Ajker Patrika

গাজার সেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ৫০০ পাউন্ডের বোমা ফেলেছিল ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫, ১২: ৩৫
আল-বাকা ক্যাফের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা এমকে-৮২ বোমার ধ্বংসাবশেষ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
আল-বাকা ক্যাফের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা এমকে-৮২ বোমার ধ্বংসাবশেষ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

সম্প্রতি গাজা সিটির সমুদ্রতীরবর্তী আল-বাকা ক্যাফেতে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ৫০০ পাউন্ডের বোমা ব্যবহার করেছিল ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী (আইডিএফ)। ধ্বংসস্তূপের স্থানের ছবি বিশ্লেষণ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।

দুই অস্ত্র বিশেষজ্ঞ দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের কারণে তৈরি বিশাল গর্তই প্রমাণ করে সেখানে মার্কিন এমকে-৮২-এর মতো বড় ও শক্তিশালী বোমা ব্যবহার করে হামলা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এমকে-৮২ই ৫০০ পাউন্ডের বোমা নামে পরিচিত।

৫০০ পাউন্ডের বোমা একটি অত্যন্ত শক্তিশালী অস্ত্র। এটি মূলত মার্কিন বোমা। এটি বিস্ফোরণের স্থান থেকে আড়াই শ মিটার দূর পর্যন্ত এলাকায় ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে। বিস্ফোরণের স্থানে এটি দুই থেকে তিন মিটার পর্যন্ত গভীর গর্ত তৈরি করতে পারে। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ভয়ংকর একটি অস্ত্র দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।

জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি যদি সামরিক লাভের তুলনায় অসম হয়, অর্থাৎ ওই হামলা চালিয়ে প্রতিপক্ষের সামরিক অর্জন যা হবে, তার তুলনায় প্রাণহানি যদি বেশি হয় বা অসঙ্গতিপূর্ণ হয়—এক কথায় কোনো কারণ ছাড়া, অকারণে বেসামরিক প্রাণহানি হয় এমন কোনো হামলা কোনো পক্ষ চালাতে পারবে না।

কোন মাত্রা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হবে তা বিশদ আলোচনার বিষয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যে লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস হলে পুরো সংঘাতের গতিপথে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে, কেবল তেমন লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলায় নিহত হলেই বেসামরিক মানুষের মৃত্যুকে ন্যায্যতা দেওয়া সম্ভব হতে পারে।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক মুখপাত্র বলেছেন, ক্যাফেতে হামলার বিষয়টি পর্যালোচনাধীন এবং ‘হামলার আগে বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আকাশপথে নজরদারিসহ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।’

গত সোমবার, গাজা সিটিতে ওই ক্যাফেতে হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা। ওই হামলায় কমপক্ষে ৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। যাদের মধ্যে রয়েছে বহু নারী ও শিশুও। ওই হামলায় নিহত হয়েছেন এক সাংবাদিকও। সেখানে মূলত এক শিশুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর জানান, জন্মদিন আয়োজন উপলক্ষে সেখানে অনেক ভিড় ছিল। হঠাৎ ইসরায়েলি বোমা এসে উড়িয়ে দেয় সবকিছু। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘এখানে তো কোনো রাজনৈতিক বা সামরিক কার্যকলাপ চলছিল না। জন্মদিনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সেসবের কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে কেন এখানে হামলা চালানো হলো?’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে ক্যাফেটি। গাজা শহর থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ক্যাফেটিতে হামলা চালানো হয়। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুসারে, বিস্ফোরণে অনেকের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

হানি মাহমুদ বলেন, ‘বিস্ফোরণের তীব্রতা এত ভয়াবহ ছিল যে, মানুষের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রক্তের দাগ। মৃতদেহ এবং মাংসের টুকরো সরিয়েছে উদ্ধারকর্মীরা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিনা খরচে টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু, পেতে যা করতে হবে

বাগরামে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি ‘অগ্রহণযোগ্য’, পাকিস্তান–চীনের সঙ্গে এক সুর ভারতের

আমাকে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী অপহরণ করেছে: শহিদুল আলম

৭৫ কোটি টাকার কর ফাঁকি: এনবিআর কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

ভারতীয়রা ভিসা ছাড় পাবে না, স্বার্থ হাসিলে ‘দুদিনের বাণিজ্য মিশনে’ মুম্বাইয়ে স্টারমার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত