Ajker Patrika

দিল্লিতে ৭ হাজার মানুষের বৌদ্ধ ধর্মে শপথ, বিজেপির প্রতিবাদ

দিল্লিতে ৭ হাজার মানুষের বৌদ্ধ ধর্মে শপথ, বিজেপির প্রতিবাদ

ভারতের রাজনীতিতে বিতর্ক যেন শেষই হচ্ছে না। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে কংগ্রেস নেতার ‘অশালীন’ মন্তব্যের পর এবার আম আদমি পার্টির (এএপি) এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়েক হাজার লোককে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হলে বিজেপি এবং এএপির মধ্যে তুমুল বাগ্যুদ্ধ শুরু হয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এএপি নেতা ও দিল্লি সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাজেন্দ্র পাল গৌতম এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ‘ধম্ম চক্র প্রবর্তন দিন’—নামে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার মানুষ বৌদ্ধ ধর্মের নামে শপথ নেন। ১৯৫৬ সালের অক্টোবর মাসে ভীমরাও আম্বেদকর তাঁর কয়েক লাখ ভক্তসহ বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর স্মরণেই প্রতিবছর এ দিনটি উদ্যাপন কারা হয়। 

ভীমরাও আম্বেদকর সেদিন ২২টি শপথ গ্রহণ করেছিলেন। তার মধ্যে একটি ছিল হিন্দু ধর্মের দেব–দেবীদের অস্বীকার। আজ বৃহস্পতিবারের সেই অনুষ্ঠানেও আম্বেদকরের শপথগুলোর পুনরাবৃত্তি করা হয়। অনুষ্ঠানে এএপির মন্ত্রী রাজেন্দ্র পাল গৌতমসহ উপস্থিতদের, ‘আমার ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বরের প্রতি কোনো বিশ্বাস নেই এবং আমি তাদের পূজাও করি না’—শপথবাক্য পাঠ করতে শোনা যায়। 

এদিকে, এএপির মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এমন ধর্মান্তরকরণের কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি। দলটি বলেছে, এই অনুষ্ঠান হিন্দু এবং বৌদ্ধ উভয় ধর্মের জন্যই অপমান। বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি বলেছেন, এএপির মন্ত্রীরা দাঙ্গা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এমন মন্ত্রীকে দ্রুত দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করতে যাচ্ছি।’ 

বিজেপির দিল্লি শাখা তাদের টুইটার পেজে বলেছে, এএপির মন্ত্রী হিন্দুদের বিরুদ্ধে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছেন। টুইটে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে বলা হয়েছে, ‘দেখুন, কীভাবে কেজরিওয়ালের মন্ত্রীরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। নির্বাচনের সময় হিন্দুর ধর্মের ভেক ধরা কেজরিওয়াল এবং এএপির আসল চরিত্র সবার সামনে উন্মুক্ত হয়ে গেছে। জনগণ শিগগিরই হিন্দু বিরোধী এএপি পার্টিকে উপযুক্ত জবাব দেবে।’ 

বিজেপির প্রতিক্রিয়ার জবাবে রাজেন্দ্র পাল গৌতম দলটিকে ভারতের সংবিধান মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘বিজেপি নিজেই জাতীয়তাবাদ বিরোধী। আমার বৌদ্ধ ধর্মের ওপর আস্থা রয়েছে, তাতে কারও কোনো অসুবিধা কেন হবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘তাদের মামলা করতে দিন। সংবিধান আমাদের যেকোনো ধর্ম অনুসরণ করার স্বাধীনতা দিয়েছে। বিজেপি এএপির ভয়ে ভীত। ফলে তাঁরা কেবল আমার বিরুদ্ধে ভুয়া মামলাই দায়ের করতে পারবে।’ 

উল্লেখ্য, রাজেন্দ্র পাল গৌতমের প্রতিষ্ঠান জয় ভীম মিশন আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে ৭ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিল। যাদের অধিকাংশই দলিত শ্রেণির। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নীরবে নেপথ্যে যেভাবে মামদানির জয় নিশ্চিত করলেন স্ত্রী রামা দুয়াজি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
স্ত্রী রামা দুয়াজির সঙ্গে জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রী রামা দুয়াজির সঙ্গে জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ে আলোচনায় এসেছেন জোহরান মামদানি। তবে তাঁর এই সাফল্যের নেপথ্যে ছিলেন স্ত্রী রামা দুয়াজি, যিনি নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন পুরো প্রচার অভিযানে।

ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট মামদানির নির্বাচনী প্রচারের স্বতন্ত্র চেহারা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর উপস্থিতি গড়ে তোলার পেছনে ২৮ বছর বয়সী এই শিল্পীর অবদানই সবচেয়ে বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস শহরে বেড়ে ওঠা ও দুবাইয়ে পড়াশোনা করা সিরীয়-মার্কিন রামা দুয়াজি চার বছর আগে নিউইয়র্কে যান। তিনি মামদানির নির্বাচনী প্রচারের লোগো থেকে শুরু করে সামগ্রিক নকশা তৈরি করেন; বিশেষ করে, উজ্জ্বল হলুদ, কমলা ও নীল রঙের ব্র্যান্ডিং, যা পরে তাঁদের তৃণমূল আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে।

নির্বাচনের আগপর্যন্ত দুয়াজি কোনো বিতর্কসভা বা প্রচার সমাবেশে অংশ নেননি এবং অনলাইনে খুব কমই প্রচারণা-সম্পর্কিত কিছু শেয়ার করেছেন। ব্যতিক্রম ছিল কেবল জুন মাস। সে সময় মামদানির অপ্রত্যাশিত প্রাইমারি জয়ের পর ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছিলেন, ‘এরচেয়ে বেশি গর্বিত হওয়া সম্ভব নয়।’

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের দিন সকালে ভোট দেওয়ার সময় মামদানির সঙ্গে ছিলেন দুয়াজি। পরে দ্য ডেইলি শোতে তাঁকে মেয়র প্রার্থীর পাশে দেখা যায়।

এ ছাড়া কুইন্সের ফরেস্ট হিলস স্টেডিয়ামে ১০ হাজারের বেশি সমর্থকের ভিড়ে দুয়াজিকে দেখা গেছে; যেখানে ডেমোক্র্যাট নেতা আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ ও সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে শেষ নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দেন মামদানি।

মামদানি ও দুয়াজির পরিচয় ২০২১ সালে ডেটিং অ্যাপ হিঞ্জ-এ। সে বছর নিউইয়র্ক রাজ্য পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন মামদানি। তাঁদের প্রথম দেখা হয়েছিল ব্রুকলিনে—ইয়েমেনি ক্যাফে ‘কাহওয়া হাউসে’।

২০২৪ সালের অক্টোবরে মেয়র পদে প্রার্থিতা ঘোষণার ঠিক আগে তাঁরা বাগদান করেন। পরে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে লোয়ার ম্যানহাটনে তাঁদের বিয়ে হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ব্রাজিলীয় মডেলের ছবি দিয়ে ২২টি ভোটার আইডি, রাহুলের ‘এইচ বোমা’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী আজ বুধবার তাঁর বহুল প্রতীক্ষিত ‘এইচ বোমা’ ফেলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, গত বছরের হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতি হয়েছে। তাঁর দাবি, হরিয়ানায় মোট ২ কোটি ভোটারের মধ্যে ২৫ লাখ ভোট চুরি হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি আটজন ভোটারের একজন ভুয়া, যা মোট ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ। তবে এখানেই শেষ নয়। রাহুল দেখিয়েছেন, ব্রাজিলীয় এক মডেল হরিয়ানা নির্বাচনে ২২ বার ভোট দিয়েছেন।

রাহুল গান্ধী বলেন, নির্বাচনের পর বহু কংগ্রেস প্রার্থী তাঁকে জানিয়েছেন—কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। সব এক্সিট পোল অর্থাৎ বুথফেরত জরিপে কংগ্রেসের জয়ের পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু ফল এল উল্টো। জিতল বিজেপি। তিনি সাংবাদিকদের সামনে বিজেপি নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিং সাইনির একটি ভিডিও দেখান। সেখানে নির্বাচনের ফল ঘোষণার দুই দিন আগে সাইনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘ব্যবস্থা হয়ে গেছে, বিজেপি জিতছে।’

রাহুল গান্ধীর প্রশ্ন, ‘এই ব্যবস্থা বলতে কী বোঝানো হয়েছিল? তখন সব দলই বলছিল কংগ্রেস বিপুল ব্যবধানে জিতছে, অথচ তিনি নিশ্চিন্ত মুখে বলছেন বিজেপি জয়ী।’ তিনি আরও বলেন, হরিয়ানার ইতিহাসে এই প্রথমবার ডাকযোগে ভোটের ফল বুথের ভোটের বিপরীত এসেছে। তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্ন করছি, শতভাগ প্রমাণসহ। আমরা নিশ্চিত, কংগ্রেসের বিজয়কে পরাজয়ে পরিণত করতে একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছিল।’

তাঁর দাবি, কংগ্রেস আটটি আসনে খুব সামান্য ব্যবধানে হেরেছে। এর মধ্যে একটি আসনে মাত্র ৩২ ভোটে। সব মিলিয়ে ব্যবধান দাঁড়ায় ২২ হাজার ৭৭৯ ভোট। তিনি বলেন, ‘অর্থাৎ পুরো হরিয়ানা নির্বাচন কংগ্রেস ২২ হাজার ৭৭৯ ভোটে হেরেছে।’

গান্ধী উদাহরণ হিসেবে দেখান, ভোটার তালিকায় এক নারীর ছবি ২২ বার ব্যবহার করা হয়েছে। ওই নারীর ছবিটি আসলে এক ব্রাজিলীয় মডেলের, যা একটি স্টক ফটো ওয়েবসাইট থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়। তিনি বলেন, ওই মডেলের ছবি বিভিন্ন নামে তালিকাভুক্ত। যেমন, ‘সুইটি, সীমা, সরস্বতী’ ইত্যাদি। তিনি বলেন, ‘এই নারী ১০টি ভিন্ন বুথে ভোট দিতে পারেন। মানে, এটা কোনো এলোমেলো ভুল নয়, বরং একটি কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত অপারেশন।’

তিনি আরও জানান, একটি আসনে ১০০টি ভোটার আইডিতে একই নারীর ছবি পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘এই নারী চাইলে ১০০ বার ভোট দিতে পারেন। এর মাধ্যমে ভোটার তালিকায় এমন জায়গা তৈরি করা হয় যাতে বিজেপির লোকজন অন্য রাজ্য থেকে এসে ভোট দিতে পারে।’

আরেক নারীর ছবিও তিনি দেখান, যা ২২৩ বার ব্যবহার হয়েছে দুটি বুথের ভোটার তালিকায়। তাঁর অভিযোগ, ‘এই কারণেই নির্বাচন কমিশন বুথের সিসিটিভি ফুটেজ ধ্বংস করে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষে চাইলে এক সেকেন্ডেই ভুয়া ভোটার শনাক্ত করা সম্ভব। তাহলে কেন তারা করে না? কারণ, তারা বিজেপিকে সাহায্য করছে।’ এরপর তিনি একই ছবি কিন্তু ভিন্ন নামসহ ভোটার আইডির আরও কিছু উদাহরণ দেখান। তাঁর দাবি, নির্বাচনের আগে হরিয়ানার ভোটার তালিকা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার নাম মুছে ফেলা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রিটেনে সিগারেটসেবীর চেয়ে ভ্যাপ সেবনকারী বেশি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৫
অপ্রাপ্তবয়স্ক ভ্যাপ গ্রহণকারীও বেড়েছে ব্রিটেনে। ছবি: সংগৃহীত
অপ্রাপ্তবয়স্ক ভ্যাপ গ্রহণকারীও বেড়েছে ব্রিটেনে। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটেনে ভ্যাপ বা ই-সিগারেট সেবনের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছে, দেশটিতে প্রথমবারের মতো ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে সিগারেটসেবীর চেয়ে ই-সিগারেট বা ভ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি।

২০২৪ সালের জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৫.৪ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দৈনিক বা মাঝেমধ্যে ভ্যাপ ব্যবহার করেন, যেখানে সিগারেট সেবনকারীর সংখ্যা ৪.৯ মিলিয়ন।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে দৈনিক ভ্যাপ ব্যবহার সবচেয়ে বেশি এবং নারীদের মধ্যে এর ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে।

গত এক দশকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায় ধূমপানের হার ক্রমাগত কমছে। অন্যদিকে ভ্যাপিং তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ বলে তরুণদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস জানিয়েছে, সিগারেট বা ধূমপানের তুলনায় ভ্যাপিং বা ই-সিগারেট খুব সামান্য ঝুঁকি বহন করে। কারণ, সিগারেট পুড়লে হাজারো রাসায়নিক নির্গত হয়, যার বেশির ভাগই বিষাক্ত ও ক্যানসার সৃষ্টিকারী।

তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ভ্যাপিং সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। শিশু ও অধূমপায়ীদের এটি কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়। সিগারেট ছেড়ে ভ্যাপিংয়ে গেলে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়; তবে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি।

ধূমপানবিরোধী সংস্থা অ্যাকশন অন স্মোকিং অ্যান্ড হেলথ (এএসএইচ) জানিয়েছে, ধূমপানের হার কমা জনস্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক খবর। তবে যাঁরা এখনো ধূমপান করছেন, তাঁরা একটি আসক্তির চক্রে বন্দী, যা শেষ পর্যন্ত তাঁদের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে।

সংস্থাটি বলছে, যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ধূমপানের কারণে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যেসব অঞ্চলে ধূমপানের হার এখনো বেশি, সেখানে বিনিয়োগ ও সহায়তা বাড়াতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে এএসএইচ।

ওএনএসের অপিনিয়নস অ্যান্ড লাইফস্টাইল সার্ভে অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে বর্তমানে ১৬ বছর ও তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন বা মাঝেমধ্যে ই-সিগারেট ব্যবহার করে, যা ধূমপানকারীর ৯ দশমিক ১ শতাংশ সংখ্যার চেয়ে সামান্য বেশি।

১৯৭০-এর দশকে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ধূমপায়ী ছিল। সে সময় ৩০ শতাংশ মানুষ ধূমপান ত্যাগ করেছিল। কিন্তু সেই সময় থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ২০০৬-২০০৭ সালে বদ্ধ জনসমাগমের স্থান এবং কর্মক্ষেত্রে ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ২০১৫ সালে শিশুদের সঙ্গে গাড়িতে ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু করা হয়। এরপর ২০১৭ সালে সাধারণ সিগারেট প্যাকেজিং চালু করা হয়। এতে ধূমপায়ীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

ওএনএস বলছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে। ২০২৪ সালে ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ধূমপান ছেড়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৭০ দশমিক ৩ শতাংশ।

এ ছাড়া বর্তমানে সংসদে প্রক্রিয়াধীন টোব্যাকো অ্যান্ড ভ্যাপস বিল অনুযায়ী ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি বা তারপর জন্ম নেওয়া কেউ যুক্তরাজ্যে তামাক কেনার অনুমতি পাবে না।

দোকানগুলোতে ভ্যাপের প্যাকেজিং এবং প্রদর্শনের নিয়মে কড়াকড়ি আনা হচ্ছে, যাতে এগুলো শিশুদের কাছে আকর্ষণীয় না দেখায়।

এ ছাড়া পরিবেশ রক্ষা এবং শিশু ও তরুণদের ভ্যাপিং কমাতে ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে যুক্তরাজ্যে একবার ব্যবহার করা যায়, এমন বা ডিসপোজেবল ভ্যাপ বিক্রি বা সরবরাহ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সীদের নিকোটিন পাউচ এবং অন্যান্য নিকোটিন পণ্য বিক্রি করা নিষিদ্ধ হবে।

ওএনএসের জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে ১৬ বছর এবং তার বেশি বয়সীদের মধ্যে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ভ্যাপ বা ই-সিগারেট ব্যবহার করছে, যা ২০২৩ সালের ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও ৩ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ মাঝেমধ্যে ব্যবহার করে।

এর মানে বর্তমানে ৫.৪ মিলিয়ন মানুষ ভ্যাপ ব্যবহার করছে, যা ২০২৩ সালের ৫.১ মিলিয়নের তুলনায় বেশি।

ধূমপানের বিরুদ্ধে লড়াই করা সংস্থা এএসএইচের প্রধান নির্বাহী হ্যাজেল চিসম্যান বলেন, এখন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে কখনোই ধূমপান করেননি, এমন ব্যক্তিরা এখন ভ্যাপিং শুরু করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোদির ‘সরকার উল্টে দেওয়ার’ হুমকি মমতার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩৬
মমতা হুমকি দিয়ে বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি মোদির সরকার উল্টে দেবেন। ছবি: সংগৃহীত
মমতা হুমকি দিয়ে বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি মোদির সরকার উল্টে দেবেন। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া এসআইআর কার্যক্রম নিয়ে বিজেপি এবং ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওপর ব্যাপক আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কোনো প্রকৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে না। যদি যায়, তাহলে নরেন্দ্র মোদির সরকারকে টেনে নামাবেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করে বলেছেন—যদি রাজ্যের তালিকা থেকে একটিও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ যায়, তাহলে নরেন্দ্র মোদির সরকার পতন অনিবার্য হবে। তিনি রাজ্যের নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি কাগজপত্র না থাকে, আমাদের শিবিরে আসুন। আমরা যেকোনো মূল্যে সাহায্য করব। প্রয়োজনে থালাবাটি বিক্রি করে হলেও সাহায্য করব।’

পশ্চিমবঙ্গে গতকাল মঙ্গলবারই এসআইআর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ৮০ হাজারের বেশি মাঠকর্মী ঘরে ঘরে গিয়ে জরিপ শুরু করেছেন। এদিন কলকাতায় ৪ কিলোমিটার পদযাত্রার মাধ্যমে এসআইআর-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানা মমতা ও তাঁর ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পদযাত্রা শুরু হয় ড. বিআর আম্বেদকরের ভাস্কর্যের সামনে থেকে এবং শেষ হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মভূমি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে।

পদযাত্রার পর জনসমক্ষে মমতা বলেন, এসআইআর হলো ‘নীরব, অদৃশ্য কেলেঙ্কারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ভয় পাবেন না। সবই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হচ্ছে। প্রয়োজনে আইনি সহায়তা নিন। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের বলছি, ভয় পাবেন না, দিদি আছেন। যেকোনো উপায়ে রক্ষা করব। যদি জোরপূর্বক বিতাড়ন করা হয়, সবাই মিলে তা মোকাবিলা করতে হবে। সংখ্যালঘুদেরও কোনো ভয় নেই।’

এসআইআর প্রক্রিয়ার ‘হঠাৎ বাস্তবায়ন’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শেষবার এসআইআর হয়েছিল ২০০১ সালের পর। ২০০২-২০০৩ সালে কোনো নির্বাচন হয়নি। ২০০৪ সালে নির্বাচনের আগে এসআইআর চলেছিল দেড় থেকে দুই বছর ধরে। আজ এত তাড়াহুড়া কেন? একটিও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ গেলে, আমি বিজেপি সরকার উল্টে দেব।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নাম না নিয়ে তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি এত বড় জাতীয়তাবাদীই হবেন, তাহলে বলুন—চার নির্বাচনী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল, আসাম এবং তিনটি বিরোধী দল শাসিত রাজ্যে এসআইআর চালু করলেন, কিন্তু আসামে কেন নয়? ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঘোষণা করবেন। তিন মাসে কি ১০ কোটি মানুষকে এই ফরম পূরণ করানো সম্ভব? কেন নির্বাচন পরে করা যায়নি? আসামে কেন নয়? কারণ আপনি হেরে যেতেন। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, মিথ্যা ভোট দিয়ে সব সময় জিততে পারবেন না।’

মোদির দল বিজেপির দাবি, এসআইআর প্রক্রিয়া ‘অবৈধ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি’দের তালিকা থেকে সরিয়ে দেবে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা কোথা থেকে আসবে? নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ থেকে। সেখানেও কি এসআইআর হলো? বাংলাদেশিরা ত্রিপুরা ও আসাম থেকেও আসে। আসামে ১৯ লাখ নাম বাদ পড়েছিল, যার মধ্যে ১২ লাখ হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মের মানুষ। ক্ষমতায় থাকার কারণে বিজেপি যা ইচ্ছে তাই করছে।’

অমিত শাহের দ্বিচারী নীতির সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘তিনি পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির সমালোচনা করেন, অথচ নিজের ছেলেকে আইসিসির সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ দিয়েছেন।’ নির্বাচন কমিশনের ওপর আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘কারও পিতামাতার নাম তালিকায় নেই, তাহলে কি আবার প্রমাণ দিতে হবে যে তারা এই রাজ্যে জন্মেছেন? কমিশন তালিকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। ভুলের দায়িত্ব কে নেবে? নির্বাচনের পর করাই ভালো হতো না কি? জন্ম ও স্বাধীনতার এত বছর পরও কি নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত