Ajker Patrika

হুতিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানল ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দরে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৪ মে ২০২৫, ১৬: ১৯
হুতি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইসরায়েলি বিমানবন্দরের পাশের রাস্তা। ছবি: সংগৃহীত
হুতি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইসরায়েলি বিমানবন্দরের পাশের রাস্তা। ছবি: সংগৃহীত

ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতিদের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দরের সীমানায় আঘাত হেনেছে। এই হামলায় কোনো প্রাণহানি হয়েছে কি না, এখনো জানা যায়নি। স্থানীয় সময় আজ রোববার এই হামলার ঘটনা ঘটে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমানায় আঘাত হেনেছে। আল-জাজিরার যাচাই করা ছবি ও ফুটেজ অনুযায়ী, এতে একটি রাস্তা ও একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে, আজ সকালে ক্ষেপণাস্ত্রটি আটকাতে তাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হয়েছে। তারা জানিয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। স্থানীয় চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আটজন আহত হয়েছেন।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ও অবরোধের প্রতিবাদে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরেই হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের হুতিরা। গোষ্ঠীটি বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করেছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, গাজায় ইসরায়েলের ১৮ মাসের বেশি সময়ের হামলায় অন্তত ৫২ হাজার ৪৯৫ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ অবরোধের কারণে ৫৭ জন না খেতে পেয়ে মারা গেছে।

ইয়েমেনের একটি টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে হুতি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বিমান সংস্থাগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এখন আর বিমান ভ্রমণের জন্য নিরাপদ নয়। এই হামলার পর ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় এলাকার এই বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কিছু ফ্লাইটকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরের সব প্রবেশপথও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। বিমানবন্দরগামী ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ইসরায়েলে সাইরেন বেজে ওঠে, এতে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যায়। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ঘটনাস্থলের ভিডিও থেকে দেখা গেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি বিমানবন্দরের সীমানার ভেতরের একটি সংযোগ সড়কে আঘাত হেনেছে। আশপাশের রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন। তিনি ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতের একটি উক্তির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যে আমাদের আক্রমণ করবে, আমরা তাকে সাতগুণ ফিরিয়ে দেব।’ এটি সম্ভবত গুরুতর শাস্তি বা ঐশ্বরিক বিচারের ইঙ্গিত।

ইসরায়েল রেসিলিয়েন্স পার্টির নেতা ও সাবেক যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্তজ এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছেন। কোনো প্রমাণ না দিয়েই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা পোস্টে বলেন, ‘ইরানই ইসরায়েলের দিকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে এবং এর দায় তাদেরই নিতে হবে। ইসরায়েল রাষ্ট্রের ওপর এই হামলা তেহরানে গুরুতর প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেবে।’

এদিকে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রায় প্রতিদিনই ইয়েমেনের বিভিন্ন এলাকায় বোমাবর্ষণ করলেও হুতিদের হামলা অব্যাহত রয়েছে। হুতি নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আজ সকালে ইয়েমেনে আরও অনেক মার্কিন বিমান হামলার খবর দিয়েছে। আল মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, মার্কিন যুদ্ধবিমান আল-জাওফ প্রদেশের আল-হাজম জেলায় ১০টি এবং মা’আরিব প্রদেশে তিনটি হামলা চালিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত