Ajker Patrika

এবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের ৬ কর্মী নিহত

এবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের ৬ কর্মী নিহত

ফিলিস্তিনের গাজায় নজিরবিহীন হামলা চালাল ইসরায়েল। সেখানকার নুসেইরাত এলাকার আল-জাওনি বিদ্যালয়ে হামলায় জাতিসংঘের ছয় কর্মীসহ ১৮ জন নিহত হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, স্থাপনাটি নিয়ন্ত্রণ করত হামাস। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে। 

এমন সময়ে এই হামলার ঘটনা ঘটল, যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, আহত ফিলিস্তিনিদের ২৫ শতাংশই এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জীবনযাপনেই ভয়াবহ পরিবর্তন এসেছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হলে দীর্ঘ চিকিৎসাসেবার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। 

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এর পরপরই হামাসকে নির্মূলের ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। এই যুদ্ধে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জন মারা গেছে। এ নিয়ে এই যুদ্ধে ৪১ হাজার ১১৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৯৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। 

নুসেইরাত এলাকার যে বিদ্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর এটি শরণার্থীশিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেখানে প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস। এর আগেও সেখানে হামলা হয়েছে। বুধবারের ওই হামলায় এটি একেবারে ধসে গেছে। 

এই হামলার পর গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো সেখানে হামলা চালাল ইসরায়েল। এতে ১৮ জন মারা গেছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এক এক্স বার্তায় বলা হয়েছে, সেখানে জাতিসংঘের যে কর্মীরা মারা গেছেন, তাঁরা শরণার্থীদের সেবা দিতে কাজ করতেন। বিদ্যালয় এবং বেসামরিক স্থাপনা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে এবং এগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা যাবে না। এ নিয়ে ২২০ জন জাতিসংঘের কর্মী গাজায় প্রাণ হারালেন। 

এদিকে হামলার পর এ নিয়ে সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, গাজায় যা ঘটছে, তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। যে বিদ্যালয়টি শরণার্থীশিবির হিসেবে ব্যবহার করা হতো, সেখানে প্রায় ১২ হাজার মানুষ থাকত। সেখানে আবার ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। 

ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে। বিশেষ করে জনসাধারণের নিরাপত্তা ও রক্ষার ক্ষেত্রে এটা বেশি ঘটছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এটা মেনে নেওয়া উচিত হবে না। 

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই এলাকার ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে বেশির ভাগই শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। ডব্লিউএইচও বলছে, এর মধ্যে কয়েক হাজার নারী ও শিশু রয়েছে, যাদের ক্ষতের সংখ্যা একাধিক। আহতদের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার মানুষের কোনো না কোনো অঙ্গ কেটে ফেলতে হয়েছে। এ ছাড়া অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার মানুষের। স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে হলে তাদের দীর্ঘ চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এর বাইরে অনেকেরই মেরুদণ্ড, ব্রেনেও আঘাত লেগেছে। অনেকেরই শরীর ভয়ংকরভাবে পুড়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত