Ajker Patrika

সৌদি যুবরাজের কাছেই মাথা নত পশ্চিমের 

সৌদি যুবরাজের কাছেই মাথা নত পশ্চিমের 

সৌদি নাগরিক ও সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে কাঠগড়ায় তুলে কোণঠাসা করতে চেয়েছিলেন পশ্চিমা নেতারা। কিন্তু তা তো করতেই পারেননি, ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকট তৈরি হওয়ায় এই ইস্যুতে তাঁর কাছেই নতজানু হতে হচ্ছে তাঁদের। 

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খুন হন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। এ ঘটনার ৪ বছর পেরিয়ে গেছে। বদলে গেছে এ বিষয়ে পশ্চিমাদের মনোভাবও। জামাল খাসোগিকে হত্যার পর পশ্চিমারা দাবি করেছিলেন, এ খুনের পেছনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) হাত রয়েছে। তাঁকে ‘একঘরে’ করে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন অনেকে। 

কিন্তু ৪ বছরে সে মনোভাবে অনেকটাই বদল এসেছে। একঘরে করে দিতে চাওয়া সেই ব্যক্তির সামনেই এবার নতজানু হতে শুরু করেছেন তাঁরা। সেই দলে এবার যুক্ত হলেন বিশ্বে অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক সময় তিনি সরাসরি মন্তব্য করেছিলেন, খাসোগিকে হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। 
 
আগামী শুক্রবার সেই বাইডেনই সৌদি আরবের এই নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে হাজির হচ্ছেন। এর আগে ইউরোপের প্রভাবশালী নেতাদের কণ্ঠেও এমবিএসকে নিয়ে ছিল নমনীয় সুর। এভাবে হুট করে মনোভাব পাল্টে যাওয়ার পেছনে মূলত একটাই কারণ, রাশিয়ার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে সৃষ্ট জ্বালানি সংকটের সমাধান। আর বাইডেন সৌদি আরবে যাচ্ছেন নিজ দেশে জ্বালানির দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে। 
 
এখনো শাসকের গদিতে বসতে পারেননি। স্বাদ পাননি ক্ষমতার। এত দিন কেবল মধ্যপ্রাচ্যেই ছিল তাঁর প্রভাব। কিন্তু ইউক্রেন সংকটের কারণে এবার বিশ্ব রাজনীতির ‘গুরুত্বপূর্ণ’ চরিত্র হয়ে ওঠার পথে মোহাম্মদ বিন সালমান। বৈদেশিক নীতি, সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ কিছু সিদ্ধান্তে তাঁর প্রভাব বেশ প্রশংসা কুড়ালেও খাসোগি ইস্যুটি তাঁর গলার কাঁটা হয়ে ছিল। এবার বোধ হয় সেই কাঁটা নেমে যাওয়ার পথে। 

ইউরেশিয়া গ্রুপের পরামর্শদাতা আয়হাম কামেল রয়টার্সকে বলেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমানকে কোণঠাসা করতে পশ্চিমাদের গৃহীত সব পরিকল্পনা এরই মধ্যে ভেস্তে যেতে শুরু করেছে। আর বাইডেন তাতে আরেকটি বুলেট ছুড়লেন।’ এমন অবস্থানের কারণে আঞ্চলিক পর্যায়ে তাঁর প্রভাব আরও প্রভাব বাড়বে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। 

 ২০১৫ সালে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের মৃত্যুর পর বাবা সালমান বিন আবদুল আজিজ সিংহাসনে আরোহণ করলে আচমকা ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে সৌদি যুবরাজের। প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত হন তিনি। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে তাঁর প্রভাব। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত