Ajker Patrika

ফের অশান্ত মণিপুর, পাঁচ জেলায় বন্ধ ইন্টারনেট

কলকাতা প্রতিনিধি  
রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত একটি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। ছবি: পিটিআই
রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত একটি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। ছবি: পিটিআই

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে ফের অশান্তির ছায়া নেমে এসেছে। মেইতেই সংগঠন অরামবাই টেঙ্গোলের নেত্রী আসেম কাননসহ চারজন নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করায় রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকার উপত্যকার পাঁচটি জেলায় পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।

গত শুক্রবার (৭ জুন) রাত ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, থৌবাল, বিষ্ণুপুর এবং কাকচিং জেলায় সব ধরনের মোবাইল ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড এবং ভিপিএন পরিষেবা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, সমাজবিরোধী শক্তিগুলো যাতে ভুয়া খবর বা গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতিকে আরও অশান্ত করতে না পারে, সে জন্যই এই পদক্ষেপ।

এদিকে, আসেম কাননের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে অরামবাই টেঙ্গোল সংগঠনের সমর্থকেরা ইম্ফল ও সংলগ্ন অঞ্চলে রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পুলিশের সঙ্গে তাদের একাধিকবার ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটেছে। কয়েকটি এলাকায় গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সরকারি সম্পত্তিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

রাজ্য সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করেছে। তবে, তাতেও থামেনি বিক্ষোভ। সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, তারা আগামী ১০ দিনের জন্য লাগাতার ধর্মঘট ও প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।

অন্যদিকে, গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে একাধিক মেইতেই সম্প্রদায়ভুক্ত বিধায়ক মুখ খুলেছেন। অভিযোগ, এই গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এতে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ইতিমধ্যেই এই নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের জাতিগত দাঙ্গায় সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলাগুলো মণিপুর থেকে গুজরাটে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে গোটা উপত্যকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে গৃহবন্দী। দোকানপাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

মণিপুর সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাই সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার। কেউ আইন হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত