Ajker Patrika

ইরানে সরকারপন্থীদের উল্লাস, ভীত-সন্ত্রস্ত বিরোধীরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ২১: ১০
আজ ইরানের রাজধানী তেহরানের একটি সড়কের চিত্র। ছবি: বিবিসি
আজ ইরানের রাজধানী তেহরানের একটি সড়কের চিত্র। ছবি: বিবিসি

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরানের রাস্তায় আজ মঙ্গলবার এক ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। শহরটিতে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও প্রয়াত নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির বিশাল পোস্টারের সামনে দিয়ে মোটরসাইকেল ও গাড়িবহর ছুটে চলছে। তারা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পতাকা হাতে নিয়ে নতুন উদ্দীপনায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে।

সেই সঙ্গে উচ্চস্বরে বাজছে সরকার-সমর্থিত গানের সুর। এসব গানে ইরান সরকারের শক্তি ও প্রতাপের প্রশংসা করা হচ্ছে।

তবে উৎসবমুখর এসব দৃশ্যের ভেতরেও রাজধানী তেহরানে বিরাজ করছে একধরনের অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে মার্কিনসমর্থিত যুদ্ধবিরতির দিকে বিশ্ব যখন তাকিয়ে রয়েছে, তখন ইরানের ভেতর থেকে উদ্বেগজনক খবর আসতে শুরু করেছে। দেশটির ভেতরে ভয় ও দমন-পীড়নের পরিবেশ ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশ্লেষক ও মানবাধিকারকর্মীরা।

পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, লড়াই থামার পর তেহরান হয়তো দেশের ভেতরে আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে। বিশেষ করে, ইরানের নিরাপত্তাব্যবস্থায় ইসরায়েলের অনুপ্রবেশের ঘটনায় শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

আজ ইরানের কেরমানশাহ প্রদেশের কৌঁসুলি জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বিঘ্নের অভিযোগে ইতিমধ্যেই অন্তত ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন ইউরোপীয় নাগরিকও রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।

হামিদরেজা কারিমি নামের ওই কৌঁসুলি আরও জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অল্প কয়েকজন গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত। অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তাঁরা শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রচারণায় লিপ্ত ছিলেন।

গত কয়েক দিনে সংঘাতের মধ্যেও ইরানে অন্তত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা কিংবা সন্দেহভাজন গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আরও অনেককে বিভিন্ন শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশটির পার্লামেন্ট নতুন একটি আইন পাস করেছে, যা গুপ্তচরদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুততর করে তুলেছে।

বিবিসিকে তিনি বলেছেন, ‘আগের আইনে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই মামলা চালানো যেত না। এখন পার্লামেন্ট আমাদের হাতে এমন ক্ষমতা দিয়েছে, যাতে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারি।’

এই নতুন আইন ও গ্রেপ্তারের ঢল দেখে পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা—ইরানে সরকারবিরোধী কণ্ঠ আরও কঠোরভাবে দমন করা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত