Ajker Patrika

কোরআন পোড়ানো: সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে শাস্তি দাবি সৌদি আরবের

আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৩, ১৭: ৫৩
কোরআন পোড়ানো: সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে শাস্তি দাবি সৌদি আরবের

ঈদুল আজহার দিনে স্টকহোমের সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে ইরাকের এক ব্যক্তি পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে দেয়। মুসলিম অধ্যুষিত অনেক দেশই এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জড়িত ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেছে। কূটনীতিকে ডেকে নিয়ে একই দাবি জানিয়েছে সৌদি আরব সরকার।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার জানায়, রিয়াদ একটি প্রতিবাদী বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে সুইডিশ কর্তৃপক্ষকে এই অবমাননাকর কাজ বন্ধ করার জন্য দ্রুত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। 

সৌদি আরবের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানও তেহরানে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে ইতিমধ্যে তলব করেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বিশ্বজুড়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য সুইডিশ সরকারকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী মনে করছে। 

অন্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং সংস্থাও কোরআন অবমাননার জন্য সুইডেনের তীব্র সমালোচনা করেছে। গত মাসে এক ইরাকি শরণার্থীকে কোরআনের একটি কপি পোড়াতে দেখা যায়। তিনি নিজেকে নাস্তিক বলে দাবি করেছিলেন। 

বৃহস্পতিবার ইরাক সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে। সেদিন বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসে বিক্ষোভকারীরা হামলা চালায়। গতকাল সুইডেন ঘোষণা করে, তারা সাময়িকভাবে ইরাক দূতাবাস স্টকহোমে সরিয়ে নিচ্ছে। 

কোরআন পোড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি তুরস্কের

অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বলেছে, স্টকহোমে ‘উসকানিমূলক কোরআন পোড়ানো’ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলে গণ্য হতে পারে না। 

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে অতি ডানপন্থী ড্যানিশ-সুইডিশ রাজনীতিবিদ রাসমুস পালুদানও স্টকহোমে প্রকাশ্যে কোরআনের একটি কপিতে আগুন লাগিয়ে দেন।

গতকাল সুইডিশ সম্প্রচারকারী এসভিটি জানিয়েছে, প্রকাশ্যে ধর্মীয় অনুভূতি অবমাননার জন্য পালুদানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক। 

সুইডেনের রাজধানীর তুর্কি দূতাবাসের বাইরে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও নয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

তুরস্কের বিচারমন্ত্রী ইলমাজ তুঞ্চ বলেছেন, সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড-সংক্রান্ত তথ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয়। 

কেন বিক্ষোভকারীদের পবিত্র গ্রন্থ পোড়ানোর অনুমতি সুইডেনে

সৌদি আরব ও ইরান উভয় দেশেই এই ‘অপরাধে’ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য অনেক দেশও এর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করছে। সুইডেনেও আগে একই ধরনের আইন ছিল। ১৯ শতকে ‘ব্লাসফেমি’র জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো। তবে এখন ব্লাসফেমিকে আর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। পরিবর্তে বাক্‌স্বাধীনতা সুইডিশ সংবিধান দ্বারা সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত। 

সুইডিশ সরকার বলেছে, তারা কোরআন-সংক্রান্ত বিক্ষোভ বন্ধ করতে সক্ষম নয়। কর্তৃপক্ষ এমন একজন ব্যক্তিকে প্রতিবাদেরও অনুমতি দিয়েছে, যিনি হিব্রু বাইবেল এবং খ্রিষ্টান বাইবেলের কপি পোড়াতে চেয়েছিলেন।

বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হবে কি না সে সিদ্ধান্ত পুলিশের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

সুইডিশ পুলিশ ইতিমধ্যেই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক মন্তব্যের অভিযোগ দায়ের করেছে। তিনি জুন মাসে কোরআনের একটি কপি পুড়িয়ে দেন। চলতি সপ্তাহে তিনি ফের ধর্মগ্রন্থটির অবমাননা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। প্রসিকিউটররা তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করবেন কি না—তা এখনো সেই সিদ্ধান্ত নেননি। 

তবে কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে ‘ইসলামোফোবিক’ বলে নিন্দা করেছে সুইডিশ সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত