Ajker Patrika

মোদির কাছ থেকে নেতানিয়াহুকে শিক্ষা নিতে বললেন ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় সম্মানকে কৌশলগত সম্পদে কীভাবে রূপান্তর করা যায়, ইসরায়েলের তা ভারতের কাছ থেকে শেখা উচিত—এমনটাই মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষানীতি বিশেষজ্ঞ জাকি শালোম। দ্য জেরুজালেম পোস্টে প্রকাশিত এক মতামত নিবন্ধে মিসগাভ ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড জায়োনিস্ট স্ট্র্যাটেজির সিনিয়র ফেলো শালোম আরও বলেন, মার্কিন শুল্কনীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কঠোর অবস্থান এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের সময় তাঁর দৃঢ় মনোভাব প্রমাণ করে যে ‘রাষ্ট্রীয় সম্মান কোনো বিলাসিতা নয়, বরং একটি সুদূরপ্রসারী কৌশলগত সম্পদ’।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করায় ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক শীতল হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে মধ্যস্থতার দাবি করেছিলেন, তা প্রকাশ্যে নাকচ করে দেয় মোদি সরকার।

শালোম লিখেছেন, ‘মোদির কঠোর প্রতিক্রিয়া শুধু অর্থনৈতিক বা সামরিক টানাপোড়েনের কারণে ছিল না। এর মূল ভিত্তি ছিল ব্যক্তিগত ও জাতীয় সম্মানবোধে আঘাত পাওয়া। তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চারবারের ফোনকলও গ্রহণ করেননি। ইসরায়েলের এ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’

তিনি গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালে বোমা হামলার ঘটনায় ইসরায়েলি সরকার ও সেনাবাহিনীর ‘তড়িঘড়ি’ প্রতিক্রিয়ার কড়া সমালোচনা করেন। ওই হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁর মতে, এ ঘটনায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ), সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক মহলের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা যেমন করেছে, তেমনি ঘটনাটির পরিণতি নিয়ে একধরনের উদ্বেগ—এমনকি আতঙ্কেরও প্রকাশ ঘটিয়েছে।

শালোম আরও বলেন, তাদের পদক্ষেপে এমন একটি বার্তা গিয়েছে যে নিরীহ সাধারণ মানুষের হত্যার দায় আংশিকভাবে হলেও স্বীকার করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে এ বার্তা একটি বিপজ্জনক নজির তৈরি করতে পারে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ইসরায়েলের পরিস্থিতির সঙ্গে ভারতের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভূতপূর্ব মৌখিক আক্রমণের মুখে পড়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কখনো তড়িঘড়ি করে ক্ষমা চাননি। বরং তিনি শক্ত অবস্থান নিয়েছেন এবং জাতীয় মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছেন।

শালোম মন্তব্য করেন, হয়তো তাঁর অবস্থান অনেকের কাছে কঠোর মনে হয়েছিল, কিন্তু এতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি পরিষ্কার বার্তা পৌঁছেছে—ভারতকে কোনোভাবেই অধস্তন বা তুচ্ছ রাষ্ট্র হিসেবে দেখা যাবে না।

শালোমের মতে, এর বিপরীতে খান ইউনিস ঘটনার পর ইসরায়েল অতিরিক্ত স্বচ্ছতা ও উদ্বেগ প্রদর্শন করেছে। এই কৌশল হয়তো স্বল্পমেয়াদি ক্ষতি কমানোর চেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে, তবে দীর্ঘ মেয়াদে এটি কৌশলগত স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

তিনি উপসংহারে বলেন, জটিল ও কঠিন পরিস্থিতিতেও একটি দেশের জাতীয় মর্যাদা রক্ষা করা জরুরি। তিনি বলেন, ‘ভারতের কাছ থেকে আমরা শিখি, জাতীয় মর্যাদা কোনো বিলাসিতা নয়, বরং সুদূরপ্রসারী কৌশলগত সম্পদ। ইসরায়েল যদি নিজস্ব অবস্থান ও নিরাপত্তা দৃঢ় করতে চায়, তবে তাকে বিশ্বের সামনে অটল স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত