Ajker Patrika

নোবেল না পেলে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কী হবে—শঙ্কিত নরওয়ে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার আগে থেকেই নরওয়ে উদ্বেগে রয়েছে—ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি এই পুরস্কার না পান, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র-নরওয়ে সম্পর্কের ওপর তাঁর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। দেশটির রাজনীতিক ও বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন—নোবেল না পেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নরওয়ের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ, ন্যাটোতে আরও বেশি অর্থ দাবি, এমনকি নরওয়েকে শত্রু দেশ হিসেবেও ঘোষণা করতে পারেন।

নরওয়ের নোবেল কমিটি বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কার কে পাবেন, তা নির্ধারণ করা হয়েছে সোমবারের বৈঠকে। এই হিসেবে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগেই। তাই বিশ্লেষকদের মতে, এই বছরের পুরস্কার ট্রাম্পের হাতে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আর এই কারণেই নরওয়ে এখন ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

নরওয়ের সোশ্যালিস্ট লেফট পার্টির নেতা কির্সটি বারগস্টো বলেছেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন এক চরমপন্থী পথে আমেরিকাকে নিয়ে যাচ্ছেন, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বিচারব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে। এমন এক অনিশ্চিত ও কর্তৃত্ববাদী নেতার কাছ থেকে যে কোনো প্রতিক্রিয়া আসতে পারে।’

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার তাঁর পাওয়া উচিত। এর আগে ২০০৯ সালে বারাক ওবামা এই পুরস্কার পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে অবদানের জন্য।

এদিকে খবর বেরিয়েছে, গত জুলাইয়ে নরওয়ের অর্থমন্ত্রী এবং সাবেক ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গকে ফোন করে নোবেল পুরস্কার প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি জাতিসংঘের সাম্প্রতিক অধিবেশনেও তিনি দাবি করেন, ‘আমি সাতটি যুদ্ধ শেষ করেছি। সবাই বলে, আমাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া উচিত।’

নরওয়ের গ্রিন পার্টির নেতা আরিল্ড হার্মস্ট্যাড বলেন, ‘শান্তির পুরস্কার সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ দেখিয়ে বা ভয় দেখিয়ে পাওয়া যায় না। গাজায় যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও, একটি পদক্ষেপ অতীতের বিভেদ ও সহিংসতাকে মুছে দিতে পারে না।’

নরওয়ের নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান বার্গ হার্পভিকেন জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। তবে নোবেল পুরস্কারের উইলে নির্দিষ্ট করা আছে—নরওয়ের পার্লামেন্ট কমিটির সদস্য নিয়োগ দেবে।’

নরওয়ের বিশ্লেষক হ্যারাল্ড স্ট্যাংহেলে বলেন, ‘ট্রাম্প এতটাই অনিশ্চিত যে, তাঁর প্রতিক্রিয়া অনুমান করা কঠিন। তিনি হয়তো শুল্ক বাড়াবেন, ন্যাটোতে বাড়তি অর্থ দাবি করবেন, এমনকি নরওয়েকে শত্রুও বলতে পারেন।’

অসলো শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক নিনা গ্রেগারের মতে—এ বছর পুরস্কারের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে সুদানের ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুমস’, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কাজ করা ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস’ এবং ‘উইমেন্স ইন্টারন্যাশনাল লীগ ফর পিস অ্যান্ড ফ্রিডম’।

গ্রেগার বলেন, ‘গাজা যুদ্ধ শেষের প্রচেষ্টায় ট্রাম্পের ভূমিকা থাকলেও তাঁর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরে যাওয়া এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রবণতা নোবেলের আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত