Ajker Patrika

একসময় সাংবাদিক ছিলেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী কাকার

আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ১৮
একসময় সাংবাদিক ছিলেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী কাকার

২৩ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তান। চলতি বছরের অক্টোবরে দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনের জন্য শনিবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারের নাম ঘোষণা করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অফিস। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ এবং বিরোধী দলীয় নেতা রাজা রিয়াজ তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুলকে নিয়োগের বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক করার পর বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের রিয়াজ বলেন, ‘আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে হবে একটি ছোট প্রদেশ থেকে। আনোয়ারুল হক কাকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন, এ বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি। আমি এই নামটি প্রস্তাব করেছি আর প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি জানিয়েছেন।’ 

রোববার তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকার শপথ নিতে পারেন বলেও জানান রিয়াজ। 

পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক হিসেবে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সক্রিয় আছেন কাকার। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় ১৯৬২ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বেলুচিস্তানের সবচেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ পশতুন কাকার উপজাতি গোষ্ঠীর সদস্য তিনি। 

ইউনিভার্সিটি অব বেলুচিস্তান থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি নেওয়ার পর সাংবাদিক হিসেবেই কাকারের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল। শুরুর দিকে তিনি একাধিক পত্রিকা এবং ম্যাগাজিনে প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে তিনি পাকিস্তান টেলিভিশন করপোরেশন (পিটিভি) ও রেডিও পাকিস্তানে প্রযোজক ও উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেন। 

রোববার তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকার শপথ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত১৯৯০ সালে বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টিতে (বিএনপি) যোগ দিয়ে প্রথমবারের মতো রাজনীতিতে আসেন আনোয়ারুল হক কাকার। জাতীয়তাবাদী এই দলটি মূলত বেলুচিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র হিসেবে বেশ কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেন কাকার। সে সময় তিনি প্রাদেশিক পরিষদ এবং জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিলেও পাস করতে পারেননি। 

 ২০১৮ সালে বিএনপি ত্যাগ করে নতুন দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টিতে (বিএপি) যোগ দেন কাকার। ফেডারেশনপন্থী এই দলটি ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বেলুচিস্তানের বৃহত্তম দল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বিএপির টিকিট নিয়ে একই বছরে বেলুচিস্তান থেকে ছয় বছর মেয়াদে সিনেটর নির্বাচিত হন। সংসদের উচ্চ কক্ষ সিনেটে তিনি বিএপি দলের সংসদীয় নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। 

জাতীয় এবং ধর্মীয় বিভিন্ন ইস্যুতে মধ্যপন্থী এবং বাস্তববাদী হিসেবে পরিচিত কাকার। পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি এবং জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংলাপ ও সমন্বয়ের বিষয়ে তিনি বরাবরই আওয়াজ তুলে আসছেন। এ ছাড়া বেলুচিস্তান প্রদেশে বৃহত্তর উন্নয়ন প্রকল্প এবং বিনিয়োগের বিষয়ে তিনি নিয়মিত দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও পাকিস্তানের সবচেয়ে গরিব এবং অবহেলিত প্রদেশ এখন বেলুচিস্তান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত