আজকের পত্রিকা ডেস্ক
২০২৫ সালে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেদারল্যান্ডসের তথা ডাচ শিশুরাই পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী। ৪৩টি উন্নত দেশের মধ্যে পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে এই মূল্যায়ন করা হয়। কেউ যদি প্রশ্ন করেন, কেন ডাচ শিশুরাই সবচেয়ে সুখী, তবে এ বিষয়ে মার্কিন কিশোরী ম্যারি ফ্রান্সিস রাস্কেলের পর্যালোচনাটি জেনে নিতে পারেন। ডাচ শিশুদের সুখী হওয়ার রহস্য নিয়ে সোমবার (৩০ জুন) তাঁর একটি লেখা প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য তাঁর ওই লেখা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হলো—
আমার (ম্যারি) যখন ছয় বছর বয়স, সেবার গ্রীষ্মে আমি আর আমার বন্ধু লু সাউথ ক্যারোলাইনার কলম্বিয়ার এক পাড়ায় একটি পরিত্যক্ত লেকঘাট আবিষ্কার করেছিলাম। প্রতিদিন বিকেলের শেষ আলোয়, গরম কমে এলে আমরা সেখানে যেতাম। ঝিঁঝি পোকার ডাক, ব্যাঙের সুর—সব মিলিয়ে এক রহস্যময় পরিবেশ। ঘাটে বসে ক্যানডি খেতাম, স্লাশি পান করতাম, ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করতাম।
আমার মা-বাবা আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। তবে শুধু সন্ধ্যার আলো জ্বলার আগেই বাড়ি ফিরতে হতো। আমি একা একাই হেঁটে যেতাম দোকানে, বন্ধুর বাসায় বা কফি শপে। সেই সব ঘোরাঘুরি আমাকে একা চলার সাহস দিয়েছিল। কিন্তু আমার আশপাশের বাচ্চারা এতটা স্বাধীন ছিল না। তারা খেলতে আসত না—হাতে গোনা দু-একজন ছাড়া। বাকিরা মায়ের ঠিক করা দিনেই শুধু খেলতে বের হতো। তাই শিশুসুলভ উচ্ছ্বাসে খেলার সুযোগ পাওয়া ছিল খুব কঠিন।
কিন্তু নেদারল্যান্ডসে এক ভ্রমণে গিয়ে দেখলাম এক ভিন্ন দৃশ্য। দেশটির হার্লেম শহরে আমি আমার সিনিয়র ফ্রেন্ড ট্রেসির পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন থেকেছিলাম। ট্রেসির তিন সন্তান সেখানেই বড় হচ্ছে। তারা প্রতিদিন স্কুল, বন্ধুর বাসা, দোকানে একা একা যাওয়া-আসা করে। শুধু তাদের নয়, পুরো নেদারল্যান্ডসের বাচ্চারাই যেন এমন স্বাধীনতা উপভোগ করে।
এবার ইউনিসেফ বলেছে, ডাচ শিশুরা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী শিশু। ৪৩টি উন্নত দেশের মধ্যে জরিপ চালিয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমেরিকান শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের যথাযথ তথ্য না থাকায় তারা হয়তো পূর্ণ র্যাঙ্কিংয়ে আসেনি। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ডাচ শিশুরাই নিঃসন্দেহে বেশি সুখী।
কেন? এর পেছনে আছে স্বাধীনতার প্রতি ডাচ অভিভাবকদের গুরুত্ব। ট্রেসি বলছিলেন, ‘আমার বড় দুই ছেলে-মেয়ে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটারের বেশি সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়। ক্লাস বাতিল হলে তারা ঘরে বসে থাকে না, বিকল্প কিছু করে। তারা নিজেরাই তাদের সময় সামলায়।’
ডাচ শিশুদের ছোটবেলা থেকে সাইকেল দেওয়া হয়। তারা একা একা চলাফেরা করে। আমি দেখেছি, ছোট ছোট শিশুরাই বন্ধুবান্ধব নিয়ে দোকানে যায়, রেস্তোরাঁয় যায়। এই স্বাধীনতা আমেরিকান শিশুদের কল্পনারও বাইরে। ২০২৩ সালের এক জরিপে দেখা গিয়েছিল, মাত্র ৩৩ শতাংশ মার্কিন শিশু একা বন্ধুর বাসায় যেতে পারে। আর মাত্র ১৫ শতাংশ হ্যালোইনে বন্ধুর সঙ্গে একা ট্রিক-অর-ট্রিট করতে পারে।
তাহলে এই পার্থক্যের মূল কোথায়? মনে হচ্ছে, ‘স্বাধীনতা’ শব্দটির মানে দুই সংস্কৃতিতে আলাদা। আমেরিকান অভিভাবকেরাও স্বাধীনতার পক্ষে। কিন্তু তাদের ভয় ও উদ্বেগ—বিশেষ করে নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁরা তাদের সন্তানদের আটকে রাখে। এর ফলে ৪০ শতাংশ মার্কিন অভিভাবক তাদের সন্তান বিষণ্নতায় ভোগে বলে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এই অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণই হয়তো শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ২০২৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, শিশুদের স্বাধীনভাবে খেলা ও ঘোরাফেরা কমে যাওয়াই মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতাই শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ভিত্তি।
আমার এক সহপাঠী বলেছিল, ‘আমাদের প্রজন্ম অনেক কিছু করতে ভয় পায়। কারণ, ছোটবেলায় আমাদের কিছু করতেই দেওয়া হয়নি।’ আমি বাবা-মা নই, কাউকে শেখানোরও অধিকার নেই। কিন্তু সদ্য স্কুল পাস করে আসা একজন হিসেবে আমি জানি, একটু স্বাধীনতা কতটা মূল্যবান হতে পারে।
এই গ্রীষ্মে আপনার সন্তানকে একা পার্কে যেতে দিন। একটু দূরের দোকান থেকে তাকে আইসক্রিম কিনে আনতে বলুন। হয়তো তাতেই শুরু হবে তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্তগুলোর জন্ম।
লেখক: ম্যারি ফ্রান্সিস রাস্কেল গত মাসেই সাউথ ক্যারোলাইনার কলাম্বিয়ার একটি হাইস্কুল সম্পন্ন করেছেন
২০২৫ সালে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেদারল্যান্ডসের তথা ডাচ শিশুরাই পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী। ৪৩টি উন্নত দেশের মধ্যে পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে এই মূল্যায়ন করা হয়। কেউ যদি প্রশ্ন করেন, কেন ডাচ শিশুরাই সবচেয়ে সুখী, তবে এ বিষয়ে মার্কিন কিশোরী ম্যারি ফ্রান্সিস রাস্কেলের পর্যালোচনাটি জেনে নিতে পারেন। ডাচ শিশুদের সুখী হওয়ার রহস্য নিয়ে সোমবার (৩০ জুন) তাঁর একটি লেখা প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য তাঁর ওই লেখা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হলো—
আমার (ম্যারি) যখন ছয় বছর বয়স, সেবার গ্রীষ্মে আমি আর আমার বন্ধু লু সাউথ ক্যারোলাইনার কলম্বিয়ার এক পাড়ায় একটি পরিত্যক্ত লেকঘাট আবিষ্কার করেছিলাম। প্রতিদিন বিকেলের শেষ আলোয়, গরম কমে এলে আমরা সেখানে যেতাম। ঝিঁঝি পোকার ডাক, ব্যাঙের সুর—সব মিলিয়ে এক রহস্যময় পরিবেশ। ঘাটে বসে ক্যানডি খেতাম, স্লাশি পান করতাম, ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করতাম।
আমার মা-বাবা আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। তবে শুধু সন্ধ্যার আলো জ্বলার আগেই বাড়ি ফিরতে হতো। আমি একা একাই হেঁটে যেতাম দোকানে, বন্ধুর বাসায় বা কফি শপে। সেই সব ঘোরাঘুরি আমাকে একা চলার সাহস দিয়েছিল। কিন্তু আমার আশপাশের বাচ্চারা এতটা স্বাধীন ছিল না। তারা খেলতে আসত না—হাতে গোনা দু-একজন ছাড়া। বাকিরা মায়ের ঠিক করা দিনেই শুধু খেলতে বের হতো। তাই শিশুসুলভ উচ্ছ্বাসে খেলার সুযোগ পাওয়া ছিল খুব কঠিন।
কিন্তু নেদারল্যান্ডসে এক ভ্রমণে গিয়ে দেখলাম এক ভিন্ন দৃশ্য। দেশটির হার্লেম শহরে আমি আমার সিনিয়র ফ্রেন্ড ট্রেসির পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন থেকেছিলাম। ট্রেসির তিন সন্তান সেখানেই বড় হচ্ছে। তারা প্রতিদিন স্কুল, বন্ধুর বাসা, দোকানে একা একা যাওয়া-আসা করে। শুধু তাদের নয়, পুরো নেদারল্যান্ডসের বাচ্চারাই যেন এমন স্বাধীনতা উপভোগ করে।
এবার ইউনিসেফ বলেছে, ডাচ শিশুরা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী শিশু। ৪৩টি উন্নত দেশের মধ্যে জরিপ চালিয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমেরিকান শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের যথাযথ তথ্য না থাকায় তারা হয়তো পূর্ণ র্যাঙ্কিংয়ে আসেনি। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ডাচ শিশুরাই নিঃসন্দেহে বেশি সুখী।
কেন? এর পেছনে আছে স্বাধীনতার প্রতি ডাচ অভিভাবকদের গুরুত্ব। ট্রেসি বলছিলেন, ‘আমার বড় দুই ছেলে-মেয়ে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটারের বেশি সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়। ক্লাস বাতিল হলে তারা ঘরে বসে থাকে না, বিকল্প কিছু করে। তারা নিজেরাই তাদের সময় সামলায়।’
ডাচ শিশুদের ছোটবেলা থেকে সাইকেল দেওয়া হয়। তারা একা একা চলাফেরা করে। আমি দেখেছি, ছোট ছোট শিশুরাই বন্ধুবান্ধব নিয়ে দোকানে যায়, রেস্তোরাঁয় যায়। এই স্বাধীনতা আমেরিকান শিশুদের কল্পনারও বাইরে। ২০২৩ সালের এক জরিপে দেখা গিয়েছিল, মাত্র ৩৩ শতাংশ মার্কিন শিশু একা বন্ধুর বাসায় যেতে পারে। আর মাত্র ১৫ শতাংশ হ্যালোইনে বন্ধুর সঙ্গে একা ট্রিক-অর-ট্রিট করতে পারে।
তাহলে এই পার্থক্যের মূল কোথায়? মনে হচ্ছে, ‘স্বাধীনতা’ শব্দটির মানে দুই সংস্কৃতিতে আলাদা। আমেরিকান অভিভাবকেরাও স্বাধীনতার পক্ষে। কিন্তু তাদের ভয় ও উদ্বেগ—বিশেষ করে নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁরা তাদের সন্তানদের আটকে রাখে। এর ফলে ৪০ শতাংশ মার্কিন অভিভাবক তাদের সন্তান বিষণ্নতায় ভোগে বলে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এই অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণই হয়তো শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ২০২৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, শিশুদের স্বাধীনভাবে খেলা ও ঘোরাফেরা কমে যাওয়াই মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতাই শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ভিত্তি।
আমার এক সহপাঠী বলেছিল, ‘আমাদের প্রজন্ম অনেক কিছু করতে ভয় পায়। কারণ, ছোটবেলায় আমাদের কিছু করতেই দেওয়া হয়নি।’ আমি বাবা-মা নই, কাউকে শেখানোরও অধিকার নেই। কিন্তু সদ্য স্কুল পাস করে আসা একজন হিসেবে আমি জানি, একটু স্বাধীনতা কতটা মূল্যবান হতে পারে।
এই গ্রীষ্মে আপনার সন্তানকে একা পার্কে যেতে দিন। একটু দূরের দোকান থেকে তাকে আইসক্রিম কিনে আনতে বলুন। হয়তো তাতেই শুরু হবে তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্তগুলোর জন্ম।
লেখক: ম্যারি ফ্রান্সিস রাস্কেল গত মাসেই সাউথ ক্যারোলাইনার কলাম্বিয়ার একটি হাইস্কুল সম্পন্ন করেছেন
গাজা সংকট নিয়ে মিসরের অবকাশযাপন কেন্দ্র শারম এল-শেইখে আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘শান্তি শীর্ষ সম্মেলন’। এতে সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। সেই সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
২৫ মিনিট আগেযুদ্ধবিরতি চুক্তির পর গতকাল শনিবার রাতে তেল আবিবে জিম্মি মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নাম উল্লেখ করতেই জনতা সমস্বরে দুয়োধ্বনি দিতে শুরু করে।
১ ঘণ্টা আগেকাতারের শীর্ষ সরকারি সংস্থা আমিরি দিওয়ানের তিনজন কর্মী মিসরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। লোহিত সাগর উপকূলীয় অবকাশযাপন কেন্দ্র শারম এল-শেইখের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও দুজন আহত হয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগেমার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান গতকাল শনিবার জানিয়েছেন, তিনি গাজায় গিয়ে যুদ্ধ-পরবর্তী স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মোতায়েন হবে না। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে