Ajker Patrika

ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা জরুরি, কয়েক দিনের মধ্যেই চুক্তি: আল–শারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। ছবি: আনাদোলু
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। ছবি: আনাদোলু

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনাকে ‘জরুরি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং আগামী ‘কয়েক দিনের মধ্যে’ এই আলোচনার ফলাফল প্রকাশিত হতে পারে। গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই মন্তব্য করেন তিনি।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। আল-শারার নেতৃত্বে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা গত ডিসেম্বরে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে ১৩ বছরব্যাপী চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়।

ইসরায়েল বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের পর ঘোষণা দেয় যে, সিরিয়ার সঙ্গে ১৯৭৪ সালের নিরাপত্তা চুক্তি ভেঙে গেছে। এরপর ইসরায়েল সিরিয়ার কিছু ভূখণ্ড দখল করে এবং দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালিয়ে কয়েকজন সিরীয় সেনাকে হত্যা করে। তবে নতুন সরকার গঠনের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিচ্ছে এবং সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছে।

তবে আল-শারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়াকে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করতে চাপ দেয়নি, বরং মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও যোগ করেন, ইসরায়েল ও সিরিয়ার সম্ভাব্য চুক্তি সিরিয়ার আকাশসীমা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা সম্মান করবে, যা ইসরায়েল বহু বছর ধরে লঙ্ঘন করেছে। এ ছাড়া, যেকোনো চুক্তি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে হতে হবে।

আল-শারা বলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত চুক্তি অন্যান্য চুক্তি অর্জনের পথ খুলতে পারে, তবে এই মুহূর্তে দুই দেশের মধ্যে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি আলোচনার বাইরে রয়েছে।

গত রোববারও ইসরায়েল সিরিয়ায় স্থল অভিযান চালিয়েছে। এ সময় ইসরায়েলি সেনারা দক্ষিণ-পূর্ব দেরারার সায়সুন ও জামলাহ শহরে তল্লাশি চালায়। এর একদিন আগে আল-শারা নিশ্চিত করেন যে, ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে, ১৯৭৩ সালের যুদ্ধের পর গঠিত ১৯৭৪ সালের চুক্তি পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে।

সিরিয়া ১৯৬৭ সালে ইসরায়েলের দখলে যাওয়া গোলান হাইটস পুনরায় দখল করতে ব্যর্থ হয়। ১৯৭৪ সালের চুক্তির অংশ হিসেবে একটি অসামরিকীকৃত অঞ্চল স্থাপন করা হয়। তবে বাশার আল-আসাদের পতনের পর ইসরায়েল ওই অঞ্চল ও এর বাইরে জমি দখল করে চুক্তি লঙ্ঘন করে।

গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আল-শারার মন্তব্যে বলা হয়, জুলাইয়ে সুয়াইদায় সংঘর্ষের আগে ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে নিরাপত্তা চুক্তি সম্পন্ন হতে ‘চার থেকে পাঁচ দিন’ বাকি ছিল। আল-শারা আরও বলেন, বাশার আল-আসাদের উৎখাতের পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ায় ১ হাজারের বেশি বিমান হামলা ও ৪০০-এর বেশি স্থল অভিযান চালিয়েছে, যা তিনি ‘খুবই বিপজ্জনক’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, সিরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় ইসরায়েলের দাবি ছিল—দামেস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি অসামরিকীকৃত অঞ্চল গঠন ও নো-ফ্লাই জোন তৈরি করা। বিনিময়ে ডিসেম্বরের পর ইসরায়েল যেসব ভূমি দখল করেছে, সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে। কেবল মাউন্ট হারমনের চূড়ায় সেনা চৌকি বজায় থাকবে।

আল-শারাও নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েল মাউন্ট হারমনেই থাকতে চায়। তিনি আরও বলেন, সিরিয়া ১৯৭৪ সালের চুক্তির মতো একটি চুক্তি চায় এবং বলেন, বাফার অঞ্চলের বাইরে ইসরায়েলের দখলে থাকা গোলান মালভূমির ভাগ্য আলোচনা করার সময় এখন আসেনি। এই ভূখণ্ড ইসরায়েল ১৯৮১ সালে অবৈধভাবে সংযুক্ত করে নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত