Ajker Patrika

জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলায় বাবরি মসজিদ যোগ! 

আপডেট : ১৭ মে ২০২২, ২২: ৫২
জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলায় বাবরি মসজিদ যোগ! 

ভারতের বারানসিতে আওরঙ্গজেবের আমলের জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে উত্তেজনা চলছে। হিন্দু-মুসলিম উত্তেজনা প্রশমনে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন।

কাকতালীয়ভাবে এই মসজিদ নিয়ে মামলার সঙ্গে অযোধ্যার বাবরি মসজিদের ঘটনার একটি যোগসূত্র রয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে পাল্টাপাল্টি আবেদনের শুনানি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের যে দুই বিচারপতি তাঁরা বাবরি মসজিদ মামলার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জ্ঞানবাপী মসজিদ সম্পর্কিত পিটিশনের শুনানি করছেন। হিন্দুরা দাবি করছেন, বারানসির ওই মসজিদ কমপ্লেক্সের ভেতরে মন্দিরের কিছু অংশ রয়েছে। সেখানে ওজুখানার পাশের পুকুরে শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। মুসলিমরা বলছেন, সেটি আসলে ঝরনার একটি কাঠামো।

মসজিদের বাইরের দেয়ালে মূর্তিগুলোর পাশাপাশি ‘পুরোনো মন্দির কমপ্লেক্সের মধ্যে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য দেবতাদের’ সামনে প্রতিদিন প্রার্থনা করার অনুমতি চেয়ে স্থানীয় আদালতে আবেদন করেছিলেন পাঁচজন হিন্দু নারী। 

বারানসির আদালত অজুখানা ‘সিল’ করে মসজিদ কমপ্লেক্সের ভেতর ভিডিও জরিপের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায় আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি। 

বারানসি আদালতের নির্দেশন অনুযায়ী, তিনটি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ বেসমেন্ট এবং পুকুরসহ মসজিদ কমপ্লেক্সের ভিডিও জরিপ করা হয়। জরিপে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমে আসে। এই মূল্যায়ন চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেছে মসজিদ কমিটি। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন, শিবলিঙ্গ (মুসলিমরা বলছেন ঝরনা) বলে যে কাঠামোটিকে দাবি করা হচ্ছে সেই অংশ ঘিরে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে মুসলিমদের অবশ্যই মসজিদে বিনা বাধায় নামাজ পড়তে দিতে হবে। 

মজার ব্যাপার হলো, ২০১৯ সালে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ মামলার রায়ের পর সুপ্রিম কোর্টে এটিই প্রথম মন্দির-মসজিদ দ্বন্দ্ব নিয়ে মামলার শুনানি হচ্ছে এবং উভয় বিচারকেরই রাম মন্দির মামলার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। 

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সেই পাঁচজন বিচারকের মধ্যে একজন যিনি ২০১৯ সালে ৪০ দিন ধরে অযোধ্যা মন্দির-মসজিদ মামলার শুনানি করেছিলেন। বাবরি মসজিদের স্থানটি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য হস্তান্তর এবং একটি বিকল্প মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়ার ঐতিহাসিক রায় দানকারী বিচারপতিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। 

অযোধ্যা মামলায় হিন্দু আবেদনকারীদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন বর্তমান বিচারপতি পিএস নরসিমা। তিনি রাম মন্দির নিয়ে আদালতে আবেদনকারী রাজেন্দ্র সিংয়ের পক্ষে লড়েছিলেন। এ মামলার মূল আবেদনকারী ছিলেন গোপাল সিং বিশারদ। 

গোপাল সিং বিশারদ ১৯৫০ সালে রাম মন্দির নিয়ে প্রথম আদালতে যান। তিনি আবেদন করেন, ভগবান রামের জন্মস্থানে তাঁকে বিনা বাধায় উপাসনা করার অনুমতি দেওয়া উচিত। তিনি ওই স্থানে পরবর্তীতে স্থাপিত রাম মূর্তি অপসারণের ওপর স্থগিতাদেশও চেয়েছিলেন। 

পিএস নরসিমা বাবরি মসজিদ মামলার আবেদনকারীদের পক্ষে লড়েছিলেন। ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ পান। 

যোগ্যতার হিসাবে বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি নরসিমা দুজনেই প্রধান বিচারপতি হওয়ার পথে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় চলতি বছরের শেষ দিকে প্রধান বিচারপতি হবেন। দুই বছর মেয়াদে আদালতের শীর্ষ পদে আসবেন তিনি। আর ২০২৭ সালে প্রধান বিচারপতি হবেন বিচারপতি নরসিমা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত