Ajker Patrika

যুদ্ধবিরতিতে সম্মত মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী: চীন

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ০৯
মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী এমএনডিএএ—এর এক কর্মকর্তা ও সদস্য। ছবি: এএফপি
মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী এমএনডিএএ—এর এক কর্মকর্তা ও সদস্য। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তথা জান্তাবাহিনী এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) আনুষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে গত শনিবার থেকে। বিষয়টি নিশ্চিত করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই চুক্তি দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান সংঘর্ষ থামানোর লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুনমিংয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার আয়োজন করা হয়। সেখানে উভয় পক্ষ শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার জন্য চীনের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গতকাল সোমবার এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে সংঘাত থামানো মিয়ানমারের সব পক্ষের পাশাপাশি এই অঞ্চলের দেশগুলোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি চীন ও মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।’

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং আরও বলেন, ‘চীন মিয়ানমারের উত্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সংলাপ এবং সমঝোতার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা করবে।’

এমএনডিএএ মিয়ানমারের একটি সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছে। এই গোষ্ঠীটি থ্রি ব্রাদার্স অ্যালায়েন্সের অংশ। এই জোটে আরও রয়েছে তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ)। এই জোট ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করে এবং চীনের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেশ কিছু এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।

প্রসঙ্গত, এমএনডিএএ প্রধানত জাতিগত চীনা জনগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত। গত জুলাই মাসে তারা দাবি করে যে, চীনা সীমান্তের কাছাকাছি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, জান্তাবিরোধী বাহিনীগুলোর অগ্রগতিতে চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই বাহিনীগুলো শুধু গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চল দখল করেই থেমে থাকেনি, বরং মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় শহর মান্দালয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এতে চীনের শঙ্কা আরও বেড়েছে, কারণ মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা চীনের বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেসামরিক সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই দেশটি গভীর সংকটের মধ্যে পড়ে। চীন এর আগে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মিয়ানমারের উত্তর সীমান্ত অঞ্চলে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতা করেছিল। তবে সেই চুক্তি কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙে যায়, যা আবার সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়।

চীন মনে করে, সীমান্ত এলাকার স্থিতিশীলতা ও শান্তি তাদের আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষার জন্য অপরিহার্য। তাই তারা এই সংঘাত থামাতে এবং মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে শান্তি ফেরাতে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত