Ajker Patrika

যার রক্ত ২৪ লাখ শিশুর জীবন বাঁচিয়েছে, তিনি আর নেই

নিজের নাতির সঙ্গে জেমস হ্যারিসন। ছবি: বিবিসি
নিজের নাতির সঙ্গে জেমস হ্যারিসন। ছবি: বিবিসি

বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী রক্তদাতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন জেমস হ্যারিসন। তাঁর রক্তের প্লাজমা ২৪ লাখেরও বেশি শিশুর জীবন বাঁচিয়েছে। আজ সোমবার বিবিসি তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি নার্সিং হোমে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঘুমের মধ্যে হ্যারিসনের মৃত্যু হয় বলে তাঁর পরিবার আজ (৩ মার্চ) জানিয়েছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৮ বছর।

অস্ট্রেলিয়ায় হ্যারিসন ‘সোনালি বাহুর অধিকারী মানুষ’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর রক্তে বিরল একটি অ্যান্টিবডি (অ্যান্টি-ডি) ছিল। এই অ্যান্টিবডি এমন ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হতো, যা গর্ভবতী মায়েদের শরীরে প্রয়োগ করা হয়। মূলত যেসব মায়ের রক্ত অনাগত শিশুর রক্তের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তাঁদের শরীরেই এই ওষুধটি দেওয়া হয়।

অস্ট্রেলিয়ান রেড ক্রস ব্লাড সার্ভিস হ্যারিসনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছে, ১৪ বছর বয়সে বড় ধরনের বুকের অস্ত্রোপচারের সময় তিনি রক্তদাতা হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ১৮ বছর বয়স থেকেই রক্তদান শুরু করেছিলেন তিনি। ৮১ বছর পর্যন্ত প্রতি দুই সপ্তাহে একবার করে রক্তদান চালিয়ে গেছেন।

২০০৫ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ প্লাজমা দানের রেকর্ড করেছিলেন হ্যারিসন। তবে তাঁর এই রেকর্ডটি ২০২২ সালে ভেঙে ফেলেন এক মার্কিন নাগরিক।

হ্যারিসনের মেয়ে ট্রেসি মেলোশিপ জানিয়েছেন, তাঁর বাবা বিনা মূল্যে এবং ব্যথাহীনভাবে অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত ছিলেন।

ট্রেসি আরও জানান, তিনি ও তাঁর দুই সন্তানও অ্যান্টি-ডি ইমিউনাইজেশনের সুবিধা পেয়েছেন।

অ্যান্টি-ডি ইনজেকশন অনাগত শিশুকে ‘হিমোলাইটিক ডিজিজ অব দ্য ফিটাস অ্যান্ড নিউবর্ন’ (এইচডিএফএন) নামে একটি প্রাণঘাতী রক্তজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে। এই অবস্থাটি তখনই ঘটে, যখন গর্ভাবস্থায় মায়ের রক্তের লোহিত কণাগুলো শিশুর রক্তের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। এমন পরিস্থিতিতে মায়ের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা শিশুর রক্তকণাগুলোকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং এগুলোকে আক্রমণ করতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি শিশুর জন্য গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে। এতে শিশুর মারাত্মক অ্যানিমিয়া, হৃদ্‌রোগ, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে অ্যান্টি-ডি থেরাপি আবিষ্কারের আগে এইচডিএফএন-এ আক্রান্ত প্রতি দুজন শিশুর মধ্যে একজন মারা যেত।

হ্যারিসনের রক্ত কীভাবে এত অ্যান্টি-ডি সমৃদ্ধ হলো তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হয়, এটি তাঁর ১৪ বছর বয়সে পাওয়া বিপুল রক্ত সঞ্চালনের ফল হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে প্রায় ২০০ অ্যান্টি-ডি দাতা রয়েছেন। তাঁরা প্রতি বছর সম্মিলিতভাবে আনুমানিক ৪৫ হাজার মা ও শিশুকে সহায়তা করেন বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান রেড ক্রস ব্লাড সার্ভিস।

গবেষকেরা আশা করছেন, একদিন ল্যাবে তৈরি অ্যান্টি-ডি গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ