Ajker Patrika

শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা, যেভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। ছবি: সংগৃহীত
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই কর্মসূচি নিয়েছে। এই টিকাদান কার্যক্রমের জন্য ১ আগস্ট থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হলো, দেশের সব শিশু-কিশোরকে টিকার আওতায় আনা, যাতে টাইফয়েডের মতো সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

কারা এই টিকা পাবে

এই কার্যক্রমের আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশু ও কিশোর টিকা পাবে। প্রায় পাঁচ কোটি শিশু এই কর্মসূচির আওতায় আসবে। এই বয়সে শিশুদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা পুরোপুরি গড়ে ওঠে না বলে টাইফয়েডের মতো মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। সে ক্ষেত্রে টিকা দিতে পারে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা।

রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া

টিকা পেতে প্রথমে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। ধাপগুলো হলো—

এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। তারপর,

  • দিন, মাস ও বছরের ঘর পূরণ করুন।
  • ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর ইংরেজিতে লিখতে হবে। জন্মনিবন্ধন না থাকলেও বাবা-মায়ের মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
  • এরপর জেন্ডার নির্বাচন করুন। অর্থাৎ শিশুটি মেয়ে না ছেলে, সে অনুসারে গোল বৃত্তে ক্লিক করুন।
  • এরপর ক্যাপচা পূরণ করুন এবং পরবর্তী ধাপে যান।
  • মোবাইল ফোন নম্বর, ই-মেইল, পাসপোর্ট নম্বর ও ঠিকানা দিন।
  • মোবাইল ফোনে আসা ওটিপি দিয়ে প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে।

টিকার ধরন ও বাছাই

রেজিস্ট্রেশনের পর শিশুর জন্য টাইফয়েড বা মেনিনজাইটিস থেকে একটি নির্বাচন করতে হবে। টাইফয়েড নির্বাচন করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নবম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থী ও স্কুলবহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের শিশু—এই দুই বিকল্পের মধ্যে বাছাই করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলের নাম, ঠিকানা ও শ্রেণির তথ্য পূরণ করতে হবে। নির্ধারিত স্কুলের টিকাদান কেন্দ্র নির্বাচন করতে হবে। স্কুলবহির্ভূত শিশুদের ক্ষেত্রে নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্র বেছে নিতে হবে। সব তথ্য সাবমিট করার পর ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে। এই কার্ড সঙ্গে নিয়ে শিশুকে নির্ধারিত দিন টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

টিকা দেওয়ার সময় ও কার্যক্রম

নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্বাচিত কেন্দ্রে গিয়ে শিশুকে টিকা দিতে হবে। এক ডোজের এই ইনজেকশন শিশুদের ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে।

সরকার এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং টাইফয়েডের মতো মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রত্যেক অভিভাবককে তাঁদের শিশুদের দ্রুত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

টিকা দেওয়ার পর যা করতে হবে

টিকা দেওয়ার সময় অনেক শিশু ভয় পেতে পারে। সে কারণে তারা দীর্ঘ সময় ধরে কান্নাও করতে পারে। এমন হলে শিশুকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। তাকে কোলে নিন, আদর করুন। এতে কিছুক্ষণের মধ্যে সে শান্ত হয়ে যাবে। ইনজেকশন দেওয়ার বিষয়টি হাসাহাসি করলে বা বিদ্রূপ করলে অনেক শিশু মানসিকভাবে আঘাত পেতে পারে। তাই তেমন কিছু করা যাবে না।

টাইফয়েডের টিকা মুখে খাওয়ানো হতে পারে, আবার ইনজেকশনের মাধ্যমেও দেওয়া হতে পারে। মুখে খাওয়ালে শিশুর তেমন কোনো ঝামেলা না হওয়ারই কথা। কিন্তু ইনজেকশন দিলে কিছুটা সমস্যা হতে পারে কারও কারও।

শিশুদের জন্য টিকা দেওয়ার পরে কয়েকটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সেগুলো হলো—

⦁ ইনজেকশন দেওয়ার জায়গায় ব্যথা, লাল বা ফোলা ভাব দেখা দেওয়া

⦁ সাইটে ফুসকুড়ি হতে পারে

⦁ স্বল্প জ্বর হতে পারে

⦁ জ্বরের কারণে মাথাব্যথা ও বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে

⦁ অনেক ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও হতে পারে

এগুলো খুব সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এসব লক্ষণ প্রমাণ করে যে শিশুর শরীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করছে। এ লক্ষণগুলো সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে চলে যায় নিজে থেকে। তবে কখনো কখনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, খিঁচুনি, শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া, মুখ বা গলা ফুলে যাওয়া কিংবা জ্বর না সারার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব ক্ষেত্রে অবিলম্বে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত