Ajker Patrika

ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা বন্ধ, গাজার প্রাণকেন্দ্রে ঢুকছে ইসরায়েলি ট্যাংক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

গাজা সিটির প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত দুটি এলাকায় ইসরায়েলি ট্যাংক দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একই সঙ্গে পুরো গাজা উপত্যকায় ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা বন্ধ হয়ে গেছে, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে স্থল অভিযানের আরও তীব্র আকার নেওয়ার।

আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে গাজার পূর্ব উপকণ্ঠ নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে শেখ রাদওয়ান ও তেল আল-হাওয়া এলাকায় প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। এখান থেকে তারা শহরের কেন্দ্র ও পশ্চিমাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হতে পারে, যেখানে লাখো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

ইসমাইল নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সব সময় খারাপ সংকেত দেয়। এর মানে ভয়াবহ কিছু ঘটতে যাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গাজা সিটির বাসিন্দা।

ফিলিস্তিনি টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় তাদের প্রধান নেটওয়ার্ক রুট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

নিজেদের সর্বশেষ বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, তারা গাজা সিটিতে অভিযান সম্প্রসারণ করছে এবং ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস’ ও ‘সন্ত্রাসীদের নির্মূল’ করছে। একই সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস ও রাফাহতেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জাতিসংঘসহ অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েল নির্ধারিত গাজার মানবিক এলাকাগুলোর অবস্থা ভয়াবহ। সেখানে আশ্রয়, খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতি চরমে পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন শিশু। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ কারণে অন্তত ৪৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছে।

গাজার গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে শুধু ১১ আগস্ট থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৪২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ শতাংশ গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলে এবং ৪৪ শতাংশ মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে নিহত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, শেখ রাদওয়ান এলাকায় ট্যাংক ঢুকে পড়েছে এবং চালকবিহীন চারটি বিস্ফোরকবাহী গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এর ফলে বহু বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। একই ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে তেল আল-হাওয়াতেও, যেখানে সড়কেও ট্যাংক দেখা গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই বছরের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ফলে মোট ফিলিস্তিনি মৃত্যুর সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত ৬৫ হাজার ছাড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় ও ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে চলমান এই যুদ্ধের সূত্রপাত, যা এখনো চলমান এবং দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত