Ajker Patrika

সংস্কৃত ভাষার প্রচারে মোদি সরকারের ব্যয় ২,৫৩২ কোটি রুপি

অনলাইন ডেস্ক
সংস্কৃত ভাষার প্রচারে মোদি সরকারের ব্যয় ২,৫৩২ কোটি রুপি

সংস্কৃত ভাষার প্রচার ও প্রসারে ২০১৪-১৫ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত ২ হাজার ৫৩২ দশমিক ৫৯ কোটি রুপি ব্যয় করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার। অন্যদিকে পাঁচ ধ্রুপদি ভাষা তামিল, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম ও ওড়িয়ার জন্য এই সময়ে ব্যয় হয় ১৪৭ দশমিক ৫৬ কোটি রুপি।

গড় হিসাব করলে দেখা যায়, প্রতিবছর সংস্কৃত ভাষার পেছনে ব্যয় হয় ২৩০ দশমিক ২৪ কোটি রুপি, যেখানে অন্য পাঁচ ধ্রুপদি ভাষার জন্য বরাদ্দ ছিল গড়ে ১৩ দশমিক ৪১ কোটি রুপি।

তথ্য অধিকারে (আরটিআই) আবেদনের মাধ্যমে এবং সরকারি নথিপত্র থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে হিন্দুস্তান টাইমস।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচটি ধ্রুপদি ভারতীয় ভাষার মধ্যে সর্বোচ্চ তহবিলপ্রাপ্ত তামিল ভাষাও সংস্কৃতের মোট বরাদ্দের ৫ শতাংশের কম বরাদ্দ পেয়েছে।

কন্নড় ও তেলুগু ভাষা আলাদাভাবে সংস্কৃতের বরাদ্দের দশমিক ৫ শতাংশেরও কম অর্থ পেয়েছে। আর ওড়িয়া ও মালয়ালম ভাষার ক্ষেত্রে এই অনুপাত দশমিক ২ শতাংশের নিচে।

২০০৪ সালে প্রথম ‘ধ্রুপদি ভাষা’র স্বীকৃতি পাওয়া তামিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ‘গ্র্যান্টস ফর প্রমোশন অব ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেস (জিপিআইএল)’ প্রকল্পের অধীনে পায় ১১৩ দশমিক ৪৮ কোটি রুপি।

অন্যদিকে ২০০৫ সালে একই স্বীকৃতি পাওয়া সংস্কৃতের প্রচারে ব্যয় করা হয় এর ২২ গুণ বেশি অর্থ।

২০০৮-১৪ সালের মধ্যে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা পাওয়া অন্য চার ভাষা—কন্নড়, তেলুগু, মালয়ালম ও ওড়িয়ার জন্য মোট বরাদ্দ ছিল মাত্র ৩৪ দশমিক শূন্য ৮ কোটি রুপি।

সংস্কৃতের জন্য বরাদ্দ কেবল অন্যান্য ধ্রুপদি ভাষা নয়, উর্দু, হিন্দি ও সিন্ধি ভাষার তুলনায়ও বেশি ছিল, যদিও এই তিন ভাষা ধ্রুপদি ভাষা হিসেবে স্বীকৃত নয়।

২০১৪-১৫ থেকে ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে উর্দু, হিন্দি ও সিন্ধি ভাষার প্রচার ও প্রসারে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মোট ১ হাজার ৩১৭ দশমিক ৯৬ কোটি রুপি ব্যয় করে, যা সংস্কৃতের জন্য ব্যয় ধরা ২ হাজার ৫৩২ দশমিক ৫৯ কোটি রুপির প্রায় ৫২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

এ সময় এককভাবে উর্দু পেয়েছে ৮৩৭ দশমিক ৯৪ কোটি রুপি, হিন্দি ৪২৬ দশমিক ৯৯ কোটি রুপি এবং সিন্ধি ৫৩ দশমিক শূন্য ৩ কোটি রুপি।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যার ২১ দশমিক ৯৯ শতাংশ তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, ওড়িয়া ও কন্নড় ভাষায় কথা বলেন। সে সময় দেশটির জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১২০ কোটি।

অন্যদিকে সংস্কৃত ভাষাভাষীর সংখ্যা ছিল নগণ্য, সামগ্রিক হারে উল্লেখযোগ্য নয়।

এই জনগণনা অনুযায়ী, মাতৃভাষা হিসেবে হিন্দিকে চিহ্নিত করেছিলেন মোট জনসংখ্যার ৪৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আর উর্দু ভাষাভাষীর সংখ্যা ছিল ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ।

এ বছরের মার্চে রাজ্যে হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষার প্রচারকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন।

এ বিষয়ে উত্তর প্রদেশে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) ভাষাতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ ইমতিয়াজ হাসনাইন বলেন, সংস্কৃত ভাষা মূলত ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। তবে সাধারণ মানুষের বৃহত্তর কল্পনায় এই ভাষার প্রতি পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ ধারণা গড়ে উঠেছে।

এই প্রতীকী মর্যাদাই সংস্কৃত ভাষার জন্য ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থ বরাদ্দের’ অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।

বিষয়:

ভারতভাষা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এরদোয়ানও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত