Ajker Patrika

টেস্টটিউব বেবি: ক্লিনিকের ভুলে অন্যের সন্তান জন্ম দিলেন অস্ট্রেলিয়ার নারী

অনলাইন ডেস্ক
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় আইভিএফ ক্লিনিক মোনাশ। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় আইভিএফ ক্লিনিক মোনাশ। ছবি: সংগৃহীত

ক্লিনিকের ভুলে অন্যের সন্তান জন্ম দিলেন অস্ট্রেলিয়ার এক নারী! ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) বা টেস্ট টিউব বেবি প্রক্রিয়ায় সন্তান জন্ম নিতে গিয়ে এমন ভুলের শিকার হয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় আইভিএফ ক্লিনিক ‘মোনাশ আইভিএফ’ এই মারাত্মক ভুলটি করেছে।

ভুলবশত অন্য এক দম্পতির এমব্রায়ো (ভ্রূণের প্রথম দিকের অবস্থাকে এমব্রায়ো বলা হয়) ওই নারীর গর্ভে স্থাপন করে ফেলেন ওই ক্লিনিকের কর্মীরা। ওই নারী সন্তান জন্ম দেওয়ার পর চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ভুল এমব্রায়ো দেওয়ার ব্যাপারটি নজরে আসে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্লিনিকের স্টোরেজে ওই দম্পতির যে কয়টি এমব্রায়ো থাকার কথা ছিল, তার চেয়ে একটি বেশি দেখতে পান তাঁরা। আর তখনই বুঝতে পারেন, ওই নারী যে শিশুটি জন্ম দিয়েছেন, সেটি তাঁর নয়। শিশুটি গত বছর জন্মেছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। তবে, জন্মের সঠিক দিনক্ষণ প্রকাশ করা হয়নি।

এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘এমন একটি ঘটনার জন্য আমরা সব পক্ষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এই প্রচণ্ড দুঃসময়ে আমরা তাঁদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’

ওই শিশু কিংবা সংশ্লিষ্ট দম্পতিদের পরিচয় প্রকাশ করেনি মোনাশ আইভিএফ। প্রাথমিক তদন্তে এ ধরনের আর কোনো দুর্ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কঠোর ল্যাবরেটরি নিরাপত্তা কার্যকর থাকার পরও দুর্ঘটনাটি ঘটে গেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এ বিষয়ে জানিয়েছে।

১৯৭১ সালে যাত্রা শুরু করা আইভিএফ ক্লিনিকটি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াজুড়ে বহু স্থানে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

তবে, প্রতিষ্ঠানটি এবারই প্রথম যে বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছে এমন নয়। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে একটি যৌথ মামলা করেছিল ৭০০ সেবাগ্রহণকারী। তাদের অভিযোগ ছিল—ইচ্ছাকৃতভাবে কার্যকর এমব্রায়ো ধ্বংস করে মোনাশ ক্লিনিক। যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবুও মামলা নিষ্পত্তি করতে ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে তাদের।

আইভিএফ পদ্ধতিতে ক্লিনিকের ভুলে অন্যের সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনাও এটিই প্রথম নয়। বিরল হলেও যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইসরায়েল এবং ইউরোপে এ ধরনের নজির দেখা গেছে। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতেই যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে এমন ঘটনা। ক্রিস্টিনা মুরে নামের এক নারী জর্জিয়ার একটি আইভিএফ ক্লিনিকের সহায়তায় সন্তান জন্ম দেওয়ার পর বুঝতে পারেন, সেটি তাঁর সন্তান নয়। পরে, ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

ক্রিস্টিনা মুরে এবং তাঁর শুক্রাণু দাতা দুজনই শ্বেতাঙ্গ। কিন্তু তিনি যে সন্তানটি জন্ম দেন, সেটি কৃষ্ণাঙ্গ। এরপরও শিশুটিকে লালন–পালন করতে চেয়েছিলে মুরে, কিন্তু অভিভাবকত্ব নিয়ে আইনি জটিলতায় পড়েন। পরে শিশুটিকে তার জৈবিক বাবা–মায়ের কাছে দিতে বাধ্য হন।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিটি রাজ্যে আইভিএফ সংক্রান্ত আইন ভিন্ন, মূলত রাজ্যগুলো নিজেরা নিজেদের মতো করে আইন তৈরি করে নেয়। এর বিরোধিতা করে অধিকারকর্মীরা বলেন, এই ব্যবস্থা সেবা গ্রহীতাদের ক্লিনিকগুলোর ভুল বা তদারকির ব্যর্থতার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। কুইন্সল্যান্ডের পার্লামেন্ট ২০২৪ সালে এই খাত নিয়ন্ত্রণে প্রথম আইন পাস করে।

ওই আইন অনুযায়ী, প্রতিটি ক্লিনিকের জন্য তাদের কাছে যারা গর্ভধারণের সেবা নেন তাঁদের তথ্য সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়। পাশাপাশি ডোনারদের স্বাস্থ্যগত তথ্য ধ্বংস করাকেও বেআইনি করা হয়। কুইন্স ল্যান্ডের ক্লিনিকগুলোতে সংরক্ষিত শুক্রাণুগুলোর অর্ধেকের দাতার পরিচয় নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়ার পর সেগুলো ধ্বংস করার সুপারিশ করা হয়েছিল। এই তথ্য প্রকাশের পরই আইনটি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত