Ajker Patrika

সিন্ধু চুক্তি বাতিল

পাকিস্তানের পানি আটকাতে হিমশিম ভারত, প্রকল্প নিচ্ছে তড়িঘড়ি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ১৭: ৩৪
কাশ্মীরের বাগলিহারে ভারতের তৈরি জলবিদ্যুৎ বাঁধ। ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীরের বাগলিহারে ভারতের তৈরি জলবিদ্যুৎ বাঁধ। ছবি: সংগৃহীত

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর নয়া দিল্লি পাকিস্তানকে দায়ী করে। এরপর, দেশটির বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটি ছিল দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা। চুক্তি স্থগিতের পর ভারত সিন্ধুসহ আরও চারটি অভিন্ন নদী থেকে পানি অপসারণ করতে শুরু করে। তবে বেশি মাত্রায় পানি প্রত্যাহার করায় ভারতের রিজার্ভয়ারগুলো বা জলাধারগুলো উপচে যেতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় ধারণক্ষমতা বাড়াতে ভারত একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

ভারত সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পেহেলগাম হামলার প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থার প্রথম ধাপে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার এক সপ্তাহ পর সরকার কাশ্মীরের দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে জলাধারের ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে শুরু করেছে।

সুনির্দিষ্টভাবে বললে, গত সপ্তাহে রাষ্ট্রায়ত্ত ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশনের (এনএইচপিসি) মাধ্যমে সালাল ও বাগলিহার প্রকল্পে ‘জলাধার ফ্লাশিং’ বা পলি অপসারণের কাজ করা হয়েছে।

সরকার এই অঞ্চলের ছয়টি আটকে থাকা প্রকল্পের নির্মাণকাজও ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এগুলো—হলো সাওয়ালকোটের ১ হাজার ৮৫৬ মেগাওয়াট প্রকল্প, কির্থাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় (যা থেকে সম্মিলিতভাবে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে) এবং পাকাল ডুলের ১ হাজার মেগাওয়াটের একটি প্রকল্প। এ ছাড়া আরও তিনটি প্রকল্প রয়েছে যেগুলো থেকে মোট ২ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

এই ছয়টি প্রকল্প সম্পন্ন হলে জম্মু-কাশ্মীরেই প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এর ফলে সমতল অঞ্চলের জন্য সেচ ও গৃহস্থালি ব্যবহারের জন্য আরও বেশি পানি পাওয়া যাবে। পুরো বিষয়টিই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি যদি এখনো কার্যকর থাকত, তাহলে নির্মাণকাজ শুরুর আগে ভারতকে পাকিস্তানকে ছয় মাসের নোটিশ দিতে হতো। এই সময়ের মধ্যে ইসলামাবাদ একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রকল্পের কাজে দেরি বা বাতিল করার চেষ্টা করতে পারত।

জলাধার ফ্লাশিংয়ের কাজটিও একই কারণে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত এগুলো (সালাল ১৯৮৭ সালে এবং বাগলিহার ২০০৯ সালে তৈরি হয়) তৈরি হওয়ার পর থেকে পরিষ্কার করতে পারেনি। কারণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তিতে এটি নিষিদ্ধ ছিল। কারণ এর ফলে ভাটির দিকের দেশ পাকিস্তান প্রবল স্রোতে বন্যা ও সম্পত্তির ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এতে পানির অপচয়ও হয়।

তবে সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, অবশেষে ফ্লাশিংয়ের কাজ করতে পারায় ‘আরও দক্ষতার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে এবং টারবাইনের ক্ষতি রোধ হবে।’ উল্লেখ্য, ৬৯০ মেগাওয়াটের সালাল এবং ৯০০ মেগাওয়াটের বাগলিহার প্রকল্প দুটি তাদের ক্ষমতার চেয়ে অনেক কম উৎপাদন করছিল।

এই ছয়টি প্রকল্পে নির্মাণকাজ শুরুর বিষয়ে এই সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পানিসম্পদমন্ত্রী সিআর পাতিল, বিদ্যুৎমন্ত্রী এমএল খাট্টার, কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান এবং প্রতিটি মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অমিত শাহ, পাতিল এবং তাঁদের মন্ত্রকের কর্মকর্তাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুটি বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকগুলোতে অন্যান্য সম্ভাব্য কার্যকলাপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চেনাব (সিন্ধু পানিচুক্তি অনুযায়ী ভারতের জন্য বরাদ্দ) এবং ঝিলাম (পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ) নদীর তীরে নতুন প্রকল্প শুরু করা এবং উলার হ্রদের পুনরুজ্জীবন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

মানবিক করিডরে বাংলাদেশের ফায়দা কী

রোগী দেখতে হবে কমপক্ষে ১০ মিনিট, অতিদরিদ্রদের জন্য বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা

সন্ধ্যায় বাজারে গিয়ে নিখোঁজ, ভোরে কালভার্টের নিচে মিলল নারীর লাশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইচ্ছেমতো’ ব্যয়, দুই বছরে রাষ্ট্রের ক্ষতি ৩৮৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত