
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক এই চিনাবাদাম চাষি প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণ এড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষমা করেছিলেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া প্রথম মার্কিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, জিমি মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক ক্যাম্প ডেভিড শান্তি চুক্তি সম্পাদনে সহায়তা করেছিলেন। কিন্তু ইরানের জিম্মি সংকট এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের মোকাবিলায় খাবি খেয়েছেন। প্রথম মেয়াদ পূর্ণ করার পর ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী রোনাল্ড রিগ্যানের কাছে পরাজিত হন তিনি।
হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর কার্টার বিশ্বজুড়ে শান্তি, পরিবেশ এবং মানবাধিকার নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাঁর এই পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তিনি ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাঁর ১০০ তম জন্মদিন উদ্যাপন করেন। তিনি দীর্ঘ সময় ক্যানসারের চিকিৎসাও নিয়েছিলেন এবং জীবনের শেষ ১৯ মাস হসপিস কেয়ারে কাটিয়েছেন।
জেমস আর্ল কার্টার জুনিয়র ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর জর্জিয়ার শহর প্লেইনসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চার ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাঁর বাবা পারিবারিক চিনাবাদামের ব্যবসা শুরু করেছিলেন এবং মা লিলিয়ান ছিলেন নিবন্ধিত নার্স। ১৯৩০—এর দশকে মহামন্দার অভিজ্ঞতা এবং দৃঢ় ধর্মবিশ্বাস তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছিল।
উচ্চ বিদ্যালয়ে তারকা বাস্কেটবল খেলোয়াড় ছিলেন কার্টার। এরপর তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে সাত বছর কাজ করেন। সেসময়ই তিনি তাঁর বোনের বন্ধু রোজালিনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং সাবমেরিন অফিসার হন। তবে ১৯৫৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর কার্টার বাদাম চাষে নামেন। প্রথম বছরের ফসল খরার কারণে নষ্ট হয়েছিল। তবে তারপরও কার্টার ব্যবসা চাঙা করেন এবং ক্রমেই সম্পদশালী হয়ে ওঠেন। তিনি স্থানীয় স্কুল ও গ্রন্থাগারের পরিচালনা পরিষদে নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন। এর কয়েক বছর পর জর্জিয়া সিনেটে সিনেটর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট স্কুলে বর্ণবৈষম্য বিলুপ্ত করার রায় দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য থেকে ওঠে আসা কৃষক হিসেবে কার্টারের এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করার কথা ছিল—কিন্তু তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। জর্জিয়া সিনেটে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গ এড়িয়ে চলেছিলেন, যদিও তাঁর বাবা বিচ্ছিন্নতার পক্ষে ছিলেন। এমনকি তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যেও অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিল।
এরপর ১৯৭০ সালে জর্জিয়ার গভর্নর হন জিমি। এর পর তিনি নাগরিকদের আরও অধিকারের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে শুরু করেন। গভর্নর হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সৎভাবে বলছি। বর্ণবৈষম্যের সময় শেষ।’ তাঁর মেয়াদে তিনি রাজধানীর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে মার্টিন লুথার কিংয়ের ছবি আঁকিয়েছিলেন।
গভর্নর হিসেবে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে, আফ্রিকান-আমেরিকানদের সরকারি কাজে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে, গর্ভপাত আইন নিয়ে তাঁর উদার মনোভাব এবং তাঁর দৃঢ় খ্রিষ্টান বিশ্বাসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন ছিল। তিনি নারীদের গর্ভপাতের অধিকার সমর্থন করলেও তিনি এটির জন্য তহবিল বাড়াতে অস্বীকৃতি জানান।
জিমি কার্টার ১৯৭৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার জন্য প্রচারণা শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্র তখনো ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। প্রচারণায় তিনি নিজেকে এক চিনাবাদাম চাষি হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি ক্যাপিটল হিলের পেশাদার রাজনীতিবিদদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তাঁর সময়োপযোগী প্রচারণা কাজ করে। আমেরিকানরা একজন নবাগত নেতা চেয়েছিল এবং কার্টার সেই চাহিদা পূরণ করেছিলেন। নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর প্রথমদিকে, জনমত জরিপে দেখা গিয়েছিল যে, তিনি মাত্র ৪ শতাংশ ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন পাবেন। কিন্তু ৯ মাস পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করেন।

ক্ষমতায় প্রথম দিনেই তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে সেনাবাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ এড়িয়ে যাওয়া কয়েক লাখ পুরুষকে ক্ষমা করেন। সে সময়কার রিপাবলিকান সিনেটর ব্যারি গোল্ডওয়াটার এই সিদ্ধান্তকে ‘কোনো প্রেসিডেন্টের নেওয়া সবচেয়ে লজ্জাজনক কাজ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কার্টার স্বীকার করেছিলেন, এটি তাঁর দায়িত্ব পালনকালে নেওয়া সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল।
কার্টার তাঁর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের নিয়োগ দেন এবং রোজালিনকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করেন। তিনি মার্কিন সংবিধানে একটি সমান অধিকার সংশোধনী আনার চেষ্টা করেছিলেন। যেটি লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা প্রতিশ্রুতি দিত।
জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক নেতাদের একজন হিসেবে কার্টার হোয়াইট হাউসে জিন্স ও সোয়েটার পরতেন এবং শক্তি সংরক্ষণের জন্য হিটার বন্ধ রাখতেন। তিনি হোয়াইট হাউস ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করেন—যা পরে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান সরিয়ে ফেলেন—এবং আলাস্কার অনাবাদি জমি রক্ষার জন্য আইন পাশ করেন।
আমেরিকার অর্থনীতি মন্দার দিকে যেতে থাকলে কার্টারের জনপ্রিয়তা পড়তে শুরু করে। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ—যার মধ্যে গ্যাসোলিন রেশনিংও ছিল—গ্রহণ করতে দেশকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি, কিন্তু কংগ্রেসে তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হন। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনাও পার্লামেন্টে ব্যর্থ হয়। বেকারত্ব ও সুদের হার দুটোই আকাশচুম্বী হয়ে যায়।
মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে তাঁর শুরুটা ছিল বিজয়ের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৮ সালে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষর করেন। কিন্তু বিদেশে সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ইরানে বিপ্লব এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন ছিল কঠিন পরীক্ষা।
কার্টার তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তেহরানে জিম্মি মার্কিনিদের উদ্ধারে বলপ্রয়োগের চেষ্টা বিপর্যয়ে পরিণত হয়। এতে আট মার্কিন সেনা নিহত হন। এই ঘটনা নিশ্চিতভাবেই তাঁর পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে শেষ করে দেয়। এরপর ১৯৮০ সালের নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডিকে পরাস্ত করেন কার্টার এবং পরবর্তী নির্বাচনে ৪১ শতাংশ পপুলার ভোট পান। কিন্তু এটি রোনাল্ড রিগ্যানকে পরাজিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। সাবেক এই অভিনেতা ইলেকটোরাল কলেজে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেন।
প্রেসিডেন্সির শেষ দিনে কার্টার ইরান থেকে জিম্মিদের মুক্তির জন্য সফল আলোচনার ঘোষণা দেন। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে জিম্মি মুক্তি দেখে যেতে পারেননি। দায়িত্ব ছাড়ার সময় কার্টারের জনপ্রিয়তা ছিল আমেরিকার যেকোনো প্রেসিডেন্টের মধ্যে সবচেয়ে কম। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি তাঁর সুনাম পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক প্রচেষ্টা চালান।
মার্কিন সরকারের পক্ষে তিনি উত্তর কোরিয়ায় শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করেন—যা শেষ পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র ভেঙে ফেলার জন্য একটি প্রাথমিক চুক্তি ‘অ্যাগ্রিড ফ্রেমওয়ার্কের’ দিকে নিয়ে যায়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি ‘কার্টার প্রেসিডেনশিয়াল সেন্টার’ আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান এবং সংকট মোকাবিলায় ধারণা ও প্রোগ্রামগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
জিমি কার্টার ২০০২ সালে তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে—থিয়োডর রুজভেল্ট এবং উড্রো উইলসনের পর—নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তবে তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি তাঁর প্রেসিডেন্সির পরের কাজের জন্য এই সম্মান পান। তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে একত্রে ‘দ্য এল্ডারস’ নামে একটি গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা বিশ্বব্যাপী শান্তি এবং মানবাধিকারের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০০২ সালে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করার সময়—তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি এটি পান—তিনি বলেছিলেন, ‘সবচেয়ে গুরুতর এবং সর্বজনীন সমস্যা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী এবং দরিদ্র মানুষের মধ্যে বাড়তে থাকা ফারাক।’
দায়িত্ব থেকে অবসরের পর কার্টার একটি সাধারণ জীবনধারা বেছে নেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা, করপোরেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের আসন তিনি সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেছেন এবং জর্জিয়ার প্লেইনসে স্ত্রী রোজালিনের সঙ্গে সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। জিমি কার্টার ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এতে কিছু ভুল দেখি না; যারা এটি করে তাদের দোষারোপ করি না। কিন্তু কখনই আমার ধনবান হওয়ার ইচ্ছা ছিল না।’
জিমি কার্টারই ছিলেন একমাত্র আধুনিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি রাজনীতিতে প্রবেশের আগে যে বাড়িতে বাস করতেন দায়িত্ব ছাড়ার পর সেখানেই ফিরে যান। তাঁর এই বাড়িটি ছিল একটি একতলা ও দুই শয়নকক্ষের বাড়ি। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, কার্টারদের বাড়ির মূল্য ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ডলার। যা তাদের রক্ষা করার জন্য বাইরে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের গাড়ির মূল্যের চেয়েও কম।
জিমি কার্টার ২০১৫ সালে জানান, তিনি ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই রোগেই তাঁর বাবা-মা এবং তিন বোন মারা গিয়েছিলেন। সে বছরই কোমর ভাঙার অপারেশনের কয়েক মাস পর তিনি আবার হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটির স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজে ফেরেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী ১৯৮৪ সালে দাতব্য সংস্থাটির সঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং বছরের পর বছর ৪ হাজারের বেশি বাড়ি মেরামত করতে সাহায্য করেন।
তিনি প্লেইনসের মারানাথা ব্যাপটিস্ট চার্চের একটি সানডে স্কুলে পড়াতেও থাকেন। কখনো কখনো তিনি ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের তাঁর ক্লাসে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে রোজালিন কার্টার মারা যাওয়ার পর স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘৭৭ বছরের বিবাহিত জীবনের আমার স্ত্রী আমার করা প্রতিটি কাজের সমান অংশীদার ছিলেন।’
চলতি বছর নিজের জন্ম শতবর্ষ উদ্যাপনকালে কার্টার প্রমাণ করেন যে, তাঁর রাজনৈতিক সচেতনতা এখনো প্রখর। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি শুধু নভেম্বরের নির্বাচনে কামলা হ্যারিসের জন্য ভোট দিতে চাই।’ তিনি সত্যিই ভোট দিতে পেরেছিলেন। তবে তাঁর রাজ্য জর্জিয়া শেষ পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেয়।
কার্টারের আজীবন জনসেবার চালিকাশক্তি ছিল, তাঁর গভীর ধর্মবিশ্বাস। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি ধর্মীয় বিশ্বাস এবং জনসেবাকে আলাদা করতে পারবেন না। আমি কখনোই ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং আমার রাজনৈতিক কর্তব্যের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব অনুভব করিনি। যদি আপনি একটিকে লঙ্ঘন করেন, তবে অন্যটিকেও লঙ্ঘন করবেন।’
তথ্যসূত্র: বিবিসি

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক এই চিনাবাদাম চাষি প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণ এড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষমা করেছিলেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া প্রথম মার্কিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, জিমি মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক ক্যাম্প ডেভিড শান্তি চুক্তি সম্পাদনে সহায়তা করেছিলেন। কিন্তু ইরানের জিম্মি সংকট এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের মোকাবিলায় খাবি খেয়েছেন। প্রথম মেয়াদ পূর্ণ করার পর ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী রোনাল্ড রিগ্যানের কাছে পরাজিত হন তিনি।
হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর কার্টার বিশ্বজুড়ে শান্তি, পরিবেশ এবং মানবাধিকার নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাঁর এই পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তিনি ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাঁর ১০০ তম জন্মদিন উদ্যাপন করেন। তিনি দীর্ঘ সময় ক্যানসারের চিকিৎসাও নিয়েছিলেন এবং জীবনের শেষ ১৯ মাস হসপিস কেয়ারে কাটিয়েছেন।
জেমস আর্ল কার্টার জুনিয়র ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর জর্জিয়ার শহর প্লেইনসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চার ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাঁর বাবা পারিবারিক চিনাবাদামের ব্যবসা শুরু করেছিলেন এবং মা লিলিয়ান ছিলেন নিবন্ধিত নার্স। ১৯৩০—এর দশকে মহামন্দার অভিজ্ঞতা এবং দৃঢ় ধর্মবিশ্বাস তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছিল।
উচ্চ বিদ্যালয়ে তারকা বাস্কেটবল খেলোয়াড় ছিলেন কার্টার। এরপর তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে সাত বছর কাজ করেন। সেসময়ই তিনি তাঁর বোনের বন্ধু রোজালিনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং সাবমেরিন অফিসার হন। তবে ১৯৫৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর কার্টার বাদাম চাষে নামেন। প্রথম বছরের ফসল খরার কারণে নষ্ট হয়েছিল। তবে তারপরও কার্টার ব্যবসা চাঙা করেন এবং ক্রমেই সম্পদশালী হয়ে ওঠেন। তিনি স্থানীয় স্কুল ও গ্রন্থাগারের পরিচালনা পরিষদে নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন। এর কয়েক বছর পর জর্জিয়া সিনেটে সিনেটর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট স্কুলে বর্ণবৈষম্য বিলুপ্ত করার রায় দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য থেকে ওঠে আসা কৃষক হিসেবে কার্টারের এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করার কথা ছিল—কিন্তু তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। জর্জিয়া সিনেটে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গ এড়িয়ে চলেছিলেন, যদিও তাঁর বাবা বিচ্ছিন্নতার পক্ষে ছিলেন। এমনকি তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যেও অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিল।
এরপর ১৯৭০ সালে জর্জিয়ার গভর্নর হন জিমি। এর পর তিনি নাগরিকদের আরও অধিকারের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে শুরু করেন। গভর্নর হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সৎভাবে বলছি। বর্ণবৈষম্যের সময় শেষ।’ তাঁর মেয়াদে তিনি রাজধানীর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে মার্টিন লুথার কিংয়ের ছবি আঁকিয়েছিলেন।
গভর্নর হিসেবে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে, আফ্রিকান-আমেরিকানদের সরকারি কাজে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে, গর্ভপাত আইন নিয়ে তাঁর উদার মনোভাব এবং তাঁর দৃঢ় খ্রিষ্টান বিশ্বাসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন ছিল। তিনি নারীদের গর্ভপাতের অধিকার সমর্থন করলেও তিনি এটির জন্য তহবিল বাড়াতে অস্বীকৃতি জানান।
জিমি কার্টার ১৯৭৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার জন্য প্রচারণা শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্র তখনো ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। প্রচারণায় তিনি নিজেকে এক চিনাবাদাম চাষি হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি ক্যাপিটল হিলের পেশাদার রাজনীতিবিদদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তাঁর সময়োপযোগী প্রচারণা কাজ করে। আমেরিকানরা একজন নবাগত নেতা চেয়েছিল এবং কার্টার সেই চাহিদা পূরণ করেছিলেন। নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর প্রথমদিকে, জনমত জরিপে দেখা গিয়েছিল যে, তিনি মাত্র ৪ শতাংশ ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন পাবেন। কিন্তু ৯ মাস পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করেন।

ক্ষমতায় প্রথম দিনেই তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে সেনাবাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ এড়িয়ে যাওয়া কয়েক লাখ পুরুষকে ক্ষমা করেন। সে সময়কার রিপাবলিকান সিনেটর ব্যারি গোল্ডওয়াটার এই সিদ্ধান্তকে ‘কোনো প্রেসিডেন্টের নেওয়া সবচেয়ে লজ্জাজনক কাজ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কার্টার স্বীকার করেছিলেন, এটি তাঁর দায়িত্ব পালনকালে নেওয়া সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল।
কার্টার তাঁর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের নিয়োগ দেন এবং রোজালিনকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করেন। তিনি মার্কিন সংবিধানে একটি সমান অধিকার সংশোধনী আনার চেষ্টা করেছিলেন। যেটি লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা প্রতিশ্রুতি দিত।
জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক নেতাদের একজন হিসেবে কার্টার হোয়াইট হাউসে জিন্স ও সোয়েটার পরতেন এবং শক্তি সংরক্ষণের জন্য হিটার বন্ধ রাখতেন। তিনি হোয়াইট হাউস ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করেন—যা পরে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান সরিয়ে ফেলেন—এবং আলাস্কার অনাবাদি জমি রক্ষার জন্য আইন পাশ করেন।
আমেরিকার অর্থনীতি মন্দার দিকে যেতে থাকলে কার্টারের জনপ্রিয়তা পড়তে শুরু করে। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ—যার মধ্যে গ্যাসোলিন রেশনিংও ছিল—গ্রহণ করতে দেশকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি, কিন্তু কংগ্রেসে তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হন। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনাও পার্লামেন্টে ব্যর্থ হয়। বেকারত্ব ও সুদের হার দুটোই আকাশচুম্বী হয়ে যায়।
মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে তাঁর শুরুটা ছিল বিজয়ের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৮ সালে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষর করেন। কিন্তু বিদেশে সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ইরানে বিপ্লব এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন ছিল কঠিন পরীক্ষা।
কার্টার তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তেহরানে জিম্মি মার্কিনিদের উদ্ধারে বলপ্রয়োগের চেষ্টা বিপর্যয়ে পরিণত হয়। এতে আট মার্কিন সেনা নিহত হন। এই ঘটনা নিশ্চিতভাবেই তাঁর পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে শেষ করে দেয়। এরপর ১৯৮০ সালের নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডিকে পরাস্ত করেন কার্টার এবং পরবর্তী নির্বাচনে ৪১ শতাংশ পপুলার ভোট পান। কিন্তু এটি রোনাল্ড রিগ্যানকে পরাজিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। সাবেক এই অভিনেতা ইলেকটোরাল কলেজে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেন।
প্রেসিডেন্সির শেষ দিনে কার্টার ইরান থেকে জিম্মিদের মুক্তির জন্য সফল আলোচনার ঘোষণা দেন। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে জিম্মি মুক্তি দেখে যেতে পারেননি। দায়িত্ব ছাড়ার সময় কার্টারের জনপ্রিয়তা ছিল আমেরিকার যেকোনো প্রেসিডেন্টের মধ্যে সবচেয়ে কম। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি তাঁর সুনাম পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক প্রচেষ্টা চালান।
মার্কিন সরকারের পক্ষে তিনি উত্তর কোরিয়ায় শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করেন—যা শেষ পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র ভেঙে ফেলার জন্য একটি প্রাথমিক চুক্তি ‘অ্যাগ্রিড ফ্রেমওয়ার্কের’ দিকে নিয়ে যায়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি ‘কার্টার প্রেসিডেনশিয়াল সেন্টার’ আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান এবং সংকট মোকাবিলায় ধারণা ও প্রোগ্রামগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
জিমি কার্টার ২০০২ সালে তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে—থিয়োডর রুজভেল্ট এবং উড্রো উইলসনের পর—নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তবে তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি তাঁর প্রেসিডেন্সির পরের কাজের জন্য এই সম্মান পান। তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে একত্রে ‘দ্য এল্ডারস’ নামে একটি গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা বিশ্বব্যাপী শান্তি এবং মানবাধিকারের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০০২ সালে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করার সময়—তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি এটি পান—তিনি বলেছিলেন, ‘সবচেয়ে গুরুতর এবং সর্বজনীন সমস্যা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী এবং দরিদ্র মানুষের মধ্যে বাড়তে থাকা ফারাক।’
দায়িত্ব থেকে অবসরের পর কার্টার একটি সাধারণ জীবনধারা বেছে নেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা, করপোরেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের আসন তিনি সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেছেন এবং জর্জিয়ার প্লেইনসে স্ত্রী রোজালিনের সঙ্গে সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। জিমি কার্টার ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এতে কিছু ভুল দেখি না; যারা এটি করে তাদের দোষারোপ করি না। কিন্তু কখনই আমার ধনবান হওয়ার ইচ্ছা ছিল না।’
জিমি কার্টারই ছিলেন একমাত্র আধুনিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি রাজনীতিতে প্রবেশের আগে যে বাড়িতে বাস করতেন দায়িত্ব ছাড়ার পর সেখানেই ফিরে যান। তাঁর এই বাড়িটি ছিল একটি একতলা ও দুই শয়নকক্ষের বাড়ি। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, কার্টারদের বাড়ির মূল্য ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ডলার। যা তাদের রক্ষা করার জন্য বাইরে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের গাড়ির মূল্যের চেয়েও কম।
জিমি কার্টার ২০১৫ সালে জানান, তিনি ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই রোগেই তাঁর বাবা-মা এবং তিন বোন মারা গিয়েছিলেন। সে বছরই কোমর ভাঙার অপারেশনের কয়েক মাস পর তিনি আবার হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটির স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজে ফেরেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী ১৯৮৪ সালে দাতব্য সংস্থাটির সঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং বছরের পর বছর ৪ হাজারের বেশি বাড়ি মেরামত করতে সাহায্য করেন।
তিনি প্লেইনসের মারানাথা ব্যাপটিস্ট চার্চের একটি সানডে স্কুলে পড়াতেও থাকেন। কখনো কখনো তিনি ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের তাঁর ক্লাসে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে রোজালিন কার্টার মারা যাওয়ার পর স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘৭৭ বছরের বিবাহিত জীবনের আমার স্ত্রী আমার করা প্রতিটি কাজের সমান অংশীদার ছিলেন।’
চলতি বছর নিজের জন্ম শতবর্ষ উদ্যাপনকালে কার্টার প্রমাণ করেন যে, তাঁর রাজনৈতিক সচেতনতা এখনো প্রখর। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি শুধু নভেম্বরের নির্বাচনে কামলা হ্যারিসের জন্য ভোট দিতে চাই।’ তিনি সত্যিই ভোট দিতে পেরেছিলেন। তবে তাঁর রাজ্য জর্জিয়া শেষ পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেয়।
কার্টারের আজীবন জনসেবার চালিকাশক্তি ছিল, তাঁর গভীর ধর্মবিশ্বাস। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি ধর্মীয় বিশ্বাস এবং জনসেবাকে আলাদা করতে পারবেন না। আমি কখনোই ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং আমার রাজনৈতিক কর্তব্যের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব অনুভব করিনি। যদি আপনি একটিকে লঙ্ঘন করেন, তবে অন্যটিকেও লঙ্ঘন করবেন।’
তথ্যসূত্র: বিবিসি

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক এই চিনাবাদাম চাষি প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণ এড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষমা করেছিলেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া প্রথম মার্কিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, জিমি মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক ক্যাম্প ডেভিড শান্তি চুক্তি সম্পাদনে সহায়তা করেছিলেন। কিন্তু ইরানের জিম্মি সংকট এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের মোকাবিলায় খাবি খেয়েছেন। প্রথম মেয়াদ পূর্ণ করার পর ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী রোনাল্ড রিগ্যানের কাছে পরাজিত হন তিনি।
হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর কার্টার বিশ্বজুড়ে শান্তি, পরিবেশ এবং মানবাধিকার নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাঁর এই পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তিনি ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাঁর ১০০ তম জন্মদিন উদ্যাপন করেন। তিনি দীর্ঘ সময় ক্যানসারের চিকিৎসাও নিয়েছিলেন এবং জীবনের শেষ ১৯ মাস হসপিস কেয়ারে কাটিয়েছেন।
জেমস আর্ল কার্টার জুনিয়র ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর জর্জিয়ার শহর প্লেইনসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চার ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাঁর বাবা পারিবারিক চিনাবাদামের ব্যবসা শুরু করেছিলেন এবং মা লিলিয়ান ছিলেন নিবন্ধিত নার্স। ১৯৩০—এর দশকে মহামন্দার অভিজ্ঞতা এবং দৃঢ় ধর্মবিশ্বাস তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছিল।
উচ্চ বিদ্যালয়ে তারকা বাস্কেটবল খেলোয়াড় ছিলেন কার্টার। এরপর তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে সাত বছর কাজ করেন। সেসময়ই তিনি তাঁর বোনের বন্ধু রোজালিনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং সাবমেরিন অফিসার হন। তবে ১৯৫৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর কার্টার বাদাম চাষে নামেন। প্রথম বছরের ফসল খরার কারণে নষ্ট হয়েছিল। তবে তারপরও কার্টার ব্যবসা চাঙা করেন এবং ক্রমেই সম্পদশালী হয়ে ওঠেন। তিনি স্থানীয় স্কুল ও গ্রন্থাগারের পরিচালনা পরিষদে নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন। এর কয়েক বছর পর জর্জিয়া সিনেটে সিনেটর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট স্কুলে বর্ণবৈষম্য বিলুপ্ত করার রায় দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য থেকে ওঠে আসা কৃষক হিসেবে কার্টারের এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করার কথা ছিল—কিন্তু তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। জর্জিয়া সিনেটে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গ এড়িয়ে চলেছিলেন, যদিও তাঁর বাবা বিচ্ছিন্নতার পক্ষে ছিলেন। এমনকি তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যেও অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিল।
এরপর ১৯৭০ সালে জর্জিয়ার গভর্নর হন জিমি। এর পর তিনি নাগরিকদের আরও অধিকারের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে শুরু করেন। গভর্নর হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সৎভাবে বলছি। বর্ণবৈষম্যের সময় শেষ।’ তাঁর মেয়াদে তিনি রাজধানীর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে মার্টিন লুথার কিংয়ের ছবি আঁকিয়েছিলেন।
গভর্নর হিসেবে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে, আফ্রিকান-আমেরিকানদের সরকারি কাজে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে, গর্ভপাত আইন নিয়ে তাঁর উদার মনোভাব এবং তাঁর দৃঢ় খ্রিষ্টান বিশ্বাসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন ছিল। তিনি নারীদের গর্ভপাতের অধিকার সমর্থন করলেও তিনি এটির জন্য তহবিল বাড়াতে অস্বীকৃতি জানান।
জিমি কার্টার ১৯৭৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার জন্য প্রচারণা শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্র তখনো ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। প্রচারণায় তিনি নিজেকে এক চিনাবাদাম চাষি হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি ক্যাপিটল হিলের পেশাদার রাজনীতিবিদদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তাঁর সময়োপযোগী প্রচারণা কাজ করে। আমেরিকানরা একজন নবাগত নেতা চেয়েছিল এবং কার্টার সেই চাহিদা পূরণ করেছিলেন। নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর প্রথমদিকে, জনমত জরিপে দেখা গিয়েছিল যে, তিনি মাত্র ৪ শতাংশ ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন পাবেন। কিন্তু ৯ মাস পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করেন।

ক্ষমতায় প্রথম দিনেই তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে সেনাবাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ এড়িয়ে যাওয়া কয়েক লাখ পুরুষকে ক্ষমা করেন। সে সময়কার রিপাবলিকান সিনেটর ব্যারি গোল্ডওয়াটার এই সিদ্ধান্তকে ‘কোনো প্রেসিডেন্টের নেওয়া সবচেয়ে লজ্জাজনক কাজ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কার্টার স্বীকার করেছিলেন, এটি তাঁর দায়িত্ব পালনকালে নেওয়া সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল।
কার্টার তাঁর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের নিয়োগ দেন এবং রোজালিনকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করেন। তিনি মার্কিন সংবিধানে একটি সমান অধিকার সংশোধনী আনার চেষ্টা করেছিলেন। যেটি লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা প্রতিশ্রুতি দিত।
জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক নেতাদের একজন হিসেবে কার্টার হোয়াইট হাউসে জিন্স ও সোয়েটার পরতেন এবং শক্তি সংরক্ষণের জন্য হিটার বন্ধ রাখতেন। তিনি হোয়াইট হাউস ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করেন—যা পরে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান সরিয়ে ফেলেন—এবং আলাস্কার অনাবাদি জমি রক্ষার জন্য আইন পাশ করেন।
আমেরিকার অর্থনীতি মন্দার দিকে যেতে থাকলে কার্টারের জনপ্রিয়তা পড়তে শুরু করে। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ—যার মধ্যে গ্যাসোলিন রেশনিংও ছিল—গ্রহণ করতে দেশকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি, কিন্তু কংগ্রেসে তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হন। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনাও পার্লামেন্টে ব্যর্থ হয়। বেকারত্ব ও সুদের হার দুটোই আকাশচুম্বী হয়ে যায়।
মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে তাঁর শুরুটা ছিল বিজয়ের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৮ সালে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষর করেন। কিন্তু বিদেশে সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ইরানে বিপ্লব এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন ছিল কঠিন পরীক্ষা।
কার্টার তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তেহরানে জিম্মি মার্কিনিদের উদ্ধারে বলপ্রয়োগের চেষ্টা বিপর্যয়ে পরিণত হয়। এতে আট মার্কিন সেনা নিহত হন। এই ঘটনা নিশ্চিতভাবেই তাঁর পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে শেষ করে দেয়। এরপর ১৯৮০ সালের নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডিকে পরাস্ত করেন কার্টার এবং পরবর্তী নির্বাচনে ৪১ শতাংশ পপুলার ভোট পান। কিন্তু এটি রোনাল্ড রিগ্যানকে পরাজিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। সাবেক এই অভিনেতা ইলেকটোরাল কলেজে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেন।
প্রেসিডেন্সির শেষ দিনে কার্টার ইরান থেকে জিম্মিদের মুক্তির জন্য সফল আলোচনার ঘোষণা দেন। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে জিম্মি মুক্তি দেখে যেতে পারেননি। দায়িত্ব ছাড়ার সময় কার্টারের জনপ্রিয়তা ছিল আমেরিকার যেকোনো প্রেসিডেন্টের মধ্যে সবচেয়ে কম। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি তাঁর সুনাম পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক প্রচেষ্টা চালান।
মার্কিন সরকারের পক্ষে তিনি উত্তর কোরিয়ায় শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করেন—যা শেষ পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র ভেঙে ফেলার জন্য একটি প্রাথমিক চুক্তি ‘অ্যাগ্রিড ফ্রেমওয়ার্কের’ দিকে নিয়ে যায়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি ‘কার্টার প্রেসিডেনশিয়াল সেন্টার’ আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান এবং সংকট মোকাবিলায় ধারণা ও প্রোগ্রামগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
জিমি কার্টার ২০০২ সালে তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে—থিয়োডর রুজভেল্ট এবং উড্রো উইলসনের পর—নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তবে তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি তাঁর প্রেসিডেন্সির পরের কাজের জন্য এই সম্মান পান। তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে একত্রে ‘দ্য এল্ডারস’ নামে একটি গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা বিশ্বব্যাপী শান্তি এবং মানবাধিকারের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০০২ সালে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করার সময়—তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি এটি পান—তিনি বলেছিলেন, ‘সবচেয়ে গুরুতর এবং সর্বজনীন সমস্যা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী এবং দরিদ্র মানুষের মধ্যে বাড়তে থাকা ফারাক।’
দায়িত্ব থেকে অবসরের পর কার্টার একটি সাধারণ জীবনধারা বেছে নেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা, করপোরেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের আসন তিনি সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেছেন এবং জর্জিয়ার প্লেইনসে স্ত্রী রোজালিনের সঙ্গে সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। জিমি কার্টার ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এতে কিছু ভুল দেখি না; যারা এটি করে তাদের দোষারোপ করি না। কিন্তু কখনই আমার ধনবান হওয়ার ইচ্ছা ছিল না।’
জিমি কার্টারই ছিলেন একমাত্র আধুনিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি রাজনীতিতে প্রবেশের আগে যে বাড়িতে বাস করতেন দায়িত্ব ছাড়ার পর সেখানেই ফিরে যান। তাঁর এই বাড়িটি ছিল একটি একতলা ও দুই শয়নকক্ষের বাড়ি। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, কার্টারদের বাড়ির মূল্য ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ডলার। যা তাদের রক্ষা করার জন্য বাইরে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের গাড়ির মূল্যের চেয়েও কম।
জিমি কার্টার ২০১৫ সালে জানান, তিনি ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই রোগেই তাঁর বাবা-মা এবং তিন বোন মারা গিয়েছিলেন। সে বছরই কোমর ভাঙার অপারেশনের কয়েক মাস পর তিনি আবার হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটির স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজে ফেরেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী ১৯৮৪ সালে দাতব্য সংস্থাটির সঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং বছরের পর বছর ৪ হাজারের বেশি বাড়ি মেরামত করতে সাহায্য করেন।
তিনি প্লেইনসের মারানাথা ব্যাপটিস্ট চার্চের একটি সানডে স্কুলে পড়াতেও থাকেন। কখনো কখনো তিনি ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের তাঁর ক্লাসে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে রোজালিন কার্টার মারা যাওয়ার পর স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘৭৭ বছরের বিবাহিত জীবনের আমার স্ত্রী আমার করা প্রতিটি কাজের সমান অংশীদার ছিলেন।’
চলতি বছর নিজের জন্ম শতবর্ষ উদ্যাপনকালে কার্টার প্রমাণ করেন যে, তাঁর রাজনৈতিক সচেতনতা এখনো প্রখর। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি শুধু নভেম্বরের নির্বাচনে কামলা হ্যারিসের জন্য ভোট দিতে চাই।’ তিনি সত্যিই ভোট দিতে পেরেছিলেন। তবে তাঁর রাজ্য জর্জিয়া শেষ পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেয়।
কার্টারের আজীবন জনসেবার চালিকাশক্তি ছিল, তাঁর গভীর ধর্মবিশ্বাস। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি ধর্মীয় বিশ্বাস এবং জনসেবাকে আলাদা করতে পারবেন না। আমি কখনোই ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং আমার রাজনৈতিক কর্তব্যের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব অনুভব করিনি। যদি আপনি একটিকে লঙ্ঘন করেন, তবে অন্যটিকেও লঙ্ঘন করবেন।’
তথ্যসূত্র: বিবিসি

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক এই চিনাবাদাম চাষি প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণ এড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষমা করেছিলেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া প্রথম মার্কিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, জিমি মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক ক্যাম্প ডেভিড শান্তি চুক্তি সম্পাদনে সহায়তা করেছিলেন। কিন্তু ইরানের জিম্মি সংকট এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণের মোকাবিলায় খাবি খেয়েছেন। প্রথম মেয়াদ পূর্ণ করার পর ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী রোনাল্ড রিগ্যানের কাছে পরাজিত হন তিনি।
হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর কার্টার বিশ্বজুড়ে শান্তি, পরিবেশ এবং মানবাধিকার নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাঁর এই পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তিনি ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাঁর ১০০ তম জন্মদিন উদ্যাপন করেন। তিনি দীর্ঘ সময় ক্যানসারের চিকিৎসাও নিয়েছিলেন এবং জীবনের শেষ ১৯ মাস হসপিস কেয়ারে কাটিয়েছেন।
জেমস আর্ল কার্টার জুনিয়র ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর জর্জিয়ার শহর প্লেইনসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চার ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাঁর বাবা পারিবারিক চিনাবাদামের ব্যবসা শুরু করেছিলেন এবং মা লিলিয়ান ছিলেন নিবন্ধিত নার্স। ১৯৩০—এর দশকে মহামন্দার অভিজ্ঞতা এবং দৃঢ় ধর্মবিশ্বাস তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছিল।
উচ্চ বিদ্যালয়ে তারকা বাস্কেটবল খেলোয়াড় ছিলেন কার্টার। এরপর তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে সাত বছর কাজ করেন। সেসময়ই তিনি তাঁর বোনের বন্ধু রোজালিনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং সাবমেরিন অফিসার হন। তবে ১৯৫৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর কার্টার বাদাম চাষে নামেন। প্রথম বছরের ফসল খরার কারণে নষ্ট হয়েছিল। তবে তারপরও কার্টার ব্যবসা চাঙা করেন এবং ক্রমেই সম্পদশালী হয়ে ওঠেন। তিনি স্থানীয় স্কুল ও গ্রন্থাগারের পরিচালনা পরিষদে নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন। এর কয়েক বছর পর জর্জিয়া সিনেটে সিনেটর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট স্কুলে বর্ণবৈষম্য বিলুপ্ত করার রায় দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য থেকে ওঠে আসা কৃষক হিসেবে কার্টারের এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করার কথা ছিল—কিন্তু তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। জর্জিয়া সিনেটে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গ এড়িয়ে চলেছিলেন, যদিও তাঁর বাবা বিচ্ছিন্নতার পক্ষে ছিলেন। এমনকি তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যেও অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিল।
এরপর ১৯৭০ সালে জর্জিয়ার গভর্নর হন জিমি। এর পর তিনি নাগরিকদের আরও অধিকারের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে শুরু করেন। গভর্নর হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সৎভাবে বলছি। বর্ণবৈষম্যের সময় শেষ।’ তাঁর মেয়াদে তিনি রাজধানীর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে মার্টিন লুথার কিংয়ের ছবি আঁকিয়েছিলেন।
গভর্নর হিসেবে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে, আফ্রিকান-আমেরিকানদের সরকারি কাজে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে, গর্ভপাত আইন নিয়ে তাঁর উদার মনোভাব এবং তাঁর দৃঢ় খ্রিষ্টান বিশ্বাসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন ছিল। তিনি নারীদের গর্ভপাতের অধিকার সমর্থন করলেও তিনি এটির জন্য তহবিল বাড়াতে অস্বীকৃতি জানান।
জিমি কার্টার ১৯৭৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার জন্য প্রচারণা শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্র তখনো ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। প্রচারণায় তিনি নিজেকে এক চিনাবাদাম চাষি হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি ক্যাপিটল হিলের পেশাদার রাজনীতিবিদদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তাঁর সময়োপযোগী প্রচারণা কাজ করে। আমেরিকানরা একজন নবাগত নেতা চেয়েছিল এবং কার্টার সেই চাহিদা পূরণ করেছিলেন। নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর প্রথমদিকে, জনমত জরিপে দেখা গিয়েছিল যে, তিনি মাত্র ৪ শতাংশ ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন পাবেন। কিন্তু ৯ মাস পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করেন।

ক্ষমতায় প্রথম দিনেই তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে সেনাবাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ এড়িয়ে যাওয়া কয়েক লাখ পুরুষকে ক্ষমা করেন। সে সময়কার রিপাবলিকান সিনেটর ব্যারি গোল্ডওয়াটার এই সিদ্ধান্তকে ‘কোনো প্রেসিডেন্টের নেওয়া সবচেয়ে লজ্জাজনক কাজ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কার্টার স্বীকার করেছিলেন, এটি তাঁর দায়িত্ব পালনকালে নেওয়া সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল।
কার্টার তাঁর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের নিয়োগ দেন এবং রোজালিনকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করেন। তিনি মার্কিন সংবিধানে একটি সমান অধিকার সংশোধনী আনার চেষ্টা করেছিলেন। যেটি লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা প্রতিশ্রুতি দিত।
জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক নেতাদের একজন হিসেবে কার্টার হোয়াইট হাউসে জিন্স ও সোয়েটার পরতেন এবং শক্তি সংরক্ষণের জন্য হিটার বন্ধ রাখতেন। তিনি হোয়াইট হাউস ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করেন—যা পরে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান সরিয়ে ফেলেন—এবং আলাস্কার অনাবাদি জমি রক্ষার জন্য আইন পাশ করেন।
আমেরিকার অর্থনীতি মন্দার দিকে যেতে থাকলে কার্টারের জনপ্রিয়তা পড়তে শুরু করে। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ—যার মধ্যে গ্যাসোলিন রেশনিংও ছিল—গ্রহণ করতে দেশকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি, কিন্তু কংগ্রেসে তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হন। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনাও পার্লামেন্টে ব্যর্থ হয়। বেকারত্ব ও সুদের হার দুটোই আকাশচুম্বী হয়ে যায়।
মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে তাঁর শুরুটা ছিল বিজয়ের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৮ সালে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষর করেন। কিন্তু বিদেশে সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ইরানে বিপ্লব এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন ছিল কঠিন পরীক্ষা।
কার্টার তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তেহরানে জিম্মি মার্কিনিদের উদ্ধারে বলপ্রয়োগের চেষ্টা বিপর্যয়ে পরিণত হয়। এতে আট মার্কিন সেনা নিহত হন। এই ঘটনা নিশ্চিতভাবেই তাঁর পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে শেষ করে দেয়। এরপর ১৯৮০ সালের নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডিকে পরাস্ত করেন কার্টার এবং পরবর্তী নির্বাচনে ৪১ শতাংশ পপুলার ভোট পান। কিন্তু এটি রোনাল্ড রিগ্যানকে পরাজিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। সাবেক এই অভিনেতা ইলেকটোরাল কলেজে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেন।
প্রেসিডেন্সির শেষ দিনে কার্টার ইরান থেকে জিম্মিদের মুক্তির জন্য সফল আলোচনার ঘোষণা দেন। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে জিম্মি মুক্তি দেখে যেতে পারেননি। দায়িত্ব ছাড়ার সময় কার্টারের জনপ্রিয়তা ছিল আমেরিকার যেকোনো প্রেসিডেন্টের মধ্যে সবচেয়ে কম। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি তাঁর সুনাম পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক প্রচেষ্টা চালান।
মার্কিন সরকারের পক্ষে তিনি উত্তর কোরিয়ায় শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করেন—যা শেষ পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র ভেঙে ফেলার জন্য একটি প্রাথমিক চুক্তি ‘অ্যাগ্রিড ফ্রেমওয়ার্কের’ দিকে নিয়ে যায়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি ‘কার্টার প্রেসিডেনশিয়াল সেন্টার’ আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান এবং সংকট মোকাবিলায় ধারণা ও প্রোগ্রামগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
জিমি কার্টার ২০০২ সালে তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে—থিয়োডর রুজভেল্ট এবং উড্রো উইলসনের পর—নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তবে তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি তাঁর প্রেসিডেন্সির পরের কাজের জন্য এই সম্মান পান। তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে একত্রে ‘দ্য এল্ডারস’ নামে একটি গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা বিশ্বব্যাপী শান্তি এবং মানবাধিকারের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০০২ সালে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করার সময়—তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি এটি পান—তিনি বলেছিলেন, ‘সবচেয়ে গুরুতর এবং সর্বজনীন সমস্যা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী এবং দরিদ্র মানুষের মধ্যে বাড়তে থাকা ফারাক।’
দায়িত্ব থেকে অবসরের পর কার্টার একটি সাধারণ জীবনধারা বেছে নেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা, করপোরেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের আসন তিনি সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেছেন এবং জর্জিয়ার প্লেইনসে স্ত্রী রোজালিনের সঙ্গে সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। জিমি কার্টার ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এতে কিছু ভুল দেখি না; যারা এটি করে তাদের দোষারোপ করি না। কিন্তু কখনই আমার ধনবান হওয়ার ইচ্ছা ছিল না।’
জিমি কার্টারই ছিলেন একমাত্র আধুনিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি রাজনীতিতে প্রবেশের আগে যে বাড়িতে বাস করতেন দায়িত্ব ছাড়ার পর সেখানেই ফিরে যান। তাঁর এই বাড়িটি ছিল একটি একতলা ও দুই শয়নকক্ষের বাড়ি। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, কার্টারদের বাড়ির মূল্য ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ডলার। যা তাদের রক্ষা করার জন্য বাইরে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের গাড়ির মূল্যের চেয়েও কম।
জিমি কার্টার ২০১৫ সালে জানান, তিনি ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই রোগেই তাঁর বাবা-মা এবং তিন বোন মারা গিয়েছিলেন। সে বছরই কোমর ভাঙার অপারেশনের কয়েক মাস পর তিনি আবার হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটির স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজে ফেরেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী ১৯৮৪ সালে দাতব্য সংস্থাটির সঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং বছরের পর বছর ৪ হাজারের বেশি বাড়ি মেরামত করতে সাহায্য করেন।
তিনি প্লেইনসের মারানাথা ব্যাপটিস্ট চার্চের একটি সানডে স্কুলে পড়াতেও থাকেন। কখনো কখনো তিনি ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের তাঁর ক্লাসে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে রোজালিন কার্টার মারা যাওয়ার পর স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘৭৭ বছরের বিবাহিত জীবনের আমার স্ত্রী আমার করা প্রতিটি কাজের সমান অংশীদার ছিলেন।’
চলতি বছর নিজের জন্ম শতবর্ষ উদ্যাপনকালে কার্টার প্রমাণ করেন যে, তাঁর রাজনৈতিক সচেতনতা এখনো প্রখর। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি শুধু নভেম্বরের নির্বাচনে কামলা হ্যারিসের জন্য ভোট দিতে চাই।’ তিনি সত্যিই ভোট দিতে পেরেছিলেন। তবে তাঁর রাজ্য জর্জিয়া শেষ পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেয়।
কার্টারের আজীবন জনসেবার চালিকাশক্তি ছিল, তাঁর গভীর ধর্মবিশ্বাস। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি ধর্মীয় বিশ্বাস এবং জনসেবাকে আলাদা করতে পারবেন না। আমি কখনোই ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং আমার রাজনৈতিক কর্তব্যের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব অনুভব করিনি। যদি আপনি একটিকে লঙ্ঘন করেন, তবে অন্যটিকেও লঙ্ঘন করবেন।’
তথ্যসূত্র: বিবিসি

পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।
১ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।
১ ঘণ্টা আগে
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এতে গাজায় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ছাড়া দখলদার দেশটি ৪৫ ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহও ফেরত দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
২ ঘণ্টা আগে
ট্রাম্প নিজে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় বেড়ে উঠেছেন। যদিও তিনি একজন রিপাবলিকান, সাক্ষাৎকারে কার্যত তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকেই সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কুমোর ভক্ত নই, তবে যদি খারাপ এক ডেমোক্র্যাট আর এক কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি সব সময় খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে ন
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।
গত রোববার চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের নৌ–প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ বলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে পাকিস্তান আটটি হাঙর ক্লাস সাবমেরিন পাবে চীনের কাছ থেকে। এ সময় তিনি জানান, এই বিষয়ে দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তি ‘সফলভাবে এগোচ্ছে।’ তিনি বলেন, এসব সাবমেরিন পাকিস্তানের উত্তর আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরে টহল সক্ষমতা বাড়াবে।
চীনা সাবমেরিন নিয়ে এই অগ্রগতির খবর এমন এক সময়ে এল, যার কয়েক আগেই পাকিস্তান বিমানবাহিনী মে মাসে চীনা তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের ফরাসি তৈরি রাফাল বিমান ভূপাতিত করে। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর এই আকাশযুদ্ধ সামরিক বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে। এতে চীনা প্রযুক্তির বিপরীতে পশ্চিমা অস্ত্র প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম চারটি ডিজেলচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন তৈরি হবে চীনে। বাকি চারটি তৈরি হবে পাকিস্তানে, যাতে দেশটির প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাকিস্তান এরই মধ্যে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের একটি জাহাজঘাঁটি থেকে ইয়াংসি নদীতে তিনটি সাবমেরিন নামিয়েছে।
অ্যাডমিরাল আশরাফ গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, ‘চীনা উৎপাদিত প্ল্যাটফর্ম ও সরঞ্জাম নির্ভরযোগ্য, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং পাকিস্তান নৌবাহিনীর অপারেশনাল প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক যুদ্ধের ধারা বদলাচ্ছে। এখন মানববিহীন ব্যবস্থা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উন্নত ইলেকট্রনিক যুদ্ধ প্রযুক্তি ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পাকিস্তান নৌবাহিনী এসব প্রযুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে এবং চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।’
চীনের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইসলামাবাদ। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীনের মোট অস্ত্র রপ্তানির ৬০ শতাংশের বেশি গেছে পাকিস্তানে। অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি চীন পাকিস্তানে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে আরব সাগরে প্রবেশের নিজস্ব পথ গড়ে তুলতে। প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করা হয়েছে, যা চীনের শিনজিয়াং অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে পাকিস্তানের গভীর সমুদ্রবন্দর গোয়াদর পর্যন্ত বিস্তৃত।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের নেতৃত্বে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশ এই চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর। এর লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি আমদানির জন্য বিকল্প পথ নিশ্চিত করা, যাতে মালাক্কা প্রণালি—যা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত এবং যুদ্ধে সহজেই অবরুদ্ধ হতে পারে—এড়িয়ে চলা যায়।
এই উদ্যোগ চীনের প্রভাব বিস্তার করেছে আফগানিস্তান, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দিকে। একই সঙ্গে এটি কার্যত ভারতকে ঘিরে ফেলেছে—কারণ চীনের মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ রয়েছে। বর্তমানে ভারত দেশীয়ভাবে তৈরি পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন পরিচালনা করছে। এ ছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি তিন শ্রেণির ডিজেলচালিত আক্রমণ সাবমেরিনও ভারতের হাতে রয়েছে।
অ্যাডমিরাল আশরাফ বলেন, ‘চীনের সঙ্গে এই সহযোগিতা কেবল সামরিক হার্ডওয়্যারের বিষয় নয়; এটি একটি অভিন্ন কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, পারস্পরিক আস্থা এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের প্রতিফলন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দশকে এই সম্পর্ক আরও গভীর হবে। শুধু জাহাজ নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ নয়, বরং যৌথ কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, গবেষণা, প্রযুক্তি ভাগাভাগি এবং শিল্প সহযোগিতাও এতে যুক্ত হবে।’

পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।
গত রোববার চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের নৌ–প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ বলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে পাকিস্তান আটটি হাঙর ক্লাস সাবমেরিন পাবে চীনের কাছ থেকে। এ সময় তিনি জানান, এই বিষয়ে দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তি ‘সফলভাবে এগোচ্ছে।’ তিনি বলেন, এসব সাবমেরিন পাকিস্তানের উত্তর আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরে টহল সক্ষমতা বাড়াবে।
চীনা সাবমেরিন নিয়ে এই অগ্রগতির খবর এমন এক সময়ে এল, যার কয়েক আগেই পাকিস্তান বিমানবাহিনী মে মাসে চীনা তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের ফরাসি তৈরি রাফাল বিমান ভূপাতিত করে। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর এই আকাশযুদ্ধ সামরিক বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে। এতে চীনা প্রযুক্তির বিপরীতে পশ্চিমা অস্ত্র প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম চারটি ডিজেলচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন তৈরি হবে চীনে। বাকি চারটি তৈরি হবে পাকিস্তানে, যাতে দেশটির প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাকিস্তান এরই মধ্যে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের একটি জাহাজঘাঁটি থেকে ইয়াংসি নদীতে তিনটি সাবমেরিন নামিয়েছে।
অ্যাডমিরাল আশরাফ গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, ‘চীনা উৎপাদিত প্ল্যাটফর্ম ও সরঞ্জাম নির্ভরযোগ্য, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং পাকিস্তান নৌবাহিনীর অপারেশনাল প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক যুদ্ধের ধারা বদলাচ্ছে। এখন মানববিহীন ব্যবস্থা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উন্নত ইলেকট্রনিক যুদ্ধ প্রযুক্তি ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পাকিস্তান নৌবাহিনী এসব প্রযুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে এবং চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।’
চীনের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইসলামাবাদ। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীনের মোট অস্ত্র রপ্তানির ৬০ শতাংশের বেশি গেছে পাকিস্তানে। অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি চীন পাকিস্তানে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে আরব সাগরে প্রবেশের নিজস্ব পথ গড়ে তুলতে। প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করা হয়েছে, যা চীনের শিনজিয়াং অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে পাকিস্তানের গভীর সমুদ্রবন্দর গোয়াদর পর্যন্ত বিস্তৃত।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের নেতৃত্বে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশ এই চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর। এর লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি আমদানির জন্য বিকল্প পথ নিশ্চিত করা, যাতে মালাক্কা প্রণালি—যা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত এবং যুদ্ধে সহজেই অবরুদ্ধ হতে পারে—এড়িয়ে চলা যায়।
এই উদ্যোগ চীনের প্রভাব বিস্তার করেছে আফগানিস্তান, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দিকে। একই সঙ্গে এটি কার্যত ভারতকে ঘিরে ফেলেছে—কারণ চীনের মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ রয়েছে। বর্তমানে ভারত দেশীয়ভাবে তৈরি পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন পরিচালনা করছে। এ ছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি তিন শ্রেণির ডিজেলচালিত আক্রমণ সাবমেরিনও ভারতের হাতে রয়েছে।
অ্যাডমিরাল আশরাফ বলেন, ‘চীনের সঙ্গে এই সহযোগিতা কেবল সামরিক হার্ডওয়্যারের বিষয় নয়; এটি একটি অভিন্ন কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, পারস্পরিক আস্থা এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের প্রতিফলন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দশকে এই সম্পর্ক আরও গভীর হবে। শুধু জাহাজ নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ নয়, বরং যৌথ কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, গবেষণা, প্রযুক্তি ভাগাভাগি এবং শিল্প সহযোগিতাও এতে যুক্ত হবে।’

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক...
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।
১ ঘণ্টা আগে
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এতে গাজায় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ছাড়া দখলদার দেশটি ৪৫ ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহও ফেরত দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
২ ঘণ্টা আগে
ট্রাম্প নিজে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় বেড়ে উঠেছেন। যদিও তিনি একজন রিপাবলিকান, সাক্ষাৎকারে কার্যত তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকেই সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কুমোর ভক্ত নই, তবে যদি খারাপ এক ডেমোক্র্যাট আর এক কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি সব সময় খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে ন
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ দিনে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৩১৭টি আগাম ভোট পড়েছে, যা ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চার গুণের বেশি।
রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের সর্বশেষ গড় জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে ১৪ দশমিক ৭ পয়েন্ট এবং রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে ২৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে এগিয়ে। তবে গত সোমবার রাতে কুমোকে সমর্থন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এই সমর্থন ভোটারদের মন বদলাতে পারবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
মামদানি ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট অব আমেরিকার সদস্য। তাঁর নীতিমালা উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস জাগিয়েছে। তিনি সর্বজনীন বিনা মূল্যের শিশু যত্ন, বাসে বিনা মূল্যে যাতায়াত এবং ভাড়া নিয়ন্ত্রিত প্রায় ১০ লাখ অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়াটিয়াদের জন্য ভাড়া স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নিউইয়র্ক সিটিতে প্রতি চার বছর অন্তর মেয়র নির্বাচন হয়। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে মেয়র হতে পারেন। বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস। তিনি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে দায়িত্বে আছেন, এ বছর শুরুর দিকে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান। তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ফেডারেল অপরাধের মামলা হয়েছিল। তবে বিচারক এপ্রিল মাসে মামলা খারিজ করে দেন।
চলতি বছরের নির্বাচনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রগতিশীল, মূলধারার ও রক্ষণশীল তিন শক্তি মুখোমুখি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরটির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায়। রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের বিভিন্ন জরিপে মামদানিকে কুমোর চেয়ে ৩ থেকে ২৫ পয়েন্ট পর্যন্ত এগিয়ে দেখানো হয়েছে।
তবে প্রতিটি জরিপে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকে। জরিপকারীরা সাধারণত ভোটারদের প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনা নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সব জরিপেই ত্রুটির সীমা থাকে। ফলে প্রকৃত সমর্থন জরিপে প্রকাশিত সংখ্যার কয়েক পয়েন্ট ওপরে বা নিচে থাকতে পারে। কেউ কেউ অনির্ধারিত ভোটারদের ভিন্নভাবে ধরেন। তাই বিভিন্ন জরিপের ফল একত্র করলে পক্ষপাত কমে।
তবে এ বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়রাল প্রাইমারিতে বেশির ভাগ জরিপ ভয়ানকভাবে ভুল প্রমাণিত হয়। প্রায় সব জরিপেই কুমোর সহজ জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামদানি বিশাল ব্যবধানে জয় পান।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ দিনে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৩১৭টি আগাম ভোট পড়েছে, যা ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চার গুণের বেশি।
রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের সর্বশেষ গড় জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে ১৪ দশমিক ৭ পয়েন্ট এবং রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে ২৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে এগিয়ে। তবে গত সোমবার রাতে কুমোকে সমর্থন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এই সমর্থন ভোটারদের মন বদলাতে পারবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
মামদানি ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট অব আমেরিকার সদস্য। তাঁর নীতিমালা উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস জাগিয়েছে। তিনি সর্বজনীন বিনা মূল্যের শিশু যত্ন, বাসে বিনা মূল্যে যাতায়াত এবং ভাড়া নিয়ন্ত্রিত প্রায় ১০ লাখ অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়াটিয়াদের জন্য ভাড়া স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নিউইয়র্ক সিটিতে প্রতি চার বছর অন্তর মেয়র নির্বাচন হয়। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে মেয়র হতে পারেন। বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস। তিনি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে দায়িত্বে আছেন, এ বছর শুরুর দিকে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান। তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ফেডারেল অপরাধের মামলা হয়েছিল। তবে বিচারক এপ্রিল মাসে মামলা খারিজ করে দেন।
চলতি বছরের নির্বাচনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রগতিশীল, মূলধারার ও রক্ষণশীল তিন শক্তি মুখোমুখি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরটির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায়। রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের বিভিন্ন জরিপে মামদানিকে কুমোর চেয়ে ৩ থেকে ২৫ পয়েন্ট পর্যন্ত এগিয়ে দেখানো হয়েছে।
তবে প্রতিটি জরিপে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকে। জরিপকারীরা সাধারণত ভোটারদের প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনা নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সব জরিপেই ত্রুটির সীমা থাকে। ফলে প্রকৃত সমর্থন জরিপে প্রকাশিত সংখ্যার কয়েক পয়েন্ট ওপরে বা নিচে থাকতে পারে। কেউ কেউ অনির্ধারিত ভোটারদের ভিন্নভাবে ধরেন। তাই বিভিন্ন জরিপের ফল একত্র করলে পক্ষপাত কমে।
তবে এ বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়রাল প্রাইমারিতে বেশির ভাগ জরিপ ভয়ানকভাবে ভুল প্রমাণিত হয়। প্রায় সব জরিপেই কুমোর সহজ জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামদানি বিশাল ব্যবধানে জয় পান।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক...
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।
১ ঘণ্টা আগে
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এতে গাজায় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ছাড়া দখলদার দেশটি ৪৫ ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহও ফেরত দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
২ ঘণ্টা আগে
ট্রাম্প নিজে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় বেড়ে উঠেছেন। যদিও তিনি একজন রিপাবলিকান, সাক্ষাৎকারে কার্যত তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকেই সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কুমোর ভক্ত নই, তবে যদি খারাপ এক ডেমোক্র্যাট আর এক কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি সব সময় খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে ন
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এতে গাজায় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ছাড়া দখলদার দেশটি ৪৫ ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহও ফেরত দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মুক্তি পান ওই পাঁচ ফিলিস্তিনি। পরে তাদের শারীরিক পরীক্ষার জন্য দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে স্বজনেরা জড়ো হন। কেউ কেউ মুক্ত হওয়া বন্দীদের জড়িয়ে ধরেন, কেউ আবার নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের খোঁজে উদ্বিগ্নভাবে ঘুরে বেড়ান।
গাজায় আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি বাহিনী এই প্রথমবার অজানা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিল।’ ইসরায়েলে এখনো হাজারো ফিলিস্তিনি বন্দী আছেন। তাঁদের অনেকে অভিযোগ ছাড়াই আটক, যাকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো স্বেচ্ছাচারী আটক বলে মনে করে।
এর আগে সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে ইসরায়েল তাদের কাছে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ২৭০টি মরদেহ গাজায় ফেরত এসেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, ফরেনসিক টিম এখন পর্যন্ত ৭৮টি মরদেহ শনাক্ত করেছে। চিকিৎসা নীতিমালা ও প্রটোকল মেনে পরীক্ষার পর মরদেহগুলো পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেরত পাওয়া অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। কারও হাত বাঁধা, চোখ বেঁধে রাখা, মুখ বিকৃত—এমন অবস্থায় মরদেহগুলো পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া মরদেহগুলোর সঙ্গে কোনো শনাক্তকরণ ট্যাগও ছিল না। এই মরদেহ ও বন্দিবিনিময় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের অংশ। ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর এই যুদ্ধবিরতি তুরস্ক, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রও ভূমিকা রেখেছে।
দেইর আল-বালাহ থেকে প্রতিবেদনে খুদারি বলেন, ‘অনেক মরদেহে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা গেছে।’ তিনি আরও জানান, নিখোঁজ ফিলিস্তিনিদের পরিবারগুলো এখনো মরদেহের ভেতর স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, ‘যেসব মরদেহ শনাক্ত করা যাবে না, সেগুলো দেইর আল-বালাহতে গণকবরে দাফন করা হবে।’
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েল হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানায়, সোমবার রাফাহর উত্তরে ইসরায়েলি গোলাগুলিতে তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজায় তারা বিমান হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, কিছু ব্যক্তি ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করেছিল, যা ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকা। তারা এটিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে।
এই ঘটনা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। এ ছাড়া ওই একই ঘটনায় নিহত তিনজন ফিলিস্তিনির কথা ইসরায়েল বলছে কি না, সেটিও পরিষ্কার নয়। কারণ, গাজা শহরের পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে যে তিনজন আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে একটি শিশুও আছে বলে আল-আহলি আরব হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে।
গাজা শহর থেকে আল জাজিরার তারেক আবু আজযুম জানিয়েছেন, ইসরায়েল এখনো কোয়াডকপ্টার ড্রোন ব্যবহার করে আংশিক ধসে যাওয়া ভবনের ওপর গ্রেনেড ফেলছে। তিনি বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এসব কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় অভিযোগ করেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ১২৫ বারের বেশি লঙ্ঘন করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, এই হামলাগুলো অব্যাহত থাকলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ আবার শুরু হতে পারে।

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এতে গাজায় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ছাড়া দখলদার দেশটি ৪৫ ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহও ফেরত দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মুক্তি পান ওই পাঁচ ফিলিস্তিনি। পরে তাদের শারীরিক পরীক্ষার জন্য দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে স্বজনেরা জড়ো হন। কেউ কেউ মুক্ত হওয়া বন্দীদের জড়িয়ে ধরেন, কেউ আবার নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের খোঁজে উদ্বিগ্নভাবে ঘুরে বেড়ান।
গাজায় আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি বাহিনী এই প্রথমবার অজানা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিল।’ ইসরায়েলে এখনো হাজারো ফিলিস্তিনি বন্দী আছেন। তাঁদের অনেকে অভিযোগ ছাড়াই আটক, যাকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো স্বেচ্ছাচারী আটক বলে মনে করে।
এর আগে সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে ইসরায়েল তাদের কাছে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ২৭০টি মরদেহ গাজায় ফেরত এসেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, ফরেনসিক টিম এখন পর্যন্ত ৭৮টি মরদেহ শনাক্ত করেছে। চিকিৎসা নীতিমালা ও প্রটোকল মেনে পরীক্ষার পর মরদেহগুলো পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেরত পাওয়া অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। কারও হাত বাঁধা, চোখ বেঁধে রাখা, মুখ বিকৃত—এমন অবস্থায় মরদেহগুলো পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া মরদেহগুলোর সঙ্গে কোনো শনাক্তকরণ ট্যাগও ছিল না। এই মরদেহ ও বন্দিবিনিময় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের অংশ। ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর এই যুদ্ধবিরতি তুরস্ক, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রও ভূমিকা রেখেছে।
দেইর আল-বালাহ থেকে প্রতিবেদনে খুদারি বলেন, ‘অনেক মরদেহে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা গেছে।’ তিনি আরও জানান, নিখোঁজ ফিলিস্তিনিদের পরিবারগুলো এখনো মরদেহের ভেতর স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, ‘যেসব মরদেহ শনাক্ত করা যাবে না, সেগুলো দেইর আল-বালাহতে গণকবরে দাফন করা হবে।’
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েল হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানায়, সোমবার রাফাহর উত্তরে ইসরায়েলি গোলাগুলিতে তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজায় তারা বিমান হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, কিছু ব্যক্তি ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করেছিল, যা ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকা। তারা এটিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে।
এই ঘটনা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। এ ছাড়া ওই একই ঘটনায় নিহত তিনজন ফিলিস্তিনির কথা ইসরায়েল বলছে কি না, সেটিও পরিষ্কার নয়। কারণ, গাজা শহরের পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে যে তিনজন আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে একটি শিশুও আছে বলে আল-আহলি আরব হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে।
গাজা শহর থেকে আল জাজিরার তারেক আবু আজযুম জানিয়েছেন, ইসরায়েল এখনো কোয়াডকপ্টার ড্রোন ব্যবহার করে আংশিক ধসে যাওয়া ভবনের ওপর গ্রেনেড ফেলছে। তিনি বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এসব কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় অভিযোগ করেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ১২৫ বারের বেশি লঙ্ঘন করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, এই হামলাগুলো অব্যাহত থাকলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ আবার শুরু হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক...
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।
১ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।
১ ঘণ্টা আগে
ট্রাম্প নিজে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় বেড়ে উঠেছেন। যদিও তিনি একজন রিপাবলিকান, সাক্ষাৎকারে কার্যত তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকেই সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কুমোর ভক্ত নই, তবে যদি খারাপ এক ডেমোক্র্যাট আর এক কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি সব সময় খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে ন
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যদি বামপন্থী প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি শহরটিতে ফেডারেল বরাদ্দ দেবেন না।
রোববার মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএসের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি নিউইয়র্কে একজন কমিউনিস্ট মেয়র হয়, তাহলে ওখানে অর্থ পাঠানো মানে সেই অর্থের অপচয় করা। তাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিউইয়র্কে অনেক অর্থ দেওয়া আমার জন্য কঠিন হবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্য বা শহরগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পে ফেডারেল অনুদান কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল।
আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনমত জরিপে দেখা গেছে, জোহরান মামদানি তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন।
নিউইয়র্ক সিটি চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন পাউন্ড) ফেডারেল সহায়তা পেয়েছে। তবে মামদানি জয়ী হলে এই সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বিল দে ব্লাসিওকে দেখেছি—কতটা খারাপ মেয়র ছিলেন তিনি। কিন্তু মামদানি দে ব্লাসিওর চেয়ে খারাপ।’
ট্রাম্প নিজে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় বেড়ে উঠেছেন। যদিও তিনি একজন রিপাবলিকান, সাক্ষাৎকারে কার্যত তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকেই সমর্থন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমোর ভক্ত নই, তবে যদি খারাপ এক ডেমোক্র্যাট আর এক কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি সব সময় খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে নেব।’
৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দেন। তবে তিনি কমিউনিস্ট হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে রসিকতা করে তিনি বলেন, ‘আমি মূলত এক স্ক্যান্ডিনেভীয় রাজনীতিকের মতো; শুধু একটু গা-চামড়ায় বাদামি।’
সোমবার এক বক্তব্যে মামদানি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিতে তাঁর প্রতিচ্ছবি তৈরি নয়, বরং বিকল্প তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা এমন এক শহর চাই, যা এখানে বসবাসকারী সবার মর্যাদায় বিশ্বাস করে।’
অ্যান্ড্রু কুমো পাল্টা বক্তব্যে বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একমাত্র প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়েছি। নিউইয়র্কের জন্য লড়াই করার সময় আমি থামব না।’
কুমো কোভিড-১৯ মহামারির সময় নিউইয়র্কের গভর্নর ছিলেন। তখন বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায়। যদিও পরবর্তী সময়ে রাজ্যের কয়েকটি হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা গোপন রাখার অভিযোগে কুমোও সমালোচনার মুখে পড়েন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যদি বামপন্থী প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি শহরটিতে ফেডারেল বরাদ্দ দেবেন না।
রোববার মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএসের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি নিউইয়র্কে একজন কমিউনিস্ট মেয়র হয়, তাহলে ওখানে অর্থ পাঠানো মানে সেই অর্থের অপচয় করা। তাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিউইয়র্কে অনেক অর্থ দেওয়া আমার জন্য কঠিন হবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্য বা শহরগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পে ফেডারেল অনুদান কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল।
আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনমত জরিপে দেখা গেছে, জোহরান মামদানি তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন।
নিউইয়র্ক সিটি চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন পাউন্ড) ফেডারেল সহায়তা পেয়েছে। তবে মামদানি জয়ী হলে এই সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বিল দে ব্লাসিওকে দেখেছি—কতটা খারাপ মেয়র ছিলেন তিনি। কিন্তু মামদানি দে ব্লাসিওর চেয়ে খারাপ।’
ট্রাম্প নিজে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় বেড়ে উঠেছেন। যদিও তিনি একজন রিপাবলিকান, সাক্ষাৎকারে কার্যত তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকেই সমর্থন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমোর ভক্ত নই, তবে যদি খারাপ এক ডেমোক্র্যাট আর এক কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি সব সময় খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে নেব।’
৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দেন। তবে তিনি কমিউনিস্ট হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে রসিকতা করে তিনি বলেন, ‘আমি মূলত এক স্ক্যান্ডিনেভীয় রাজনীতিকের মতো; শুধু একটু গা-চামড়ায় বাদামি।’
সোমবার এক বক্তব্যে মামদানি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিতে তাঁর প্রতিচ্ছবি তৈরি নয়, বরং বিকল্প তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা এমন এক শহর চাই, যা এখানে বসবাসকারী সবার মর্যাদায় বিশ্বাস করে।’
অ্যান্ড্রু কুমো পাল্টা বক্তব্যে বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একমাত্র প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়েছি। নিউইয়র্কের জন্য লড়াই করার সময় আমি থামব না।’
কুমো কোভিড-১৯ মহামারির সময় নিউইয়র্কের গভর্নর ছিলেন। তখন বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায়। যদিও পরবর্তী সময়ে রাজ্যের কয়েকটি হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা গোপন রাখার অভিযোগে কুমোও সমালোচনার মুখে পড়েন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে জিমি কার্টার মার্কিন জনগণকে ওয়াদা করেছিলেন, তিনি কখনোই তাদের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না। সেই জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থা কার্টার সেন্টার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি পরবর্তী অস্থির সময়ে জর্জিয়ার সাবেক...
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।
১ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।
১ ঘণ্টা আগে
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এতে গাজায় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ছাড়া দখলদার দেশটি ৪৫ ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহও ফেরত দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
২ ঘণ্টা আগে