Ajker Patrika

রাখাইনে আমাদের ঘাঁটিতে হামলা করছে আরসা: আরাকান আর্মির প্রধান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪২
রাখাইনের মংডু সীমান্তে আরাকান আর্মির এক সদস্য টহল দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
রাখাইনের মংডু সীমান্তে আরাকান আর্মির এক সদস্য টহল দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকেন্দ্রিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) কমান্ডার ইন–চিফ মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নাইং অভিযোগ করেছেন, রোহিঙ্গারা এএ–এর ঘাঁটির ওপর হামলা চালিয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একটি অংশের প্রতিও অভিযোগের তির ছুড়েছেন তিনি।

থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তুন মিয়াত নাইং বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের মংডু টাউনশিপে এএ ঘাঁটির ওপর হামলা চালায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)।

এএ প্রধানের দাবি, তাঁর বাহিনী যখন রাখাইনে মিয়ানমারের জান্তা নিয়ন্ত্রিত এলাকা দখল করে শৃঙ্খলা ফেরাতে লড়াই করছে, তখনই এ হামলা চালানো হয়। তিনি দাবি করেন, সীমান্তের ওপারের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের তাঁদের ওপর হামলা চালাতে বলা হয়েছে। আগে এসব সন্ত্রাসী নেতাদের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে যোগাযোগ করা হতো। কিন্তু এখন তাঁদের হাতে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য এসেছে বলে দাবি করেন তিনি।

তাঁর ভাষায়, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যেন তাউংপিও এলাকায় হামলা চালানো হয়। ওই এলাকা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে। তা সম্ভব না হলে তাউংপিওর উত্তরের এএ–এর অবস্থানগুলোতে আক্রমণ চালাতে বলা হয়েছে। যদিও তৃতীয় কোনো পক্ষ থেকে তাদের অস্ত্র সরবরাহের কোনো তথ্য নেই বলে জানান তিনি।

এই বিষয়ে ইরাবতী মন্তব্যের জন্য ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তবে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দূতাবাস থেকে কোনো সাড়া তারা পায়নি।

এএ এরই মধ্যে রাখাইনের প্রায় সব এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বুথিডং ও মংডু টাউনশিপও এর মধ্যে রয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে এএ জানায়, দীর্ঘ ও ফাঁকফোকরে ভরা সীমান্ত ব্যবহার করে আরসা ও আরএসও–এর সদস্যরা মংডুতে প্রবেশ করছে। সেখানে তারা স্থানীয়দের অপহরণ ও হত্যা করছে অথবা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আটকে রাখছে। পাশাপাশি বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।

তুন মিয়াত নাইং বলেন, ‘তারা সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়লেই সামনে যাকেই পায় হত্যা করে। এরপর নিহতদের গায়ে এএ–এর পোশাক বা সামরিক সরঞ্জাম পরিয়ে দেয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে, তারা নাকি এএ–এর সঙ্গে লড়াই করেছে। কিন্তু আসলেই যারা নিহত হয়েছে তারা সাধারণ মানুষ।’

আরসা রাখাইনের মুসলিমদের এক বিদ্রোহী সংগঠন। তারা উত্তর রাখাইনে সক্রিয়। সংগঠনটির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে হিন্দু গ্রামে হত্যাকাণ্ডসহ শরণার্থীশিবিরে হত্যার মতো অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মিয়ানমার ও মালয়েশিয়া এ সংগঠনকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করেছে। গত বছর থেকে আরসা এএ–এর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত। ধারণা করা হয়, তারা মিয়ানমার সেনা জান্তার পক্ষ হয়ে লড়ছে।

অপর দিকে, আরএসও হলো আরেকটি বিদ্রোহী ও রাজনৈতিক সংগঠন। ১৯৮২ সালে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর এটি গঠিত হয়। মিয়ানমারে ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর তারা আবার অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। তখন তারা এএ–এর বিরুদ্ধে জান্তার সঙ্গে হাত মেলায় বলে অভিযোগ আছে। তবে সে সময় তারা আরসার বিরোধিতা করত। বাংলাদেশি আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের জোর করে যোদ্ধা বানানোর অভিযোগও রয়েছে এই সংগঠনের বিরুদ্ধে।

সীমান্ত এলাকায় এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাত চলতে থাকায় এএ স্থানীয়দের সতর্ক করেছে। একা বা বিচ্ছিন্ন এলাকায় না যেতে এবং কোথাও যাওয়ার আগে অবশ্যই এএ–এর প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা বাহিনীকে জানাতে বলা হয়েছে। বর্তমানে এএ রাখাইনের ১৭ টির মধ্যে ১৪টি টাউনশিপ নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তের পুরো ২৭১ কিলোমিটার অঞ্চল।

উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ আতাউল্লাহসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আরসাপ্রধানের বিরুদ্ধে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানকালে গোয়েন্দা কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী হত্যা মামলা এবং নাইক্ষ্যংছড়িতে র‍্যাবের এক সদস্যকে আহত করার মামলা রয়েছে। তাঁরা বর্তমানে কারাগারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়েও ফখরুল–আখতাররা ভিভিআইপি সুবিধা পাননি কেন—জানাল প্রেস উইং

স্পিকারের বাসভবনই হবে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস

আ.লীগের ঝটিকা মিছিল: মানিকগঞ্জের প্যানেল মেয়র আরশেদ আলীসহ চারজন কারাগারে

ঘরে সদ্য বিবাহিত বিক্রয় প্রতিনিধির লাশ, চিরকুটে লেখা ‘জীবন খুবই কঠিন’

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আলোচনায় আসনের ভাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত