Ajker Patrika

৭ মাস না যেতেই যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান প্রসবের হিড়িক ভারতীয় নারীদের

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশ কার্যকরের আগে ভারতীয় দম্পতিদের মধ্যে সন্তান প্রসবের হিড়িক পড়েছে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির আগে সন্তানের জন্ম দিয়ে মার্কিন নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে অনেক ভারতীয় নারীরা অপরিণত সন্তান প্রসবের চেষ্টা করছেন। তবে এই প্রবণতা মা ও শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, ‘যদি কেউ মার্কিন ভূমিতে জন্ম নেয়, তিনি দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার রাখেন।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা নিয়েই এক নির্বাহী আদেশে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করেছেন। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ কার্যকর হবে।

এর ফলে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জন্ম নেওয়া শিশুদের মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকার থাকবে। কিন্তু এর পরে মার্কিন নাগরিক বা গ্রিন কার্ডধারী নন এমন দম্পতির সন্তানেরা আর জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাবেন না।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর বহু ভারতীয় দম্পতি গভীর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। যাঁরা সন্তানের নাগরিকত্বের ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে সন্তান প্রসবের হিড়িক পড়েছে। ভারতীয় নারীরা সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে ভিড় লেগে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এইচ–১বি এবং এল–১ ভিসায় কাজ করা হাজার হাজার ভারতীয় গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষায় আছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অনাগত সন্তানকে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ দিতে আগেভাগেই প্রসবের চেষ্টা করছেন।

নিউ জার্সির প্রসূতি সেবাদানকারী একটি ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. এস ডি রামা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, আট থেকে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীরা সিজারের জন্য অনুরোধ করছেন। কিছু নারী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তারাও ২০ ফেব্রুয়ারির আগে সিজারের মাধ্যমে শিশুর জন্ম দিতে চাইছেন।

টেক্সাসের একজন প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এস জি মুক্কালা জানান, তিনি গত দুই দিনে প্রায় ২০ জন দম্পতির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আগেভাগে সন্তান প্রসব করানো সম্ভব। কিন্তু এটি মা ও শিশুর জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এর মধ্যে রয়েছে অপরিণত ফুসফুস, খাওয়ার সমস্যা, কম ওজন এবং স্নায়বিক জটিলতা।’

এমনি একজন ভারতীয় নারী প্রিয়া জানান, চলতি বছরের মার্চ মাসে তাঁর সন্তান প্রসবের কথা ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শিশুর নাগরিকত্বের ওপর নির্ভর করছিলাম। ছয় বছর ধরে গ্রিন কার্ডের অপেক্ষায় আছি। এটি ছিল আমাদের পরিবারের স্থিতিশীলতার একমাত্র উপায়। কিন্তু এখন আমরা এখন দিশেহারা।’

২৮ বছর বয়সী একজন বাবা বলেন, ‘আমরা এখানে আসার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। এখন মনে হচ্ছে, আমাদের জন্য সব দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’

ক্যালিফোর্নিয়ায় অবৈধ অভিবাসী এক দম্পতি জানান, ফেব্রুয়ারির দিকে তাঁদের সন্তান জন্ম নেবে। কিন্তু ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে তাঁদের মাথায় বাজ পড়েছে। অবৈধ অভিবাসী এই দম্পতি বলেন, ‘আমরা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আমাদের আইনজীবী বলেছিলেন, সন্তান নাগরিক হলে সরাসরি নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হবে। কিন্তু এখন আমরা অসহায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত