Ajker Patrika

ইন্দোনেশিয়ায় ৬৫ যাত্রী নিয়ে ডুবল ফেরি, নিখোঁজ ৪৩

অনলাইন ডেস্ক
বালিতে ডুবে যাওয়া ফেরির যাত্রীদের সন্ধানে চলছে তল্লাশি। ছবি: সংগৃহীত
বালিতে ডুবে যাওয়া ফেরির যাত্রীদের সন্ধানে চলছে তল্লাশি। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ ইন্দোনেশিয়ার বালির উপকূলে ফেরি ডুবে অন্তত ৪৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। উত্তাল সাগরের মধ্যে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আরও ২০ জনকে। বাকি নিখোঁজদের সন্ধানে এখনো চলছে উদ্ধার তৎপরতা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, ‘কেএমপি তুনু প্রতমা জয়া’ নামের ওই ফেরিটি গতকাল বুধবার রাতে পূর্ব জাভার কেতাপাং বন্দর থেকে ছেড়ে যায়। ফেরিটি ৫০ কিলোমিটার দূরের বালির গিলিমানুক বন্দরের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছাড়ার মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যেই ফেরিটি ডুবে যায়।

ফেরিটিতে ৫৩ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রুসহ মোট ৬৫ জন ছিলেন। এ ছাড়া, এতে ২২টি যানবাহন ছিল। যানবাহনের মধ্যে ১৪টি বড় ট্রাক ছিল। উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রবল ঢেউয়ের কারণে ফেরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডুবে যায়। অনেক যাত্রী কয়েক ঘণ্টা ঢেউয়ে ভেসে থাকার পর উদ্ধার হয়েছেন।

বানিউয়াঙ্গি জেলার পুলিশ প্রধান রামা সামতামা পুত্র জানান, ‘আমরা দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের খোঁজে অভিযান চলছে। ঢেউ অনেক বড় হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।’

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাত থেকেই নয়টি নৌযান নিখোঁজদের খুঁজছে। এর মধ্যে দুটি টাগবোট ও দুটি রাবারের নৌকাও রয়েছে। কিন্তু দুই মিটার উঁচু ঢেউয়ের কারণে উদ্ধারকারী দলকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র। দেশটিতে ১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপ রয়েছে। এসব দ্বীপে যাতায়াতের জন্য ফেরিই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। তবে এসব ফেরির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন রয়েছে। দেশটিতে প্রায়ই বড় ধরনের ফেরি দুর্ঘটনা ঘটে। ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন, নড়বড়ে নৌযান, পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট না থাকা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে ফেরি চলাচল—সব মিলিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি সর্বদাই থাকে।

এর আগে, ২০১৮ সালে সুলাওয়েসির উপকূলে একটি ফেরি ডুবে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। একই বছর সুমাত্রার তোবা লেকে আরেকটি ফেরি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১৬৭ জন। এ ছাড়া ২০০৯ সালে তেরাতাই প্রাইমা নামের একটি ফেরি ডুবে তিন শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

এদিকে, এবারের ফেরি দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং ফেরিটির যান্ত্রিক ত্রুটি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হতে পারে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে উদ্ধারকাজে যুক্ত করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার অভিযানের সমন্বয়কারীরা। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন। তাদের মধ্যে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন ফেরি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সতর্ক হতে বলেছে। একই সঙ্গে আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত