Ajker Patrika

পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াই ইউক্রেন যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনের শক্তি রাশিয়ার আছে: পুতিন

অনলাইন ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ও সম্পদ তাঁর দেশের আছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তাঁর দেশকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে না। স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে তিনি এই অবস্থান ব্যক্ত করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধকে এর যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার পর্যাপ্ত শক্তি ও সম্পদ রয়েছে। তবে তিনি আশা করেন, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না। পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হাজার হাজার রুশ সেনা পাঠান। এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্থল সংঘাত শুরু হয়। শীতল যুদ্ধের পর থেকে মস্কো ও পশ্চিমাদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় সংঘাত।

এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক সেনা হতাহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি এই ‘রক্তগঙ্গা’ শেষ করতে চান। ট্রাম্পের প্রশাসন এই যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে প্রক্সি যুদ্ধ বলে মনে করে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পুতিনের ২৫ বছরের নেতৃত্ব নিয়ে একটি চলচ্চিত্র প্রচারিত হয়েছে। চলচ্চিত্রটির নাম ‘রাশিয়া, ক্রেমলিন, পুতিন, ২৫ বছর।’ সেখানে একজন প্রতিবেদক ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি নিয়ে পুতিনকে প্রশ্ন করেন।

জার তৃতীয় আলেকজান্ডারের ছবির পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন পুতিন। তৃতীয় আলেকজান্ডার ছিলেন ১৯ শতকের একজন রক্ষণশীল রুশ শাসক। তিনি ভিন্নমত দমন করতেন। পুতিন বলেন, ‘তারা আমাদের উসকানি দিতে চেয়েছিল। যাতে আমরা ভুল করি।’

পুতিন আরও বলেন, ‘এই অস্ত্রগুলো (পারমাণবিক) এখন পর্যন্ত ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। আমি আশা করি, এগুলোর প্রয়োজন হবে না।’ পুতিন বলেন, ‘২০২২ সালে যা শুরু হয়েছিল, তা রাশিয়ার আকাঙ্ক্ষিত পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার মতো যথেষ্ট শক্তি ও সামর্থ্য আমাদের আছে।’

ট্রাম্প কয়েক সপ্তাহ ধরে ইঙ্গিত দিচ্ছেন, মস্কো ও কিয়েভ যুদ্ধ শেষ করার শর্তে পৌঁছাতে না পারায় তিনি হতাশ। তবে ক্রেমলিন বলেছে, সংঘাত এতটাই জটিল যে ওয়াশিংটন যে দ্রুত অগ্রগতি চায়, তা কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পশ্চিম ইউরোপের নেতারা এবং ইউক্রেন এই আগ্রাসনকে দেখছে সাম্রাজ্যবাদী কায়দায় ভূমি দখল হিসেবে। তারা বারবার রুশ বাহিনীকে পরাজিত করার অঙ্গীকার করেছেন। তবে বাস্তবতা হলো—রুশ বাহিনী ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

পুতিন এই যুদ্ধকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কের একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে অপমান করেছে। তারা ন্যাটোকে বিস্তৃত করেছে। আর রাশিয়ার প্রভাব বলয় বলে মনে করা অঞ্চলে প্রবেশ করেছে।

ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, সংঘাতটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস বলেছিলেন, ২০২২ সালের শেষ দিকে রাশিয়ার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বাস্তব ঝুঁকি ছিল। মস্কো অবশ্য এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে।

পুতিন সাবেক রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তৎকালীন রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের কাছ থেকে ১৯৯৯ সালের শেষ দিনে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জোসেফ স্তালিনের পর পুতিনই ক্রেমলিনের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের নেতা। স্তালিন ১৯৫৩ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত ২৯ বছর শাসন করেছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২৫ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ‘আমার নিজেকে কোনো ধরনের রাজনীতিবিদ মনে হয় না। আমি লাখ লাখ রাশিয়ান নাগরিকের মতোই একই বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঈশ্বর চাইলে এটা যত দিন সম্ভব চলুক। আর এটা যেন অদৃশ্য না হয়ে যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের তিন পদে অতিরিক্ত: তিনজনে একজন বাড়তি

ট্রেনের কেবিনের বালিশ, চাদর, কম্বলের ভাড়া দ্বিগুণ করার চিন্তা

ভারতে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করছে মার্কিন ক্রেতারা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনামে কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ

মোবাইল-টাকা ছিনতাইয়ের পর দুই তরুণীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

ডোপ টেস্টে পজিটিভ, চবিতে শিক্ষকতা থেকে বাদ দুই প্রার্থী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত