Ajker Patrika

ইরানে ইসলামিক শাসনের পতন ঘটলেই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে: পাহলভি

ইরানে ইসলামিক শাসনের পতন ঘটলেই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে: পাহলভি

ইরানের নির্বাসিত যুবরাজ রেজা পাহলভি বলেছেন, দেশটিতে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র না থাকলেই শুধু মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি অর্জন সম্ভব। তিনি তেহরানের সঙ্গে চুক্তি করার নীতি বন্ধ করতেও পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

ইরান ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে, পাহলভি হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল সংঘাতের জন্য ইরানের নীতিকে দায়ী করেছেন। পাহলভি বলেছেন, ‘ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের (ইরান) দুঃসাহসিকতা এবং উসকানি মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করেছে এবং বর্তমান পরিস্থিতির প্রাথমিক কারণ।’ 

যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর ডেমোক্রেসি ইন ইরান সম্মেলনের’ এক ফাঁকে পাহলভি বলেছেন—প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইরানের হস্তক্ষেপ এবং প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে এর সমর্থন ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে ইরানের শাসকদের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে বাধ্য করেছে। 

শুক্রবার ইরান ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে সহস্রাধিক মানুষকে মেরে ফেললে, এর প্রতিক্রিয়ায় গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরু করে দেশটি। ইসরায়েল ও হামাসের এই সংঘাতে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুতি সহ ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো হামাসকে সমর্থন করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে যোগ দিয়েছে। চলমান এসব সংঘর্ষ পুরো অঞ্চলকেই অস্থিতিশীল করে তুলেছে। 

ইরানের ইসলামিক মূল্যবোধের সরকারকে ‘দেউলিয়া’ আখ্যা দিয়ে এই সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় যেতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাহলভি। এর বদলে তিনি ইরানের জনগণের স্বাধীনতার জন্য চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানান। পাহলভির এই আহ্বান ইরানের সাম্প্রতিক ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনের দাবিকেই প্রতিধ্বনিত করে। ২০২২ সালে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মধ্য দিয়ে ইরানে এই আন্দোলন গতি পেয়েছিল। 

পাহলভি যুক্তি দিয়েছেন, ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পতন হলে মধ্যপ্রাচ্যের পারমাণবিক ও সন্ত্রাসবাদের হুমকি দূর হবে। এর ফলে সমগ্র অঞ্চলটিই একটি আমূল পরিবর্তনের দিকে ধাবিত হবে। 

সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা নিশ্চিত করেছে, উচ্চ-সমৃদ্ধকরণ ইউরেনিয়াম কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে ইরান। এটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম। অন্তত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ হয়েছে এমন ১৬৪ কেজির বেশি ইউরেনিয়ামের মজুত রয়েছে ইরানে। সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৯০ শতাংশে পৌঁছাতে খুব বেশি দেরি নেই দেশটির। পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয়। 

ন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর ডেমোক্রেসি ইন ইরান সম্মেলনে পাহলভি ইরানের ইসলামিক শাসনের পতনের পর দেশটির ভবিষ্যৎকে পথ দেখানোর জন্য বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ডিজাইন করা ‘ইরান সমৃদ্ধি প্রকল্প’ উন্মোচন করেছেন। তিনি ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে তীব্র অর্থনৈতিক বৈপরীত্য তুলে ধরেন। ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের আগে ইরানের মাথাপিছু জিডিপি দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিগুণ ছিল। কিন্তু পরে এই জিডিপি দক্ষিণ কোরিয়ার সাত ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। পাহলভি বলেন, ‘ইরানের উচিত ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দক্ষিণ কোরিয়া হওয়া। কিন্তু এর বদলে দেশটি এই অঞ্চলের উত্তর কোরিয়ায় পরিণত হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত