Ajker Patrika

সরকারি ব্যয় নিয়ে ট্রাম্প-ডেমোক্র্যাট সমঝোতা হয়নি, অচলাবস্থার হুমকিতে যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র সরকার অচল বা শাটডাউন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। রাজনৈতিক বিভাজন সত্ত্বেও কোনো পক্ষই এটি এড়াতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে না।

গতকাল সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট নেতাদের মধ্যে শেষ মুহূর্তের বৈঠকটি খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি। বরং উভয় পক্ষই নিজেদের অবস্থানে আরও অনড় হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা শাটডাউনের দিকেই যাচ্ছি। কারণ, ডেমোক্র্যাটরা সঠিক কাজ করছে না। আপনি আমেরিকানদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলতে পারেন না, “যতক্ষণ না আপনি সিনেট এবং হাউস ডেমোক্র্যাটরা যা চায়, ঠিক তা-ই করছেন, ততক্ষণ আমরা আপনার সরকার অচল করে দেব।”’

অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট সিনেট নেতা চাক শুমার বলছেন, তাঁর দল এবং হোয়াইট হাউসের মধ্যে এখনো ‘অনেক বড় পার্থক্য’ রয়েছে।

কারও কণ্ঠেই আশাবাদী সুর শোনা যায়নি।

গতকাল রাতে ট্রাম্পের একটি এআই ভিডিও পোস্ট করার পর এই অবস্থানগুলো আরও কঠোর হয়েছে। সেই ভিডিওতে হাউস মাইনরিটি লিডার হাকিম জেফ্রিকে সোমব্রেরো এবং নকল গোঁফ পরা অবস্থায় দেখানো হয় এবং শুমারকে একটি কৃত্রিম কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, নথিপত্রহীন অভিবাসীরা যেন বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পান।

এ ঘটনায় দুজনই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, যেখানে জেফ্রি এটিকে ‘ধর্মান্ধতা’ বলে অভিহিত করেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপাবলিকানরা বর্তমান ব্যয়ের মাত্রা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বাড়াতে চান; যা মূলত আইন প্রণয়নের কাজটি কিছুটা পিছিয়ে দেবে। তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট; বিশেষ করে যেহেতু ট্রাম্প প্রশাসন কংগ্রেসের বাজেট-নির্ধারকদের সাহায্য ছাড়াই নিজেদের মতো করে ব্যয় কমানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

ডেমোক্র্যাটরা এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চান। তাঁদের ভাষ্য, ট্রাম্প যদি তাঁদের উপেক্ষা করবেন, তাহলে ব্যয়ের মাত্রা নিয়ে আলোচনারই-বা কী অর্থ। তাঁরা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারি স্বাস্থ্যবিমার ভর্তুকি নবায়নের পক্ষে, যা বছরের শেষে শেষ হয়ে যাবে।

রিপাবলিকানরা এতে রাজি হতে অনাগ্রহী।

সরকারি ব্যয়ের লড়াই আসলে শুধু নীতির প্রশ্ন নয়; রাজনৈতিক অবস্থানও বড় ভূমিকা রাখে।

রিপাবলিকানরা মনে করেন, রাজনৈতিক দিক থেকে তাঁরাই সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। যে দল সরকার সচল রাখার বিনিময়ে দাবি জানায়—এই ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটরা—শাটডাউন হলে সাধারণত তাঁরাই সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হন।

ট্রাম্প ও রিপাবলিকান নেতারা নিজেদের যুক্তিসংগত বলে দাবি করছেন। তাঁদের মতে, তাঁরা কেবল আরও সময় চাইছেন আলোচনার জন্য, যাতে সরকার বন্ধের ঝুঁকি এড়ানো যায়।

তবে ডেমোক্র্যাটরা মনে করেন, স্বাস্থ্যসেবা তাঁদের জয়ের বিষয়। তাই তাঁরা চান লড়াইটা হোক এই প্রশ্নে—লাখ লাখ আমেরিকান স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা হারাবে কি না।

তাঁদের মতে, সাত সপ্তাহের অস্থায়ী তহবিল কেবল ভর্তুকির শেষ সময়সীমাকে আরও কাছে নিয়ে আসবে, অগ্রগতি কিছুই হবে না।

পরিস্থিতি আরও জটিল করছে রিপাবলিকানদের একাংশের সরকার দীর্ঘদিন বন্ধ রাখায় আপত্তি না থাকা।

হোয়াইট হাউসের বাজেটপ্রধান রাস ভাউট সম্প্রতি এক নথিতে লিখেছেন, সরকার বন্ধ থাকাকালে প্রশাসন নতুন দীর্ঘমেয়াদি ব্যয় কাটছাঁট ও কর্মী ছাঁটাই করবে। ‘অপ্রয়োজনীয়’ হিসেবে চিহ্নিত অনেক দপ্তর ও কর্মসূচি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এটিকে এ বছরের শুরুর ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি কাটছাঁটের সম্প্রসারণ বলা হচ্ছে।

ডেমোক্র্যাট নেতারা অবশ্য এটিকে ভয় দেখানো ও চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে দেখছেন। শুমার বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দিন থেকেই সরকারি কর্মী ছাঁটাই করছেন—শাসন করার জন্য নয়, ভয় দেখানোর জন্য।’

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে সর্বশেষ সরকার বন্ধ ৩৫ দিন স্থায়ী হয়েছিল; যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম। সেটি শেষ হয় যখন বেতনহীন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা কাজে না এসে বিমান চলাচল ব্যাহত করার হুমকি দেন।

সরকার বন্ধ কবে, কীভাবে শেষ হবে—এ নিয়ে এখনো কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে এটা স্পষ্ট, দুই পক্ষই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় মার্কিন শান্তি প্রস্তাবে আরব-ইউরোপসহ সবাই একমত, কী আছে ট্রাম্পের ২০ দফায়

ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে হামলা, ছুরিকাঘাতে জামায়াত নেতা নিহত

গান গাওয়া ও শোনা নিষিদ্ধের দাবিও উঠবে

পুলিশের জালে জালিয়াতির মামলায় ফাঁসলেন ‘সম্পদের দেবী’, উদ্ধার ৬১ হাজার বিটকয়েন

এখন ভারতের অন্যতম বিশেষত্ব হলো ভুয়া খবর: ড. ইউনূস

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত