Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ার গহিন বনে হারানোর ৫২৯ দিন পর যেভাবে উদ্ধার হলো কুকুরটি

অনলাইন ডেস্ক
বুনো পরিবেশে প্রচণ্ড গরম সহ্য করে এবং বিষাক্ত সাপ এড়িয়ে অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ছিল ভ্যালেরি। ছবি: বিবিসি
বুনো পরিবেশে প্রচণ্ড গরম সহ্য করে এবং বিষাক্ত সাপ এড়িয়ে অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ছিল ভ্যালেরি। ছবি: বিবিসি

অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙারু দ্বীপের বুনো প্রকৃতিতে দীর্ঘ ৫২৯ দিন কাটানোর পর ছোট আকৃতির একটি ডাকশান্ড কুকুরকে জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে কাংগালা ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ-এর উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা দিনরাত পরিশ্রম করে ভ্যালেরি নামের কুকুরটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়েছেন।

রোববার বিবিসি জানিয়েছে, প্রেমিক জোশুয়া ফিশলক এবং পোষা কুকুর ভ্যালেরিকে সঙ্গে নিয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি ক্যাম্পিং ট্রিপে গিয়েছিলেন জর্জিয়া গার্ডনার। একপর্যায়ে কুকুরটিকে ক্যাম্পসাইটে খেলায় ব্যস্ত রেখে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন জর্জিয়া ও জোশুয়া। কিন্তু ফিরে এসে তাঁরা দেখেন, এটি আর নেই!

এদিকে বুনো পরিবেশে প্রচণ্ড গরম সহ্য করে এবং বিষাক্ত সাপ এড়িয়ে অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ছিল ভ্যালেরি। উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধারের জন্য তার মালকিন জর্জিয়ার টি-শার্ট দিয়ে ঘ্রাণের একটি পথ তৈরি করেছিল। সেই ঘ্রাণই শেষ পর্যন্ত কুকুরটিকে পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

কাংগালার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—নিরলস প্রচেষ্টার পর, অবশেষে ভ্যালেরিকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে এবং সে সুস্থ আছে।

ভ্যালেরিকে খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকেরা এক হাজার ঘণ্টারও বেশি সময় এবং পাঁচ হাজার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অনুসন্ধান চালিয়েছেন।

উদ্ধারকাজের অংশ হিসেবে নজরদারি ক্যামেরা এবং খাবার রেখে দূরনিয়ন্ত্রিত ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। এই ফাঁদে মালকিন জর্জিয়ার কাপড় ও ভ্যালেরির প্রিয় খেলনাগুলোও রাখা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ওয়াশিংটন পোস্টের বরাত দিয়ে বিবিসি আরও জানিয়েছে, নিখোঁজ হওয়ার শুরুর দিকেই অন্যান্য ক্যাম্পাররা ভ্যালেরিকে একটি পার্ক করে রাখা গাড়ির নিচে দেখতে পেয়েছিলেন। তবে কুকুরটি ভয় পেয়ে তখন জঙ্গলের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল।

ভ্যালেরিকে উদ্ধার করা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন উদ্ধারকারী সংস্থা কাংগালার অন্যতম পরিচালক জারেড কারান। তিনি বলেন, ‘সব কুকুরের মধ্যে এটা ছিল এমন একটি, যাকে দেখে কখনোই মনে হবে না এটি বেঁচে থাকতে পারবে। তবে এদের ঘ্রাণশক্তি সত্যিই ভালো।’

একটি ১৫ মিনিটের ভিডিওতে কাংগালার পরিচালক লিসা ও জারেড কারান পুরো উদ্ধার অভিযানের নাটকীয় গল্পটি তুলে ধরেছেন। জারেড বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করছিলাম যতক্ষণ না ভ্যালেরি ফাঁদের পেছনের কোণে প্রবেশ করে এবং পুরোপুরি শান্ত হয়। সৌভাগ্যক্রমে সবকিছু ঠিকঠাক কাজ করেছে।’

উদ্ধারের পর ভ্যালেরির মালকিন জর্জিয়া গার্ডনার সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যারা কখনো তাদের প্রিয় পোষা প্রাণী হারিয়েছে, তাদের অনুভূতি একেবারে যথার্থ। কখনো আশাকে হারাবেন না। ভালো মানুষের জন্য ভালো কিছু ঘটে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত