Ajker Patrika

বারাক ওবামা গ্রেপ্তার—ট্রাম্পের পোস্ট করা এআই ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার নিজ মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এআই দিয়ে বানানো এক ভিডিও পোস্ট করে নতুন করে তৈরি করলেন তোলপাড়। কারণ, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাকে গ্রেপ্তারের ভিডিও ছিল সেটি! আজ সোমবার ট্রুথ সোশ্যালে ভিডিওটি পোস্ট করেন তিনি।

ভিডিওটির শুরুতে ওবামাকে বলতে শোনা যায়, ‘বিশেষ করে প্রেসিডেন্টও আইনের ঊর্ধ্বে নন।’ এরপর বিভিন্ন মার্কিন রাজনীতিকদের বক্তব্যের দৃশ্য দেখা যায়। যেখানে তারা বলছেন ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।’ পরের দৃশ্যে দেখা যায়, ওভাল অফিসে গিয়ে দুই এফবিআই এজেন্ট বারাক ওবামাকে হাতকড়া পড়িয়ে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। পাশেই একটি চেয়ারে বসে হাসিমুখে এই পুরো ব্যাপারটি উপভোগ করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভিডিওটির শেষাংশে দেখা যায়, একটি জেলের ভেতরে, কারাগারের কমলা পোশাকে ওবামা দাঁড়িয়ে আছেন।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প ভিডিওটির কোথাও এটি কাল্পনিক বা এআই-নির্মিত বলে কোনো ধরনের ব্যাখ্যা বা ‘ডিসক্লেইমার’ দেননি। মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভিডিও। আর তারপরই বিষয়টি ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। এ ধরনের একটি পোস্ট করে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন ট্রাম্প এমনটাই বলছেন সমালোচকেরা।

এই ঘটনার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওবামার বিরুদ্ধে ‘উচ্চ পর্যায়ের নির্বাচনী জালিয়াতির’ অভিযোগ আনেন। এমন প্রেক্ষাপটে, সম্প্রতি মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের (ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স) পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড দাবি করেছেন—২০১৬ সালের নির্বাচনের পর ওবামা প্রশাসনের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে ‘ট্রাম্প-রাশিয়া যোগসূত্র’ নিয়ে একটি ভুয়া ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন, যাতে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসতে বাধা দেওয়া যায়। গ্যাবার্ড জানান, এই দাবির পক্ষে ‘জোরালো’ ও ‘অপ্রতিরোধ্য’ প্রমাণও রয়েছে তার কাছে। তিনি এ অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিচারিক তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এক্স প্ল্যাটফর্মে গ্যাবার্ড লিখেছেন, ‘মার্কিন জনগণ শেষ পর্যন্ত জানতে পারবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া ঠেকাতে ২০১৬ সালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা তথ্যের অপব্যবহার করে কীভাবে ওবামা প্রশাসনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা এক দীর্ঘমেয়াদি অভ্যুত্থান পরিচালনা করেন।’

তবে, এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তর (ওডিএনআই) একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ১১৪ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের নভেম্বর নির্বাচনের আগ পর্যন্ত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন ছিল—রাশিয়া ‘সম্ভবত সাইবার উপায়ে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে না।’

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ রয়েছে যে, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টের জন্য প্রস্তুত করা দৈনন্দিন গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ের খসড়ায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল—রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী পরিকাঠামোতে সাইবার হামলা চালালেও, তা নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে সফল হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগামী বছরেই পানিতে নামবে চীনের তৈরি পাকিস্তানের ‘হাঙর’ সাবমেরিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তান আশা করছে, আগামী বছরেই পানিতে নামবে তাদের হাঙর ক্লাস সাবমেরিন। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান আশা করছে, আগামী বছরেই পানিতে নামবে তাদের হাঙর ক্লাস সাবমেরিন। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে, চীনের নকশায় তৈরি করা সাবমেরিন আগামী বছরে সক্রিয় কার্যক্রমে যুক্ত হবে। দেশটির শীর্ষ অ্যাডমিরাল চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদারে বেইজিং আরও এগিয়ে যাবে।

গত রোববার চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের নৌ–প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ বলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে পাকিস্তান আটটি হাঙর ক্লাস সাবমেরিন পাবে চীনের কাছ থেকে। এ সময় তিনি জানান, এই বিষয়ে দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তি ‘সফলভাবে এগোচ্ছে।’ তিনি বলেন, এসব সাবমেরিন পাকিস্তানের উত্তর আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরে টহল সক্ষমতা বাড়াবে।

চীনা সাবমেরিন নিয়ে এই অগ্রগতির খবর এমন এক সময়ে এল, যার কয়েক আগেই পাকিস্তান বিমানবাহিনী মে মাসে চীনা তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের ফরাসি তৈরি রাফাল বিমান ভূপাতিত করে। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর এই আকাশযুদ্ধ সামরিক বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে। এতে চীনা প্রযুক্তির বিপরীতে পশ্চিমা অস্ত্র প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম চারটি ডিজেলচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন তৈরি হবে চীনে। বাকি চারটি তৈরি হবে পাকিস্তানে, যাতে দেশটির প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাকিস্তান এরই মধ্যে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের একটি জাহাজঘাঁটি থেকে ইয়াংসি নদীতে তিনটি সাবমেরিন নামিয়েছে।

অ্যাডমিরাল আশরাফ গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, ‘চীনা উৎপাদিত প্ল্যাটফর্ম ও সরঞ্জাম নির্ভরযোগ্য, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং পাকিস্তান নৌবাহিনীর অপারেশনাল প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক যুদ্ধের ধারা বদলাচ্ছে। এখন মানববিহীন ব্যবস্থা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উন্নত ইলেকট্রনিক যুদ্ধ প্রযুক্তি ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পাকিস্তান নৌবাহিনী এসব প্রযুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে এবং চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।’

চীনের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইসলামাবাদ। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীনের মোট অস্ত্র রপ্তানির ৬০ শতাংশের বেশি গেছে পাকিস্তানে। অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি চীন পাকিস্তানে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে আরব সাগরে প্রবেশের নিজস্ব পথ গড়ে তুলতে। প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করা হয়েছে, যা চীনের শিনজিয়াং অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে পাকিস্তানের গভীর সমুদ্রবন্দর গোয়াদর পর্যন্ত বিস্তৃত।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের নেতৃত্বে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশ এই চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর। এর লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি আমদানির জন্য বিকল্প পথ নিশ্চিত করা, যাতে মালাক্কা প্রণালি—যা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত এবং যুদ্ধে সহজেই অবরুদ্ধ হতে পারে—এড়িয়ে চলা যায়।

এই উদ্যোগ চীনের প্রভাব বিস্তার করেছে আফগানিস্তান, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দিকে। একই সঙ্গে এটি কার্যত ভারতকে ঘিরে ফেলেছে—কারণ চীনের মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ রয়েছে। বর্তমানে ভারত দেশীয়ভাবে তৈরি পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন পরিচালনা করছে। এ ছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি তিন শ্রেণির ডিজেলচালিত আক্রমণ সাবমেরিনও ভারতের হাতে রয়েছে।

অ্যাডমিরাল আশরাফ বলেন, ‘চীনের সঙ্গে এই সহযোগিতা কেবল সামরিক হার্ডওয়্যারের বিষয় নয়; এটি একটি অভিন্ন কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, পারস্পরিক আস্থা এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের প্রতিফলন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দশকে এই সম্পর্ক আরও গভীর হবে। শুধু জাহাজ নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ নয়, বরং যৌথ কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, গবেষণা, প্রযুক্তি ভাগাভাগি এবং শিল্প সহযোগিতাও এতে যুক্ত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: মামদানি কি ইতিহাস গড়বেন, জরিপ কী বলছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৮
জরিপ বলছে, নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। ছবি: সংগৃহীত
জরিপ বলছে, নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগাম ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এগিয়ে আছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ দিনে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৩১৭টি আগাম ভোট পড়েছে, যা ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চার গুণের বেশি।

রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের সর্বশেষ গড় জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে ১৪ দশমিক ৭ পয়েন্ট এবং রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে ২৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে এগিয়ে। তবে গত সোমবার রাতে কুমোকে সমর্থন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। এই সমর্থন ভোটারদের মন বদলাতে পারবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

মামদানি ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট অব আমেরিকার সদস্য। তাঁর নীতিমালা উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস জাগিয়েছে। তিনি সর্বজনীন বিনা মূল্যের শিশু যত্ন, বাসে বিনা মূল্যে যাতায়াত এবং ভাড়া নিয়ন্ত্রিত প্রায় ১০ লাখ অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়াটিয়াদের জন্য ভাড়া স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নিউইয়র্ক সিটিতে প্রতি চার বছর অন্তর মেয়র নির্বাচন হয়। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে মেয়র হতে পারেন। বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস। তিনি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে দায়িত্বে আছেন, এ বছর শুরুর দিকে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান। তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ফেডারেল অপরাধের মামলা হয়েছিল। তবে বিচারক এপ্রিল মাসে মামলা খারিজ করে দেন।

চলতি বছরের নির্বাচনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রগতিশীল, মূলধারার ও রক্ষণশীল তিন শক্তি মুখোমুখি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরটির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায়। রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকসের বিভিন্ন জরিপে মামদানিকে কুমোর চেয়ে ৩ থেকে ২৫ পয়েন্ট পর্যন্ত এগিয়ে দেখানো হয়েছে।

তবে প্রতিটি জরিপে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকে। জরিপকারীরা সাধারণত ভোটারদের প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনা নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সব জরিপেই ত্রুটির সীমা থাকে। ফলে প্রকৃত সমর্থন জরিপে প্রকাশিত সংখ্যার কয়েক পয়েন্ট ওপরে বা নিচে থাকতে পারে। কেউ কেউ অনির্ধারিত ভোটারদের ভিন্নভাবে ধরেন। তাই বিভিন্ন জরিপের ফল একত্র করলে পক্ষপাত কমে।

তবে এ বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়রাল প্রাইমারিতে বেশির ভাগ জরিপ ভয়ানকভাবে ভুল প্রমাণিত হয়। প্রায় সব জরিপেই কুমোর সহজ জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামদানি বিশাল ব্যবধানে জয় পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুদ্ধবিরতি ভেঙেই চলেছে ইসরায়েল, ৫ ফিলিস্তিনি বন্দী ও ৪৫ মরদেহ ফেরত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২০
যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও ইসরায়েল এখনো তা লঙ্ঘন করেই যাচ্ছে। ছবি: আনাদোলু
যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও ইসরায়েল এখনো তা লঙ্ঘন করেই যাচ্ছে। ছবি: আনাদোলু

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এতে গাজায় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ছাড়া দখলদার দেশটি ৪৫ ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহও ফেরত দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মুক্তি পান ওই পাঁচ ফিলিস্তিনি। পরে তাদের শারীরিক পরীক্ষার জন্য দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে স্বজনেরা জড়ো হন। কেউ কেউ মুক্ত হওয়া বন্দীদের জড়িয়ে ধরেন, কেউ আবার নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের খোঁজে উদ্বিগ্নভাবে ঘুরে বেড়ান।

গাজায় আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি বাহিনী এই প্রথমবার অজানা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিল।’ ইসরায়েলে এখনো হাজারো ফিলিস্তিনি বন্দী আছেন। তাঁদের অনেকে অভিযোগ ছাড়াই আটক, যাকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো স্বেচ্ছাচারী আটক বলে মনে করে।

এর আগে সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে ইসরায়েল তাদের কাছে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ২৭০টি মরদেহ গাজায় ফেরত এসেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, ফরেনসিক টিম এখন পর্যন্ত ৭৮টি মরদেহ শনাক্ত করেছে। চিকিৎসা নীতিমালা ও প্রটোকল মেনে পরীক্ষার পর মরদেহগুলো পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেরত পাওয়া অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। কারও হাত বাঁধা, চোখ বেঁধে রাখা, মুখ বিকৃত—এমন অবস্থায় মরদেহগুলো পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া মরদেহগুলোর সঙ্গে কোনো শনাক্তকরণ ট্যাগও ছিল না। এই মরদেহ ও বন্দিবিনিময় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের অংশ। ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর এই যুদ্ধবিরতি তুরস্ক, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রও ভূমিকা রেখেছে।

দেইর আল-বালাহ থেকে প্রতিবেদনে খুদারি বলেন, ‘অনেক মরদেহে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা গেছে।’ তিনি আরও জানান, নিখোঁজ ফিলিস্তিনিদের পরিবারগুলো এখনো মরদেহের ভেতর স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, ‘যেসব মরদেহ শনাক্ত করা যাবে না, সেগুলো দেইর আল-বালাহতে গণকবরে দাফন করা হবে।’

এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েল হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানায়, সোমবার রাফাহর উত্তরে ইসরায়েলি গোলাগুলিতে তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজায় তারা বিমান হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, কিছু ব্যক্তি ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করেছিল, যা ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকা। তারা এটিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে।

এই ঘটনা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। এ ছাড়া ওই একই ঘটনায় নিহত তিনজন ফিলিস্তিনির কথা ইসরায়েল বলছে কি না, সেটিও পরিষ্কার নয়। কারণ, গাজা শহরের পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে যে তিনজন আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে একটি শিশুও আছে বলে আল-আহলি আরব হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে।

গাজা শহর থেকে আল জাজিরার তারেক আবু আজযুম জানিয়েছেন, ইসরায়েল এখনো কোয়াডকপ্টার ড্রোন ব্যবহার করে আংশিক ধসে যাওয়া ভবনের ওপর গ্রেনেড ফেলছে। তিনি বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এসব কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় অভিযোগ করেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ১২৫ বারের বেশি লঙ্ঘন করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, এই হামলাগুলো অব্যাহত থাকলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ আবার শুরু হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামদানি মেয়র হলে নিউইয়র্কে বরাদ্দ দেবেন না ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যদি বামপন্থী প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি শহরটিতে ফেডারেল বরাদ্দ দেবেন না।

রোববার মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএসের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি নিউইয়র্কে একজন কমিউনিস্ট মেয়র হয়, তাহলে ওখানে অর্থ পাঠানো মানে সেই অর্থের অপচয় করা। তাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিউইয়র্কে অনেক অর্থ দেওয়া আমার জন্য কঠিন হবে।’

ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্য বা শহরগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পে ফেডারেল অনুদান কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল।

আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনমত জরিপে দেখা গেছে, জোহরান মামদানি তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন।

নিউইয়র্ক সিটি চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন পাউন্ড) ফেডারেল সহায়তা পেয়েছে। তবে মামদানি জয়ী হলে এই সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বিল দে ব্লাসিওকে দেখেছি—কতটা খারাপ মেয়র ছিলেন তিনি। কিন্তু মামদানি দে ব্লাসিওর চেয়ে খারাপ।’

ট্রাম্প নিজে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় বেড়ে উঠেছেন। যদিও তিনি একজন রিপাবলিকান, সাক্ষাৎকারে কার্যত তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকেই সমর্থন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কুমোর ভক্ত নই, তবে যদি খারাপ এক ডেমোক্র্যাট আর এক কমিউনিস্টের মধ্যে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি সব সময় খারাপ ডেমোক্র্যাটকেই বেছে নেব।’

৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দেন। তবে তিনি কমিউনিস্ট হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে রসিকতা করে তিনি বলেন, ‘আমি মূলত এক স্ক্যান্ডিনেভীয় রাজনীতিকের মতো; শুধু একটু গা-চামড়ায় বাদামি।’

সোমবার এক বক্তব্যে মামদানি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিতে তাঁর প্রতিচ্ছবি তৈরি নয়, বরং বিকল্প তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা এমন এক শহর চাই, যা এখানে বসবাসকারী সবার মর্যাদায় বিশ্বাস করে।’

অ্যান্ড্রু কুমো পাল্টা বক্তব্যে বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একমাত্র প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়েছি। নিউইয়র্কের জন্য লড়াই করার সময় আমি থামব না।’

কুমো কোভিড-১৯ মহামারির সময় নিউইয়র্কের গভর্নর ছিলেন। তখন বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায়। যদিও পরবর্তী সময়ে রাজ্যের কয়েকটি হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা গোপন রাখার অভিযোগে কুমোও সমালোচনার মুখে পড়েন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত