Ajker Patrika

বিশ্বে প্রথমবারের মতো প্রতিস্থাপিত হলো পূর্ণাঙ্গ চোখ, দেখাচ্ছে আশার আলো

আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ১২: ০৮
বিশ্বে প্রথমবারের মতো প্রতিস্থাপিত হলো পূর্ণাঙ্গ চোখ, দেখাচ্ছে আশার আলো

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একদল সার্জন বা শল্যচিকিৎসক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক অসামান্য নজির স্থাপন করেছেন। তাঁরা বিশ্বে প্রথমবারের মতো এক ব্যক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ চোখ অন্য একজনের চোখের জায়গায় প্রতিস্থাপন করেছেন। তাঁদের এই অসাধারণ সফলতা মানুষের চক্ষুদানের বিষয়টিকে আরও সহজ করে তুলবে।

বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্স অ্যালার্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ৭ হাজার ২০০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শকের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসের জেমস অ্যারন নামে এক ন্যাশনাল গার্ড সদস্যের বাম চোখটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরে তাঁর সেই নষ্ট চোখের জায়গায় নতুন চোখটি প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে অ্যারন জেমসের চোখের রক্ত সংবহনতন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট স্নায়ুতন্ত্রসহ মুখের বাঁ পাশের একাংশ পুরোটাই বদলে ফেলতে হয়েছে।

সেই বৈদ্যুতিক শকের পর বাঁহাতি অ্যারনের নাক, ঠোঁট সামনের কিছু দাঁত গলার বাঁ পাশের অংশ, চিবুক ও বাম চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে তাঁকে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাঙ্গন হেলথ সেন্টারে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয় গত ২৭ মে। পরে দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা অপারেশন টেবিলে থাকতে হয় অ্যারনকে। সব মিলিয়ে ১৪০ জন চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সহযোগী অংশগ্রহণ করেছিলেন এই অপারেশনে। এতে নেতৃত্ব দেন নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাঙ্গন হেলথ সেন্টারের চিকিৎসক এদুয়ার্দো রদ্রিগেজ। 

পুরো চোখ প্রতিস্থাপনের বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে শল্য চিকিৎসক দলের প্রধান এদুয়ার্দো রদ্রিগেজ বার্তা সংস্থা এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পুরো একটি চোখ প্রতিস্থাপন চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক চরম কাঙ্ক্ষিত অর্জন। এর আগে প্রাণীদের চোখ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে সাফল্য অর্জিত হলেও মানুষের ক্ষেত্রে এমন অপারেশন আগে আর কখনোই হয়নি।

এদুয়ার্দো রদ্রিগেজ আরও বলেন, ‘প্রথম প্রথম আমাদের কাছে বিষয়টি পুরোটাই নতুন ও অজানা ছিল। কিন্তু আমরা (চিকিৎসক দলের সদস্যরা) চেয়েছি নতুন কিছু অর্জন করতে।’ রদ্রিগেজ এর আগেও অবশ্যই একাধিকবার ফেস ট্রান্সপ্লান্ট মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের অপারেশনে করেছেন।

পুরো চোখ প্রতিস্থাপনের বিষয়টিকে এক অসাধারণ অর্জন বলে অভিহিত করছেন গবেষকেরা। বলছেন, এই অসাধারণ অপারেশনের পর মানুষের চোখ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে যে বাধা ছিল, তা অনেকটাই দূর হয়ে গেল। উপযুক্ত দাতা পেলে এখন থেকে মানুষের চোখ সহজেই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো আনশুজ মেডিকেল ক্যাম্পাসের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক কিয়া ওয়াশিংটন বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি অসাধারণ অর্জন।’ কিয়া নিজেও বিগত ১৫ বছর ধরে একই বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। 

নিউইয়র্কের অন্য একটি হাসপাতালে মাত্র ৩০ বছর বয়সে মারা যাওয়া এক তরুণের শরীর থেকে এই চোখটি নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে। অপারেশনের পর সুস্থ হয়ে জেমস অ্যারন তাঁর সেই দাতা ও তাঁর পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ডা. এদুয়ার্দো রদ্রিগেজের প্রতিও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত