Ajker Patrika

উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশে ভেজাল টাইটানিয়াম, তদন্তের মুখে বোয়িং-এয়ারবাস

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৪, ১৫: ৪৭
উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশে ভেজাল টাইটানিয়াম, তদন্তের মুখে বোয়িং-এয়ারবাস

জাল সনদ দিয়ে কেনা টাইটানিয়ামে তৈরি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছিল বিশ্বের শীর্ষ দুই প্রতিষ্ঠান বোয়িং ও এয়ারবাসের উড়োজাহাজে। উভয় কোম্পানিই বিষয়টি স্বীকার করেছে। তবে কোম্পানি দুটি দাবি করেছে, যেসব উড়োজাহাজে এসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলো নিরাপদ আছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

বোয়িং ও এয়ারবাস যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসভিত্তিক স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমসের কাছ থেকে টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি ফিউজিলাজ ও উইংস কিনেছিল। স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস গত বছর থেকেই গুণগত মান নিয়ে ঝামেলার মধ্যে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস জাল সনদে কেনা টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি যন্ত্রাংশ বিক্রি করেছে কোম্পানি দুটির কাছে। বিষয়টি প্রথম সামনে আসে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, এই টাইটানিয়ামের উৎপাদক দেশ চীন। এরপর সরবরাহ শৃঙ্খল তথা সাপ্লাই চেইনের মাধ্যমে তা স্পিরিটের কাছে আসে। 

সাধারণত টাইটানিয়াম ধাতুর সাহায্যে উড়োজাহাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ল্যান্ডিং গিয়ার এবং উড়োজাহাজের ডানার সঙ্গে ইঞ্জিন আটকে রাখার পাইলন উল্লেখযোগ্য। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, এই টাইটানিয়াম লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ২০১৯ সালের দিকে। 
 
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আলাস্কার একটি এয়ারলাইনসের বোয়িংয়ের তৈরি উড়োজাহাজের মাঝখানের দরজা খুলে যায় মাঝ আকাশে। এরপর থেকেই চাপে আছে বোয়িং ও স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস। মার্কিন বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন কংগ্রেসের এক তদন্তে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠান দুটি উড়োজাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় গুণমান রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। 

এই অবস্থায় বোয়িং ঘোষণা দিয়েছে, যেসব বিমান এখনো ডেলিভারি দেওয়া হয়নি, সেগুলো থেকে তারা টাইটানিয়ামের তৈরি যন্ত্রাংশগুলো সরিয়ে ফেলবে। তবে এখনো তাঁরা উড়োজাহাজ ডেলিভারি দেওয়া বন্ধ করেনি। এমনকি যেসব উড়োজাহাজ এরই মধ্যে ব্যবহৃত হওয়া শুরু করেছে, সেগুলোর উড্ডয়নও বন্ধ করা হয়নি। 

তবে বোয়িংয়ের উড়োজাহাজগুলোতে ঠিক কোন ধরনের যন্ত্রাংশ টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। সাধারণত স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস বোয়িংয়ের ৭৩৭—ম্যাক্সের ফিউজিলাজ এবং ৭৮৭—সিরিজের বিমানের নাক ও ডানার একটি অংশ তৈরি করে থাকে। এ ছাড়া একই প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের উড়োজাহাজগুলো বিশেষ করে এ—২২০-এর জন্য ডানা ও ইঞ্জিন পাইলন তৈরি করে থাকে। 

এয়ারবাস জানিয়েছে, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। ইউরোপীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানিটি বলেছে, তারা স্পিরিটের কাছ থেকে আসা যন্ত্রাংশগুলোর ওপর ‘অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা’ চালিয়েছে এবং তারা দেখেছে এ—২২০০ সিরিজের বিমানের উড্ডয়নযোগ্যতা অক্ষত আছে। 

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথোরিটি বলছে, তারা জাল সনদে আনা টাইটানিয়াম পরীক্ষা করে দেখেছে তাতে খাদ আছে। তবে বোয়িংয়ের দাবি, টাইটানিয়ামের কোনো খাদ নেই, কেবল সেগুলো বিক্রির ক্ষেত্রে জাল সনদ ব্যবহার করা হয়েছিল। 

অন্যদিকে, স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমসের মুখপাত্র জো বুক্কিনি বলেছেন, জাল সনদে আনা টাইটানিয়াম তৈরি হয়েছে এমন সন্দেহভাজন সব যন্ত্রাংশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত উপাদানের যান্ত্রিক ও ধাতব বৈশিষ্ট্য নিশ্চিত করার জন্য ১ হাজারের বেশি বার পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে যে, এই যন্ত্রাংশগুলো এরই মধ্যেই সরবরাহ করা বিমানগুলো নিরাপদে উড়তে পারবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত