Ajker Patrika

৩৮ বছর জেলে থাকার পর উল্টে গেল মামলা—ব্রিটেনের দীর্ঘতম ভুল রায়ের অবসান

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ২৩: ৪১
সেই সময় পত্রিকাগুলোতে এভাবেই শিরোনাম হয়েছিল ঘটনাটি। ছবি: সংগৃহীত
সেই সময় পত্রিকাগুলোতে এভাবেই শিরোনাম হয়েছিল ঘটনাটি। ছবি: সংগৃহীত

নির্দোষ হয়েও প্রায় চার দশক ধরে জেল খাটছেন পিটার সুলিভান। শেষ পর্যন্ত তিনি মুক্তি পেলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ব্রিটেনের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে দীর্ঘতম ভুল রায়। ১৯৮৭ সালে ২১ বছর বয়সী ডায়ান সিনডালকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন সুলিভান। ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৮৬ সালের আগস্টে, ইংল্যান্ডের মেরিসিসাইডের বেবিংটনে।

তবে সাম্প্রতিক ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের স্থানে উদ্ধার হওয়া নমুনায় সুলিভানের কোনো ডিএনএ মেলেনি। এই নতুন প্রমাণ আদালতে উপস্থাপনের পর তিন বিচারপতির একটি প্যানেল তাঁর সাজা বাতিল করেন।

৬৮ বছর বয়সী সুলিভান ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারকেরা রায় দেওয়ার সময় বলেন, নতুন ডিএনএ প্রমাণ বিচার ও ন্যায়ের স্বার্থে অপরিহার্য। বিচারপতি লর্ড হোলরয়ড বলেন, ‘এই প্রমাণের আলোকে সুলিভানের দণ্ডকে আমরা আর নিরাপদ মনে করতে পারি না।’

সুলিভানের এই দীর্ঘ কারাবাসের গল্প জটিল ও হৃদয়বিদারক। ১৯৮৬ সালের আগস্টে ডায়ান সিনডালের হত্যাকাণ্ডের সময় তাঁর বয়স ছিল ২৯। অভিযোগ অনুযায়ী, ডার্টস খেলায় হেরে তিনি প্রচুর মদ পান করেন এবং ডায়ান সিনডালের সঙ্গে এক আকস্মিক সাক্ষাতে ক্রুদ্ধ হয়ে তাঁকে আক্রমণ করেন। কিন্তু আদালতে প্রমাণ হিসেবে যা ছিল, তা মূলত তাঁর একটি স্বীকারোক্তি, যেটি তিনি পরে আবার প্রত্যাহার করেছিলেন। এ ছাড়া পরোক্ষ কিছু প্রমাণ এবং দাঁতের দাগের বিশ্লেষণে পরে ১৯৮৭ সালে সুলিভানকে আজীবনের জন্য সাজা দেওয়া হয়েছিল।

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ডায়ান সিনডাল ছিলেন একজন ফুল বিক্রেতা ও বারের কর্মী। তাঁর গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি হেঁটে একটি পেট্রল স্টেশনে যাচ্ছিলেন। তখনই হত্যাকারীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ঘটে। তার মৃতদেহ অর্ধনগ্ন অবস্থায়, ভয়াবহ আঘাতে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।

ঘটনার সময় উদ্ধার হওয়া বীর্যে নমুনা তখনকার প্রযুক্তিতে পরীক্ষা করা সম্ভব ছিল না। কারণ, তা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গিয়েছিল। ২০২৪ সালে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হলে দেখা যায়, সেখানে সুলিভানের ডিএনএ নেই।

২০২১ সালে সুলিভান মামলাটি পুনরায় পর্যালোচনার আবেদন করেছিলেন। সে সময় তিনি দাবি করেন, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর পাশে কোনো উপযুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ছিলেন না। সে সময় তাঁকে কোনো আইনজীবীও দেওয়া হয়নি।

সুলিভানের বর্তমান আইনজীবী জানান, সুলিভান ছিলেন মানসিকভাবে দুর্বল, সহজে প্রভাবিত হতেন এবং বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত কথাবার্তা বলতেন।

যুক্তরাজ্যের ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসও (সিপিএস) আদালতে স্বীকার করেছে, নতুন ডিএনএ প্রমাণ নির্ভরযোগ্য এবং এটি সুলিভানের দোষ প্রমাণের ভিত্তিকে পুরোপুরি দুর্বল করে দেয়।

সিপিএসের আইনজীবী ডানকান অ্যাটকিনসন আদালতকে বলেন, ‘এই ডিএনএ প্রমাণ যদি তখনই পাওয়া যেত, তবে সম্ভবত মামলাটি তখনই থেমে যেত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত