাশ্যে আগ্রহ দেখিয়ে আসছেন। সম্প্রতি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করার পর তিনি আশা করেছিলেন, এবার হয়তো পুরস্কারটি তাঁরই হাতে আসবে। তাঁর ছেলে এরিক ট্রাম্পসহ ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ গোষ্ঠীর অনেক সমর্থক দাবি করেছিলেন, গাজার শান্তি প্রচেষ্টার জন্য পুরো পুরস্কারটিই ট্রাম্পের নামে উৎসর্গ করা উচিত।

তারপরও ট্রাম্প নিজে কিছুটা সন্দিহান ছিলেন। নোবেল নিয়ে হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না। দেখুন, আমি সাতটা যুদ্ধ মিটিয়েছি, অষ্টমটার কাছাকাছি আছি। এমনকি রাশিয়া–ইউক্রেন পরিস্থিতিও আমরা শেষ পর্যন্ত মিটিয়ে ফেলব। ইতিহাসে কেউ এতটা করেনি। তবুও তারা হয়তো কোনো কারণ খুঁজে আমাকে পুরস্কারটা দেবে না।’

এদিকে নোবেল কমিটির সহসভাপতি আসলে-তয়ে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ট্রাম্পের পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি বলেছিলেন, যেসব প্রার্থী নিজেকে পুরস্কারের জন্য জোরালোভাবে প্রচার করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এ প্রচারণা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

যদি ট্রাম্প জিততেন, তাহলে তিনি হতেন নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া পঞ্চম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর আগে থিওডোর রুজভেল্ট, উইড্রো উইলসন, জিমি কার্টার ও বারাক ওবামা এই সম্মান পেয়েছিলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ওবামার নোবেল পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তির্যক মন্তব্য করে আসছেন ট্রাম্প। নোবেল পেয়ে তিনি ওবামার অর্জনকে ছাড়িয়ে যেতে চান বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে লেখক জো সোমারল্যাড লিখেছেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ওবামা। সে সময় থেকেই ট্রাম্পের মনে ক্ষোভ জমে। আবার ২০১১ সালে হোয়াইট হাউসের এক সংবাদ সম্মেলনে ওবামা যখন ট্রাম্পের জন্মস্থান নিয়ে প্রচারিত ‘বার্থার ষড়যন্ত্র’ তত্ত্বকে বিদ্রূপ করেন, সেটিও ট্রাম্পের মনে গভীরভাবে বিঁধে থাকে।

ট্রাম্পের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ট্রাম্প মনে করতেন, ওবামা কিছু না করেই নোবেল পেয়েছেন। তাই তিনি নিজেও পাওয়ার যোগ্য। এ নিয়ে ট্রাম্প বহুবার জনসভায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।

সম্প্রতি ওবামাকে নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় তৈরি এক ভিডিও পোস্ট করেন ট্রাম্প। এতে দেখা যায়, ওবামা কারাগারে বন্দী। বিশ্লেষকদের মতে, এটি আসলে ট্রাম্পের অন্তর্নিহিত হীনমন্যতা ও ঈর্ষার প্রতিফলন। এমএসএনবিসিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে রিপাবলিকান নেতা মাইকেল স্টিল লেখেন, ওবামার বুদ্ধিমত্তা, সৌজন্য আর বিশ্বব্যাপী মর্যাদা ট্রাম্পের কাছে এক অপ্রাপ্য স্বপ্ন। ওবামা যেন তাঁর মস্তিষ্কে স্থায়ীভাবে বাস করছে।

ব্যাপারটি দাঁড়িয়েছে এমন—ওবামা ঐতিহাসিক স্বাস্থ্যসেবা আইন পাস করেছিলেন আর ক্ষমতায় এসে ট্রাম্পের প্রথম কাজ ছিল সেটি বাতিলের চেষ্টা। ওবামার নোবেল জয়ের কারণেই ট্রাম্প বছরের পর বছর নিজের নামও সেই তালিকায় যুক্ত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় ব্যস্ত আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিসিএসে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে প্রশ্ন, নেই মুক্তিযুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ও নিখোঁজ বহু

‘কারা লুঙ্গি তুলে চেক করে মানুষ মেরেছে, তা সবারই জানা’

ট্রাম্পের আশাভঙ্গ, শান্তিতে নোবেল জিতলেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা

স্বামীকে হত্যার পর ইয়াবা সেবন করে লাশ টুকরো করেন স্ত্রী ও প্রেমিক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত