Ajker Patrika

পাকিস্তানে বন্যার পেছনে অর্ধেক দায় মানুষের

পাকিস্তানে বন্যার পেছনে অর্ধেক দায় মানুষের

সংকটের শুরু গত জুন থেকেই। পাকিস্তানে বাড়তে থাকে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। এর সঙ্গে গলতে শুরু করে বরফে ঢাকা পাহাড়ের বরফ। এর সম্মিলিত ফলাফল হিসেবে ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে ১৭ লাখ বাড়ি। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় দেড় হাজার। ঘরবাড়ি, যানবাহন, শস্য ও গবাদিপশু মিলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তানের এ বন্যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও এর পেছনে অর্ধেক দায় মানুষেরই। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন গ্রুপের গবেষণা প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিজ্ঞানীদের একটি দল জানান, গত কয়েক দশকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড়েছে বৃষ্টি। পাকিস্তানের সিন্ধু ও বেলুচিস্তান প্রদেশে গত আগস্টে বৃষ্টি রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হতে পারে মানবসৃষ্ট এ জলবায়ু পরিবর্তন। 

বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতি ভারী বর্ষণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব খতিয়ে দেখতে বিজ্ঞানীরা আবহাওয়ার তথ্য ও উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখেছেন। তাপমাত্রার তথ্য পর্যালোচনা করে তাঁরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনই সম্ভবত সিন্ধু ও বেলুচিস্তান প্রদেশে পাঁচ দিনের বৃষ্টির পরিমাণ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছিল। এটি হয়েছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে। 

গবেষকেরা আরও বলছেন, বর্তমান জলবায়ু পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতি বছর এ ধরনের বন্যার আশঙ্কা ১ শতাংশ বেড়েছে। ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন না হলে বিশ্বে এ ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক কম ছিল। এর মানে হলো—মানুষের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তিত হয়ে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। 
 
তবে গবেষকেরা জোর দিয়ে বলেছেন, ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানে মৌসুমি বৃষ্টির পরিমাণের ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। ফলে কেবল ৬০ দিনের বৃষ্টিপাতের ওপর মানবসৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব কতটুকু, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এই বিষয়ে লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের গ্রানথাম ইনস্টিটিউটের জলবায়ু বিজ্ঞানের শিক্ষক ফ্রেডরিক ওটো বলেন, ‘পাকিস্তানের ঐতিহাসিক নথিপত্রে দেখা গেছে, মানুষ বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করা শুরু করার পর থেকে এ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত