Ajker Patrika

চীন নিয়ে মাস্ককে ব্রিফিং—নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি অস্বীকার ট্রাম্পের

শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে প্রবেশ করছেন ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত
শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে প্রবেশ করছেন ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত

ঘনিষ্ঠ মিত্র বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ককে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ‘সম্ভাব্য চীন যুদ্ধ পরিকল্পনা’ সম্পর্কে অবহিত করা হবে—নিউইয়র্ক টাইমসের এমন দাবিকে অস্বীকার করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ শুক্রবার পেন্টাগনে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রাক্কালে একটি ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, ‘চীনের বিষয়টি একবারও উল্লেখ বা আলোচনা করা হবে না।’

এদিকে পেন্টাগনের প্রধান মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথও এক্স মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন—এই বৈঠকটি হবে মূলত ‘নব উদ্ভাবন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আরও কার্যকর বিষয়’ নিয়ে।

তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাস্কের জন্য নির্ধারিত ব্রিফিংয়ে পেন্টাগনে উচ্চপদস্থ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। বিভিন্ন বিষয়ে সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা প্রদান করা হবে এই ব্রিফিংয়ে, যার মধ্যে চীনের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

এর আগে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিফিংয়ে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল ব্যাখ্যা করে ২০ থেকে ৩০টি স্লাইড উপস্থাপন করা হবে। সংবাদপত্রটি দুজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানালেও তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন রেখেছে।

গোপন সামরিক পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত হওয়া মাস্কের জন্য একটি নতুন ভূমিকা তৈরি করবে। এর আগে তিনি ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা হিসেবে মার্কিন সরকারি ব্যয় হ্রাসের প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়েছেন।

চীনের সঙ্গে মার্কিন কৌশল মাস্কের স্বার্থের সংঘাত হতে পারে কিনা সেই প্রশ্নও উঠতে পারে। কারণ টেসলা এবং স্পেসএক্স-এর প্রধান হিসেবে চীন এবং পেন্টাগনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে তাঁর।

হোয়াইট হাউস আগেই বলেছে, মাস্ক যদি কখনো তাঁর ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ব্যয় হ্রাসের ভূমিকার মধ্যে স্বার্থের সংঘাত অনুভব করেন, তবে তিনি নিজেকে সরিয়ে নেবেন।

বছরের পর বছর ধরে নানা বিষয় নিয়ে চীন-মার্কিন সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে প্রযুক্তি প্রবেশাধিকার, বাণিজ্য শুল্ক, সাইবার নিরাপত্তা, টিকটক, তাইওয়ান, হংকং, মানবাধিকার এবং মহামারির উৎপত্তি নিয়ে মতবিরোধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত সুহার্তো এখন ইন্দোনেশিয়ার ‘জাতীয় বীর’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সুহার্তোর পুত্র–কণ্যার কাছে জাতীয় বীরের পদক তুলে দিচ্ছেন সুবিয়ান্তো। ছবি: এএফপি
সুহার্তোর পুত্র–কণ্যার কাছে জাতীয় বীরের পদক তুলে দিচ্ছেন সুবিয়ান্তো। ছবি: এএফপি

সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোকে জাতীয় বীর ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। তবে সুহার্তোর শাসনামলে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। স্থানীয় সময় আজ সোমবার জাতীয় বীর দিবসের অনুষ্ঠানে আরও নয়জনের সঙ্গে সুহার্তোর নামও ঘোষণা করা হয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট প্রাবো সুবিয়ান্তো। তিনি একসময় সুহার্তোর জামাতা ছিলেন। মানবাধিকার কর্মী ও শিক্ষাবিদদের অনেকেই এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, তিন দশকের শাসনামলে সুহার্তো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করেছেন।

এই পুরস্কারে মনোনীত করায় সুহার্তোর নাম যুক্ত হলো ইন্দোনেশিয়ার ২ শতাধিক জাতীয় বীরের তালিকায়, যেখানে রয়েছেন দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও প্রথম রাষ্ট্রপতি সুকর্নও। প্রেসিডেন্টের সামরিক সচিব বলেন, ‘মধ্য জাভা প্রদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক, জেনারেল সুহার্তো স্বাধীনতার সময় থেকেই নেতৃত্বে উজ্জ্বল ছিলেন।’ প্রাবো ওই অনুষ্ঠানে পুরস্কারটি সুহার্তোর কন্যা সিতি হারদিয়ানতি রুকমানা ও পুত্র বামবাং ত্রিহাতমোজোর হাতে তুলে দেন।

প্রতি বছর ইন্দোনেশিয়ায় দেশের উন্নয়ন ও গৌরবে বিশেষ অবদান রাখা নাগরিকদের জাতীয় বীর উপাধি দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে ৮৬ বছর বয়সে মারা যান সুহার্তো। ১৯৬৭ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি সুকর্নর কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেন এবং তিন দশক দেশ শাসন করেন।

এর আগে, ইন্দোনেশিয়া ১৯৪৫ সালে নেদারল্যান্ডস ও জাপানের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। সুহার্তো সামরিক শক্তি ব্যবহার করে রাজনৈতিক বিরোধিতা দমন করেন এবং নাগরিক প্রশাসনের ওপর সেনাবাহিনীর আধিপত্য কায়েম করেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের দুর্নীতি, পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহারের অভিযোগও ওঠে।

তবে তিনিই ইন্দোনেশিয়াকে দীর্ঘ সময় স্থিতিশীলতা ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে নিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৯৭-৯৮ সালের এশীয় আর্থিক সংকটে দেশটি বিশৃঙ্খলায় পড়ে, আর তাতেই তাঁর শাসনের পতন ঘটে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। অসুস্থতার কারণে কখনো আদালতের মুখোমুখি হননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারত সরকারকে কেন ‘চামড়া মোটা করার’ পরামর্শ দিলেন শশী থারুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইতালীয় গবেষক অরসিনিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শশী থারুর। ছবি: সংগৃহীত
ইতালীয় গবেষক অরসিনিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শশী থারুর। ছবি: সংগৃহীত

হিন্দি ভাষার ইতালীয় গবেষক ফ্রান্সেসকা অরসিনিকে ভিসা শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে দিল্লি থেকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা শশী থারুর। অরসিনিকে ফেরত পাঠানোর এক সপ্তাহ পর কংগ্রেসের এই জ্যেষ্ঠ নেতা ভারতের সরকারি মহলের লোকজনে ‘চামড়া আরেকটু মোটা’ করা অর্থাৎ সহনশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারতের সরকারি মহলের উচিত ‘আরও সহনশীল মন, প্রশস্ত চিন্তা ও বিশাল হৃদয়’ গড়ে তোলা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিজেপির এমপি স্বপন দাশগুপ্তের এক কলামের প্রতিক্রিয়ায় এই কথা বলেন শশী থারুর। দাশগুপ্ত লিখেছিলেন, রাষ্ট্রের উচিত আইন মেনে চলা নিশ্চিত করা, তবে কোনো অধ্যাপকের গবেষণার মান যাচাই করা তার কাজ নয়। তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সতর্ক থাকতে হবে যেন এমন ধারণা না তৈরি হয় যে দেশটি বিদেশি গবেষকদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।’

স্বপন দাশগুপ্তের লেখা শেয়ার করে থারুর এক্সে লিখেছেন, ‘আমি তাঁর সঙ্গে একমত। তুচ্ছ ভিসা লঙ্ঘনের কারণে বিদেশি গবেষক ও শিক্ষাবিদদের বিমানবন্দরে অবাঞ্ছিত চিহ্ন দেখিয়ে ফেরত পাঠানো আমাদের দেশের, সংস্কৃতির ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির জন্য অনেক বড় ক্ষতি করছে, যা কোনো সমালোচনামূলক একাডেমিক প্রবন্ধের চেয়ে অনেক বেশি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি ভারতের এখন দরকার মোটা চামড়া, প্রশস্ত মন আর বড় হৃদয়।’

ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের (এসওএএস) ইমেরিটাস অধ্যাপক অরসিনিকে গত ২১ অক্টোবর দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়। হংকং থেকে ভারতে পৌঁছানোর পর তাঁকে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

সরকারি কর্মকর্তারা জানান, তিনি পর্যটক ভিসায় এসেছিলেন এবং ভিসা শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্চ মাসে তাঁর নাম কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ‘বিশ্বব্যাপী প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কেউ যদি ভিসা শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহলে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা যায়।’

সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিদেশি নাগরিকদের অবশ্যই ভিসা আবেদন করার সময় যে উদ্দেশ্যে সফরের কথা উল্লেখ করেন, তা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। ইতালির নাগরিক ফ্রান্সেসকা অরসিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। পরে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে যোগ দেন। তিনি হিন্দি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে বহু গবেষণা করেছেন। তার বিখ্যাত বই ‘The Hindi Public Sphere 1920–1940: Language and Literature in the Age of Nationalism’ ভারতীয় ভাষা ও জাতীয়তাবাদ নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে স্বীকৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিবিসির ডিজিকে কেন পদত্যাগ করতে হলো, ট্রাম্পের বক্তব্য বিকৃতির অভিযোগ কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্পের বক্তব্য বিকৃতভাবে এডিট করার দায় নিয়ে বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি ও হেড অব নিউজ বা বার্তা বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্পের বক্তব্য বিকৃতভাবে এডিট করার দায় নিয়ে বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি ও হেড অব নিউজ বা বার্তা বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি ও হেড অব নিউজ বা বার্তা বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ভাষণ সম্পাদনা করে দর্শকদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে বিবিসির ‘প্যানোরামা’ অনুষ্ঠান নিয়ে সমালোচনার পর তারা এই সিদ্ধান্ত নেন। ওই বক্তৃতায় ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল হিলে) দাঙ্গার আগের ঘটনা নিয়ে তৈরি বিবিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্যচিত্রে দেখানো হয়েছিল।

বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি ও বিবিসি নিউজের প্রধান নির্বাহী ডেবোরা টারনেস হঠাৎই পদত্যাগ করেন। আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের ফাঁস করা অভ্যন্তরীণ নথির বরাতে জানা গেছে, বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের দুটি অংশ কেটে একত্র করা হয়। ফলে মনে হয়, ট্রাম্প ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় উৎসাহ দিয়েছিলেন।

ডেভি গত পাঁচ বছর ধরে বিবিসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি নানা বিতর্ক ও পক্ষপাতের অভিযোগের মুখে পড়েছিলেন। বিবিসির ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে টিম ডেভি বলেন, ‘সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বিবিসিও নিখুঁত নয়। আমাদের সব সময় উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক থাকতে হবে। বর্তমান বিতর্কই আমার পদত্যাগের একমাত্র কারণ নয়, তবে তা সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে। বিবিসি সামগ্রিকভাবে ভালো করছে, কিন্তু কিছু ভুল হয়েছে, যার দায় আমাকে নিতেই হবে।’

গত সপ্তাহে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ জানায়, গত গ্রীষ্মে বিবিসির সম্পাদনা মানদণ্ড কমিটির পরামর্শক মাইকেল প্রেসকট এক অভ্যন্তরীণ নোটে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। নোটটি থেকেই ফাঁস হয় বিতর্কিত সম্পাদনার অভিযোগ। সাবেক সাংবাদিক প্রেসকট দাবি করেন, ‘Trump: A Second Chance?’ নামের বিবিসির একটি প্রামাণ্যচিত্রে ট্রাম্পের দুটি বক্তব্য একত্রে দেখানো হয়। এই বক্তব্য দুটি প্রায় ৫০ মিনিটের ব্যবধানে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এতে বোঝানো হয়, ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে ক্যাপিটলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন—‘পুরোদমে লড়াই করো।’

কিন্তু আসল বক্তব্যে ট্রাম্প কেবল বলেন, ‘আমরা আমাদের সাহসী সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের উৎসাহ দিতে যাচ্ছি।’ সে সময় ট্রাম্প তখনও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনী জয়ের বিরোধিতা করছিলেন। প্রেসকট আরও অভিযোগ করেন, বিবিসি ইচ্ছাকৃতভাবে ট্রান্সজেন্ডার অধিকার নিয়ে বিতর্কিত কিছু বিষয় এড়িয়ে গেছে এবং বিবিসি অ্যারাবিক এমন এক সাংবাদিককে প্রচারের সুযোগ দিয়েছে যিনি ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য করেছিলেন।

বিশ্বজুড়ে ২১ হাজার কর্মী নিয়ে বিবিসি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পাবলিক সার্ভিস সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান। এটি মূলত যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের প্রদত্ত টিভি লাইসেন্স ফি থেকে পরিচালিত হয়, সঙ্গে কিছু বাণিজ্যিক আয়ও রয়েছে। সংবাদ থেকে শুরু করে বিনোদন—সব ধরনের বিষয়েই তাদের আন্তর্জাতিক প্রভাব রয়েছে।

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন প্রকাশের পর হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বিবিসিকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে অসৎ’ বলে সমালোচনা করেন। ট্রাম্পও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সাংবাদিকরা এবার ধরা পড়েছে। তারা নির্বাচনের ফল পাল্টাতে চেয়েছিল, তারা অত্যন্ত অসৎ মানুষ।’

এদিকে, যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়ামন্ত্রী লিসা ন্যান্ডি বলেন, এই অভিযোগগুলো ‘অত্যন্ত গুরুতর।’ বিবিসির প্যানোরামা প্রোগ্রামের ঘটনাই শুধু নয়, পুরো সংবাদ সংস্থার সম্পাদকীয় মানদণ্ড নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বিবিসি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এখানে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—বিবিসির প্রতিবেদনে হয়তো একটি পদ্ধতিগত পক্ষপাত আছে।’

ন্যান্ডি আরও বলেন, তিনি লক্ষ্য করেছেন যে—বিবিসির প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভাষা ও মানদণ্ড অনেক সময় একরকম থাকে না—চাই সেটা ইসরায়েল-গাজা প্রসঙ্গ হোক, ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু হোক বা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্পর্কিত বিষয়ই হোক।

এর আগেও এ বছর বিবিসি ‘Gaza: How To Survive A Warzone’ নামের একটি প্রামাণ্যচিত্রের ‘গুরুতর ত্রুটি’ স্বীকার করে ক্ষমা চায়। অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে শাস্তি পায়। কারণ, তাদের আরেকটি প্রোগ্রামকে ‘গুরুতরভাবে বিভ্রান্তিকর’ বলা হয়েছিল। পরে জানা যায়, সেই প্রামাণ্যচিত্রে যে শিশুর কণ্ঠ ব্যবহার করা হয়েছিল, তা ছিল হামাসের সাবেক উপ-কৃষিমন্ত্রীর সন্তানের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন সরকারে শাটডাউন: একদিনে ৩৩০০ ফ্লাইট বাতিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সরকারি অচলাবস্থার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ছবিটি নিউইয়র্ক বিমানবন্দরের। ছবি: এএফপি
সরকারি অচলাবস্থার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ছবিটি নিউইয়র্ক বিমানবন্দরের। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রে উড়োজাহাজ চলাচলে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। মার্কিন সরকারে চলমান শাটডাউন বা অচলাবস্থার কারণে দেশটির বিভিন্ন এয়ারলাইনস ৩ হাজার ৩০০ টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। এক শীর্ষ কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে ‘বিমান চলাচল প্রায় বন্ধের পর্যায়ে নেমে আসতে পারে।’

স্থানীয় সময় গতকাল রোববার এসব ফ্লাইট বাতিল করা হয়। আর ঠিক সেই সময়ই তহবিল বিল পাস নিয়ে দীর্ঘ অচলাবস্থার ৪০ তম দিনে এসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা সরকার পুনরায় চালু করতে অস্থায়ী এক চুক্তিতে পৌঁছায়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহ থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ক্লান্তি ও অনুপস্থিত কর্মীদের কারণে ফ্লাইট সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছিল। অনেক এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার (বিমান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা) অতিরিক্ত কাজের চাপ ও বেতন না পাওয়ায় কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান।

মোট ১৩ হাজার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারকে ‘অপরিহার্য কর্মী’ হিসেবে গণ্য করা হয়। সরকারের শাটডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে, অর্থাৎ ১ অক্টোবর থেকে তারা বিনা বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়্যার জানায়, কেবল রোববারই যুক্তরাষ্ট্রে ৩ হাজার ৩০৪টি ফ্লাইট বাতিল হয় এবং ১০ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। শনিবার বাতিল হয়েছিল আরও ১ হাজার ৫০০ টির বেশি ফ্লাইট, শুক্রবার প্রায় ১ হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল।

এফএএ-এর ধাপে ধাপে ফ্লাইট কমানোর নির্দেশনা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় মান সময় শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে দেশজুড়ে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ৪ শতাংশ কমানো হয়। সোমবার থেকে তা ৬ শতাংশ, বৃহস্পতিবারে ৮ শতাংশ, আর শুক্রবারে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা আছে।

রোববার বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি সতর্ক করেন, থ্যাঙ্কসগিভিং ছুটির আগে বিমান চলাচল একেবারেই স্থবির হয়ে যেতে পারে। তিনি ফক্স নিউজকে বলেন, ‘থ্যাঙ্কসগিভিং ঘনিয়ে এলে সবাই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ভ্রমণে বের হবে। তখন বিমান চলাচল প্রায় থেমে যাবে।’ ডাফি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে না। যত দিন পর্যন্ত বিমান নিয়ন্ত্রকদের বেতন দেওয়া না হয়, তত দিন এটি আরও খারাপ হবে।’

থ্যাঙ্কসগিভিং যুক্তরাষ্ট্রে বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত ভ্রমণ মৌসুমগুলোর একটি। ২০২৪ সালে এই সময় প্রায় ৮ কোটি মানুষ ভ্রমণ করেছিলেন। শুধু ছুটির পরের রোববারেই বিমানবন্দরে প্রায় ৩১ লাখ যাত্রী চলাচল করেছিলেন, যা ছিল রেকর্ড।

এদিকে, মার্কিন সিনেটররা জানিয়েছেন—তারা সরকার পরিচালনায় অর্থায়ন পুনরায় চালু করার বিষয়ে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে—এমন এক অন্তর্বর্তী চুক্তিতে পৌঁছেছেন। রোববার রাতে সিনেট সেই বিলের প্রাথমিক ভোটাভুটি শুরু হয়। কয়েকজন মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাট জানান, তারা রিপাবলিকানদের সঙ্গে ভোট দিয়ে সরকার পুনরায় চালু করার পক্ষে যাবেন।

তবে এই বিল কার্যকর করতে হলে সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদে তা পাস হতে হবে এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষর লাগবে। তাহলেই সরকার বন্ধের অবসান ঘটবে। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—সরকার পুনরায় খুললেও বিমান চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক হবে কি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত